সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমার মায়াবতী |পর্ব:- দ্বাদশ|


লিজা রুমে ঢুকতেই রাহাত ওকে দেখে হাসলো একটু। দিহান লিজার দিকে পিঠ করে চেয়ারে বসা তাই ওরা একজন অন্যজনকে দেখে নি।

-হেই লিজ?? মিট মিস্টার দিহান। আমাদের নতুন সিকিউরিটি ইনচার্জ। মিস্টার দিহান, সি ইজ মাই পি.এ লিজা!

রাহাতের কথায় দিহান মাথা ফিরিয়ে পিছনে তাকিয়েই হা হয়ে গেল। একজন অন্যজনকে দেখে এতোটা অবাক হল যে বলার মতো না।

-তুমি??

-তুমি জবটা পেয়ে গেছ!! কংগ্রাচুলেশনস দিহান।

-কিন্তু তুমি এখানে কি করে!!

-আমি তো রাহাত স্যারের পি.এ।

-হোয়াট!!!

রাহাত ওদের দুজনের সারপ্রাইজড চেহারা দেখে ভিষণ মজা পাচ্ছে। দুজনের বিস্ময়ের ঘোর কাটানোর জন্য একটু গলা খাঁকারি দিল রাহাত। লিজা আর দিহান দুজনেই লজ্জা পেয়ে রাহাতের দিকে তাকালো।

-সরি-সরি স্যার।

-ইটস ওকে লাভ বার্ডস। লিজা তুমি ওকে সবার সাথে পরিচয়করিয়ে দাও। দিহান?? সবার সাথে পরিচিত হও। আর নেক্সট ডে জয়েন করো।

-ইয়েস স্যার।

-দিহান, আপনি সামনের রুমটায় গিয়ে দু মিনিট অপেক্ষা করুন। ওটা লিজার রুম। আমার লিজার সাথে একটু কথা আছে।

-ইয়েস স্যার।

দিহান বেরিয়ে যেতেই রাহাত হেসে লিজাকে আরো একবার কংগ্রাচুলেশন চালিয়ে একটা চেক দিল। লিজা চেকটা হাতে নিয়ে দেখলো এমাউন্টে ৫০০০০ টাকা লেখা আর রাহাতের সাইন করা।

-স্যার??

-রাখো এটা। আর মিস লিজা বিয়েতে কিন্তু গ্রান্ড পার্টি চাই।

-জি অবশ্যই স্যার।

-পিয়নকে একটু আমার রুমে পাঠাও।

-স্যার?? ভাবি কেমন আছে??

-জানি নাহ।

-কালকে.......

-মায়াবতীটা আমাকে ছেড়ে চলে গেছে লিজা। ওকেই খোঁজার চেষ্টা করছি। অন্যায় তো কম করিনি ওর সাথে। ভালোবেসে সেটার সম্মান করতে না পারাটা কত বড় অন্যায় সেটা আজ টের পাচ্ছি। মেয়েটাকে প্রতিনিয়ত খুঁজে বেড়াচ্ছি। কখনো ক্ষমা চাওয়ার জন্যও ওকে পাবো কিনা কে জানে!!

-স্যার?? এতো আপসেট হবেন না প্লিজ। ম্যামকে ঠিক পেয়ে যাবেন।

-থ্যাংকস। তুমি পিয়নকে পাঠাও। সে যদি জানে মায়াটা কোথায়.....

-তাড়াতাড়ি করো লিজা। আমি মায়াকে খুঁজতে বের হবো। ওকে আমার যে করেই হোক খুঁজে পেতেই হবে।

-জি স্যার। অল দা বেস্ট।

মায়াকে খুঁজে বের করতে পিয়ন কি করবে সেটা ভাবতে ভাবতেই লিজা বেরিয়ে গেল। পিয়নকে রাহাতের রুমে যেতে বলে দিহানকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো মেয়েটা।

এদিকে পিয়ন রাহাতের রুমে এলো। পিয়নকে দেখে রাহাত একটু অবাক চোখে তাকালো।

-তুমি?? তুমি কে??

-স্যার- আমি পিয়ন, জামাল।

-জা-জা-জামাল!!! পি-পিয়ন তো শ-শফিক ছিল!! তুমি কবে পিয়ন হলে!!

-ওহ!! আপনি শফিক ভাইকে খুঁজছেন স্যার?? শফিক ভাই তো গ্রামের বাড়িত গেসে। হের মার অসুখ। তার জন্য আমি ডিউটি করতিসি স্যার।

-ওহ,শফিক কবে ফিরবে জানো??

-হের মায় নাকি বেশি অসুস্থ স্যার। কবে ফিরবে জানি না। হের কাছে তো ফোন নাই। তাই যোগাযোগ করার উপায়ও নাই।

-ওকে, তুমি যাও।

পিয়ন চলে যেতেই রাহাত দু হাতে মাথা চেপে ধরে বসে রইলো। এবার কি করবে সে!! মায়ারা পুরোনো বাসা থেকে অফিসের দেয়া ফ্ল্যাটে শিফ্ট করার সময় পিয়ন শফিক সব কাজে হেল্প করেছে। তাই রাহাত ভেবেছিল মায়ার পুরোন বাসা কোথায় সেটা শফিকের কাছ থেকে জেনে নেয়া যাবে। লোকটা তো নেই আর উপরে তার সাথে যোগাযোগ করারও কোন ব্যবস্থা নেই। মায়াকে খুঁজে বের করার ছোট্ট সম্ভবনাটাও যেন চিরতরে শেষ হয়েগেল রাহাতের।

রাহাত চেয়ারে গা এলিয়ে দিয়ে এক মনে মায়ার কথা ভাবছে। মেয়েটা ঠিকই বলেছিল। কেউ হারিয়ে যেতে চাইলে তাকে খুঁজে বের করা একেবারেই অসম্ভব। অবশ্য মায়া তো নিজের ইচ্ছেয় হারিয়ে যায় নি। মায়াকে চলে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। আর সেই বাধ্যটা করেছে রাহাত নিজে। দিনের পর দিন মেয়েটা রাহাতের কাছে অবহেলা ছাড়া আর কি পেয়েছে!! শুধু অত্যাচার করেছে মেয়েটাকে সে। অত্যাচারই তো!! শুধু কি হাতে মারলে সেটাকে অত্যাচার বলে!! এভাবে দিনের পর দিন অবহেলা করলে সেটাও অত্যাচার।। মানসিক অত্যাচার।। তবুও তো বিনিময়ে শুধু ভালোবেসে গেছে পাগলীটা ওকে!!

কি করবে, মায়াকে কোথায় খুঁজবে কিছুই মাথায় আসছে না আর রাহাতের। বাবার নিশ্চয়ই মায়ার বাসার ঠিকানা জানে। জানেই। কারণ আগেই মায়ার বাসায় কথা বলতে গিয়েছিলন রাহাতের বাবা। কিন্তু বাবা তো কিছুতেই বলবে না মায়ার ঠিকানা। আর রাহাতও বা কোন মুখে বাবার কাছে মায়ার বাসার ঠিকানা জিজ্ঞেস করবে!! কোন মুখেই বা বাবার সামনে দাঁড়াবে সে!! কিন্তু মায়াকে না পেলেই বা তার চলবে কি করে!!! মায়াটা যে তার একেবারে আত্মার সাথে মিশে আছে। মেয়েটা চলে যাওয়ার দমটা আটকে আসছে রাহাতের একা থাকতে। কেন যে জুলির ফাঁদে পা দিয়েছিল সে!! ভাবতেই রাগে গা জ্বলে যাচ্ছে রাহাতের। শয়তান মেয়েটা সামনে থাকলে খুন করে ফেলতো ওকে রাহাত।

রাহাত আর কিছু ভাবতে না পেরে টেবিলে মাথা রাখলো। চোখের কোণা দিয়ে ফোঁটায় ফোঁটায় পানি ঝরছে রাহাতের। ওর মা মারা যাওয়ার পর আজ রাহাত কাঁদছে। মায়ের মৃত্যুর পর ওর কান্নার সময় সাপোর্ট হিসেবে শান্তনা দেয়ার জন্য ওর বাবা পাশে ছিল। আজ মায়াকে হারিয়ে ওর পাশে কেউ নেই। ওর বাবাও না। রাহাত একেবারে একা। মায়াকে ফিরে না পেলে ওর যে কি হবে রাহাত নিজেও জানে না। অথচ মেয়েটাকে কি করে ফিরে পাবে তারও কোন পথ চোখে পড়ছে না রাহাতের। এই মূহুর্তে কাউকে মন থেকে পাশে চাইছে রাহাত। জাস্ট মায়াটাকে খোঁজার রাস্তা বাতলে দিবে ওকে। আর কিচ্ছু চাই না রাহাতের। জাস্ট ওর মায়াবতীটাকে ফিরে পেতে চায় এখন। এটাই এখন তার জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য।

গত সাতটা দিন মায়াকে সম্ভাব্য সব কটা জায়গায় হন্যে হয়ে খুঁজেছে রাহাত। প্রথমদিন যে গলিটায় মায়াকে নামিয়ে দিয়ে এসেছিল সেই গলিটায়ও পাগলের মতো খুঁজলো মায়াকে। কিন্তু গোটা একটা সপ্তাহ কেটে যাওয়ার পরও মায়ার দেখা পেল না। রাহাত শুধু পারছে না প্রত্যেকটা বাড়িতে গিয়ে গিয়ে মায়াকে খুঁজতে। পারলে হয়তো ছেলেটা সেটাও করতো। এখনও রাহাত মায়াকে ড্রপ করে দেয়া সেই গলিটার সামনে গাড়ি পার্ক করে বসে আছে৷ মায়া বা মিহান কাউকে যদি একটা বার দেখতে পেত!! এতো মানুষের সাথে দেখা হয়, শুধু তাদের কারো সাথেই দেখা হয় না। রাহাতের প্রত্যেকটা দিন এই ছোট্ট একটা আশায় শুরু হয় যে আজ সে তার মায়াবতীর দেখা পাবে। তার কাছে ক্ষমা চেয়ে তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনবে৷ মায়াবতীটা না ফিরলেও অন্তত প্রতিদিন কাছ বা দূর থেকে একবার হলেও পাগলিটাকে দেখতে পাবে। দিনশেষে ব্যর্থ নয়ে ঘরে ফিরে রাহাত টের পায় তার আশাটা আর পূরণ হয় না। মায়াবতীকে পেতে আর কতদিন বাকি এই ভেবে নির্ঘুম রাতগুলো কাটে রাহাতের।

এসব ভাবতে ভাবতেই রাহাতের মোবাইলটা সশব্দে বেজে উঠলো। হাতে নিতেই লিজার নামটা দেখে রিসিভ করলো রাহাত।

-হ্যাঁ লিজা। বলো??

-স্যার?? আর্জেন্ট একটা কাজ পড়ে গেছে। একটু অফিসে আসবেন প্লিজ??

-তোমরা নিজেরা কিছু ম্যানেজ করতে পারো না কেন বলো তো?? আজব!!! জানো আমি আমার মায়াবতীটাকে কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না। তার মধ্যে এটা ওটা আর্জেন্ট বলে খোঁজায় বাগড়া দিবে তোমরা?? কি পেয়েছ কি এক একজন!! হ্যাঁ???

-স-সরি-সরি স্যার। স্যার আসলেই আর্জেন্ট। একটু তাড়াতাড়ি আসুন প্লিজ.....

-এসে যদি দেখি কিচ্ছু আর্জেন্ট না তবে তোমার চাকরি শেষ- দিহানের শেষ-সবার শেষ চাকরি আজকে। অফিসে তালা মেরে দিব সবাইকে দূর করে দিয়ে। অসহ্য।

-সরি স্যার।।রাহাত গাড়ি ছুটিয়ে অফিসে এসে নিজের রুমে গিয়েই লিজা আর দিহানকে পেল। চেয়ারে বসেই অগ্নিদৃষ্টিতে তাকলো দুজনকের দিকে। ওরাও ঢোক গিলে চোখ নামিয়ে নিল। কপালে যে কি শনি আসতে চলেছে সেটা ভালোই টের পাচ্ছে দুজনে। ছোট্ট একটা মনের খচখচানি সিওর হওয়ার জন্য রাহাতকে এতো জরুরি তলব করে এনেছে ওরা। ব্যাপারটা সে রকম না হলে সত্যিই শনি আছে কপালে।

-কি সমস্যা তোমাদের?? আর্জেন্ট বলে আনলে আর এখন মুখে কুলুপ মেরে বসে আছো!! কাহিনী কি!!

-স্যার?? দিহান। দিহান অফিসের এখন পর্যন্ত সব স্টাফদের সব ইনফরমেশন কম্পিউটারে সেইভ করার কাজ করছিল।

-হুম। তো?? ও অফিসের সিকিউরিটির ইনচার্জে আছে। করতেই পারে। সমস্যা কি এখানে!!

-না মানে স্যার। কাজটা করার সময় ও আপনার পি.এ এর নামের মধ্যে মায়া নামের একজনের নাম পায়।

-আমার মায়াবতী!!!

-স্যার। আমরা আসলে ঠিক বুঝতে পারছি না উনিই ম্যাডাম কিনা। না মানে। লিজার কাছে শুনলাম আপনি ম্যামকে মায়াবতী নামে ডাকছিলেন। আর পিয়ন ও নাকি ম্যামের কোন খোঁজ দিতে পারে। তাই তাই আসলে স্যার আমরা একটু কনফিউশনে আছি।

-ইয়েস। সি ইজ ইউর ম্যাম। আমার মায়াবতী। ছয়মাস মেয়েটা আমার পি.এ হয়ে ছিল। একটা ভিষণ বাজে সিকিউরিটি ইস্যু হয়েছিল। ও নিজে থেকেই ঝামেলা বড় হওয়ার আগে রিজাইন করে দেয়। আর সেইম সমস্যা যেন কাউকে ফেইস করতে না হয় তাই অফিসে মেয়েদের জন্য এতো টাইট সিকিউরিটির ব্যবস্থা করেছি।

-স্যার??

-কি হয়েছিল দয়া করে জানতে চেও না প্লিজ। জাস্ট এটা জেনে রাখো যতটা নিরাপত্তা মেয়েটাকে দেয়ার দরকার ছিল তা আমি প্রোভাইড করতে পারি নি। তবে ব্যাপারটায় আমার একটা সুবিধা হয়েছিল। মায়ারিজাইন করলেও ওকে নিজের রাণী করে পেয়েছিলাম। বাট ওকে ধরে রাখতে।

-সরি স্যার। স্যার একটা কোশ্চেন ছিল। অফিস থেকে ম্যামকে যে বাড়িটা দেয়া হয়েছে সেখানে ম্যামকে পান নি?

-নাহ। বিয়ের সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই মায়ার মা আর ভাই বাড়িটা থেকে শিফ্ট করে আগের বাড়িতে চলে গেছে।

-সেখানে??!

-বাড়ির ঠিকানা জানলে কি গত একটা সপ্তাহ আমি পাগলের মতো ওদের গলিটার সামনে বসে থাকি!?

-স্যার। আমি হয়তো আপনাকে ম্যামের ঠিকানাটা দিতে পারবো।

-কি!!! কি করে দিহান!!!??

-স্যার। ম্যাম তো একটা ফরমাল ওয়েতে এখানে জব করেছিলেন। তাই ম্যামের সিভিতে ম্যামের পারমানেন্ট আর প্রেজেন্ট এ্যাড্রেসটা থাকবে।

-আর ইউ সিওর দিহান!!! প্লিজ?? আমাকে মায়ার এ্যাড্রেসটা জোগাড় করো দাও প্লিজ?? আমি আমার মায়াবতীকে যে করেই হোক ফিরিয়ে আনতে চাই।

দিহান অফিসের কম্পিউটার সিস্টেম থেকে মায়ার প্রোফাইল খুলে মায়ার ঠিকানাটা রাহাতকে জানালো। রাহাতও এরিয়াটার মিল খুঁজে পেল। কোনমতে উঠে এসে দিহানকে জড়িয়ে ধরে একটু আবেগি হয়ে গেল বেচারা। মায়াকে খোঁজার এতো সহজ উপায় ওর নিজের এতো কাছে ছিল-সেটা রাহাত কল্পনাও করতে পারে নি।

-থ্যাংকস বোথ অফ ইউ। তোমাদের এই উপকার আমি জীবনেও ভুলব না।।

অফিস থেকে গাড়ি ছুটিয়ে রাহাত আবার গলিটার সামনে এলো। আস্তে আস্তে গাড়ি নিয়ে মায়ার বাসার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে রাহাত। বুকের ভেতরটা ধুকপুক করছে। বাসাটা খুঁজে পেয়ে দরজার সামনে এসেকলিংবেল চাপলে রাহাত। আর দুরুদুরু বুকে পরিচিত মুখটার দরজার ওপাশে থাকার প্রার্থনা করতে লাগলো। একটু পরেই শব্দ করে দরজাটা খুলে গেল। একজন মাঝবয়েসী মহিলা দরজা খুলে দিলেন। জুবুথুবু করে শাড়ি পড়নে। মানুষটাকে দেখে রাহাত কি রিএ্যাকশন দিবে বুঝতে পারছে না। মুখটা পরিচিত না হলেও একেবারে অপরিচিতও লাগছে না। কোথায় যেন দেখেছে উনাকে রাহাত। মনেই করতে পারছে না। মনে পড়তে গিয়েও মনে পড়ছে না রাহাতের।

-জে?? বলেন?? কারে খুঁজতিসেন?

চলবে............

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(পর্ব ০৯)

RM ,,পূর্ববর্তী পার্ট গুলি পেতে অমার টাইমলাইন  ভিজিট করুন,, কতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলাম সেটা মনে নেই। চোখ খোলে যখন মাথার পেছনে সজোরে এক থাপ্পর খাই। ঘুম ঘুম চোখে চারদিকে তাকিয়ে দেখি যে কে আমাকে চড়টা মারল। আমি দেখলাম যে আমি উঠানের মাটিতে পড়ে আছি, পায়ের কাছে মাটিতে সুব্রত পড়ে আছে। আমি ওপর দিকে তাকিয়ে দেখতে চেষ্টা করি যে কে আমাকে চড়টা মারল, আমি অবাক হয়ে দেখি যে ইন্দ্রানি মাসি আমাদের দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে। আমার দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে বলে ওঠেন “শুয়োর গুলো এখানে শুয়ে? আর আমারা তোদের দু’জনকে সারা বাড়িতে হন্যে হয়ে খুঁজছি। তোদের কি কোন বোধ বুদ্ধি নেই?” আমি সুব্রতর কাঁধ ঝাঁকিয়ে উঠিয়ে দিলাম, সুব্রত আর আমি দুজনেই উঠে পড়লাম মাটি থেকে। আমি কাতর চোখে ইন্দ্রানি মাসির দিকে চেয়ে বললাম “সরি মাসি। ভুল হয়ে গেছে, কাল রাতে একটু বেশি হয়ে গেছিল।” চেয়ারের ওপরে মদের বোতল আর গ্লাসের দিকে ইন্দ্রানি মাসির চোখ পড়ে যায়, তাড়াতাড়ি করে চেয়ারের ওপরে নিজের শাল ফেলে দিয়ে ঢেকে দেয় গ্লাস আর বোতল। ঠিক সেই সময়ে পেছন থেকে অনেক গুলো পায়ের আওয়াজ পাই। মাসি সবাই কে বলে “এই ছেলে দুটো সারা রাত...

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(শেষ পর্ব)

RM কিছুদূর যেতেই  একটি জায়গায় গাড়ি দাঁড় করায় বল্বিন্দার, বলল যে গাড়িতে তেল ভরতে হবে। গাড়ি থামার সঙ্গে সঙ্গে পরীর ঘুম ভেঙে যায়, আমার দিকে তাকিয়ে বলে “কতক্ষণ ঘুমিয়েছি আমি?” আমি বললাম “বেশীক্ষণ ঘুময়নি তুমি” “আমরা থামলাম কেন?” “তেল ভরার জন্য।” “আর কত দেরি পৌঁছতে?” আমি পেট্রল পাম্পের লোকটাকে জিজ্ঞেস করলাম যে জিওরি থেকে চিতকুল কতক্ষণ লাগবে পৌঁছতে। লোকটা আমায় জানাল যে আরও ঘন্টা চারেকের রস্তা বাকি। লোকটা আরও জানাল যে কারছাম ব্রিজের পরে রাস্তা খুব খারাপ। বল্বিন্দার আমাকে বলল যে ও রাস্তা জানে, কোন চিন্তা করতে বারণ করল আমাকে। পরী হিন্দি বিশেষ ভালো করে বোঝেনা তাই আমাকে জিজ্ঞেস করে যে বল্বিন্দার কি বলল। আমি রাস্তার কথাটা চেপে গেলাম, জানালাম যে কোন কিছুর জন্য চিন্তা না করতে। ঘড়ির দিকে তাকালাম, আড়াইটে বাজে তখন, তারমানে চিতকুল পৌঁছতে সন্ধ্যে হয়ে যাবে। একে শীতকাল তায় আবার পাহাড়, এখানে রাত সমতলের চেয়ে একটু তাড়াতাড়ি নামে। জিওরি ছাড়ার কিছু পরেই পরী বলল যে ও আর ঘুমোতে চায় না, বাইরের দৃশ্য দেখবে। আমি বললাম ঠিক আছে। কিছু পরেই সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ে। যখন আ...

"এক অপরিচিতা"(পর্ব: ছয়)

লেখক:আসিফ ইকবাল! "আগের পর্ব গুলো আমার টাইমলাইনে বিদ্যমান" পঞ্চম পর্বের পর থেকে..... ___আরে বাহ, আপনি নিজের বউ কেই চিনতে পারছেন না!       এবার তো বলবেন গতকাল আপনি আমাকে বিয়েই করেন              নি। হম,সেটাও বলে ফেলেন না! দেরি কেনো? ওর এতগুলি কথার পর বুঝতে পারলাম,এটাই আমার অপরিচিতা,কিন্তু ও আজকে নিকাব পড়েনি। হিজাব পড়েছে। তাই চিনতে পারিনি। মুখ দিয়ে কিছু বের হচ্ছেনা। শুধু ওর দিকে তাকিয়ে আছি। আমার বউটা অনেক কিউট। সকাল বেলা যে আমার জন্য এরকম একটা সারপ্রাইজ আছে সেটা ভাবিনি!      ____কি!আপনি কি এভাবেই তাইকে থাকবেন? নাকি উঠেবেন। জলদি উঠে ফ্রেশ হোন।(তাফা) ____তুমি আজকে নিকাব পরোনি যে! ____আপনি তো আমার বর!আপনার সামনে নিকাব পড়তে হবে কেনো?(তাফা) বলে.....একটা হাসি দিয়ে চলে গেলো। এই প্রথম ওর হাসি দেখলাম। আর সেটা আমাকে রীতিমতো পাগল করে দিয়েছে। আর দেরি করলাম না। জলদি বিছানা ছেড়ে ফ্রেশ হতে চললাম। তাফা,,, তাফা! কই তুমি?........ "এইতো কিচেনে,কি হোয়েছে..... তাফা কিচ...