সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমার মায়াবতী |পর্ব:-চৌদ্দ|


বেলা ১১ টার দিকে ঘুমটা ভাঙলে প্রায় লাফিয়ে বিছানায় উঠে বসলো মায়া। চারপাশে তাকিয়ে রাহাতকে দেখতে পেল না৷ বারান্দার দরজাটা বন্ধ করা। আর বাদ বাকি সবই রাতের যেমন ছিল তেমনই আছে। মায়া একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বিছানা থেকে নামলো। রাহাত আসলে এসেছে নাকি স্বপ্নে দেখেছে পুরো ব্যাপারটা-কিছুই বুঝতে পারছে না মায়া। মানুষটার প্রত্যেকটা স্পর্শ অনুভব করতে পেরেছে মায়া। আর তার ঘ্রাণটাও যেন এখনো রুমের বাতাসে, বিছানায় মিশে আছে। তবে কি মায়া ফিরবে না বলে চলে গেছে??

ফ্রেশ হয়ে রুমে এসে মুখ মুছতে মুছতেও চিন্তায় মগ্ন মায়া। মানুষটা কেন এসেছে!! নাকি আসেই নি!! এসব ভাবতে ভাবতেই গালে কারো ঠোঁটের স্পর্শে একটু কেঁপে উঠে পাশে ফিরে রাহাতকে দেখতে পেল মায়া।। রাহাত কিছু একটা বেড সাইড টেবিলের উপর রেখে মায়ার কোমড় পেঁচিয়ে ধরে মুখের দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে।

-কি সমস্যা আপনার??

-ভূত টূত ভেবে ভয় পেলে নাকি মায়াবতী!? আমি আপনার জ্বলজ্যান্ত ভূতুড়ে হাসবেন্ড।

-কি সব বলছেন!!

-কি ভাবছিলে!! তোমাকে রেখে চলে গেছি!! সেটা আর হচ্ছে না পরী। তোমাকেও পালাতে দিব না কোথাও আর আমিও এক পা ও নড়ছি না তোমার সামনে থেকে।

-সরুন, অনেক বেলা হয়েছে ।

-তো?? তুমিই তো পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছিলে। অবশ্য এতোক্ষণ ঘুমিয়ে ভালোই করেছ। তোমার ঘুমন্ত মুখটা এতো মায়াবী। দেখলেই ইচ্ছে করে আদর করে......

-সরুন তো....

-চা টা টেস্ট করে দেখো তো কেমন হয়েছে।

-চা??

-বাহ!! বরের দিকে এভাবে তাকিয়ে থাকলে হবে!! বর যে বেড টি নিয়ে এলো তার দিকে একটু নজর দিন।

-এটা বেড টি!!?

-একটা হলেই হল। টেস্ট করো।

মায়া কাপটা হাতে নিয়ে একটা চুমুক দিতেই রাহাত মায়ার একটা হাত ধরলো।

-এই এই? মায়া?? শোনো শোনো?

-হুম??

মায়া মুখটা তুলতেই রাহাত মায়ার ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে চা টুকু নিজেই গিলে ফেলে মায়ার দিকে তাকিয়ে হাসছে মিটিমিটি।

-এসব কি??

-মর্নিং টি উইথ মর্নিং কিস্সি.....

-অসহ্য লোক একটা আপনি....

-আরে চা টা খেয়ে দেখো। সেই মজা হয়েছে।

-খাবোই না। ধুর।

-খেতে হবে না। আরেক সিপ মুখে নাও। বাকিটা আমি নিজেই করে নিতে পারব....

মায়ার রাগী চাহনি দেখে রাহাত লুটোপুটি খেয়ে হাসার অবস্থা। এই লোকটার কাহিনী দেখে মায়া যথেষ্ট বিরক্ত হচ্ছে। হুট করে এভাবে এসে এভাবে ওকে জব্দ করার মানে কি! কি পেয়েছে কি উনি!?!

-মায়া???

-কি!!??

-আরে?? খুদা লেগেছে তো বাবা। চলো না??

-হুম?? হুম,এসো....

চায়ের কাপে আরেকবার চুমুক দিয়ে মুখ তুলতেই দুজনের চোখাচোখি হয়ে গেল। রাহাত ঠোঁটের কোণে দুষ্ট হাসি ফুটিয়ে মায়ার চা খাওয়া দেখছে। আর মায়া পারছে না গরম চা টা একেবারে গিলে ফেলতে। রাহাতের চাহনিগুলো বেচারিকে বারেবারে বিষম খাইয়ে দিচ্ছে। ছোট্ট ডাইনিং টেবিলে এসে মায়া আরো হা হয়ে গেল। মা আর রহিমা খালা বেশ অনেক রকমের নাস্তা বানিয়ে টেবিল ভরিয়ে ফেলেছে। মায়া এসব খেয়াল করতেই মায়ের দিকে নজর পড়লো।

-মা??!

-এসে গেছিস মায়া মা? জামাই রাতে এসেছে ডাকবি না একবার??

-মা!!!

-আরে ছেলেটাকে খেতে দে। কেমন চোখ মুখ শুকিয়ে গেছে। বসো বাবা।

-জি মা। আপনারাও বসুন। খালা আপনিও বসুন??

-না না সাহেব। আপনেরা নাস্তা করেন। আমি করসি।

-এই মায়া?? এসো না?? বসো??খেতে খেতে বেশ অনেকক্ষণ সবার সাথে কথা হলো রাহাতের। বুঝতে পারলো মায়া রাগ করে বাসা থেকে চলে এসেছে এটা বাসায় বলে নি৷ আর পরের সপ্তাহে মিহানের বিয়ে তাই বাসায় কেউ কিছু সন্দেহও করে নি। মিহানের বিয়ের খবরটা শুনে রাহাত ভিষণ খুশি হলো। মায়ার রাগ কমানোর জন্য কিছু একটা করতে হবে। সেটা ভেবে একটু একটু মনে জোর পাচ্ছে রাহাত।

খাওয়া দাওয়া শেষ করে রাহাত রুমে গিয়ে বিছানায় গা এলিয়ে শুয়ে পড়লো। গত একটা সপ্তাহ শান্তিতে এক দন্ড ঘুম হয় নি। ক্লান্ত শরীর থেকে থেকে ঘুমের কোলে গা এলিয়ে দিয়েছে ঠিকই তখনও সেই ক্লান্তির মধ্যেও মায়ার কথা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল বারবার। এতদিন পর মায়াকে বুকে পেয়েও ঘুম হয় নি। এক সপ্তাহ না দেখার তেষ্টা সারাটা রাত অপলকে দেখেই কাটিয়ে দিয়েছে রাহাত। এখন দু চোখ জুড়ে ঘুম নামছে রাহাতের। এই মূহুর্তে মায়াকে বুকে জড়িয়ে ধরতে পারলে বেশ আরামের একটা ঘুম হত। কথাটা চিন্তা করেই গলা ফাটিয়ে মায়াকে ডাকতে শুরু করলো রাহাত।

রাহাতের ডাক শুনেই বিরক্ত হয়ে অন্য কাজে মন দেয়ার চেষ্টা করলো মায়া। কিন্তু এই লোকের গলা মাশাল্লাহ!! একেবারে পাড়া সুদ্ধ মাথায় তুলে ফেললো চেঁচিয়ে। মায়া মুখ তুলতেই দেখলো মা আর রহিমা খালা মুখ টিপে হাসছে। দেখেই রাহাতের উপরে মেজাজটা আরো বেশি খারাপ হলো মায়ার। এটা কোন কথা!! এভাবে পাগলের মতো চেঁচাচ্ছে কেন লোকটা!!

-মায়া? দেখ গিয়ে জামাইয়ের কিছু লাগবে কি না।

-মা,এদিকে অনেক কাজ পড়ে আছে।

-পাজি মেয়ে। আমাকে কাজ দেখাস না। এদিকটা আমরা দুজনে সামলে নিব। তুই এখন রুমে যা। না পারলে তোকে ডেকে নিব খন। যা এখন।

মায়া রাগে লাল হয়ে রুমে আসতেই দেখল রাহাত শুয়ে শুয়ে চোখ বন্ধ করে এখনো চেঁচিয়ে গলা ফাটাচ্ছে। মায়া একটু জোরে দরজাটা বন্ধ করে খাটের সামনে এসে কটমট করে রাহাতের দিকে তাকালো। এই লোকের আজকে খবর আছে। এসব ভাবছে তার মাঝেই রাহাত মায়ার একটা হাত টেনে একেবারে বিছানায় ফেলে আষ্টেপৃষ্টে মায়াকে বুকে জড়িয়ে নিলো।মায়া পুরো থতমত খেয়ে গেল রাহাতের এমন কাজে।।

-কি শুরু করেছেন??

-ঘুমাবো। ঘুম পাচ্ছে।

-তো ঘুমান না?? এতো চেঁচাচ্ছেন কেন??

-তুমি তো আসছিলে না। তোমাকে ছাড়া ঘুম আসবে না।

-উফফফ। বিরক্তিকর একটা লোক....

-এখন কোন দুষ্টুমি না। বুঝসো?? আমি ঘুমাই। তুমি চুলে বিলি কেটে দাও।

-কাজ নেই আমার আর।

-অতো কাজ থাকতে হবে না। ঘুমের ডিস্টার্ব করলে মজা টের পাবে। সো জাস্ট লেট মি স্লিপ। ওকে জান??

-(চুপ)

মায়ার চুপ থাকা দেখে রাহাত হেসে মায়াকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে মায়ার বুকে মাথা রেখে চোখ বুজলো। একটু পর টের পেল মায়াও আলতো হাতে ওর চুলে হাত বুলাচ্ছে। রাহাতের ঠোঁটের কোণের হাসিটা আরো চওড়া হলো। এভাবে একটু একটু করে সে তার মায়াবতীর মনের কোণে জমা সবটুকু অভিমানের বরফ গলিয়ে ভালোবাসায় ভরিয়ে দিবে একদিন।।

পরের চারটা দিন শ্বশুরবাড়িতে বেশ ভালোই কেটেছে রাহাতের। সারাদিন এটা ওটা নিয়ে মায়ার পিছনে খুনসুটিতে লেগে আছে রাহাত। আর রাতে?? রাতে মায়াকে জ্বালাতন করছে। মায়া না পারে রাহাতকে বাধা দিতে, না পারে নিজের মনের খচখচানি ভুলতে। রাহাতও সেটা বেশ বুঝতে পারে। তাই নিজের সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করছে তার মায়াবতীর মনের সবটুকু ভয় ভুলিয়ে নতুন করে নিজের জায়গাটা দখল করতে।

মায়ার কোমড় পেঁচিয়ে ধরে গত চারটা দিনের কথা ভাবছে রাহাত। মেয়েটা ওর বুকে চুপ করে শুয়ে আছে। এখন আর একটুও ছোটার জন্য ছটফট করছে না। শান্ত হয়ে বুকে মুখ ডুবিয়ে নিজের মতো করে কি যেন ভাবছে। রাহাত ঠোঁটের কোণে বাঁকা হাসি ঝুলিয়ে মায়াকে দেখছে। কি মনে হতেই মায়াকে আরো নিবিড় করে বুকে চেপে ধরলো রাহাত। মায়া রাহাতের মুখের দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করছে এই লোকের মনে নতুন কি দুষ্টুমি খেলা করছে।

-মায়াবতী??

-কি??

-বিয়েটা হলো দুটো বছর পেরিয়ে গেছে না?

-(চুপ)

-এখনো তো তুমি নিজে থেকে আমার কাছে ধরা দিলে না?? কাহিনী কি??

-কিসের কাহিনী?? আর শুনুন বিয়ের যেমন দুই বছর পার হয়ে গেছে তেমনি আপনার সাথে সেই বিয়েটা শেষ হওয়ারও দশটা দিন পেরিয়ে গেছে।

-কি সব বলছ?? তোমার আমার বিয়ের বাঁধনটা কি এতই ঠুনকো মায়াবতী যে বললেই সম্পর্ক শেষ হয়ে যাবে? নাকি আমরা কাঁচা বয়সী প্রেমিক প্রেমিকা? আর তুমি রাগ করে ব্রেকআপ বলে দিলেই সব একেবারের জন্য শেষ হয়ে যাবে?? পাগলি আমাদের সম্পর্কটা যতখানি ভালোবাসার ঠিক ততখানি স্বামী-স্ত্রীর। এই জীবনে এই বন্ধনটা কখনো ভাঙবে না গো মায়াবতী।

-যে সম্পর্কের বাঁধনের এতো বড় বড় কথা বলছেন সেটার ভাঙনের দলিল হিসেবে ডিভোর্স পেপারে তো সাইনটা করে মুক্তি দিয়ে এসেছি আপনাকে। কোন রকম বাঁধনে আর আপনাকে বাঁধা থাকতে হবে না।

রাহাত মায়ার রাগী মুখটা দেখে হেসে হাত দুটোর বাঁধনটা আলগা করে দিল। মায়াও উঠে বসে রাহাতের দিকে পিঠ করে খাটে পা ঝুলিয়ে বসে চোখের পানিটা মুছে নিল। রাহাত মায়ার পিঠের আলতো কাঁপন দেখে বুঝতে পারছে মেয়েটা কাঁদছে৷ মেয়েটা ভাঙবে তবু মচকাবে না। এতো জেদ ধরে বসে থাকলে চলে? অবশ্য দোষটা যেহেতু রাহাতের তাই সেটা ঠিক করার দায়টাও তার৷ সেটা ভেবে রাহাত খাটের সাথে হেলান দিয়ে বসলো। আলতো করে মায়ার কাঁধে হাত রাখলো।

-একটা সাইন তোমার আমার সম্পর্কটা বদলে দিতে পারে না মায়া। আর মুক্তি তুমিও চাও না। আমিও চাই না। তবে জেদ করছ কেন? যতটা না ঘৃণা করো তার চেয়েও হাজার লক্ষ গুণ তো বেশি ভালোবাসো পাগলি। সেটা কি আমি বুঝি না??

-হারিয়ে বুঝে কোন লাভ হয় না মিস্টার রাহাত। আর তো কয়টা দিন মাত্র।

-কিসের কয়টা দিন??!

-কিছু না। আপনি প্লিজ ডিভোর্স পেপারে সাইন করে দিবেন। এভাবে অহেতুক একটা বাঁধন শিকলের মতো গলায় ঝুলিয়ে রেখে আর কি করবেন?? ভয় নেই অর্ধেক সম্পত্তি ক্লেইম করতে কোর্টে কেস ফাইল করব না। হাজার হোক ছয়মাস হলেও আপনার চাকরি করেছি-দু বছর সংসার করেছি।

-মায়া??

রাহাত এবারে আর নিজেকে সামলাতে পারলো না৷ মায়াকে পিছন থেকে জাপটে ধরে পাগলের মতো কেঁদে ফেললো৷ এই মেয়েটার সমস্ত অবহেলা সে সহ্য করতে পারবে ঠিকই। কিন্তু এই একটা কথা সে কিছুতেই মানতে পারবে না। শুনতেও পারবে না।

-কেন বলছ এসব?? সরি তো বউ?? জানি আমার দোষেই তোমাকে এতোটা পাথর হতে হয়েছে। কিন্তু একবার বিশ্বাস করো প্লিজ?? আর কখনো.....

-বিশ্বাস?? এই শব্দটা আমার জীবন থেকে চিরদিনের জন্য হারিয়ে গেছে রাহাত। তুমি হাজার চেষ্টা করলেও বিশ্বাস আর তোমাকে কখনো করতে পারব বলে মনে হয় না। আর এক বুক অবিশ্বাস নিয়ে আর যাই হোক সংসার করা যায় না।

-আচ্ছা যাও। বিশ্বাসও করতে হবে না। জাস্ট একটা সুযোগ দাও আমাকে প্লিজ?? একটা বার আমাকে শোধরানোর সুযোগটা দাও প্লিজ??

-ঠিক আছে দিলাম। এখন সরুন। ছাড়ুন। কাল বাদে পরশু ভাইয়ার গায়ে হলুদ। বহু কাজ আছে সকালে।

-হুম....

মায়ার থেকে সরে এসে চোখ মুছে বিছানায় গা এলিয়ে শুয়ে পড়লো রাহাত। মায়াও রাহাতের পাশে গুটিসুটি হয়ে শুয়ে পড়লো। এতো কাছে থেকেও রাহাতের মায়াকে বুকে টেনে নিতে ইচ্ছে করলেও কোন এক অদৃশ্য অপরাধবোধ তাকে কাজটা করতে দিচ্ছে না। মায়া বেশ কিছুক্ষণ এপাশ ওপাশ করে উঠে চলে গেল। মায়ার বিছানা ছেড়ে চলে যাওয়া টের পেয়ে রাহাতও উঠে বসলো। মেয়েটা এখন এতো রাতে কোথায় গেল? ভাবতেই চোখ পড়ল খোলা বারান্দার দরজার বাইরে। খাটে বসে থেকেও মায়ার আবছা অবয়বটা দেখতে পাচ্ছে রাহাত। হালকা ফুরফুরে বাতাসে মায়ার শাড়ির আঁচল উড়ছে, চুল উড়ছে। ব্যাপারটা একেবারে জাদুর মতো টানছে রাহাতকে মায়ার দিকে।

ধীরে ধীরে বারান্দার দিকে এগিয়ে গিয়ে মায়াকে পিছন থেকেই শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো রাহাত। তারপর আলতো করে মায়ার চুলে মুখ ডুবালো। মায়া একটু কেঁপে উঠলেও কিছু বললো না। বাইরের অন্ধকার পৃথিবীদেখায় মন দিলো।

-মায়া??

-হুম??

-একটা গান শুনবে??

-শোনাও।

রাহাত আলতো করে মায়ার চুলে চুমো খেয়ে হালকা গলায় গান ধরলো।

-"চলনা দুজন আজ নীলিমা ছুয়ে ভালবাসি।
বৃষ্টি ধারার মত জোছনা নিয়ে নীরবে কাছে আসি,
বলনা তুমি সেই না বলা কথা গানে গানে,
ওই নীল আকাশ ওই দখিনা বাতাস
আমাকে কাছে টানে,
অভিমানী ভালবাসা চায় যে হারাতে।
ওই দূর অজানাতে
তুমি আমি ভেসে যাব মেঘলা বাতাসে,
এই হাত রেখে হাতে...
চাঁদ কি জানে তুমি চাঁদের ই মত।
মন জানে না মন ছুয়েছো কত!
বললে তুমি আর কবিতা হলো,
যায় হারিয়ে তুমি যে পথে চলএসোনা হৃদয়ে তুমি,
অচেনা শ্রাবনে আমি।
অভিমানী ভালবাসা চায় যে হারাতে,
ওই দূর অজানাতে,
তুমি আমি ভেসে যাব মেঘলা বাতাসে,
এই হাত রেখে হাতে...
মেঘলা চোখে আমি তাকিয়ে রব।
স্বপ্ন হয়ে আজ তোমাকে ছোব
বৃষ্টি গুলো আজ তোমারি ছবি,
পথ ভুলেছি আর ভুলেছি সব ই
এসোনা হৃদয়ে তুমি,
অচেনা শ্রাবনে আমি,
অভিমানী ভালবাসা চায় যে হারাতে
ওই দূর অজানাতে,
তুমি আমি ভেসে যাব মেঘলা বাতাসে,
এই হাত রেখে হাতে..."

মায়াকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে গানের প্রত্যেকটা শব্দ গাইছে রাহাত। মায়ারও চোখের পানিরা বাঁধ ভাঙছে। গানটা শেষ হওয়ার পরও দুজনে সেভাবে ঠায় দাঁড়িয়ে রইলো। কোন কথা হলো না দুজনের। শুধু চুপচাপ একে অন্যকে অনুভব করতে লাগলো।

চলবে........

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(পর্ব ০৯)

RM ,,পূর্ববর্তী পার্ট গুলি পেতে অমার টাইমলাইন  ভিজিট করুন,, কতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলাম সেটা মনে নেই। চোখ খোলে যখন মাথার পেছনে সজোরে এক থাপ্পর খাই। ঘুম ঘুম চোখে চারদিকে তাকিয়ে দেখি যে কে আমাকে চড়টা মারল। আমি দেখলাম যে আমি উঠানের মাটিতে পড়ে আছি, পায়ের কাছে মাটিতে সুব্রত পড়ে আছে। আমি ওপর দিকে তাকিয়ে দেখতে চেষ্টা করি যে কে আমাকে চড়টা মারল, আমি অবাক হয়ে দেখি যে ইন্দ্রানি মাসি আমাদের দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে। আমার দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে বলে ওঠেন “শুয়োর গুলো এখানে শুয়ে? আর আমারা তোদের দু’জনকে সারা বাড়িতে হন্যে হয়ে খুঁজছি। তোদের কি কোন বোধ বুদ্ধি নেই?” আমি সুব্রতর কাঁধ ঝাঁকিয়ে উঠিয়ে দিলাম, সুব্রত আর আমি দুজনেই উঠে পড়লাম মাটি থেকে। আমি কাতর চোখে ইন্দ্রানি মাসির দিকে চেয়ে বললাম “সরি মাসি। ভুল হয়ে গেছে, কাল রাতে একটু বেশি হয়ে গেছিল।” চেয়ারের ওপরে মদের বোতল আর গ্লাসের দিকে ইন্দ্রানি মাসির চোখ পড়ে যায়, তাড়াতাড়ি করে চেয়ারের ওপরে নিজের শাল ফেলে দিয়ে ঢেকে দেয় গ্লাস আর বোতল। ঠিক সেই সময়ে পেছন থেকে অনেক গুলো পায়ের আওয়াজ পাই। মাসি সবাই কে বলে “এই ছেলে দুটো সারা রাত...

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(শেষ পর্ব)

RM কিছুদূর যেতেই  একটি জায়গায় গাড়ি দাঁড় করায় বল্বিন্দার, বলল যে গাড়িতে তেল ভরতে হবে। গাড়ি থামার সঙ্গে সঙ্গে পরীর ঘুম ভেঙে যায়, আমার দিকে তাকিয়ে বলে “কতক্ষণ ঘুমিয়েছি আমি?” আমি বললাম “বেশীক্ষণ ঘুময়নি তুমি” “আমরা থামলাম কেন?” “তেল ভরার জন্য।” “আর কত দেরি পৌঁছতে?” আমি পেট্রল পাম্পের লোকটাকে জিজ্ঞেস করলাম যে জিওরি থেকে চিতকুল কতক্ষণ লাগবে পৌঁছতে। লোকটা আমায় জানাল যে আরও ঘন্টা চারেকের রস্তা বাকি। লোকটা আরও জানাল যে কারছাম ব্রিজের পরে রাস্তা খুব খারাপ। বল্বিন্দার আমাকে বলল যে ও রাস্তা জানে, কোন চিন্তা করতে বারণ করল আমাকে। পরী হিন্দি বিশেষ ভালো করে বোঝেনা তাই আমাকে জিজ্ঞেস করে যে বল্বিন্দার কি বলল। আমি রাস্তার কথাটা চেপে গেলাম, জানালাম যে কোন কিছুর জন্য চিন্তা না করতে। ঘড়ির দিকে তাকালাম, আড়াইটে বাজে তখন, তারমানে চিতকুল পৌঁছতে সন্ধ্যে হয়ে যাবে। একে শীতকাল তায় আবার পাহাড়, এখানে রাত সমতলের চেয়ে একটু তাড়াতাড়ি নামে। জিওরি ছাড়ার কিছু পরেই পরী বলল যে ও আর ঘুমোতে চায় না, বাইরের দৃশ্য দেখবে। আমি বললাম ঠিক আছে। কিছু পরেই সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ে। যখন আ...

"এক অপরিচিতা"(পর্ব: ছয়)

লেখক:আসিফ ইকবাল! "আগের পর্ব গুলো আমার টাইমলাইনে বিদ্যমান" পঞ্চম পর্বের পর থেকে..... ___আরে বাহ, আপনি নিজের বউ কেই চিনতে পারছেন না!       এবার তো বলবেন গতকাল আপনি আমাকে বিয়েই করেন              নি। হম,সেটাও বলে ফেলেন না! দেরি কেনো? ওর এতগুলি কথার পর বুঝতে পারলাম,এটাই আমার অপরিচিতা,কিন্তু ও আজকে নিকাব পড়েনি। হিজাব পড়েছে। তাই চিনতে পারিনি। মুখ দিয়ে কিছু বের হচ্ছেনা। শুধু ওর দিকে তাকিয়ে আছি। আমার বউটা অনেক কিউট। সকাল বেলা যে আমার জন্য এরকম একটা সারপ্রাইজ আছে সেটা ভাবিনি!      ____কি!আপনি কি এভাবেই তাইকে থাকবেন? নাকি উঠেবেন। জলদি উঠে ফ্রেশ হোন।(তাফা) ____তুমি আজকে নিকাব পরোনি যে! ____আপনি তো আমার বর!আপনার সামনে নিকাব পড়তে হবে কেনো?(তাফা) বলে.....একটা হাসি দিয়ে চলে গেলো। এই প্রথম ওর হাসি দেখলাম। আর সেটা আমাকে রীতিমতো পাগল করে দিয়েছে। আর দেরি করলাম না। জলদি বিছানা ছেড়ে ফ্রেশ হতে চললাম। তাফা,,, তাফা! কই তুমি?........ "এইতো কিচেনে,কি হোয়েছে..... তাফা কিচ...