সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

"বাজির প্রেম"(পর্ব_সাত)


উনি প্রিয়তিকে ভিতরে নিয়ে গেলেন! আর সাগর  দোকানে  বসে আছে।কিছুক্ষন পর মহিলা সাগরকে ডাকলেন! সাগর ভিতরে গেলে মহিলা ওকে একটা তোয়ালে দিয়ে বলল____

-" বাবা, এই সময় কখন বৃষ্টি আসে বোঝা যায় না।
আর কখন থামবে,সেটাও নাজানা! তোমরা বৃষ্টি না থামা পর্যন্ত এখানে থেকে যাও। আমি তোমাদের জন্য রান্না করছি।
|
ষষ্ঠ পর্বের পর থেকে_____
|
-" আ......এত কিছু যখন করছেন, তবে আরেক টা উপকার করুন! আমার রাতে একটু ঘুম হয়নি।  একটু ঘুমানোর জাইগা হলে ভাল হতো।

-" হা হা.... হ্যা, হ্যা, যাও যাও ওই ঘরে যাও গিয়ে ঘুমাও।(দাদী)

-" ধন্যবাদ।
আকাশ মেঘলা থাকার কারণে ঘরে অনেক অন্ধকার।সাগর কোনোভাবে খাটের অবস্থান টা বুঝতে পেরেই ধুপ করে শুয়ে পরলো!

তৎক্ষণাৎ এক বিকট চিৎকার।
কয়েক সেকেন্ড পর সাগর বুঝতে পরলো ওখানে আগে থেকেই কেও শুয়ে ছিল। আর সেটা প্রিয়তি। হুম প্রিয়তি। ও ছাড়া কে এমন চিৎকার দিবে। খপ করে ওর মুখ হাত দিয়ে চেপে ধরলো!
প্রিয়তি ভ্রু কুচকে সাগরের দিকে তাকিয়ে আছে।কিছুক্ষণ পর সাগর হাত সরিয়ে নিল।

-" কি হল বউ চিৎকার দাও কেন।😧(দাদী)

-" কিছু না দাদীমা। বজ্রপাতের কারণে ভয় পেয়ে গেছিলাম।
সবিনয়ে উত্তর দিল প্রিয়তি।

-" অহহ, আমি ভাবছি কি না কি হল বাপু!

-" সরি, আমি দেখি নি তুমি আছো! আমি তো শুধু ঘুমাতে আসছিলাম।😳 উনিই আমাকে এই রুমে পাঠিয়ে দিলেন।

- অহ, it's ok. আমি ভয় পাইছি তাই চিৎকার দিয়েছিলাম।😥

-" তো তুমি বাইরে যাও, আমি শোবো। আমার খুব ঘুম পাচ্ছে।

-" কেন!? আমি কেন বাইরে যাব,তুমি যাও!আমি আগে আসছি এখানে।

-" আমি কোথাও যেতে পারবোনা। তুমিই তো তখন বললে আমরা স্বামী স্ত্রী!তো আমি এখানেই শোবো।তোমার ভালোলাগলে থাকো,নইলে ভাগো!

সাগর আর কিছুনা বলে অন্য দিকে মুখ করে শুয়ে পরলো!

প্রিয়তি সাগরের কানের কাছে চিল্লিয়ে বললো__
-" ঠিক আছে তুমি বের হবে না, তো আমিও কোথাও যাচ্ছিনা। আমিও এইখানেই শুচ্ছি।

-" (সাগর একরকম লাফিয়ে উঠলো) আরে না, আমি কোনো মেয়ের সাথে কেন শুবো?পাগল নাকি?

-" তাতে কি পাশে শুইতে পারো তো?🙃

-" ভয় নেই তোমরা,হুম?

-" ভয় কিসের?😕

-" হাহাহাহাহা..... মেম! এই আবহওয়ার উপর কখনো ভরসা করতে নেই! পরে দেখা যাবে, আপনি খুজতেছেন আপনার বাবুর বাবাকে!!!

সাগর হাসতে চলে গেল পাশের রুমে গিয়ে শুয়ে পরল।

-" ( এইটা কি বলল ছিঃ😧) প্রিয়তিও শুয়ে পরলো।

সাগর চোখ বন্ধ করতে পারছে না। চোখ বন্ধ করলেই প্রিয়তির কথা মনে পড়ছে।মায়াবি চেহারা হাসি মাখা মুখটা চোখের সামনে ভেসে উঠছে বার বার।
সাগর উঠে, ঘর থেকে  হন হন করে বাইরে চলে গেল। বাহিরের টং এ গিয়ে বসে পরলো সাগর। অবিরাম বৃষ্টি ধারা তাকে ভিজিয়ে চলেছে। জানালা দিয়ে প্রিয়তি সবটাই লক্ষ করছে। কিছুক্ষণ পরে সাগর টং থেকে উঠে প্রিয়তির রুমের দিকেই আসছে। প্রিয়তি খাট থেকে উঠে দাড়িয়ে পরলো!

সাগর প্রিয়তির রুমে ঢুকে প্রিয়তির একদম কাছে চলে যায়। শরীর থেকে টপ টপ করে বৃষ্টি পানি গড়িয়ে পরছে। সাগরের এত কাছে আসা দেখে প্রিয়তি রীতিমতো ভয় পেযে যায়।
ভীতু কণ্ঠে বলে___

-"কি হলো,তুমি আমার এত কাছে আসছো কেনো?

প্রিয়তির এমন কথা শুনে সাগর মাথাটা আরো একটু প্রিয়তির দিকে এগিয়ে দিল! ভ্রু কুচকে বললো___

-" প্রিয়তি আমাকে কি খুব খারাপ মনে হয়?

-" (মাথা নিচা করে আছে)

-" আমার চুল গুলো মুছে দিবে?? তোমার আঁচল দিয়ে?☺ তোয়ালে টা ইতিমধ্যেই ভিজিয়ে ফেলছি!

সাগরের কথা শুনে প্রিয়তি মনে একটু সাহস পেল___

-" হুম বসো দিচ্ছি,আগে বলবে তো!!

প্রিয়তি সাগরের চুল গুলো ঠিক ভাবে মুছে দিয়ে বাহিরে চলে গেলো। ফিরে এসে দেখে সাগর ঘুমিয়ে গেছে!একদম বাচ্চাদের মতো গুটিয়ে শুয়ে আছে।প্রিয়তি যেনো লোভটা সামলাতে পারলো না।  অপলক দৃষ্টিতে সাগরের দিকে তাকিয়ে আছে, অবশেষে ওর কপালে একটা চুমু একে  বলল - পাগল ছেলে একটা!
তারপর আবার বাহিরে চলে গেল।

সাগর একটু বুঝতে পারলেও ঘুমের মধ্যে সেটা মিলিয়ে গেলো!

দুপুরে খাবার পর বসে গল্প করছে দুই জনেই।
সাগর হঠাৎ প্রিয়তির পায়ের দিকে তাকালো___ প্রিয়তির পা ফুলে গেছে, এইতো সেইদিনের ব্যাথাই ঠিক হয়নি।এখন আবার!

-" ওই তোমার পা দেখি। ফোলা ফোলা মনে হচ্ছে।

-" কই দেখো? কই ফুলেছে?
সাগরের দিকে পাটা এগিয়ে,বেশ খুশি মনেই বললো প্রিয়তি।

সাগর  প্রিয়তির দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে ওর পায়ের ক্ষত টা দেখছে। প্রিয়তি অন্য দিকে মুখ করে আছে।মনে হয় যেন কিছুই হইনি!এখনও ব্যাথা আছে কিনা চেক করতে সাগর ক্ষতর পাশে জোরে চাপ দিতেই_
প্রিয়তি সাগর  বলে চিৎকার দিয়ে,ওর  গালে একটা চড় বসিয়ে দিল.....!

সাগর ধুপ করে প্রিয়তির চুল ধরে বলল___
-" ওই এত জোড়ে ডাকো কেন। আর আমাকে থাপ্পর দিলে কেন!😤

-" আআহ.. আমার  লাগছে ছাড়ো।

আর কিছু না বলে সাগর চুল ছেড়ে দিল। প্রিয়তি একটু বিনয়ী ভাবে বললো,

-" কেন!?কেনো হুম? তুমি বুঝি কখনো ডাকোনি কাউকে।😜

-" ( প্রিয়তির চোখের দিকে তাকিয়ে) না ডাকি নি! ডাকার মত কেউ ছিলোই না,তাই।😄

-" এখনো ডাকার মত কাওকে পাওনি।😣

-" পেঁয়েছি তো, কিন্তু আমি ডাকলে সে সারা দিবে কি না জানি না তাই ডাকি নি কখনো।

-" ( সাগরের দিকে একটু সরে গিয়ে) মন থেকে ডেকে দেখ, সে ঠিক সারা দিবে।😊

-" হুম হুম সময় হলেই ডাকবো। আর তখন সে সাড়া দিলেই ভাল।☺
তারা দুইজন চোখে চোখ রেখে কথা বলছিল হঠাৎ দড়জাই কেউ নক করে।  তারা ঠিক হয়ে বসে__

-" বাবা বৃষ্টি থেমে গেছে। তোমরা কি যাবা এখন?(দাদু)

-" জি দাদু,যেতে হবে আমাদের।☺

-" আচ্ছা।

-" প্রয়তি যাও চেঞ্জ করে নাও।😘(সাগর)

-" হুম যাচ্ছি।☺

-" দাদু এইখান থেকে পেট্রোল পাম্প কত দূরে হবে?
বৃদ্ধা কে উদ্দেশ্য করে বললো সাগর।

-" বেশি দুরে না ৩০ মিনিট লাগবে হেটে যেতে।(দাদু)

-" প্রিয়তি আমি বরং বাইকে তেল ভরাই আনি। তুমি রেডি হয়ে অপেক্ষা করো!

-" না আমাকে একা ছেড়ে যাবে না প্লিজ,😟😟

-" বাব্বাহ, বউ দেখি। তোমায় ছাড়া থাকতেই চায় না বাবা!
বৃদ্ধার ওয়াইফ ঘরে ঢুকতে ঢুকতে কথাটা বললেন।

-" আরে,আমি যাবো আর আসবো। একটু অপেক্ষা করো সোনা। আমি যাচ্ছি আর আসছি। এমনিতেই তোমার পায়ে ব্যাথা । তুমি যেতে পারবে না।

-" (প্রিয়তি সাগরের হতে চিমটি কাটে!!! সাগর আউ বলে চিল্লিয়ে উঠলো!)😲😲

-" কি হল বাবা?(দাদু)

-" মশা দাদু,মশা!আমাকে আবার একটু বেশি মশা কামড়ায়, আসলে আমার শরীরে নাকি রক্তের মান অন্যদের থেকে ভালো! তাইই😣

-" হইছে,জানি আমি।আর বলতে হবে না। এখন যাও। আমি অপেক্ষা করে নেবো। দেরি হলে তোমার খবর আছে, বুঝলে?😤

-" হুম যাচ্ছি।

অতঃপর সাগর চলে গেল তেল নিতে।
কিছুদূর যেতেই প্যাম্প চোখে পরলো।বাইকের ট্যাংক ফুল করে বেশ ফুর্তি নিয়ে হোটেলে চলে গেল। সজল দাঁড়িয়ে দারিয়ে সিগারেট টানছে।সাগরকে দেখেই,

-" (সাগরকে দেখে অবাক) ভাই তুই কই গেছিলি আমি কত টেশানে ছিলাম জানিস।😨

-" কিসের এত টেনশান আমি ছোট বাচ্ছা নাকি?যে আমাকে নিয়ে টেনশন করবি!😕

-" হুম হুম। সে প্রিয়তি কই?! তোরা দুজন তো একসাথে গায়েব!!☹️

সজলের কথায় প্রিয়তির কথা মনে পড়লো সাগরের! সে তো প্রিয়তিকে আনতেই ভুলে গেছে!

-" অহহ শিট।😰 কি করে এটা করতে পারি আমি!!

-" কি হয়ছে ভাই।😟(সজল)

-" তুই থাক আমি আসছি!

বলেই সাগর বাইক নিয়ে ছুটলো, সেই দোকানের কাছে!অনেক জোরে বাইক চালিয়েও গিয়ে পৌঁছুতে রাত হয়ে গেছে! এক দৌড়ে মেইন গেট দিয়ে বাড়ির ভিতরে ঢুকে গেলো। দোকান ইতিমধ্যেই বন্ধ করে ফেলেছে!
গিয়ে দেখে_______

চলবে..........

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(পর্ব ০৯)

RM ,,পূর্ববর্তী পার্ট গুলি পেতে অমার টাইমলাইন  ভিজিট করুন,, কতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলাম সেটা মনে নেই। চোখ খোলে যখন মাথার পেছনে সজোরে এক থাপ্পর খাই। ঘুম ঘুম চোখে চারদিকে তাকিয়ে দেখি যে কে আমাকে চড়টা মারল। আমি দেখলাম যে আমি উঠানের মাটিতে পড়ে আছি, পায়ের কাছে মাটিতে সুব্রত পড়ে আছে। আমি ওপর দিকে তাকিয়ে দেখতে চেষ্টা করি যে কে আমাকে চড়টা মারল, আমি অবাক হয়ে দেখি যে ইন্দ্রানি মাসি আমাদের দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে। আমার দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে বলে ওঠেন “শুয়োর গুলো এখানে শুয়ে? আর আমারা তোদের দু’জনকে সারা বাড়িতে হন্যে হয়ে খুঁজছি। তোদের কি কোন বোধ বুদ্ধি নেই?” আমি সুব্রতর কাঁধ ঝাঁকিয়ে উঠিয়ে দিলাম, সুব্রত আর আমি দুজনেই উঠে পড়লাম মাটি থেকে। আমি কাতর চোখে ইন্দ্রানি মাসির দিকে চেয়ে বললাম “সরি মাসি। ভুল হয়ে গেছে, কাল রাতে একটু বেশি হয়ে গেছিল।” চেয়ারের ওপরে মদের বোতল আর গ্লাসের দিকে ইন্দ্রানি মাসির চোখ পড়ে যায়, তাড়াতাড়ি করে চেয়ারের ওপরে নিজের শাল ফেলে দিয়ে ঢেকে দেয় গ্লাস আর বোতল। ঠিক সেই সময়ে পেছন থেকে অনেক গুলো পায়ের আওয়াজ পাই। মাসি সবাই কে বলে “এই ছেলে দুটো সারা রাত...

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(শেষ পর্ব)

RM কিছুদূর যেতেই  একটি জায়গায় গাড়ি দাঁড় করায় বল্বিন্দার, বলল যে গাড়িতে তেল ভরতে হবে। গাড়ি থামার সঙ্গে সঙ্গে পরীর ঘুম ভেঙে যায়, আমার দিকে তাকিয়ে বলে “কতক্ষণ ঘুমিয়েছি আমি?” আমি বললাম “বেশীক্ষণ ঘুময়নি তুমি” “আমরা থামলাম কেন?” “তেল ভরার জন্য।” “আর কত দেরি পৌঁছতে?” আমি পেট্রল পাম্পের লোকটাকে জিজ্ঞেস করলাম যে জিওরি থেকে চিতকুল কতক্ষণ লাগবে পৌঁছতে। লোকটা আমায় জানাল যে আরও ঘন্টা চারেকের রস্তা বাকি। লোকটা আরও জানাল যে কারছাম ব্রিজের পরে রাস্তা খুব খারাপ। বল্বিন্দার আমাকে বলল যে ও রাস্তা জানে, কোন চিন্তা করতে বারণ করল আমাকে। পরী হিন্দি বিশেষ ভালো করে বোঝেনা তাই আমাকে জিজ্ঞেস করে যে বল্বিন্দার কি বলল। আমি রাস্তার কথাটা চেপে গেলাম, জানালাম যে কোন কিছুর জন্য চিন্তা না করতে। ঘড়ির দিকে তাকালাম, আড়াইটে বাজে তখন, তারমানে চিতকুল পৌঁছতে সন্ধ্যে হয়ে যাবে। একে শীতকাল তায় আবার পাহাড়, এখানে রাত সমতলের চেয়ে একটু তাড়াতাড়ি নামে। জিওরি ছাড়ার কিছু পরেই পরী বলল যে ও আর ঘুমোতে চায় না, বাইরের দৃশ্য দেখবে। আমি বললাম ঠিক আছে। কিছু পরেই সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ে। যখন আ...

"এক অপরিচিতা"(পর্ব: ছয়)

লেখক:আসিফ ইকবাল! "আগের পর্ব গুলো আমার টাইমলাইনে বিদ্যমান" পঞ্চম পর্বের পর থেকে..... ___আরে বাহ, আপনি নিজের বউ কেই চিনতে পারছেন না!       এবার তো বলবেন গতকাল আপনি আমাকে বিয়েই করেন              নি। হম,সেটাও বলে ফেলেন না! দেরি কেনো? ওর এতগুলি কথার পর বুঝতে পারলাম,এটাই আমার অপরিচিতা,কিন্তু ও আজকে নিকাব পড়েনি। হিজাব পড়েছে। তাই চিনতে পারিনি। মুখ দিয়ে কিছু বের হচ্ছেনা। শুধু ওর দিকে তাকিয়ে আছি। আমার বউটা অনেক কিউট। সকাল বেলা যে আমার জন্য এরকম একটা সারপ্রাইজ আছে সেটা ভাবিনি!      ____কি!আপনি কি এভাবেই তাইকে থাকবেন? নাকি উঠেবেন। জলদি উঠে ফ্রেশ হোন।(তাফা) ____তুমি আজকে নিকাব পরোনি যে! ____আপনি তো আমার বর!আপনার সামনে নিকাব পড়তে হবে কেনো?(তাফা) বলে.....একটা হাসি দিয়ে চলে গেলো। এই প্রথম ওর হাসি দেখলাম। আর সেটা আমাকে রীতিমতো পাগল করে দিয়েছে। আর দেরি করলাম না। জলদি বিছানা ছেড়ে ফ্রেশ হতে চললাম। তাফা,,, তাফা! কই তুমি?........ "এইতো কিচেনে,কি হোয়েছে..... তাফা কিচ...