সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমার মায়াবতী |পর্ব:-সতেরো|


সকালে ঘুম ভাঙতেই এক চিলতে আলো এসে চোখে পড়ায় মায়ার তাকাতে প্রথমে একটু কষ্ট হলো। একটু পরেই টের পেল আলোটা আর চোখে এসে লাগছে না৷ আলোর বদলে মিষ্টি একটা ছায়া এসে পড়েছে কোত্থেকে যেন। আবার চোখ খুলেই ছায়ার রহস্যটা দেখতে পেল মায়া। রাহাত মায়ার দিকে একটু ঝুঁকে হাত দিয়ে আড়াল করে রোদটাকে মায়ার চোখে মুখে পড়া থেকে আটকাচ্ছে। মায়া নিজের ঠোঁট কামড়ে হেসে ফেললো রাহাতের কাজ দেখে।। রাহাতও আরেকটু ঝুঁকে মায়ার গালে চুমো খেল।
-এভাবে হেসে আবার কেন আমার নেশা জাগাচ্ছে মায়াবতীটা?? হুম? হুম??
-কি??
-এভাবে হেসো না গো। পাগল হয়ে যাবো।
-ধ্যাত, সরো। কত বেলা হলো??
-আরে??
মায়া গায়ে চাদরটা ধরে উঠে যাওয়ার আগেই রাহাত মায়াকে টেনে একেবারে বুকের ভিতরে নিয়ে শুয়ে গেল।
-আরে?? কি করছ?? কত বেলা হলো??
-এ আর এমন কি বেলা হলো বউ? আটটা বাজে। পাশের রুমে দুজনসুখী মানুষ হয়তো একটু আগেই ঘুমিয়েছে। আর তুমি এখনই উঠার জন্য লাফালাফি করছো?
-এই এই?? লজ্জা শরম কিছু নেই তোমার?? মুখে কিছু আটকায় না?
-না আটকায় না। আর তোমার লজ্জাটাও তো ভেঙে দিলাম রাতেই.....
-অসভ্য লোক একটা। সরো??
-উহু। সারারাত আমি মায়াপরীটাকে আদর করেছি। এখন মায়াবতীটা.....
-সরো????? ছাড়ো।
-আহা!! সেটি বললে তো হচ্ছে না গো মায়াবতী।
-ছাড়ো না?? কাজ আছে তো। মা আর রহিমা খালা সবকিছু সামলাতে পারবে না তো??
-যতই বাহানা দিন না কেন, আপনার এতো তাড়াতাড়ি আমাকে ছেড়ে যাওয়া চলবে না।
-হুহ।
-নিজে তো পড়ে পড়ে এতোক্ষণ ঘুমাচ্ছিলে। কি মায়াভরা মুখ। আসলে ঠিকই বলে জানো? প্রথম বাসরের পর বউয়ের মুখ দেখে.........
মায়া লজ্জা পেয়ে চাদরটা গায়ে পেঁচিয়ে অন্য দিকে ফিরে গেল। রাহাত হেসে একটু সামনে এসে এক হাতে ভর দিয়ে শুয়ে অন্য হাতে মায়ার কোমড় পেঁচিয়ে ধরে পিঠে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিলো। মায়াও কেঁপে উঠে রাহাতের হাতটা শক্ত করে চেপে ধরলো। রাহাত মায়ার ঘাড়ে, কানে, চুলে মুখ গুঁজে দুষ্টুমিতে মাতলো।
-আহারে!! এতো আদরেও লজ্জাবতীর লজ্জা ভাঙে নি??
-সরো?? কি শুরু করেছ সকাল সকাল?
-মায়া?? একটা কথা জিজ্ঞেস করি?? রাগ করো না প্লিজ?
-নাহ রাগ করবো না।। বলো?
-আম.... গতকাল তোমার মাঝে ডুব দেওয়ার সময় অদ্ভুত একটা অনুভূতি হচ্ছিল। বারবার মনে হচ্ছিল এভাবে আগেও তোমাকে কাছে টেনেছি। মনে হচ্ছিল তোমার শরীরের প্রত্যেকটা ভাঁজে আমার স্পর্শ এভাবে আগেও করেছি। কিন্তু আসলে তো তা না বলো? তোমাকে এর আগে তো এতোটা আপন করে কাছে টানি নি।
- কাল যখন বললে আমাকে নিজের করে চাও। তখন শুধু প্রে করছিলাম যেন সেদিনের মতো এতোটা কাছে এসে ফিরিয়ে না দাও!
-মানে?? কবের কথা বলছো? আমি বুঝতে পারছি না কিছু।
-কিছু না। সরো? একটু ঘুমিয়ে নাও। আজ কিন্তু অনেক কাজ আছে।
-মায়াবতী?? কি লুকাচ্ছ আমার কাছে??
-আরে?? কিছুই না। সরো না? ছাড়ো। আমি ফ্রেশ হয়ে আসি।
-হুম?? আচ্ছা। যাও,
মায়াকে ছেড়ে দিতেই মায়া রাতের লাল শাড়িটা পেঁচিয়ে পড়ে আলমারি থেকে আরেকটা শাড়ি বের করে ওয়াশরুমে চলে গেল। রাহাত রাতের ছড়ানো ফুলের শিকল আঙুলে পেঁচাতে পেঁচাতে চিন্তা করতে লাগলো মায়া কি বলে গেল৷ কিছু মনেও আসছে না। ভাবতে ভাবতেই বেচারা একসময় ঘুমিয়েও গেল।
মায়া শাওয়ার নিয়ে বেরিয়ে দেখলো রাহাত ঘুমিয়ে গেছে। শাড়িটা ঠিক করে চুল মুছছে এমন সময় টুং করে একটা মেসেজের শব্দ হলো কোথাও। মায়া নিজের মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখলো কোন নোটিফিকেশন আসে নি। পাশে রাহাতের মোবাইলে আলো জ্বলছে দেখে হাতে নিতেই দেখলো একটা মেসেজ এসেছে। লিজা নামে সেইভ নামটা। মায়া ভ্রু কুঁচকে একটু চিন্তা করে মেসেজটা ওপেন করলো।
" স্যার প্রজেক্টের কাজটা আগামী সপ্তাহ থেকেই শুরু করতে হবে। অফিসে এসে আমাদের কাজটা বুঝিয়ে দিলে ভালো হতো।"
কয়েকবার মেসেজটা পড়েও ঠিক কি বুঝিয়েছে বুঝলো না মায়া। মোবাইল রেখে মায়া চিন্তা করলো একটু। হয়তো রাহাতের ড্রিম প্রজেক্টটার কাজ শুরু হবে। কিন্তু অফিসে কাকে কি বুঝাতে হবে!! যাক গে!! এমনিতেও লোকটা বহুদিন অফিসে যায় না। জোর করে না পাঠালে যাবেও না। এসব ভেবে মায়া নিজেই হেসে ফেললো রাহাতের ঘুমন্ত মুখটার দিকে তাকিয়ে। রাহাতের কাছে একটু এগিয়ে গিয়ে কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিলো মায়া। কিন্তু একটা কথা মায়ার মনে খচখচ করতেই থাকলো। এই লিজা টা কে?? মায়ার ইচ্ছে করছে এখনই ঘুম থেকে ডেকে দিয়ে রাহাতকে জিজ্ঞেস করতে কে এই লিজা। ও কেন মেসেজ করবে রাহাতকে!!? কিন্তু কাজটা করা ঠিক হবে না। তাই আর জাগালো না। রাহাতেট মুখটা আরেকবার দেখে চাদরটা গায়ে ভালো করে জড়িয়ে দিয়ে রুম থেকে বের হলো মায়া। ভালো করে দরজাটা আটকে দিয়ে রান্নাঘরে মায়ের সাথে কাজ করায় মন দিলো।
নাস্তা বানানো শেষ হলে আবার রুমে এলো মায়া। রাহাত এখনো ঘুমাচ্ছে। মানুষটাকে জাগাতেও ইচ্ছে করছে না মায়ার। কয়টা দিন কত পরিশ্রম যাচ্ছে ওর উপর দিয়ে। প্রজেক্টের কাজ শেষ করে চট্টগ্রাম থেকে জার্নি করে ফিরেছে। আর রাতে!! রাতের কথা মনে পড়তেই একা একাই লজ্জায় লাল হয়ে গেল মায়া। নিজেকে সামলে নিতেই একটা দুষ্ট বুদ্ধি মাথায় এলো মায়ার। নিজের এক গাছি ভিজা চুল নিয়ে রাহাতের কানে সুড়সুড়ি দিলো। প্রথমবারে রাহাতের নড়ন চড়ন নেই। আরেকবার সুড়সুড়ি দিতেই রাহাতের ভ্রু জোড়া কুঁচকে গেল। মায়া হেসে একটু পরে আবারও রাহাতের কানের কাছে চুল নিতেই রাহাত দু হাতে মায়াকে টেনে বিছানায় ফেলে বুকে জড়িয়ে নিলো। মায়া ছোটার জন্য লাফালাফি করছে প্রচন্ডভাবে। রাহাতও মায়াকে আরো নিবিড় করে বুকে চেপে ধরলো।
-আরেকবার ঘুমের ডিস্টার্ব করবা খবর আছে মায়াবতী। চুপ করে বুকের মধ্যে শুয়ে থাকো। নড়াচড়া না একদম।
-ছাড়ো। আচ্ছা আর করবো না তো??
-বললাম না?? নড়াচড়া না। আর কথাও বলবা না। চোখ মেলতে পারছি না। প্রচন্ড ঘুমে চোখ টানছে। সো ডোন্ট টক। ওকে??
-এই?? ছাড়ো না গো??
মায়া কিছু বুঝে উঠার আগেই রাহাত মায়ার ঠোঁট দুটো নিজের ঠোঁটেরমাঝে চেপে ধরলো। একটু পরে ছেড়ে দিয়ে মায়াকে আলগা করে ছেড়ে দিয়ে শুয়ে পড়লো রাহাত।
-যাও। এখন ছেড়ে দিলাম।
মায়া রাহাতের বুক থেকে সরে না এসে মুখ ডুবিয়ে একটু লাজুক হাসলো। লোকটা এতো আজব কেন মাঝেমাঝে সেটা মায়া বুঝে ওঠে না৷ তবে এই আজব, অদ্ভুত মানুষটাকেই মায়া পাগলের মতো ভালোবাসে। এই মানুষটার থেকে দূরে গিয়ে কি করে থাকবে সেটাই মায়া বুঝে ওঠে না। তবু কেন জানি মনে হয় জীবন নামের রঙ্গমঞ্চে ওদের এইটুকুই একসাথে পথচলা ছিল। বাকি পথটুকু চলতে হবে আলাদা। আর যতই কষ্টের হোক না কেন পথটা ওদের আলাদাই চলতে হবে।।
চলবেএভাবে পাগলামি আর ছেলেমানুষি ভালোবাসায় একটা সপ্তাহ কেটে গেছে। মায়া এক প্রকার জোর করেই রাহাতকে অফিসে পাঠাচ্ছে। কাজ সেরে বাসায় ফিরেই রাহাত মায়ার সাথে দুষ্টুমিতে মাতে। কখনো তাড়াতাড়ি ফিরলে মায়া, রাহাত, মিহান, দিয়া চারজনে মিলে লং ড্রাইভে বেরিয়ে পড়ে। আবার কখনো রাত বিরেতে মায়াকে নিয়েই একা বেরিয়ে যায় রাহাত। ব্রিজের ওপরে মায়াকে বুকে চেপে ধরে অশান্ত নদীটার ঢেউ উপভোগ করে। সব মিলিয়ে রাহাতের দিনগুলো বেশ ভালোই কেটে যাচ্ছে।
আর মায়ার দিনগুলো কাটছে চিন্তায়। মিহান ভাইয়ার বিয়ের কথা বলে না হয় এতোদিন বাড়িতে ছিল। এখন কি করবে? রাহাত ফিরিয়ে নিতে চাইলে যাবে?? নাকি আরো কটা দিন দেখবে?? মা খালা জিজ্ঞেস করলে কি জবাব দিবে? সব মিলিয়ে মায়ার চিন্তা হচ্ছে প্রচন্ড। দিয়া আর মিহানের হানিমুনের জন্যও কোথাও যাওয়ার প্ল্যানিং করা দরকার। এসব ভাবতে ভাবতেই মোবাইল নিয়ে গুতাগুতি করছিল মায়া। এমন সময় টুং করে একটা মেসেজ এলো মায়ার মোবাইলে। আর একটু পরেই একটা ভয়েস রেকর্ড। মায়া মেসেজটা পড়েই থমকে গেল।
"মিসেস মায়া রাহাত মাহবুব চৌধুরী,
কেমন আছেন? আমাকে চিনতে পারলেন ম্যাডাম? আমার সাজানো গোছানো প্ল্যানটায় জল ঢেলে আপনি রাহাত স্যারকে তো বিয়ে করলেন। কিন্তু ধরে রাখতে পারলেন কি? এক বছর আগের কথা মনে আছে?? তখন নাহয় আমি উনার ড্রিংকসে ওষুধ মিশিয়ে এনেছিলাম আর আপনিও সেটার খোঁজ বের করে আমাকে থাপ্পড় মেরে তাকে নিয়ে চলে গেলেন। তবু বেঁধে রাখতে পেরেছেন? আর এবার? এবার তো স্যার নিজেই মোটা টাকা দিয়ে কাউকে বেড পার্টনার করছেন। বিশ্বাস হলো নাতো? বাঙালি নারী তো? স্বামীকে তো ফেরেশতা মনে করে বিশ্বাস করেন। তাই অডিও টাও দিলাম৷ শুনে দেখবেন।৷ আর ভালো থাকবেন ম্যাডাম।
জুলি।"
মেসেজটা পড়ে মায়ার দম বন্ধ হয়ে আসার জোগাড়। কোনমতে ঢোক গিলে অডিওটা প্লে করলো। ফাইলের কাগজের খসখসানির পর কথাগুলো শুরু হলো।
"-Hae? Liza?? Are you free tonight? I can pay you for the night----.
-কত দিবেন?? স্যার?
-উউউউউউ। মে বি 50k per night.
-ওকে, স্যার। কোথায় আসতে হবে ম্যাসেজ করে দিবেন। চলে আসবো। "
গা কাঁপানি দিতেই মায়ার হাত থেকে মোবাইলটা পড়ে গেল। মায়াও মোবাইলের পাশেই ফ্লোরে বসে পড়লো। চোখের পানিগুলো বাঁধা মানছে না। বছর খানেক আগেও রাহাতকে জুলির ফ্ল্যাটের বিছানায় অচেতন হয়ে পড়ে থাকতে দেখে এভাবেই দম বন্ধ আসছিলো মায়ার। তবু সেদিন মায়া রাহাতকে বিশ্বাস করেছিল। ওর অচেতন মুখটা দেখেই মায়া বুঝতে পেরেছিল জুলিই কিছু করেছে যাতে মায়া রাহাতকে ভুল বুঝে। ড্রাইভার আর মায়া মিলে রাহাতকে সেদিন নিয়ে এসেছিল বাসায়। দিনটার কথা মনে হতেই মায়ার আরো কান্না পেল।
নিজের হাত কামড়ে কান্নার শব্দগুলো আটকানোর চেষ্টা করছে মায়া। আজ রাহাতকে কি করে বিশ্বাস করবে?? বিশ্বাসের জায়গাটা কি আজ আর অবশিষ্ট আছে?? আর কে এই লিজা!? রাহাতের অফিসের কেউ? ভাবতেই আবার কান্না এসে সব ঝাপসা করে দিলো মায়ার৷ শরীরের চাহিদাটা কি এতোই বেশি? ওদের ভালোবাসার চেয়েও? আসলেই কি রাহাত নামের মানুষটাকে ভালোবেসে ভুল করেছে মায়া? ওর ভালোবাসাটা একটুও মানুষটাকে বদলাতে পারে নি?? একটা মেয়ে তো সব মানতে পারে। কিন্তু প্রিয় মানুষটার ভাগ কখনোই কাউকে দিতে পারে না। আর প্রিয় মানুষটা যদি তার স্বামী হয় তবে তাকে নিজের করে পেতে একটা মেয়ে নিজের জীবনটাও দিয়ে দিতে পারে৷ তবে যে মানুষটাথাকবেই না তাকে কি করে কিসের লোভ দেখিয়ে আটকাবে মায়া? শরীরের? ছিহ!!
এসব ভাবতে ভাবতে আর কাঁদতে কাঁদতেই কখন মায়া ঘুমিয়ে গেছে নিজেই টের পায় নি। ঘুম ছুটতেই টের পেল এক জোড়া হাত মায়াকে জাপটে ধরে আছে৷ কোন মতে নিজেকে সামলে নিয়ে মায়া রাহাতের মুখের দিকে তাকালো। রাহাত আঙুল দিয়ে মায়ার চুলগুলো মুখের উপর থেকে সরিয়ে দিলো।
-মায়া?? কি হয়েছে??
-হুম??
-নিচে শুয়ে ছিলে কেন? আমি তো ভয় পেয়ে গেছিলাম। শরীর খারাপ লাগছে পরী??
-আরে নাহ। এমনি বসে ছিলাম। কখন ঘুমিয়ে গেছি বুঝতে পারি নি।
-মায়াবতী? কি হয়েছে? চোখ মুখের এ অবস্থা কেন? কান্না করেছ কেন? এই??
-হুম?? কিছু নাহ??
-পরী?? বলো না কি হয়েছে??
-তুমি এই সন্ধ্যা বেলায় কি করে এলে??
রাহাত মায়াকে বুকে টেনে নিলো।
-কথা ঘুরাচ্ছে কেন মায়াবতীটা??
-বলো না??
-প্রজেক্টের কাজ বাকি আছে অনেকটা। আর কালকে মেইল করতে হবে এন. আর. পি. ইনড্রাস্ট্রিতে। উনারা প্রজেক্টের কাজের কতোটুকু হলো সেটা দেখতে চাইছে।
-ওহ, তো কাজ না করে এখানে কি??
-বাড়ি চলো না মায়াবতী?
-হুম?? কি??
-অনেকদিন তো হলো। তোমার কোলে মাথা রেখে কাজ করবো। তুমি আদর করে চুলে হাত বুলিয়ে দিবে--। ঘুমিয়ে পড়লে বকা দিয়ে তুলে দিবে।
-(চুপ)
-রাগ করলে?? আচ্ছা যাও। টেইক ইউর টাইম। প্রজেক্টের ঝামেলা শেষ হবে কালই। তারপর আমিও দেখি আমার মায়াবতী আমার থেকে কি করে দূরে থাকে।
-তোমার অনেক কাজ বাকি??
-রাতে কমপ্লিট করে নিবো। আজ রাতে বাড়ি যাবো। কাজ কমপ্লিট হলেই কাল সোজা বউয়ের বুকে মুখ ডুবাতে চলে আসবো।
-হুম,
-মায়াবতী? কি ভাবছ??
-হুম? কিছু না। আচ্ছা? রাহাত? লিজা কে?
-আরে? আমার কারেন্ট পি.এ।
-ওহ,
-ওর কথা কেন?
-তোমার অনেক কাজ বাকি না? বাসায় যাও!
-বারে?? তাড়িয়ে দিচ্ছ কেন?? যাবো তো। বউকে আদর দিয়ে করে নিই মন ভরে,
-হুম,
রাহাত মায়াকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে আলতো আলতো করে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিয়ে দুষ্টুমি করতে লাগলো। মায়ার মনটা খারাপ বুঝতে পারছে। তাই আরো বেশি করে দুষ্টুমি করছে রাহাত। মেয়েটার মন ভালো হচ্ছে না কেন কিছুই বুঝতে পারছে না।
-মায়াবতী?? একটা গান শোনাও। তোমার মিষ্টি কণ্ঠে একটা গান শুনি। তাহলে মন দিয়ে কাজ করতে পারবো।
-হুম।
মায়া উঠে বসতেই রাহাত মায়ার কোলে মাথা রেখে মায়ার কোমড় জড়িয়ে ধরে পেটে মুখ গুঁজলো। মায়াও রাহাতের চুলে হাত বুলিয়ে হালকা গলায় গান ধরলো।
- " Lag Ja Gale Ki Phir Ye Hasin Raat Ho Na Ho
Shaayad Phir Is Janam Men Mulaaqaat Ho Na Ho
Lag Jaa Gale …
Ham Ko Mili Hain Aaj, Ye Ghadiyaan Nasib Se
Ji Bhar Ke Dekh Lijiye Ham Ko Karib Se
Phir Aap Ke Nasib Men Ye Baat Ho Na Ho
Shaayad Phir Is Janam Men Mulaaqaat Ho Na Ho
Lag Jaa Gale …
Paas Aaiye Ki Ham Nahin Aaenge Baar-Baar
Baahen Gale Men Daal Ke Ham Ro Le Zaar-Zaar
Aankhon Se Phir Ye Pyaar Ki Barasaat Ho Na Ho
Shaayad Phir Is Janam Men Mulaaqaat Ho Na Ho
Lag Ja Gale Ki Phir Ye Hassin Raat Ho Na Ho
Shaayad Phir Is Janam Men Mulaaqaat Ho Na Ho
Lag Jaa Gale …"
মায়ার গান শেষ হতেই রাহাত বিছানায় শুয়ে মায়াকে বুকে টেনে নিলো।
-মায়াবতী? কি হয়েছে তোমার??
-কো-কোথায়??
-তাহলে এভাবে কাছে ডাকছো কেন?? আমি তো কাজটা করতেও যেতে পারবো না এখন তোমাকে রেখে।
-যাও তো। ঢং করো না।
-ঢং না কি সেটা কাল এসেই বোঝাবো ম্যাডাম। আর কি হয়েছে সেই রহস্যের পর্দা কালই নাহয় উদ্ঘাটন হবে।।
মায়া মুচকি একটু হাসলো। মনে মনে ভাবলো- শুধু কালেরই অপেক্ষা রাহাত। নতুন একটা ভোর সব কিছুই বদলে দিবে কাল।
চলবে........
(এক ভালোবাসার জোরেই কি আগের সমস্ত ভুল ভ্রান্তি মুছে যাবে??)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(পর্ব ০৯)

RM ,,পূর্ববর্তী পার্ট গুলি পেতে অমার টাইমলাইন  ভিজিট করুন,, কতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলাম সেটা মনে নেই। চোখ খোলে যখন মাথার পেছনে সজোরে এক থাপ্পর খাই। ঘুম ঘুম চোখে চারদিকে তাকিয়ে দেখি যে কে আমাকে চড়টা মারল। আমি দেখলাম যে আমি উঠানের মাটিতে পড়ে আছি, পায়ের কাছে মাটিতে সুব্রত পড়ে আছে। আমি ওপর দিকে তাকিয়ে দেখতে চেষ্টা করি যে কে আমাকে চড়টা মারল, আমি অবাক হয়ে দেখি যে ইন্দ্রানি মাসি আমাদের দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে। আমার দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে বলে ওঠেন “শুয়োর গুলো এখানে শুয়ে? আর আমারা তোদের দু’জনকে সারা বাড়িতে হন্যে হয়ে খুঁজছি। তোদের কি কোন বোধ বুদ্ধি নেই?” আমি সুব্রতর কাঁধ ঝাঁকিয়ে উঠিয়ে দিলাম, সুব্রত আর আমি দুজনেই উঠে পড়লাম মাটি থেকে। আমি কাতর চোখে ইন্দ্রানি মাসির দিকে চেয়ে বললাম “সরি মাসি। ভুল হয়ে গেছে, কাল রাতে একটু বেশি হয়ে গেছিল।” চেয়ারের ওপরে মদের বোতল আর গ্লাসের দিকে ইন্দ্রানি মাসির চোখ পড়ে যায়, তাড়াতাড়ি করে চেয়ারের ওপরে নিজের শাল ফেলে দিয়ে ঢেকে দেয় গ্লাস আর বোতল। ঠিক সেই সময়ে পেছন থেকে অনেক গুলো পায়ের আওয়াজ পাই। মাসি সবাই কে বলে “এই ছেলে দুটো সারা রাত...

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(শেষ পর্ব)

RM কিছুদূর যেতেই  একটি জায়গায় গাড়ি দাঁড় করায় বল্বিন্দার, বলল যে গাড়িতে তেল ভরতে হবে। গাড়ি থামার সঙ্গে সঙ্গে পরীর ঘুম ভেঙে যায়, আমার দিকে তাকিয়ে বলে “কতক্ষণ ঘুমিয়েছি আমি?” আমি বললাম “বেশীক্ষণ ঘুময়নি তুমি” “আমরা থামলাম কেন?” “তেল ভরার জন্য।” “আর কত দেরি পৌঁছতে?” আমি পেট্রল পাম্পের লোকটাকে জিজ্ঞেস করলাম যে জিওরি থেকে চিতকুল কতক্ষণ লাগবে পৌঁছতে। লোকটা আমায় জানাল যে আরও ঘন্টা চারেকের রস্তা বাকি। লোকটা আরও জানাল যে কারছাম ব্রিজের পরে রাস্তা খুব খারাপ। বল্বিন্দার আমাকে বলল যে ও রাস্তা জানে, কোন চিন্তা করতে বারণ করল আমাকে। পরী হিন্দি বিশেষ ভালো করে বোঝেনা তাই আমাকে জিজ্ঞেস করে যে বল্বিন্দার কি বলল। আমি রাস্তার কথাটা চেপে গেলাম, জানালাম যে কোন কিছুর জন্য চিন্তা না করতে। ঘড়ির দিকে তাকালাম, আড়াইটে বাজে তখন, তারমানে চিতকুল পৌঁছতে সন্ধ্যে হয়ে যাবে। একে শীতকাল তায় আবার পাহাড়, এখানে রাত সমতলের চেয়ে একটু তাড়াতাড়ি নামে। জিওরি ছাড়ার কিছু পরেই পরী বলল যে ও আর ঘুমোতে চায় না, বাইরের দৃশ্য দেখবে। আমি বললাম ঠিক আছে। কিছু পরেই সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ে। যখন আ...

"এক অপরিচিতা"(পর্ব: ছয়)

লেখক:আসিফ ইকবাল! "আগের পর্ব গুলো আমার টাইমলাইনে বিদ্যমান" পঞ্চম পর্বের পর থেকে..... ___আরে বাহ, আপনি নিজের বউ কেই চিনতে পারছেন না!       এবার তো বলবেন গতকাল আপনি আমাকে বিয়েই করেন              নি। হম,সেটাও বলে ফেলেন না! দেরি কেনো? ওর এতগুলি কথার পর বুঝতে পারলাম,এটাই আমার অপরিচিতা,কিন্তু ও আজকে নিকাব পড়েনি। হিজাব পড়েছে। তাই চিনতে পারিনি। মুখ দিয়ে কিছু বের হচ্ছেনা। শুধু ওর দিকে তাকিয়ে আছি। আমার বউটা অনেক কিউট। সকাল বেলা যে আমার জন্য এরকম একটা সারপ্রাইজ আছে সেটা ভাবিনি!      ____কি!আপনি কি এভাবেই তাইকে থাকবেন? নাকি উঠেবেন। জলদি উঠে ফ্রেশ হোন।(তাফা) ____তুমি আজকে নিকাব পরোনি যে! ____আপনি তো আমার বর!আপনার সামনে নিকাব পড়তে হবে কেনো?(তাফা) বলে.....একটা হাসি দিয়ে চলে গেলো। এই প্রথম ওর হাসি দেখলাম। আর সেটা আমাকে রীতিমতো পাগল করে দিয়েছে। আর দেরি করলাম না। জলদি বিছানা ছেড়ে ফ্রেশ হতে চললাম। তাফা,,, তাফা! কই তুমি?........ "এইতো কিচেনে,কি হোয়েছে..... তাফা কিচ...