সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমার মায়াবতী |পর্ব:-আঠারো|


রাতে প্রজেক্টের কাজ শেষ করতে করতেই ঘুমিয়ে গেছে রাহাত। সকালে উঠতে উঠতেও দেরি হয়ে গেছে ওর। ঘুম ভাঙতেই ফ্রেশ হয়ে বাকি কাজটা কমপ্লিট করে মেইল করেই অফিসে ছুটলো রাহাত। অফিস থেকে নাকি বাসার নাম্বারে কল করেছে লিজা। তাড়াতাড়ি যেতে বলেছে। রাহাত অনেক্ক্ষণ খুঁজেও নিজের মোবাইলটা পেল না। পরে মোবাইল ছাড়াই তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে গেল। অফিসে নিজের রুমে ঢুকতেই দিহান আর লিজাকে পেল রাহাত।
-স্যার??
-কি ব্যাপার লিজা?? বাসায় কল করছিলে নাকি?
-স্যার আপনার মোবাইলেও কম করে হলেও ১০০ বার কল করেছি।
-মোবাইলটা পাচ্ছি না। সম্ভবত মায়ার বাসায় ফেলে এসেছি কালকে।
-স্যার। ম্যাম কোথায়??
-কোথায় মানে!! বাসায়। আর তোমাদের দুজনের কি হয়েছে?? দিহান?? কোন সমস্যা হয়েছে?
-সরি স্যার। লিজা তুমি স্যারের সাথে কথা বলো।৷ আমি আসছি, আসছি স্যার।
দিহান বেরিয়ে যাওয়ার পর রাহাত চেয়ারে বসে লিজার দিকে তাকলো।
-হয়েছে টা কি বলবে লিজা প্লিজ?? দিহানেরই বা কি হলো??
-স্যার গতকাল দুপুরে আপনি অফিস থেকে বেরিয়ে যাওয়ার বেশ কিছুক্ষণ পর দিহান অফিসের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ চেক করার সময় একটা লোককে আপনার রুমে ঢুকছে দেখতে পায়। ছুটে রুমে গিয়েও লোকটাকে ধরতে পারে নি। দিহান এসেছে টের পেয়েই একটুর জন্য পালিয়ে যায় লোকটা। কোন ইম্পর্ট্যান্ট ফাইল বা তথ্য চুরি করলো কিনা সেটা খুঁজতে লাগলাম আমরা দুজনে। তখন একটা মোবাইল পাই। সম্ভবত যে লোকটা এসেছিল তার মোবাইল। আর কিছু পাই নি। তবে মোবাইলটা থেকে একটা অডিও সেন্ট হয়েছে একটা নাম্বারে।
-কিসের অডিও?? কি সব বলছ রে বাবা!! কিছুই।।
-স্যার অডিও টা ছিল আপনার আর আমার কথার। আপনি যে প্রতি রাতের জন্য ৫০০০০......
-কি বলছো কি লিজা!!!?
-দিহান তখন অনেক আপসেট হলেও পরে ও আমাকে বিলিভ করেছে। ও নিজের ফ্রেন্ডের সোর্স ব্যবহার করে যে নাম্বারটায় থেকে মেসেজ করা হয়েছে সেটার খবর নিয়েছে। নাম্বারটা মায়া নামের একজনের।
-হোয়াট!!!
-জি স্যার।  একটা অডিও আর একটা মেসেজ পাঠিয়েছে।
-ওহ। শিট। লিজা? আমি মায়াকে কল করি। তুমি একটু কনফার্ম করো এই নাম্বারটাই কিনা??
-জি স্যার।
অফিসের ফোনে মায়ার নাম্বারটা ডায়াল করতেই লিজা ইশারায় জানালো এই নাম্বারটাই ছিল। রাহাত কল করছে বারবার। ফোনটা বন্ধ আসছে প্রতিবারই। রাহাত কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। আজই মায়াকে বাসায় নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কোথা থেকে কি হয়ে গেল!! মেয়েটা কি ভাবছে কি করছে কিছুই মাথায় ঢুকছে না। কোনমতে উঠে দাঁড়িয়ে মায়ার বাসায় যাওয়ার জন্য ছুটলো রাহাত।
-স্যার??
-সরি লিজা। আমার জন্য তোমাদের সম্পর্কে কোন ভুল বুঝাবুঝি হোক তা চাই না। প্লিজ পারলে আমাকে মাফ করে দিও। আর মায়াবতীটাও যেন আমাকে ক্ষমা করে দেয় সেটার জন্য একটু প্রে করো প্লিজ।
যাওয়ার সময় দিহানকে আরেকবার সরি বলে ফুল স্পিডে গাড়ি ছুটিয়ে মায়াদের বাসার দিকে ছুটলো রাহাত। পিছনে দিহানের হাত শক্ত করে ধরে লিজা রাহাতের ছুটে যাওয়ার দিকে ছলছলে চোখে তাকিয়ে আছে৷ দিহানও আলতো করে লিজার হাতটা চেপে ধরে আশ্বাস দিলো। যেন বলছে যা হবে সব ভালোই হবে। মায়ার বাসার সামনে গাড়ি থামিয়েই ঢিপঢিপে বুকে কলিং বেল বাজালো রাহাত। কি বলে মেয়েটার রাগ ভাঙাবে সেটা ভেবেই মাথা ঘুরছে রাহাতের। দরজা খোলার শব্দে মাথা তুলেই রহিমা খালাকে দেখতে পেল রাহাত।
-খালা??
-আরে জামাই বাবা। আপনে চইলা আইসেন? এই নেন আপনের ফোন। মায়া মায় দিয়া গেসে।
-দিয়ে গেছে মানে? কোথায় গেছে?
-তারা সবাই তো গেরাম গেসে গিয়া। নতুন বউয়ের নাকি গেরাম দেখনের শখ লাগসে।
-কখন গেছে??
-আইজ্জা সক্কাল সক্কাল।
-কোথায় গেছে একটু বলুন না প্লিজ রহিমা খালা??
-আমি তো জানি না জামাই বাবাজি।
-প্লিজ প্লিজ প্লিজ?? খালা আপনি আমার মায়ের বয়সী। হাত জোড় করছি প্লিজ??
-আপনে এমন করতেসেন কেন বাবা? আমি সত্যই জানি না হেরা কইগেছে।
-(চুপ)
-রাহাত বাবা?? হেরা চইলা আসবে তো। বেশি দিন থাকবো না!
রাহাত কোনমতে টলতে টলতে গাড়িতে গিয়ে বসলো। মায়াকে এবার সে কোথায় খুঁজবে? কার কাছে জানতে চাইবে তার মায়াটা কোথায় গেছে? নিজের মোবাইলটা হাতে নিতেই অনেকগুলো কল দেখল রাহাত। সবগুলোই লিজার। রাতে মেয়েটা আসলেই কয়েকশো কল করেছিল। আরেকটা মেসেজও সো করছে স্ক্রিনে। কাঁপা হাতে মেসেজটা ওপেন করলো রাহাত।
"রাহাত,
কেন করলে এমনটা? সব ভুলে তোমাকে তো আবার ভালোবাসতে শুরু করেছিলাম। তবুও কেন করলে এমনটা? একটা কথা বলো তো? আমাকে সত্যি ভালোবেসেছিলে তুমি? নাকি শুধুই শরীরের চাহিদাটাই..…...? আর ভাবতে পারছি না জানো? তোমাকে বিশ্বাস করতে মন চায় অনেক। বিশ্বাস করতেও পারি না। এতো অবিশ্বাস নিয়ে কিভাবে তোমার সামনে থাকি বলো? অবিশ্বাস থেকেই তো ঘৃণা জন্মায়। কিন্তু তোমাকে ঘৃণা করে তো বেঁচে থাকা সম্ভবও না আমার। তাই চলে গেলাম। এবার খুঁজতে এসো না প্লিজ। তুমি তোমার মতোই না হয় ভালো থাকো। শুধু আমার নামের সাথে তোমার নামটা না হয় এভাবে জড়িয়েই থাক আজীবন। প্লিজ??
আর হ্যাঁ, পারলে নতুন করে জীবনটা শুরু করো। আমি অধিকার ফলাতে আসবো না সত্যি।
তোমার। "
মোবাইলটা পাশের সিটে ফেলে রাহাত সেখানেই কেঁদে ফেললো। মেয়েটা এবার ভুলই বুঝলো রাহাতকে। অবশ্য তার অপরাধগুলোর শাস্তি তো তাকে পেতে হবেই। আর মেয়েটাকে বিশ্বাস করতে বলবেই বা সে কোন মুখে? রাগে, দুঃখে নিজের মাথার চুল ছিঁড়তে ইচ্ছে করছে রাহাতের। নিজের মাথাটা স্টিয়ারিংয়ের উপরে বার কয়েক আঘাত করলো রাহাত। এবারে সে তার মায়াবতীকে হারিয়ে ফেলেছে৷ চিরজীবনের মতোই হারিয়ে ফেলেছে। এবার সে কি নিয়ে বাঁচবে??
ক্লান্ত হয়ে স্টিয়ারিংয়ের উপরে মাথা রেখে বসে আছে রাহাত। এই সময় রাহাতের মোবাইলটা শব্দ করে বেজে উঠলো। হাতে নিতেই দিহানের নামটা ভেসে উঠলো। মোবাইল হাতে নিয়ে রাহাত ভাবতে বসলো দিহানকে কি বলবে? ভাবতে ভাবতেই চোখ দিয়ে টুপটুপ করে পানি ঝরছে রাহাতের।।
দিহান কলের পরে কল করেই যাচ্ছে। তাই রাহাত কোনমতে নিজেকে সামলে নিয়ে কলটা রিসিভ করে মোবাইলটা কানে ধরলো।
-স্যার? সরি স্যার। তখন ওভাবে আপনাকে ইগনোর করে চলে এলাম। সরি ...
-ইটস ওকে ভাই। পারলে মাফ করে দিও!
-স্যার। ম্যাম কি এখনো খুব রেগে আছে? আমি কথা বলে দেখবো.....
-মায়াবতীটা আর নেই রে দিহান!
-নেই মানে!?? ম্যাম!! ম্যাম কোথায় স্যার??
-জানি না আমি।। কিচ্ছু জানি না।
-স্যার?? উনার ফ্যামেলি কিছু বলছে না? আপনি একটু সরি বলে দেখুন না??
-ওরা কেউ নেই দিহান।
-স্যার কি বলছেন?? গতকাল সন্ধ্যায় ও না ম্যামের বাসায় গেলেন?? আজ সকালেই কি করে।
-জানি না কিছু। ওরা কোথায় কোন গ্রামে চলে গেছে। বুঝতে পারছি না।
--আজ সকালেই?
-হুম,
-ম্যামের ভাবি। নতুন বৌ সহ?
-হ্যাঁ দিহান। সবাই সবাই। সবাই চলে গেছে....
-স্যার?? আপনি একটু রিল্যাক্স করুন!
-মানে কি দিহান?? আমি মায়াবতীকে খুঁজে পাচ্ছি না এদিকে৷ আর তুমি আমাকে বলছো রিল্যাক্স করতে??
-স্যার?? বি কুল প্লিজ? আমার মনে হয় আমি জানি ম্যামরা কোথায় গেছে।
-জানো!! জানো মানে!! কোথায়!! কোথায় গেছে আমার মায়া??
-স্যার। সবাই মিলে গেছে ইভেন নতুন ভাবিকে নিয়েও। মে বি ম্যামের ভাই ভাবির জন্য হানিমুন প্ল্যানিং করেছে।
-বাট সেটা কোথায় জানবো কি করে!!?
-স্যার? সবাই মিলে গেছে। আমার ধারণা ম্যামদের গ্রামের বাড়িতে।
-আর ইউ ক্রেজি?? মিহান ভাইয়ার হানিমুনের জন্য ওদের গ্রামে কেন যাবে?? দুনিয়াতে যাওয়ার জায়গার কি অভাব আছে দিহান??
-স্যার? ম্যামের ভাবির ব্যাপারেও খোঁজ খবর নিয়েছি! দিয়া ম্যাডামও অনেক ভালো একটা মেয়ে। সবার সাথে মিলে মিশে থাকতে চায়। আর ছোটবেলা থেকেই নাকি শহরে মানুষ। গ্রামে যাওয়ার ভিষণ শখ ছিল উনার।
-দিহান??
-স্যার?? প্লিজ?? এক শেষ চেষ্টা করে দেখুন না?? হতে পারে মিহান স্যার আর দিয়া ম্যাম হানিমুনে বাইরে কোথাও গেছে। কিন্তু মায়া ম্যাম আরউনার মা তো গ্রামের বাড়িতে যেতেই পারে। পারে না?
-সেটাও ঠিক বলেছ...
-(চুপ)
-কিন্তু ওর গ্রামের বাড়ির ঠিকানা কোথায় পাবো আমি??
-হা হা হা.....
-দিহান?? ইয়ার্কি হচ্ছে?? আমি টেনশনে মরছি আর তুমি হাসছো??
-সরি স্যার, আপনি ম্যাডামের টেনশনে সব ভুলে যাচ্ছেন কেন স্যার?? আমি যদি আপনাকে ম্যামের বাসার ঠিকানা জোগাড় করে দিতে পারি-তাহলে এখন ম্যামের গ্রামের বাড়ির ঠিকানাটাও জোগাড় করে দিতে পারবো!
-সত্যি? সত্যি দিহান?
-জি স্যার!
-প্লিজ প্লিজ। মায়া কোথায় আছে একটু এ্যাড্রেসটা সেন্ট করো আমাকে প্লিজ?
-জি স্যার। স্যার তবে একটা শর্ত আছে!
-কি চাই তোমার বলো শুধু। আমার সব কিছু দিয়ে হলেও মায়া কোথায় জানতে চাই। ওকে যে আমার চাই রে ভাই।
-স্যার। এসব কিছু না। লিজা আর আমার বিয়েটা আগামী মাসে হবে। আমাদের বিয়েতে অবশ্যই ম্যামকে নিয়ে আসবেন। প্রমিস করুন?
-অফকোর্স ইয়ার। তোমরা দুজন না থাকলে...
রাহাত কথাটা শেষ করতে পারলো না৷ গলাটা বন্ধ হয়ে আসছে ওর। এই দুটো মানুষকে সে কি বলে ধন্যবাদ জানাবে? লিজা আর দিহানকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার মতো ভাষা যে রাহাতের নেই।
-স্যার, ম্যামের এ্যাড্রেস পাঠিয়ে দিয়েছি।। ইনবক্সে চেক করুন।
-থ্যাংক ইউ দিহান।
-স্যার। আর প্রজেক্টের কাজটা?
-কাজটা শুরু করে দিও। আমার না থাকলেও চলবে। লিজা আর তুমি মিলে দেখো। আর কিছু সমস্যা হলে জানিয়ো আমাকে।
-ওকে স্যার। শুভকামনা। আশা করি ম্যামের রাগ ভাঙিয়ে একেবারে ফিরিয়ে নিয়ে আসবেন।
-ইয়াপ।
কলটা কেটে মেসেজ চেক করতেই গ্রামের ঠিকানাটা পেল রাহাত। বুকের ভিতরটা ঢিপঢিপ করছে। মেয়েটা এই ঠিকানায় আছে কিনা কে জানে!! তবে নিজের সমস্ত কুচিন্তা মন থেকে বের করে ফেলে দিয়ে রাহাত ভাবার চেষ্টা করছে এই ঠিকানায় গেলেই সে তার মায়াবতীটাকে পাবে আবার। হাতের ঘড়িতে দেখলো প্রায় ১২ টা বাজতে চলেছে। গাড়িটা স্টার্ট দিবে এমন সময় খেয়াল করলো সামনেই একটা শাড়ির দোকান। দেখেই ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠেছে রাহাতের। কিছু কেনাকাটা করা যাক শ্বশুড় বাড়ির জন্য।
ঘুরে ঘুরে বেশ অনেকগুলো দোকান খুঁজে একেবারে গাড়ি ভর্তি করে কেনাকাটা করে গাড়িতে এসে বসলো। নিজেও ফরমাল ছেড়ে একটা জিন্স আর টি-শার্ট পড়ে নিয়ে রাহাত যখন গাড়ি চালানোয় মন দিয়েছে তখন চারটার কাছাকাছি বাজে। লুকিং গ্লাসে পিছনের সিটে চোখ পড়তেই হেসে ফেললো রাহাত। পুরো গাড়িটা অনেকগুলো বক্সে ভরে গেছে। মোবাইলের নেভিগেশনের দেয়া ডিরেকশনে গাড়ি চালাতে চালাতে ভাবছে রাহাত।
"আমার থেকে দূরে পালিয়ে কোথায় যাবে মায়াবতী?? যেখানেই পালাবে পিছুপিছু সেখানেই গিয়ে হাজির হবো। যত দূরে যেতে চাইবে ততই শক্ত করে আঁকড়ে ধরবো পরী। রাগ করে পালাতে চাইলে ভালোবাসা দিয়ে পূর্ণ করে সে রাগ ভাঙাবো। তবু তোমার থেকে এক সেকেন্ডও দূরে থাকতে পারবো না আর।"
চলবে............

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(পর্ব ০৯)

RM ,,পূর্ববর্তী পার্ট গুলি পেতে অমার টাইমলাইন  ভিজিট করুন,, কতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলাম সেটা মনে নেই। চোখ খোলে যখন মাথার পেছনে সজোরে এক থাপ্পর খাই। ঘুম ঘুম চোখে চারদিকে তাকিয়ে দেখি যে কে আমাকে চড়টা মারল। আমি দেখলাম যে আমি উঠানের মাটিতে পড়ে আছি, পায়ের কাছে মাটিতে সুব্রত পড়ে আছে। আমি ওপর দিকে তাকিয়ে দেখতে চেষ্টা করি যে কে আমাকে চড়টা মারল, আমি অবাক হয়ে দেখি যে ইন্দ্রানি মাসি আমাদের দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে। আমার দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে বলে ওঠেন “শুয়োর গুলো এখানে শুয়ে? আর আমারা তোদের দু’জনকে সারা বাড়িতে হন্যে হয়ে খুঁজছি। তোদের কি কোন বোধ বুদ্ধি নেই?” আমি সুব্রতর কাঁধ ঝাঁকিয়ে উঠিয়ে দিলাম, সুব্রত আর আমি দুজনেই উঠে পড়লাম মাটি থেকে। আমি কাতর চোখে ইন্দ্রানি মাসির দিকে চেয়ে বললাম “সরি মাসি। ভুল হয়ে গেছে, কাল রাতে একটু বেশি হয়ে গেছিল।” চেয়ারের ওপরে মদের বোতল আর গ্লাসের দিকে ইন্দ্রানি মাসির চোখ পড়ে যায়, তাড়াতাড়ি করে চেয়ারের ওপরে নিজের শাল ফেলে দিয়ে ঢেকে দেয় গ্লাস আর বোতল। ঠিক সেই সময়ে পেছন থেকে অনেক গুলো পায়ের আওয়াজ পাই। মাসি সবাই কে বলে “এই ছেলে দুটো সারা রাত...

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(শেষ পর্ব)

RM কিছুদূর যেতেই  একটি জায়গায় গাড়ি দাঁড় করায় বল্বিন্দার, বলল যে গাড়িতে তেল ভরতে হবে। গাড়ি থামার সঙ্গে সঙ্গে পরীর ঘুম ভেঙে যায়, আমার দিকে তাকিয়ে বলে “কতক্ষণ ঘুমিয়েছি আমি?” আমি বললাম “বেশীক্ষণ ঘুময়নি তুমি” “আমরা থামলাম কেন?” “তেল ভরার জন্য।” “আর কত দেরি পৌঁছতে?” আমি পেট্রল পাম্পের লোকটাকে জিজ্ঞেস করলাম যে জিওরি থেকে চিতকুল কতক্ষণ লাগবে পৌঁছতে। লোকটা আমায় জানাল যে আরও ঘন্টা চারেকের রস্তা বাকি। লোকটা আরও জানাল যে কারছাম ব্রিজের পরে রাস্তা খুব খারাপ। বল্বিন্দার আমাকে বলল যে ও রাস্তা জানে, কোন চিন্তা করতে বারণ করল আমাকে। পরী হিন্দি বিশেষ ভালো করে বোঝেনা তাই আমাকে জিজ্ঞেস করে যে বল্বিন্দার কি বলল। আমি রাস্তার কথাটা চেপে গেলাম, জানালাম যে কোন কিছুর জন্য চিন্তা না করতে। ঘড়ির দিকে তাকালাম, আড়াইটে বাজে তখন, তারমানে চিতকুল পৌঁছতে সন্ধ্যে হয়ে যাবে। একে শীতকাল তায় আবার পাহাড়, এখানে রাত সমতলের চেয়ে একটু তাড়াতাড়ি নামে। জিওরি ছাড়ার কিছু পরেই পরী বলল যে ও আর ঘুমোতে চায় না, বাইরের দৃশ্য দেখবে। আমি বললাম ঠিক আছে। কিছু পরেই সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ে। যখন আ...

"এক অপরিচিতা"(পর্ব: ছয়)

লেখক:আসিফ ইকবাল! "আগের পর্ব গুলো আমার টাইমলাইনে বিদ্যমান" পঞ্চম পর্বের পর থেকে..... ___আরে বাহ, আপনি নিজের বউ কেই চিনতে পারছেন না!       এবার তো বলবেন গতকাল আপনি আমাকে বিয়েই করেন              নি। হম,সেটাও বলে ফেলেন না! দেরি কেনো? ওর এতগুলি কথার পর বুঝতে পারলাম,এটাই আমার অপরিচিতা,কিন্তু ও আজকে নিকাব পড়েনি। হিজাব পড়েছে। তাই চিনতে পারিনি। মুখ দিয়ে কিছু বের হচ্ছেনা। শুধু ওর দিকে তাকিয়ে আছি। আমার বউটা অনেক কিউট। সকাল বেলা যে আমার জন্য এরকম একটা সারপ্রাইজ আছে সেটা ভাবিনি!      ____কি!আপনি কি এভাবেই তাইকে থাকবেন? নাকি উঠেবেন। জলদি উঠে ফ্রেশ হোন।(তাফা) ____তুমি আজকে নিকাব পরোনি যে! ____আপনি তো আমার বর!আপনার সামনে নিকাব পড়তে হবে কেনো?(তাফা) বলে.....একটা হাসি দিয়ে চলে গেলো। এই প্রথম ওর হাসি দেখলাম। আর সেটা আমাকে রীতিমতো পাগল করে দিয়েছে। আর দেরি করলাম না। জলদি বিছানা ছেড়ে ফ্রেশ হতে চললাম। তাফা,,, তাফা! কই তুমি?........ "এইতো কিচেনে,কি হোয়েছে..... তাফা কিচ...