সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

"এক অপরিচিতা"(পর্ব: ছয়)

লেখক:আসিফ ইকবাল!
"আগের পর্ব গুলো আমার টাইমলাইনে বিদ্যমান"
পঞ্চম পর্বের পর থেকে.....
___আরে বাহ, আপনি নিজের বউ কেই চিনতে পারছেন না!
      এবার তো বলবেন গতকাল আপনি আমাকে বিয়েই করেন              নি। হম,সেটাও বলে ফেলেন না! দেরি কেনো?
ওর এতগুলি কথার পর বুঝতে পারলাম,এটাই আমার অপরিচিতা,কিন্তু ও আজকে নিকাব পড়েনি। হিজাব পড়েছে। তাই চিনতে পারিনি। মুখ দিয়ে কিছু বের হচ্ছেনা। শুধু ওর দিকে তাকিয়ে আছি। আমার বউটা অনেক কিউট। সকাল বেলা যে আমার জন্য এরকম একটা সারপ্রাইজ আছে সেটা ভাবিনি!
    
____কি!আপনি কি এভাবেই তাইকে থাকবেন? নাকি উঠেবেন। জলদি উঠে ফ্রেশ হোন।(তাফা)
____তুমি আজকে নিকাব পরোনি যে!
____আপনি তো আমার বর!আপনার সামনে নিকাব পড়তে হবে কেনো?(তাফা)
বলে.....একটা হাসি দিয়ে চলে গেলো। এই প্রথম ওর হাসি দেখলাম। আর সেটা আমাকে রীতিমতো পাগল করে দিয়েছে।
আর দেরি করলাম না। জলদি বিছানা ছেড়ে ফ্রেশ হতে চললাম।
তাফা,,, তাফা! কই তুমি?........
"এইতো কিচেনে,কি হোয়েছে.....
তাফা কিচেনে,আর তাই আমিও!
ও,রান্না করছে।আর আমি পাশে বসে ওকে দেখছি....
মাঝে মাঝে ও আমার দিকে তাকিয়ে হাসি দিচ্ছে। আমার যে সেটা কি ভালো লাগছে বলে বোঝাতে পারবোনা।
___আচ্ছা,আপনি এরকম ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন কেনো? আমার অস্বস্তি লাগছে,দয়াকরে এখন থেকে যান।(তাফা)
___কি করবো বলো! তুমি যদি এত হাসি দাও।তোমার থেকে চোখ ফিরাতে ই পারবোনা।
___আচ্ছা এখন এখন থেকে   যান।(তাফা)
___আচ্ছা তুমি কি আগেও আময় লুকিয়ে এভাবে হাসতে?
___জানিনা। জানতো এখন থেকে।(তাফা)
আর কিঃ করবো! বেরিয়ে আসলাম কিচেন থেকে।
এখনও চোখ থেকে ঘুম সরেনি। আগে কখনো এত সকালে উঠিনি। ১১ টায় আমার অফিস টাইম,১০ টার আগে কখনো ইউঠতে পারিনি। আর এখন প্রতিদিন ৬ টাই উঠতে হয়।
তাই আজ  একটু  বাহিরে বের হলাম।সকালের পৃথিবীটা দেখবো। সকালের স্নিগ্ধ বাতাস, আর তার হালকা বয়ে চলা!সত্যিই অসাধারণ।
আজকে একটু অন্য রকম মনে হচ্ছে,আগে তাফা তেমন আমার সামনে আসতো না। এখন সেটা না। মানে আজকে!
আমি খচ্ছি আর ও আমার সামনে বসে আছে। অন্যদিন আমার খাবার বেড়ে দিয়ে চলে যেত! এখন আমি ওর বর।তাই হইত এমন। যাইহোক......
"তাফা,তুমি খাচ্ছো না কেনো"
"আপনার হয়ে গেলে আমি খেয়ে নিব।"
"আমার সাথে খাওয়া যায় না?"
"নাহ,ক্ষুধা নেই, চুপ করে খান! খাওয়ার সময় বেশি কথা বলতে নেই।"
"হম......"
খাওয়া শেষে অফিসের জন্য বের হচ্ছি।  আমিনা! বরং ওই আমাকে রেডি করে দিচ্ছে....
আমি যে কেনো এত্ত দেরিতে ওর প্রেমে পড়েছি!!আমার রীতিমতো নিজেকে গালি দিতে ইচ্ছে করছে...
___তাফা!
___হম,বলেন?(তাফা)
___তুমি গত রাতে কাদছিলে,আমি তোমাকে বিয়ে করেছি বলে।আর আজকে তুমি এতটা বদলে গেলে কি করে?
___জানিনা,আপনি আর প্লিজ ওসব বিষয়ে কথা বলবেন না। আপনি আমাকে বিয়ে করেছেন। সো,আপনি আপনার বর।
সেটা আমি মানি আর না মানি কোনো যায় আসে না। আল্লাহ অবশ্যই আপনাকে আমার জন্য আর আমাকে আপনার জন্য গড়েছেন। তাই তো আজ আমরা একসাথে.....(তাফা)
___ওকে,আর বলবনা আমার বউটা....
___হম,তাতেই ভালো নইলে আবার কাদবো.. 
তাফা আমার ঠিক সামনে!
আমার টাই বেঁধে দিচ্ছে,কোনো মে কখনো আমার এত কাছে আসেনি।রীতিমতো অসস্তি লাগছে। ওকে বার বার বললাম যে আমি নিজেই পারবো কিন্তু শুনলো না। বলে......
"তাতে কি এখন থেকে আমি এ কাজের দায়িত্ব নিলাম,বুঝলেন""আর আমাকে আপনার দায়িত্ব থেকে সরাতে আসলে ভালোহবে না।"
আমিও আর না করিনি। আর করবই বা কেনো? আমি কি এমনটা চাইনা? অবশ্যই চাই!
তাফার কপালে একটা চুমু দিলাম। ওহ হইত বুঝতে পারেনি আমি এমনটা করবো...
___এটা কি হলো?আপনাকে কে এটার অনুমতি দিয়েছে?(একটু রেগে)
___জানিনা! আমি যাচ্ছি। খেয়ে নিও। টাটা....
___হম যান,ভাগেন!
°°°°°°°°°°°°°°°°°°°
___তাফা!!!
___কি হলো, আবার আসলেন যে.....(তাফা)
___কিছুনা,তোমায় দেখতে আসলাম। ভালোভাবে থেকো,আর অচেনা কেউ আসলে দরজা খুলবে না।
___ঠিক আছে,এবার আপনি যান......
অতঃপর আমায় বের করে দিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো।
গতকালকের বিয়ে করলাম। কার না ইচ্ছে করে বউ এর সাথে সময় কাটাতে,,,কিন্তু আমি  এতই অভাগা, যে নতুন বউ রেখে কাজে যেতে হচ্ছে...
কাজে মন বসছে না। কলিগ রা ইতিমধ্যেই আমি অসুস্থ বলে ধরে নিয়েছে। আজকে তাফা কে একটু বেশি মিস করছি। সেই কখন থেকে ডেস্কে বসে তাফার কথাই ভেবে চলেছি।  আর কিছুক্ষণ আগেই একটা ভুল করে ফেলেছি......
যেটা শোধরাতে একটু বেশি খাটতে হলো।
আজকে আর কাজ করতে পারবোনা  সেটা ঠিক ভাবে বুঝতে  পারছি।
বাসায় যেতে হবে। আর কিছুদিন tafaর সাথে সময় কাটাতে চাই।
তাই বসকে বলে কিছু দিনের ছুটি নিয়ে নিলাম। ওনি খুব ভালো মানুষ। বলেছি গ্রামের বাড়ি যাবো।আর আগে তেমন ছুটি না নেবার ফলে তিনি সহজেই মানলেন, দীর্ঘ কয়েকদীনের ছুটি! আর বাবা  বার বার ফোন করে বলছে গ্রামে যেতে।
তাই ভাবছি একবার ঘুরে আসবো।
এখন বাসায় যাচ্ছি...
মাথায় শুধু ঘুরপাক খাচ্ছে কখন তাফা কে দেখতে পাবো। আর কখন ওর ঐ মায়াবী হাসিটা কখন দেখতে পাবো...........
to be continue........

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(পর্ব ০৯)

RM ,,পূর্ববর্তী পার্ট গুলি পেতে অমার টাইমলাইন  ভিজিট করুন,, কতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলাম সেটা মনে নেই। চোখ খোলে যখন মাথার পেছনে সজোরে এক থাপ্পর খাই। ঘুম ঘুম চোখে চারদিকে তাকিয়ে দেখি যে কে আমাকে চড়টা মারল। আমি দেখলাম যে আমি উঠানের মাটিতে পড়ে আছি, পায়ের কাছে মাটিতে সুব্রত পড়ে আছে। আমি ওপর দিকে তাকিয়ে দেখতে চেষ্টা করি যে কে আমাকে চড়টা মারল, আমি অবাক হয়ে দেখি যে ইন্দ্রানি মাসি আমাদের দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে। আমার দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে বলে ওঠেন “শুয়োর গুলো এখানে শুয়ে? আর আমারা তোদের দু’জনকে সারা বাড়িতে হন্যে হয়ে খুঁজছি। তোদের কি কোন বোধ বুদ্ধি নেই?” আমি সুব্রতর কাঁধ ঝাঁকিয়ে উঠিয়ে দিলাম, সুব্রত আর আমি দুজনেই উঠে পড়লাম মাটি থেকে। আমি কাতর চোখে ইন্দ্রানি মাসির দিকে চেয়ে বললাম “সরি মাসি। ভুল হয়ে গেছে, কাল রাতে একটু বেশি হয়ে গেছিল।” চেয়ারের ওপরে মদের বোতল আর গ্লাসের দিকে ইন্দ্রানি মাসির চোখ পড়ে যায়, তাড়াতাড়ি করে চেয়ারের ওপরে নিজের শাল ফেলে দিয়ে ঢেকে দেয় গ্লাস আর বোতল। ঠিক সেই সময়ে পেছন থেকে অনেক গুলো পায়ের আওয়াজ পাই। মাসি সবাই কে বলে “এই ছেলে দুটো সারা রাত...

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(শেষ পর্ব)

RM কিছুদূর যেতেই  একটি জায়গায় গাড়ি দাঁড় করায় বল্বিন্দার, বলল যে গাড়িতে তেল ভরতে হবে। গাড়ি থামার সঙ্গে সঙ্গে পরীর ঘুম ভেঙে যায়, আমার দিকে তাকিয়ে বলে “কতক্ষণ ঘুমিয়েছি আমি?” আমি বললাম “বেশীক্ষণ ঘুময়নি তুমি” “আমরা থামলাম কেন?” “তেল ভরার জন্য।” “আর কত দেরি পৌঁছতে?” আমি পেট্রল পাম্পের লোকটাকে জিজ্ঞেস করলাম যে জিওরি থেকে চিতকুল কতক্ষণ লাগবে পৌঁছতে। লোকটা আমায় জানাল যে আরও ঘন্টা চারেকের রস্তা বাকি। লোকটা আরও জানাল যে কারছাম ব্রিজের পরে রাস্তা খুব খারাপ। বল্বিন্দার আমাকে বলল যে ও রাস্তা জানে, কোন চিন্তা করতে বারণ করল আমাকে। পরী হিন্দি বিশেষ ভালো করে বোঝেনা তাই আমাকে জিজ্ঞেস করে যে বল্বিন্দার কি বলল। আমি রাস্তার কথাটা চেপে গেলাম, জানালাম যে কোন কিছুর জন্য চিন্তা না করতে। ঘড়ির দিকে তাকালাম, আড়াইটে বাজে তখন, তারমানে চিতকুল পৌঁছতে সন্ধ্যে হয়ে যাবে। একে শীতকাল তায় আবার পাহাড়, এখানে রাত সমতলের চেয়ে একটু তাড়াতাড়ি নামে। জিওরি ছাড়ার কিছু পরেই পরী বলল যে ও আর ঘুমোতে চায় না, বাইরের দৃশ্য দেখবে। আমি বললাম ঠিক আছে। কিছু পরেই সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ে। যখন আ...