উনি প্রিয়তিকে ভিতরে নিয়ে গেলেন! আর সাগর দোকানে বসে আছে।কিছুক্ষন পর মহিলা সাগরকে ডাকলেন! সাগর ভিতরে গেলে মহিলা ওকে একটা তোয়ালে দিয়ে বলল____
-" বাবা, এই সময় কখন বৃষ্টি আসে বোঝা যায় না।
আর কখন থামবে,সেটাও নাজানা! তোমরা বৃষ্টি না থামা পর্যন্ত এখানে থেকে যাও। আমি তোমাদের জন্য রান্না করছি।
|
ষষ্ঠ পর্বের পর থেকে_____
|
-" আ......এত কিছু যখন করছেন, তবে আরেক টা উপকার করুন! আমার রাতে একটু ঘুম হয়নি। একটু ঘুমানোর জাইগা হলে ভাল হতো।
-" হা হা.... হ্যা, হ্যা, যাও যাও ওই ঘরে যাও গিয়ে ঘুমাও।(দাদী)
-" ধন্যবাদ।
আকাশ মেঘলা থাকার কারণে ঘরে অনেক অন্ধকার।সাগর কোনোভাবে খাটের অবস্থান টা বুঝতে পেরেই ধুপ করে শুয়ে পরলো!
তৎক্ষণাৎ এক বিকট চিৎকার।
কয়েক সেকেন্ড পর সাগর বুঝতে পরলো ওখানে আগে থেকেই কেও শুয়ে ছিল। আর সেটা প্রিয়তি। হুম প্রিয়তি। ও ছাড়া কে এমন চিৎকার দিবে। খপ করে ওর মুখ হাত দিয়ে চেপে ধরলো!
প্রিয়তি ভ্রু কুচকে সাগরের দিকে তাকিয়ে আছে।কিছুক্ষণ পর সাগর হাত সরিয়ে নিল।
-" কি হল বউ চিৎকার দাও কেন।😧(দাদী)
-" কিছু না দাদীমা। বজ্রপাতের কারণে ভয় পেয়ে গেছিলাম।
সবিনয়ে উত্তর দিল প্রিয়তি।
-" অহহ, আমি ভাবছি কি না কি হল বাপু!
-" সরি, আমি দেখি নি তুমি আছো! আমি তো শুধু ঘুমাতে আসছিলাম।😳 উনিই আমাকে এই রুমে পাঠিয়ে দিলেন।
- অহ, it's ok. আমি ভয় পাইছি তাই চিৎকার দিয়েছিলাম।😥
-" তো তুমি বাইরে যাও, আমি শোবো। আমার খুব ঘুম পাচ্ছে।
-" কেন!? আমি কেন বাইরে যাব,তুমি যাও!আমি আগে আসছি এখানে।
-" আমি কোথাও যেতে পারবোনা। তুমিই তো তখন বললে আমরা স্বামী স্ত্রী!তো আমি এখানেই শোবো।তোমার ভালোলাগলে থাকো,নইলে ভাগো!
সাগর আর কিছুনা বলে অন্য দিকে মুখ করে শুয়ে পরলো!
প্রিয়তি সাগরের কানের কাছে চিল্লিয়ে বললো__
-" ঠিক আছে তুমি বের হবে না, তো আমিও কোথাও যাচ্ছিনা। আমিও এইখানেই শুচ্ছি।
-" (সাগর একরকম লাফিয়ে উঠলো) আরে না, আমি কোনো মেয়ের সাথে কেন শুবো?পাগল নাকি?
-" তাতে কি পাশে শুইতে পারো তো?🙃
-" ভয় নেই তোমরা,হুম?
-" ভয় কিসের?😕
-" হাহাহাহাহা..... মেম! এই আবহওয়ার উপর কখনো ভরসা করতে নেই! পরে দেখা যাবে, আপনি খুজতেছেন আপনার বাবুর বাবাকে!!!
সাগর হাসতে চলে গেল পাশের রুমে গিয়ে শুয়ে পরল।
-" ( এইটা কি বলল ছিঃ😧) প্রিয়তিও শুয়ে পরলো।
সাগর চোখ বন্ধ করতে পারছে না। চোখ বন্ধ করলেই প্রিয়তির কথা মনে পড়ছে।মায়াবি চেহারা হাসি মাখা মুখটা চোখের সামনে ভেসে উঠছে বার বার।
সাগর উঠে, ঘর থেকে হন হন করে বাইরে চলে গেল। বাহিরের টং এ গিয়ে বসে পরলো সাগর। অবিরাম বৃষ্টি ধারা তাকে ভিজিয়ে চলেছে। জানালা দিয়ে প্রিয়তি সবটাই লক্ষ করছে। কিছুক্ষণ পরে সাগর টং থেকে উঠে প্রিয়তির রুমের দিকেই আসছে। প্রিয়তি খাট থেকে উঠে দাড়িয়ে পরলো!
সাগর প্রিয়তির রুমে ঢুকে প্রিয়তির একদম কাছে চলে যায়। শরীর থেকে টপ টপ করে বৃষ্টি পানি গড়িয়ে পরছে। সাগরের এত কাছে আসা দেখে প্রিয়তি রীতিমতো ভয় পেযে যায়।
ভীতু কণ্ঠে বলে___
-"কি হলো,তুমি আমার এত কাছে আসছো কেনো?
প্রিয়তির এমন কথা শুনে সাগর মাথাটা আরো একটু প্রিয়তির দিকে এগিয়ে দিল! ভ্রু কুচকে বললো___
-" প্রিয়তি আমাকে কি খুব খারাপ মনে হয়?
-" (মাথা নিচা করে আছে)
-" আমার চুল গুলো মুছে দিবে?? তোমার আঁচল দিয়ে?☺ তোয়ালে টা ইতিমধ্যেই ভিজিয়ে ফেলছি!
সাগরের কথা শুনে প্রিয়তি মনে একটু সাহস পেল___
-" হুম বসো দিচ্ছি,আগে বলবে তো!!
প্রিয়তি সাগরের চুল গুলো ঠিক ভাবে মুছে দিয়ে বাহিরে চলে গেলো। ফিরে এসে দেখে সাগর ঘুমিয়ে গেছে!একদম বাচ্চাদের মতো গুটিয়ে শুয়ে আছে।প্রিয়তি যেনো লোভটা সামলাতে পারলো না। অপলক দৃষ্টিতে সাগরের দিকে তাকিয়ে আছে, অবশেষে ওর কপালে একটা চুমু একে বলল - পাগল ছেলে একটা!
তারপর আবার বাহিরে চলে গেল।
সাগর একটু বুঝতে পারলেও ঘুমের মধ্যে সেটা মিলিয়ে গেলো!
দুপুরে খাবার পর বসে গল্প করছে দুই জনেই।
সাগর হঠাৎ প্রিয়তির পায়ের দিকে তাকালো___ প্রিয়তির পা ফুলে গেছে, এইতো সেইদিনের ব্যাথাই ঠিক হয়নি।এখন আবার!
-" ওই তোমার পা দেখি। ফোলা ফোলা মনে হচ্ছে।
-" কই দেখো? কই ফুলেছে?
সাগরের দিকে পাটা এগিয়ে,বেশ খুশি মনেই বললো প্রিয়তি।
সাগর প্রিয়তির দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে ওর পায়ের ক্ষত টা দেখছে। প্রিয়তি অন্য দিকে মুখ করে আছে।মনে হয় যেন কিছুই হইনি!এখনও ব্যাথা আছে কিনা চেক করতে সাগর ক্ষতর পাশে জোরে চাপ দিতেই_
প্রিয়তি সাগর বলে চিৎকার দিয়ে,ওর গালে একটা চড় বসিয়ে দিল.....!
সাগর ধুপ করে প্রিয়তির চুল ধরে বলল___
-" ওই এত জোড়ে ডাকো কেন। আর আমাকে থাপ্পর দিলে কেন!😤
-" আআহ.. আমার লাগছে ছাড়ো।
আর কিছু না বলে সাগর চুল ছেড়ে দিল। প্রিয়তি একটু বিনয়ী ভাবে বললো,
-" কেন!?কেনো হুম? তুমি বুঝি কখনো ডাকোনি কাউকে।😜
-" ( প্রিয়তির চোখের দিকে তাকিয়ে) না ডাকি নি! ডাকার মত কেউ ছিলোই না,তাই।😄
-" এখনো ডাকার মত কাওকে পাওনি।😣
-" পেঁয়েছি তো, কিন্তু আমি ডাকলে সে সারা দিবে কি না জানি না তাই ডাকি নি কখনো।
-" ( সাগরের দিকে একটু সরে গিয়ে) মন থেকে ডেকে দেখ, সে ঠিক সারা দিবে।😊
-" হুম হুম সময় হলেই ডাকবো। আর তখন সে সাড়া দিলেই ভাল।☺
তারা দুইজন চোখে চোখ রেখে কথা বলছিল হঠাৎ দড়জাই কেউ নক করে। তারা ঠিক হয়ে বসে__
-" বাবা বৃষ্টি থেমে গেছে। তোমরা কি যাবা এখন?(দাদু)
-" জি দাদু,যেতে হবে আমাদের।☺
-" আচ্ছা।
-" প্রয়তি যাও চেঞ্জ করে নাও।😘(সাগর)
-" হুম যাচ্ছি।☺
-" দাদু এইখান থেকে পেট্রোল পাম্প কত দূরে হবে?
বৃদ্ধা কে উদ্দেশ্য করে বললো সাগর।
-" বেশি দুরে না ৩০ মিনিট লাগবে হেটে যেতে।(দাদু)
-" প্রিয়তি আমি বরং বাইকে তেল ভরাই আনি। তুমি রেডি হয়ে অপেক্ষা করো!
-" না আমাকে একা ছেড়ে যাবে না প্লিজ,😟😟
-" বাব্বাহ, বউ দেখি। তোমায় ছাড়া থাকতেই চায় না বাবা!
বৃদ্ধার ওয়াইফ ঘরে ঢুকতে ঢুকতে কথাটা বললেন।
-" আরে,আমি যাবো আর আসবো। একটু অপেক্ষা করো সোনা। আমি যাচ্ছি আর আসছি। এমনিতেই তোমার পায়ে ব্যাথা । তুমি যেতে পারবে না।
-" (প্রিয়তি সাগরের হতে চিমটি কাটে!!! সাগর আউ বলে চিল্লিয়ে উঠলো!)😲😲
-" কি হল বাবা?(দাদু)
-" মশা দাদু,মশা!আমাকে আবার একটু বেশি মশা কামড়ায়, আসলে আমার শরীরে নাকি রক্তের মান অন্যদের থেকে ভালো! তাইই😣
-" হইছে,জানি আমি।আর বলতে হবে না। এখন যাও। আমি অপেক্ষা করে নেবো। দেরি হলে তোমার খবর আছে, বুঝলে?😤
-" হুম যাচ্ছি।
অতঃপর সাগর চলে গেল তেল নিতে।
কিছুদূর যেতেই প্যাম্প চোখে পরলো।বাইকের ট্যাংক ফুল করে বেশ ফুর্তি নিয়ে হোটেলে চলে গেল। সজল দাঁড়িয়ে দারিয়ে সিগারেট টানছে।সাগরকে দেখেই,
-" (সাগরকে দেখে অবাক) ভাই তুই কই গেছিলি আমি কত টেশানে ছিলাম জানিস।😨
-" কিসের এত টেনশান আমি ছোট বাচ্ছা নাকি?যে আমাকে নিয়ে টেনশন করবি!😕
-" হুম হুম। সে প্রিয়তি কই?! তোরা দুজন তো একসাথে গায়েব!!☹️
সজলের কথায় প্রিয়তির কথা মনে পড়লো সাগরের! সে তো প্রিয়তিকে আনতেই ভুলে গেছে!
-" অহহ শিট।😰 কি করে এটা করতে পারি আমি!!
-" কি হয়ছে ভাই।😟(সজল)
-" তুই থাক আমি আসছি!
বলেই সাগর বাইক নিয়ে ছুটলো, সেই দোকানের কাছে!অনেক জোরে বাইক চালিয়েও গিয়ে পৌঁছুতে রাত হয়ে গেছে! এক দৌড়ে মেইন গেট দিয়ে বাড়ির ভিতরে ঢুকে গেলো। দোকান ইতিমধ্যেই বন্ধ করে ফেলেছে!
গিয়ে দেখে_______
চলবে..........
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন