সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(শেষ পর্ব)


RM

কিছুদূর যেতেই  একটি জায়গায় গাড়ি দাঁড় করায় বল্বিন্দার, বলল যে গাড়িতে তেল ভরতে হবে।
গাড়ি থামার সঙ্গে সঙ্গে পরীর ঘুম ভেঙে যায়, আমার দিকে তাকিয়ে বলে “কতক্ষণ ঘুমিয়েছি আমি?”
আমি বললাম “বেশীক্ষণ ঘুময়নি তুমি”
“আমরা থামলাম কেন?”
“তেল ভরার জন্য।”
“আর কত দেরি পৌঁছতে?”
আমি পেট্রল পাম্পের লোকটাকে জিজ্ঞেস করলাম যে জিওরি থেকে চিতকুল কতক্ষণ লাগবে পৌঁছতে। লোকটা আমায় জানাল যে আরও ঘন্টা চারেকের রস্তা বাকি। লোকটা আরও জানাল যে কারছাম ব্রিজের পরে রাস্তা খুব খারাপ। বল্বিন্দার আমাকে বলল যে ও রাস্তা জানে, কোন চিন্তা করতে বারণ করল আমাকে।
পরী হিন্দি বিশেষ ভালো করে বোঝেনা তাই আমাকে জিজ্ঞেস করে যে বল্বিন্দার কি বলল। আমি রাস্তার কথাটা চেপে গেলাম, জানালাম যে কোন কিছুর জন্য চিন্তা না করতে। ঘড়ির দিকে তাকালাম, আড়াইটে বাজে তখন, তারমানে চিতকুল পৌঁছতে সন্ধ্যে হয়ে যাবে। একে শীতকাল তায় আবার পাহাড়, এখানে রাত সমতলের চেয়ে একটু তাড়াতাড়ি নামে। জিওরি ছাড়ার কিছু পরেই পরী বলল যে ও আর ঘুমোতে চায় না, বাইরের দৃশ্য দেখবে। আমি বললাম ঠিক আছে। কিছু পরেই সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ে। যখন আমরা কারছাম ব্রিজ পৌঁছই ততক্ষণে চারদিকে অন্ধকার নেমে এসেছে। কারছামে দেখলাম দুটি নদী একসাথে মিলেছে, একটির জল সবুজ একটির জল মাটির মতন ঘোলা।
নদীর সবুজ জল দেখে পরী অবাক হয়ে গেল, আমাকে জিজ্ঞেস করল “আমি কোনদিন নদীর সবুজ জল হয় দেখিনি। এখানে গাড়ি থামাবে, আমি নামবো।” আমি দেখলাম যে ওর বিপরীত কিছু না বলাটাই ভালো, তাই আমি বল্বিন্দার কে বললাম গাড়ি থামাতে।
গাড়ি থেকে নেমে সবুজ নদীর দিকে দেখিয়ে বলল “কত সুন্দর দেখতে। এই নদী টাকি চিতকুলে আছে?” আমি মাথা নেড়ে জানালাম যে এই নদীটা চিতকুলের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে।
কিছুক্ষণের মধ্যে আমরা ব্রিজ পেরিয়ে, সঙ্কীর্ণ পাথুরে রাস্তা ধরে এগিয়ে চলি। কনকনে ঠাণ্ডা হাওয়া বইছে বাইরে, একদম হাড় কাঁপান বাতাস বিয়ে আসছে পাহাড়ের দিক থেকে। আমি ওকে জড়িয়ে ধরি যাতে গায়ের গরমে একটু ভালো লাগে দু’জনার। কিছুক্ষণ পরে বল্বিন্দার গাড়ির হেড লাইট জ্বালিয়ে দেয়, রাস্তায় কুয়াশা নেমে বিশেষ কিছু দেখা যাচ্ছে না। ভয় ভয় চোখে আমার দিকে তাকায় পরী, আমি ওকে আশস্ত করে বললাম চিন্তা করো না সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে।
আমার গালে হাত বুলিয়ে হেসে বলে “দুঃসাহসী ছেলে বটে তুমি। তুমি কি ভেবে আমাকে নিয়ে এইরকম একটা জনমানব শূন্য জায়গায় বেড়াতে নিয়ে এলে?”
আমি হেসে জবাব দিলাম “তুমি কাছে থাকতে আমি তো সারা পৃথিবীর সাথে লড়তে পারি।”
আমার গালে চুমু খেয়ে বলে “উম, আমার বীর ছোট্ট রাজকুমার।”
সাঙলা পের হতেই চারদিকে নেমে আসে ঘন অন্ধকার রাত। এবর খাবর রাস্তার ওপরে দিয়ে বল্বিন্দার বেশ ধির স্থির ভাবে গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম কিছু অসুবিধা হচ্ছে কি না, আমাকে আশস্থ করে বলল যে ঠিক ভাবে গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যেতে পারবে।
পরীর চোখে মুখে উদ্বগের ছায়া ফুটে উঠেছে। আমি ওকে বললাম যে টেন্সান নিচ্ছে কেন। আমার কথা শুনে রেগে গেল পরী “তুমি একটা আস্ত পাগল, তোমার কোন বোধগম্য নেই। কেউ যদি আমাদের মেরে গভীর খাদে ফেলে দেয়, তাহলে কারুর কিছু করার থাকবে না। কেউ জানে না যে আমরা এখানে এসেছি। আমাদের এই রকম জায়গায় আসাই উচিৎ ছিলনা।” রেগে মেগে মুখ ঘুড়িয়ে জানালার বাইরে দেখতে থাকে, বাইরে ঘুটঘুটে অন্ধকার।
আমি ওকে ঠাণ্ডা করার জন্য বললাম “কিছু হবে না, চুপ করো” তারপরে মজা করে বললাম “বাইরে অন্ধকারে কিছু দেখতে পাচ্ছ কি?”
রেগে মাথা নাড়িয়ে বলল “তোমার সাথে কথা বলে কি হবে।”
এত চেষ্টা করে মান ভাঙ্গান যাচ্ছে না অভিমানিনীর, আমি একটু রেগেই যাই তখন। আমি কি করে জানবো যে জায়গাটা এই রকম হবে, আমি প্রথম বার এখানে এসেছি।
সাঙলা থেকে আর এক ঘন্টা পরে আমরা চিতকুল পৌঁছলাম, ঘড়িতে তখন রাত সাতটা বাজে। আমি পরীকে বললাম গাড়িতে বসে থাকতে, আমি নেমে হোটেল খুঁজতে গেলাম। গাড়ি থেকে নামতেই, চারদিকের পাহাড়ের থেকে কনকনে ঠাণ্ডা হাওয়া এসে আমাকে প্রায় জমিয়ে ফেলল। চারদিক অন্ধকার, বাড়ি ঘরের কোন চিন্হ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। রাস্তার শেষ প্রান্তে একটা হোটেল দেখলাম। হোটেলে ঢুকে ম্যানেজার আমাদের দেখে বলল যে আমরা শুধু মাত্র দুটি প্রাণী এই হোটেলে, এই সময়টা টুরিস্ট সিসেন নয়। সাঙলা ছাড়ার পর থেকে সেই যে পরী চুপ ছিল, হোটেলে ঢোকা পর্যন্ত একদম ঠোঁটে কুলুপ এঁটে ছিল।


হোটেলের রুমটা বেশ বড়, দু’দিকে মেঝে পর্যন্ত নেমে আশা কাঁচের জানালা। জানালার ওপরে ভারী পর্দা টাঙ্গানো। হোটেল বয় আমাদের ব্যাগ রুমে রেখে যাবার পরে আমি রুমের দরজা বন্ধ করে দেই। পরী চুপচাপ দাঁড়িয়ে। আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম যে রুমটা কেমন, কোন কথা না বলে খালি মাথা নেড়ে উত্তর দিল ঠিক আছে। চেহারা হাবভাব দেখে বুঝতে পারলাম যে রাতে বিশাল একটা ঝড় বইবে।
পরী জ্যাকেটা খুলে ফেলেছে, চুপচাপ আমাদের ব্যাগ গুলো খুলে এক এক করে জামা কাপড় বার করে কাপবোর্ডে গুছিয়ে রাখছে। আমি একটা চেয়ার টেনে বসে দেখতে লাগলাম আমার প্রেয়সী কে। মেঘের মতন ঘন কালো চুল সারা পিঠের ওপরে ছড়ানো।
ওকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলাম। ও যেন একটু শান্ত,
ঘাড় ঘুড়িয়ে আমার দিকে শীতল চাহনি নিয়ে তাকায়। আমার এত উৎফুল্ল, উত্তেজনায় ঠাণ্ডা জল ঢেলে দিল ওর কঠিন কালো দুই চোখ।
আমার বাহুবন্ধনির মাঝে আমার দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে শীতল কণ্ঠে বলে “বাথরুম যাবো আমি, ছাড়ো আমাকে।”
উত্তাল উমত্ত ঝঞ্ঝার পূর্বাভাস টের পাই আমি, আমার আলিঙ্গন পাশ হতে নিজেকে মুক্ত করে একটি ছোটো গোলাপি রঙের রাতের পোশাক আর ভারী উলের গাউন নিয়ে বাথরুমে ঢুকে পরে। আমি বিছানার ওপরে বসে নিজের জামা কাপড় বদলে নেই। কিছুক্ষণ পরে বাথরুম থেকে বেড়িয়ে এসে আমাকে পরিস্কার হবার জন্য বাথরুমে ঢুকতে বলে।
আমি ওর শীতলতা দেখে না থাকতে পেরে জিজ্ঞেস করলাম “কি হয়েছে তোমার? এত চুপচাপ কেন? কথা বলবে না আমার সাথে?”
ভাবলেশ বিহীন কণ্ঠে বলে “তাড়াতাড়ি হাত পা ধুয়ে নাও। আমি কি ডিনারের অর্ডার করে দেব?”
“হ্যাঁ সেটা তো ঠিক আছে, কিন্তু তুমি কি আমার সাথে কথা বলবে না?”
আমাকে থেকে বাথরুমে ঢুকিয়ে দেয়। আমি হাতমুখ ধুয়ে বেড়িয়ে এসে দেখি পরী চুপচাপ একটা চেয়ার টেনে, একদিকের বিশাল একটা কাঁচের জানালার সামনে বসে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে। পায়ের ওপরে একটা পা দিয়ে, ডান হাতের ওপরে থুতনি রেখে ভাবহীন চোখে তাকিয়ে আছে বাইরে। বাইরে ঘুটঘুটে কালো আঁধার ছাড়া আর কিছু দেখা যাচ্ছে না। পুরো ঘরের পরিবেশ বদলে গেছে এক অধভুত শীতল বাতাস বয়ে চলেছে, ঠাণ্ডার জন্য নয়, পরীর জন্য। সকাল বেলার দুরন্ত মেয়েটা যেন কোথায় হারিয়ে গেছে। ইতিমধ্যে হোটেলবয় এসে আমাদের ডিনার দিয়ে গেল। খাবার সময়ে কোন কথা না বলে চুপ করে খাওয়া দাওয়া সেরে নিলাম। রাত যত গভীর হয়ে চলেছে, তত যেন পরীর রাগ বেড়ে চলেছে। আমি দেখলাম যে এই বরফ যদি না গলানো যায় তাহলে ভবিষ্যতে সাংঘাতিক রূপ ধারন করবে।
খাওয়ার পরে কোন কথা না বলে, গায়ের উলেন গাউন খুলে, চুপ করে বিছানায় উঠে লেপে ঢেকে মাথার দিকে দুটি বালসে ভর দিয়ে বসে। কামরার নিষ্প্রভ আলোয় ঠিক যেন এক অপ্সরা আমার বিছানার ওপরে নেমে এসেছে মনে হয়। সোনার কানের দুল দুটি চিকচিক করছে নরম আলোয়। আমার দিকে কঠিন দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে।
আমি বিছানার পায়ের দিকে দাঁড়িয়ে ওকে জিজ্ঞেস করলাম “অসুবিধা টাকি তোমার, কিছু বলবে আমাকে?”
ফোঁস করে ওঠে সুন্দরী “বাইরের দিকে দেখেছ? এক চিলতে আলো নেই কোথাও, কোথায় নিয়ে এসেছ আমাকে? দোকানপাট নেই, বাড়ি ঘরদোর নেই, রেস্টুরেন্ট নেই। লোকজন থাকে এইখানে? একটা টুরিস্ট পর্যন্ত নেই।”
“দেখ পরী তুমি চেয়েছিলে তোমাকে নিয়ে আমি কোথাও যাই। তোমার মতন আমিও প্রথম বার এসেছি এখানে। আমি কি করে জানবো?”
“শপিং করার মতন একটা দোকান নেই এখানে।”
“দোকান দিয়ে তুমি কি করবে?”
আমার কথা শুনে তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে “কেন দোকান দিয়ে মানুষে কি করে? শপিং করব আবার কি। সবাই বেড়াতে গেলে শপিং করে।”
“তুমি এখানে শপিং করতে এসেছ” আমি একটু রেগে গিয়ে জিজ্ঞেস করি।
“আচ্ছা শপিং নয়, ঠিক আছে। কিন্তু কি আছে এখানে দেখার, বাইরে কিছু নেই, আর তুমি তো বলেছিলে যে এখানে নাকি একটা নদী আছে, কোথায় সেটা?”
“বাইরে অন্ধকার তাই তুমি দেখতে পাওনি।”
“ও, বাইরে অন্ধকার। এখানে আসার রাস্তা দেখেছ? রাস্তা, না রাস্তা নেই বললে চলে, শুধু পাথর ছাড়া কিছু ছিল? কি সাংঘাতিক রাস্তা।”
কথা শুনে আমি আর মাথা ঠিক রাখতে পারিনা। কপোত কপোতীর মাঝে তাদের প্রথম প্রেমালাপ থুড়ি দন্দযুদ্ধ আরম্ভ হল। চেঁচিয়ে উঠি আমি “আমি কি করে জানবো যে রাস্তা এত খারাপ হবে।”
“না তুমি সব জানতে আগে থেকে।”
“মাথা খারাপ করা কথা বোলোনা পরী।”
“কল্যাণী আর রানীর সাথেই ঘুরতে যাওয়া উচিৎ ছিল আমার। তোমার সাথে আসাই উচিৎ ছিলনা।”
“হ্যাঁ যেতে ওদের সাথে। আমার সাথে এসেছ কেন?”
চোখের কোল চিকচিক করে ওর “তুমি ভালো ভাবে জানো আমি কেন এসেছি তোমার সাথে, আর তুমি কিনা…”
“আমি কি, পরী… ?”
“বাইরে দেখ, কেমন একটা জায়গায় এনেছ যেখানে কোন লোকজন নেই। পুরো হোটেলে আমাদের ছাড়া একটা লোক নেই। আমাদের যদি কিছু হয় তখন কি হবে? কেউ জানেনা আমরা এখানে এসেছি…”
আমি চেঁচিয়ে উঠি “হাঁ ভগবান, কিছু হবে না আমাদের।”
কান্না জড়ানো গলায় বলে “আমি শুধু চেয়েছিলাম আমাদের প্রথম বেড়ান যেন আমার চিরদিন মনে থাকে, আর…” কেঁদে ফেলে পরী, আঙ্গুল দিয়ে চোখের কোল মোছে। আমি রেগে ছিলাম তাই ওর চোখের জলের কোন মুল্য না দিয়ে চেঁচিয়ে বলি “কুমিরের কান্না কাদবে না আমার সামনে।”
আমার দিকে তর্জনী উচিয়ে চিৎকার করে বলে “একদম আমার সাথে ওইরকম ভাবে কথা বলবে না তুমি। কাল সকালে আমাকে সিমলা দিয়ে আসবে। আমি জানি কল্যানিরা কোন হোটেলে উঠেছে।”
“ঠিক আছে কাল সকালে দিয়ে আসবো তোমাকে।”
আর কথা না বাড়িয়ে, ডান পাশ ফিরে জানালার দিকে মুখ করে শুয়ে পরে পরী। গলা পর্যন্ত টেনে নেয় লেপ। আমি দেখলাম যে থেকে থেকে পিঠের ওপরে মৃদু কম্পন নাড়িয়ে দিচ্ছে পরীকে। আমি বেশ বুঝতে পারলাম যে কাঁদতে শুরু করেছে। আমি নিজের কর্মের জন্য কপাল চাপড়াই।
আমি যথাসম্ভব গলা নিচু করে ওকে শান্ত করার জন্য বললাম “কেঁদো না, আমি একটু বাইরে যাচ্ছি।”
কান্না ভেজা গলায় বলে “আমি জানি কেন যাচ্ছ, হ্যাঁ যাও, মর তুমি। তোমার সিগারেটের প্যাকেট গুলো আমি দেখেছি ব্যাগের ভেতরে। খাও আর মর।”
“আরে বাবা তুমি একটু চুপ করবে”
“আমার চোখের সামনে থেকে চলে যাও। আমি খুব ক্লান্ত আমাকে একটু শান্তিতে ঘুমোতে দাও।”
আমার মাথায় রক্ত উঠে গেছিল তখন, রাগের চোটে আমি সিগারেট আর লাইটার নিয়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে গেলাম। সিগারেট জ্বালিয়ে বুক ভরে ধোঁয়া নিয়ে ভাবলাম, এখুনি রুমের মধ্যে হল টাকি? আমি কি জানতাম আগে থেকে যে চিতকুল জায়গাটা এতটাই জনমানবশূন্য হতে পারে, আমিও এই জায়গায় প্রথম বার এসেছি, পরীও এই জায়গায় প্রথম বার এসেছে। আমার মাথা ঠাণ্ডা রাখা উচিৎ ছিল, পরীর ওপরে ঐরকম চিৎকার চেঁচামেচি করা উচিৎ ছিলনা আমার। অভিমন্যু তুমি হৃদয়হীন প্রাণী, তুমি তোমার শুচিস্মিতার ওপরে ঐ রকম ভাবে চিৎকার কেন করেছ। আমাদের এই ভ্রমন যাত্রা, বিষাদে পরিপূর্ণ। সবা প্রেমিক যুগল চায় তাদের প্রথম নিশাযাপন স্মরণীয় হোক, অভিমন্যু এই দুঃখ তোমাকে চির জীবন বহন করতে হবে। তুমি এই তপ্ত অবস্থার জন্য দায়ি, চাইলে তুমি হয়ত পারতে এই অবস্থার সামাল দিতে, কিন্তু সেটা না করে তুমি বাক বিতন্ডে লেগে গেলে। এই সব সহস্র কটু চিন্তায় মন ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে আমার। বাইরে প্রবল ঝড়ের আওউয়াজ শুনতে পাই, হয়তো বরফের ঝড় চলছে বাইরে। ঘরের ভেতরে ঝড়, ঘরের বাইরে ঝড়।
রুমে ঢুকে দেখলাম যে পরী ঘুমিয়ে পড়েছে। আমি ট্রাক সুটের জ্যাকেটটা খুলে, ওর পাশে লেপের মধ্যে ঢুকে পড়লাম। মাথা নিচু করে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম কিছুক্ষণ। ঘুমন্ত অবস্থায় পরীকে খুব সুন্দরী দেখায়, মুখের ওপরে চুলের কয়েক গুচ্ছে নেমে এসে যেন চাঁদ কে ঢেকে দিয়েছে মেঘ। আমি আঙ্গুল দিয়ে চুলের গুচ্ছটি সরিয়ে সুন্দর মুখখানি ভালো ভাবে দেখার চেষ্টা করি। চোখের কোণ থেকে একটি সরু শুকনো জলের রেখা, নাকের ডগা পর্যন্ত বয়ে গেছে। দেখে খুব কষ্ট হয় মনে। বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে ঐ জলে রেখা মুছে দিলাম আমি। ওর সুন্দর মুখ খানির ওপরে আমার উষ্ণ নিঃশ্বাস ঢেউ খেলে বেড়ায়, আমার নিঃশ্বাসের পরশ পেয়ে নড়ে ওঠে পরী। আলতো করে আমি ওর বাঁকা ভুরু ওপরে তর্জনী বুলাই। ঝুঁকে পড়ে আমি ওর গোলাপি গালে ঠোঁট দিয়ে আলতো করে চুমু খাই। গালে আমার ঠোঁটের পরশ পেয়ে কেঁপে ওঠে আবা
The end........     ....🧐

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(পর্ব ০৯)

RM ,,পূর্ববর্তী পার্ট গুলি পেতে অমার টাইমলাইন  ভিজিট করুন,, কতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলাম সেটা মনে নেই। চোখ খোলে যখন মাথার পেছনে সজোরে এক থাপ্পর খাই। ঘুম ঘুম চোখে চারদিকে তাকিয়ে দেখি যে কে আমাকে চড়টা মারল। আমি দেখলাম যে আমি উঠানের মাটিতে পড়ে আছি, পায়ের কাছে মাটিতে সুব্রত পড়ে আছে। আমি ওপর দিকে তাকিয়ে দেখতে চেষ্টা করি যে কে আমাকে চড়টা মারল, আমি অবাক হয়ে দেখি যে ইন্দ্রানি মাসি আমাদের দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে। আমার দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে বলে ওঠেন “শুয়োর গুলো এখানে শুয়ে? আর আমারা তোদের দু’জনকে সারা বাড়িতে হন্যে হয়ে খুঁজছি। তোদের কি কোন বোধ বুদ্ধি নেই?” আমি সুব্রতর কাঁধ ঝাঁকিয়ে উঠিয়ে দিলাম, সুব্রত আর আমি দুজনেই উঠে পড়লাম মাটি থেকে। আমি কাতর চোখে ইন্দ্রানি মাসির দিকে চেয়ে বললাম “সরি মাসি। ভুল হয়ে গেছে, কাল রাতে একটু বেশি হয়ে গেছিল।” চেয়ারের ওপরে মদের বোতল আর গ্লাসের দিকে ইন্দ্রানি মাসির চোখ পড়ে যায়, তাড়াতাড়ি করে চেয়ারের ওপরে নিজের শাল ফেলে দিয়ে ঢেকে দেয় গ্লাস আর বোতল। ঠিক সেই সময়ে পেছন থেকে অনেক গুলো পায়ের আওয়াজ পাই। মাসি সবাই কে বলে “এই ছেলে দুটো সারা রাত...

"এক অপরিচিতা"(পর্ব: ছয়)

লেখক:আসিফ ইকবাল! "আগের পর্ব গুলো আমার টাইমলাইনে বিদ্যমান" পঞ্চম পর্বের পর থেকে..... ___আরে বাহ, আপনি নিজের বউ কেই চিনতে পারছেন না!       এবার তো বলবেন গতকাল আপনি আমাকে বিয়েই করেন              নি। হম,সেটাও বলে ফেলেন না! দেরি কেনো? ওর এতগুলি কথার পর বুঝতে পারলাম,এটাই আমার অপরিচিতা,কিন্তু ও আজকে নিকাব পড়েনি। হিজাব পড়েছে। তাই চিনতে পারিনি। মুখ দিয়ে কিছু বের হচ্ছেনা। শুধু ওর দিকে তাকিয়ে আছি। আমার বউটা অনেক কিউট। সকাল বেলা যে আমার জন্য এরকম একটা সারপ্রাইজ আছে সেটা ভাবিনি!      ____কি!আপনি কি এভাবেই তাইকে থাকবেন? নাকি উঠেবেন। জলদি উঠে ফ্রেশ হোন।(তাফা) ____তুমি আজকে নিকাব পরোনি যে! ____আপনি তো আমার বর!আপনার সামনে নিকাব পড়তে হবে কেনো?(তাফা) বলে.....একটা হাসি দিয়ে চলে গেলো। এই প্রথম ওর হাসি দেখলাম। আর সেটা আমাকে রীতিমতো পাগল করে দিয়েছে। আর দেরি করলাম না। জলদি বিছানা ছেড়ে ফ্রেশ হতে চললাম। তাফা,,, তাফা! কই তুমি?........ "এইতো কিচেনে,কি হোয়েছে..... তাফা কিচ...