সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমার মায়াবতী |পর্ব:-সাত|


ছেলেটা বলল______

-জি?? কাকে চাই??

-আম.....।মানে?? এটা মায়াবতী.....মানে মায়াদের বাসা না??

-জি। আপনাকে তো চিনতে পারলাম না?

-মানে, আমি রাহাত।মায়া আমার....মায়া আমার পি.এ। এ্যাকচুয়েলি দুদিন আসছে না তাই। খবর দিতে আসলাম কি হয়েছে।

-ওহ,স্যার?? আসুন ভিতরে আসুন।

-জি। আপনি??

-আমি মায়ার বড় ভাই।

-ওহ।

-আসুন,আসুন। মা?? দেখো কে এসেছে??

ছেলেটা রাহাতকে ড্রইংরুমে বসতে বলে বাসার ভিতরে চলে গেল। রাহাতের মনে হল বুকের উপর থেকে এক টনের পাথর নামলো। মায়ার যে একটা বড় ভাই আছে সেটা ওর জানাই ছিল না। দরজায় ছেলেটাকে দেখে কত কি ভাবছিল!! ব্যাপারটা মনে পড়তেই নিজে নিজেই লজ্জা পেল রাহাত। যে ছেলে কোন মেয়ের দিকে একবারের বেশি তাকিয়েও দেখে না সে নাকি যাকে চিনেও না এমন একটা ছেলেকে মায়ার বাসায়দেখে টেনশনে পড়ে গেছে!! কিসব হচ্ছে ওর সাথে আজকাল কে জানে! কে এই মায়াবতী?? কেন ওর দিকে এতো আকৃষ্ট হয়ে ছুটে যেতে ইচ্ছে করছে ওর??

রাহাত এসব ভাবতে ভাবতেই কারো কণ্ঠস্বর শুনে হুঁশ ফিরে পেল। একজন বয়স্ক ভদ্রমহিলা আগে দেখা ছেলেটার সাথে ড্রইংরুমে ঢুকছে।। রাহাত সালাম দিল। উনাকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে উনি মায়ার মা। মায়া অনেকটাই ওর মায়ের মতো হয়েছে।

-হুম,বাবা।মিহান তোমার কথা বললো। তুমি নাকি মায়াকে দেখতে এসেছ?? মেয়েটা কি করে যেন এক্সিডেন্ট করে বসেছে। পরশু রাত থেকে খুব জ্বর। এখন একটু ঘুমুচ্ছে.....

-এক্সিডেন্ট!!! হ্যাঁ আসলে ওর ওষুধ গুলো নিয়ে এসেছিলাম। সেদিন তাড়াহুড়ায় আনতে ভুলে গেছে।

-ওহ...মেয়েটাকে কত বলি সাবধানে চলাফেরা করবি। কে শুনে কার কথা!! এতোটা লাপরওয়া হলে হয় বলো বাবা??

-সেটাই আন্টি... আন্টি আমি একটু মায়াকে দেখে আসবো? না মানে যদি কিছু মনে না করেন!

রাহাতের এমন আবদার শুনে মায়ার মা আর মিহান একে অন্যের মুখ চাওয়াচাওয়ি করলো একবার। তারপর রাহাতের দিকে তাকিয়ে হাসলো।

-ওই রুমটায় মায়া আছে.....

মিহানের দেখানো রুমটায় ঢুকে আলতো করে দরজাটা চাপিয়ে দিল রাহাত। মেয়েটা এই সময়ে ঘুমিয়ে আছে?? ঘড়িতে দেখলো সন্ধ্যা পার হয়ে রাত নেমেছে। ঘড়িতে আটটা বাজে। এই সময় মায়াকে দেখতে ছুটে এসেছে তাও একেবারে মায়ার রুমে!! ভাবতেই একটু ইতস্তত করলো রাহাত। মেয়েটাকে না দেখে আর এক মিনিট থাকা সম্ভব হচ্ছিল না ওর পক্ষে। কি আর করবে!!

ধীর পায়ে মায়ার মাথার কাছে এসে বসলো রাহাত। মুখটা দেখেই বুকের ভেতরটা ধ্বক করে উঠলো। চোখ মুখ বসে গেছে মেয়েটার। চোখের নিচে হালকা কালি ফুটে উঠেছে। তবুও এই মুখটায় কতই না মায়া!! মায়াবতীরমায়া ভরা মুখটা দেখে দুদিনের না দেখার কষ্টটা একেবারে উবে গেল রাহাতের৷ একটু ঝুঁকে মায়ার কপালে একটা ভালোবাসার পরশ বুলিয়ে দিল রাহাত। মায়া একটু নড়ে উঠতেই চুলে আলতো করে বিলি কেটে দিল। মায়া আবার গভীর ঘুমে তলিয়ে গেল।

মায়ার বেডসাইড টেবিলে একটা নোট প্যাড আর কলম দেখে একটা চিরকুট মতো লিখে রাখলো রাহাত৷ তারপর ওষুধের প্যাকেটটা রেখে উঠে বেরিয়ে গেল রুম থেকে। ছোট্ট চিরকুটটায় কয়েকটা লাইন লিখেছে রাহাত।

"মায়াবতী,
প্লিজ তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ফিরে এসো। তোমাকে ছাড়া সব একেবারে এলোমেলো হয়ে আছে। আমি একদম এলোমেলো হয়ে আছি।
সুস্থ হও জলদি।"

এই চিরকুট দেখে মায়ার কি রিএ্যাকশন হবে সেটা নিয়ে এই মূহুর্তে মাথা ঘামাচ্ছে না সে। আর কয় দিন মায়াবতীকে না দেখে কাটাতে হবে সেটা ভেবেই দুনিয়াদারি অন্ধকার লাগছে রাহাতের।

দুদিন পার হয়েছে। সকালে অফিসে যাওয়ার আগে কি মনে হতে মায়ার ফ্ল্যাটের দিকে গেল রাহাত। মেয়েটার একটু খোঁজ খবর নেয়া দরকার। আর এক নজর চোখের দেখাটাও দেখে আসা ছাড়া শান্তি লাগছে না ওর। ভাবতে ভাবতেই মায়ার বাসার সামনের বড় রাস্তায় পৌঁছেছে রাহাত৷ রাস্তার একপাশে যাত্রী ছাউনিতে মায়াকে দেখেই গাড়ি ব্রেক করলো রাহাত৷ মেয়েটা বাসের জন্য দাঁড়িয়েছে!! মায়াকে দেখে জাস্ট সব ভুলে হা করে তাকিয়ে রইলো বেচারা।

একটা তাঁতের শাড়ি পড়েছে মায়া। সাদা আর কালো রঙা। সাথে কালো ফুল হাতা ব্লাউজ। চুলগুলো বেণী করে বাঁধা। কানে ছোট কানের দুল। আর হালকা কাজল টানা চোখ। এই কয়দিন যে এতো অসুস্থ ছিলে সেটা মায়াকে দেখলে বোঝাই সম্ভব না। ওকে দেখতে প্রথম বর্ষার পর গাছের সতেজ ফুলের মতো দেখাচ্ছে। একদম তরতাজা, প্রাণবন্ত। আর সেই মায়াভরা চোখ মুখ দেখে রাহাতের অবস্থা কাহিল।। মায়াকে দেখতে দেখতে সময়ের খেয়ালই ছিল রাহাতের। হুঁশ হলো মায়া উঠে দাঁড়ানোয়। সম্ভবত বাস চলে এসেছে।

মায়া বাসের দিকে যাচ্ছে দেখে হর্ন বাজালো রাহাত। মেয়েটা বাসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দেখে আরো দুবার থেমে থেমে হর্ন দিলো রাহাত। এবারমায়া থমকে দাঁড়িয়ে গেছে দেখে রাহাতের ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠলো। আরেক বার হর্ণ দিতেই মায়াও এদিক ওদিক তাকিয়ে শেষে রাহাতের গাড়িটা দেখতে পেয়ে এগিয়ে এলো। চোখে মুখে রাজ্যের কৌতূহল।

-স্যার আপনি এখানে?? তাও এখন??

-গাড়িতে উঠে এসে বসো।

-না স্যার। আমি বাসে চলে যেতে পারবো।

-চুপচাপ উঠে আসুন মায়াবতী। রাস্তার মাঝ থেকে উঠিয়ে আনা ব্যাপারটা ভালো দেখাবে না!

মায়া ভ্রু কুঁচকে রাহাতকে একবার দেখে গাড়িতে এসে বসলো। রাহাতও মনের আনন্দে ড্রাইভ করা শুরু করলো।

-আপনি এখন এখানে কি করছেন স্যার??

-একজনকে দেখতে এসেছিলাম।

-ওহ-----------

-জ্বর সেরেছে মিস মায়াবতী??

-জি স্যার।

-কই দেখি??

রাহাত বাম হাত দিয়ে মায়ার কপালে আলতো করে ছুঁয়ে দেখলো। জ্বর নেই। কয়েক দিনের চিন্তার পর শান্তি লাগছে রাহাতের। আর মায়া রাহাতের স্পর্শে কেঁপে উঠে বাইরের দিকে তাকালো। এই মানুষটার কাজকর্ম ইদানিং কিছুই বুঝতে পারে না ও৷ সেদিন বাসায় ওষুধ আর চিরকুটটা পেয়ে একেবারে অবাক হয়ে গেছে মায়া। এত কম সময়ে একটা মানুষের এতোটা বদল কি আধো সম্ভব!! ভাবতে ভাবতেই অফিসে চলে এসেছে ওরা দুজনে।

গাড়ি পার্ক করে মায়া আর রাহাত অফিসে ঢুকতেই কারো গলার আওয়াজে থমকে গেল। কণ্ঠটা পরিচিত। আর আসছেও অফিসের বসার ঘরের দিক থেকে৷ ভ্রু কুঁচকে রুমটার কাছাকাছি আসতেই কথাগুলো কানে গেল ওদের দুজনেরই।

-ওই মেয়েটা রাহাত স্যারকেও হাত করেছে, সব জাল প্রুফ দেখিয়ে আমাকে বদনাম করার চেষ্টা করছে। আমি তো ছুটে গেছি। দেখছো তো সকলে?? আর আমি এতোগুলো দিন তোমাদের সাথে কাজ করি। আমাকে তো তোমরা ভালো করেই চিনো। আমি হয়তো এখানে আর থাকবো না। তবে এই মেয়ে স্যারদের সব সম্পত্তি আত্মসাৎ করবে। মিলিয়ে নিও তোমরা।

অফিসে ঢুকতেই দ্বীপের কণ্ঠস্বর শুনে জাস্ট হা হয়ে গেল রাহাত আর মায়া। সত্যিই দ্বীপ ছেলেটা কিনা দেখার জন্য রুমের ভিতরে উঁকি দিলো রাহাত। হ্যাঁ, দ্বীপই।। কিন্তু এই ছেলে ছাড়া পেল কি করে সেটাই বুঝতে পারছে না রাহাত। রাগে মাথাই কাজ করছে না বেচারার। মায়া কি ভাবছে চিন্তা করতেই আবার সবার গুনগুনানি শব্দে থমকে গেল।

-আসলেই দ্বীপ স্যার ঠিকই বলেছে। ওই মেয়েটা এসেছে হতেই স্যার পুরো বদলে গেছে। কোন ইন্টারভিউ- কোন নিয়োগ ছাড়াও ধুম করে স্যারের পি.এ ও হয়ে গেছে। একেবারে সাপের পাঁচ পা দেখেছে স্যার একটু সম্মান দেখানোয়।

-ঠিক বলেছ। কিছু একটা প্ল্যানিং করছে এই মেয়ে। তাই এভাবে নাটক করে আমাকে অফিস থেকে বের করলো। নিশ্চয়ই বড়সড় কোন প্ল্যানিং। এদিকে স্যার তো ভালো মানুষ। এতো প্যাঁচঘোচ বুঝেই না। ওই মেয়ে সেটারও ফায়দা নিচ্ছে।

-ঠিক বলেছেন দ্বীপ স্যার। স্যার তো আমাদের সবার সাথেও কত ভালো ব্যবহার করেন। আর বিপদে আপদে সাহায্যও করেন। স্যারকে সরল সোজা পেয়ে......

রাহাতের চোখ রাগে লাল হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু গলা দিয়ে একটা শব্দও বেরহচ্ছে না। মায়ার কথা মনে পড়তেই পিছনে ফিরে দেখলো মেয়েটা কাঁদতে কাঁদতে নিজের কেবিনে ছুটে ঢুকে গেছে। রাহাত বসার রুমের দিকে না গিয়ে মায়ার রুমের দিকে ছুটলো। মেয়েটা একে অসুস্থ!! এর মধ্যে এসব মোটেই নিতে পারবে না। ওকে আগে সামলানো দরকার। ব্যাপারটা ভেবেই রাহাত মায়ার রুমের দিকে ছুটে এলো। রুমটা ভেতর থেকে লক করে ফেলেছে মায়া। রাহাতও উপায় না দেখে দরজায় নক করলো। কিন্তু মায়ার দরজা খোলার নামও নেই।

অনেকক্ষণ দরজা নক করেও যখন মায়া দরজা খুললো না তখন রাহাত নিজের রুমেই ফিরে গেল। গায়ের কোটটা ছুড়ে ফেলে গলার টাইটা টেনে খুলতে খুলতে ফোন মায়ার রুমের সাথে কানেক্ট করার চেষ্টা করলো। কল যাওয়ার কয়েক সেকেন্ড পর ফোনটা রিসিভ করলো।

-হ্যালো??

-মায়াবতী?? একটু আমার রুমে এসো?? প্লিজ???

-স্যার-----------------

- It's an order. Get it??

-আসছি স্যার.....

মায়া রাহাতের রুমে এসে নক করতেই দরজাটা ঝট করে খুলে মায়াকে টেনে রুমে ঢুকিয়ে নিলো রাহাত। রুমের দেয়ালেই চেপে ধরলো মায়াকে।

-কি সমস্যা তোমার?? সবসময় এমন করো কেন?? কে কি বলছে সেটাই তোমার কাছে বড় হয়ে গেল??

-হ্যাঁ,বড় হয়ে গেল।কারণ আমরা আপনার মতো ধনী নই। আপনি ১০০ টা খুন করলেও সেটা নিয়ে কেউ একটা কথাও বলবে না। আর আমাকে কাল কেউ খুন করে ডাস্টবিনে ফেলে গেলেও লোকে আমার নামেই মন্দ বলবে।

-কার এতো বড় সাহস তোমাকে নিয়ে কথা বলার? এক একটাকে খুন করে ফেলবো আমি,তোমার দিকে আর কেউ বাজে নজর দিলে পুঁতে রেখে দিবো এক একজনকে.......

-কিসের অধিকারে?? দয়া দেখাচ্ছেন? শুনুন, আপনার এই দয়ার কারণে আমাকে আরো বেশি করে কথা শুনতে হবে। এর চাইতে আমিই চলে যাব। আর আসবো না।

-মায়াবতী?? আমি তোমাকে দয়া দেখিয়ে এসব করছি?? এটা তুমি মনে মনে বিশ্বাস করো??

-অন্তত বাইরের মানুষগুলো যা বলছে তার চাইতে এটা বিশ্বাস করলে হয়তো নিজের কাছে ছোট হব না।

-(চুপ)

-স্যার,ছাড়ুন.... হাতে ব্যথা পাচ্ছি!

রাহাত কিছু না বলেই মায়ার হাতটা ছেড়ে দিল। মায়া আবার ছুটে বেরিয়ে গেল চোখ মুছতে মুছতে। দরজা খোলা আর বন্ধের সময়টাতেও বাইরের বসার ঘরের সবার গুনগুনানির আওয়াজটা রাহাতের কানে এসে লাগলো। নিজেকে আর কোনমতেই সামলাতে না পেরে বসার ঘরে এসে দাঁড়ালো রাহাত। সবাইকে একসাথে দেখে ধমকে উঠলো।

-এখানে কি হচ্ছে?? অফিসে কি তামাশা করতে এসেছেন আপনারা?

-(সবাই চুপ)

- আর এই লোকটা এখানে কেন?? গার্ডস?? ও এখানে এলো কি করে!! ঘাড় ধাক্কা দিয়ে ওকে এক্ষুণি বের করো.......

-স্যার??

-জাস্ট শাট আপ। কি পেয়েছ কি তোমরা? সবাইকে নিজের মতো করো থাকার আর কাজ করার সুযোগ দিয়েছি আমি। কখনো কাউকে একটা বাজে কথা বলেছি?? নাকি অপমান করেছি কোন ভুল হলে!! আর বিনিময়ে কি করলে তোমরা??

-স্যার আসলে??

-কি আসলে??

-স্যার,আপনার পি.এ আসলে.......

- কি?? মায়া কি করেছে তোমাদের? সেদিন এতো কিছু ঘটনা নিজেরা দেখার পরও তোমাদের কাছে ওরই দোষ?? ওই লম্পটটা একেবারে ফেরেস্তা?? মায়ার লয়ালিটি নিয়ে প্রশ্ন করার সাহস পাও কি করে তোমরা?? চিন ওকে?? সি ইজ মাই ফিয়োনসি! দুদিন বাদে ওর সাথেই আমার বিয়ে হবে। আর তোমরা আমার অফিসে জাস্ট একটা জব করেও সাহস হয় কি করে ওর নামে কিছু বলার!!?? হাউ ডেয়ার ইউ!!?

-স্যাস্যার!!?

-মায়াকে পছন্দ করে ড্যাড নিজে আমার পি.এ করে দিয়েছে। এতোগুলো সময় যেন আমরা নিজেদেরকে বুঝতে পারি তার জন্য দিয়েছে।

-স্যার,আসলে আমরা জানতাম না......

-না জেনেই একজনের নামে আজেবাজে কথা রটাবে কেন?? আর তোমাদের ব্যবহারে ও কি রিএ্যাক্ট করবে আমি তো সেই টেনশনেই মরে যাবো মে বি। ও যদি আমার লাইফে না থাকে।তাও তোমাদের এই গাধামির জন্য।তবে একজনেরও চাকরি থাকবে না মাথায় রাখো। সব কটার লাইফ যদি আমি হেল না করে ছেড়েছি তো আমিও...........

-সরি স্যার,সরি স্যার,আর কখনো এমন ভুল করবো না স্যার.....

-সরি আমাকে না।মায়াকে গিয়ে বলো সবাই।

-জি স্যার.....

রাহাত নিজেই একটা হালকা দম নিলো। এতোক্ষণ নিজের মতো করে বানিয়ে কথাগুলো বলেছে। কারণ মায়াকে সে নিজের করে চায়। বিয়ে করলে এই মায়াবতীকেই করবে। কিন্তু ব্যাপারটা আজকেই সামাল না দিলে সারাজীবন নানা রকম অপবাদ বয়ে বেড়াতে হবে মায়াকে। অফিসের বসের সাথে প্রেম করে বিয়ে করেছে৷ বা সম্পত্তির লোভে বিয়ে করেছে। সত্যটা কেউ দেখতে চাইবে না। যখন কেউ সত্যটা মানবেই না। তখন সেটা জানারও দরকার নেই।।

সবাই ভ্যাঁবাচ্যাঁকা খেয়ে দাঁড়িয়ে আছে দেখে ভ্রু কুঁচকে রুম থেকে বেরিয়ে আসতেই দেখলো পিয়ন হাতে একটা কাগজ জাতিয় কিছু নিয়ে ছুটে তার দিকে এসেছে।

-কি হয়েছে শফিক??

-স্যার?? মায়া ম্যাডাম চলে গেছে....

-মানে!!??

মায়া চলে গেছে শুনে রাহাতের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো। কি বলছে!! মায়া চলে গেছে মানে কি!! কোথায় গেছে? কেনই বা গেল??

চলবে..........

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(পর্ব ০৯)

RM ,,পূর্ববর্তী পার্ট গুলি পেতে অমার টাইমলাইন  ভিজিট করুন,, কতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলাম সেটা মনে নেই। চোখ খোলে যখন মাথার পেছনে সজোরে এক থাপ্পর খাই। ঘুম ঘুম চোখে চারদিকে তাকিয়ে দেখি যে কে আমাকে চড়টা মারল। আমি দেখলাম যে আমি উঠানের মাটিতে পড়ে আছি, পায়ের কাছে মাটিতে সুব্রত পড়ে আছে। আমি ওপর দিকে তাকিয়ে দেখতে চেষ্টা করি যে কে আমাকে চড়টা মারল, আমি অবাক হয়ে দেখি যে ইন্দ্রানি মাসি আমাদের দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে। আমার দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে বলে ওঠেন “শুয়োর গুলো এখানে শুয়ে? আর আমারা তোদের দু’জনকে সারা বাড়িতে হন্যে হয়ে খুঁজছি। তোদের কি কোন বোধ বুদ্ধি নেই?” আমি সুব্রতর কাঁধ ঝাঁকিয়ে উঠিয়ে দিলাম, সুব্রত আর আমি দুজনেই উঠে পড়লাম মাটি থেকে। আমি কাতর চোখে ইন্দ্রানি মাসির দিকে চেয়ে বললাম “সরি মাসি। ভুল হয়ে গেছে, কাল রাতে একটু বেশি হয়ে গেছিল।” চেয়ারের ওপরে মদের বোতল আর গ্লাসের দিকে ইন্দ্রানি মাসির চোখ পড়ে যায়, তাড়াতাড়ি করে চেয়ারের ওপরে নিজের শাল ফেলে দিয়ে ঢেকে দেয় গ্লাস আর বোতল। ঠিক সেই সময়ে পেছন থেকে অনেক গুলো পায়ের আওয়াজ পাই। মাসি সবাই কে বলে “এই ছেলে দুটো সারা রাত...

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(শেষ পর্ব)

RM কিছুদূর যেতেই  একটি জায়গায় গাড়ি দাঁড় করায় বল্বিন্দার, বলল যে গাড়িতে তেল ভরতে হবে। গাড়ি থামার সঙ্গে সঙ্গে পরীর ঘুম ভেঙে যায়, আমার দিকে তাকিয়ে বলে “কতক্ষণ ঘুমিয়েছি আমি?” আমি বললাম “বেশীক্ষণ ঘুময়নি তুমি” “আমরা থামলাম কেন?” “তেল ভরার জন্য।” “আর কত দেরি পৌঁছতে?” আমি পেট্রল পাম্পের লোকটাকে জিজ্ঞেস করলাম যে জিওরি থেকে চিতকুল কতক্ষণ লাগবে পৌঁছতে। লোকটা আমায় জানাল যে আরও ঘন্টা চারেকের রস্তা বাকি। লোকটা আরও জানাল যে কারছাম ব্রিজের পরে রাস্তা খুব খারাপ। বল্বিন্দার আমাকে বলল যে ও রাস্তা জানে, কোন চিন্তা করতে বারণ করল আমাকে। পরী হিন্দি বিশেষ ভালো করে বোঝেনা তাই আমাকে জিজ্ঞেস করে যে বল্বিন্দার কি বলল। আমি রাস্তার কথাটা চেপে গেলাম, জানালাম যে কোন কিছুর জন্য চিন্তা না করতে। ঘড়ির দিকে তাকালাম, আড়াইটে বাজে তখন, তারমানে চিতকুল পৌঁছতে সন্ধ্যে হয়ে যাবে। একে শীতকাল তায় আবার পাহাড়, এখানে রাত সমতলের চেয়ে একটু তাড়াতাড়ি নামে। জিওরি ছাড়ার কিছু পরেই পরী বলল যে ও আর ঘুমোতে চায় না, বাইরের দৃশ্য দেখবে। আমি বললাম ঠিক আছে। কিছু পরেই সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ে। যখন আ...

"এক অপরিচিতা"(পর্ব: ছয়)

লেখক:আসিফ ইকবাল! "আগের পর্ব গুলো আমার টাইমলাইনে বিদ্যমান" পঞ্চম পর্বের পর থেকে..... ___আরে বাহ, আপনি নিজের বউ কেই চিনতে পারছেন না!       এবার তো বলবেন গতকাল আপনি আমাকে বিয়েই করেন              নি। হম,সেটাও বলে ফেলেন না! দেরি কেনো? ওর এতগুলি কথার পর বুঝতে পারলাম,এটাই আমার অপরিচিতা,কিন্তু ও আজকে নিকাব পড়েনি। হিজাব পড়েছে। তাই চিনতে পারিনি। মুখ দিয়ে কিছু বের হচ্ছেনা। শুধু ওর দিকে তাকিয়ে আছি। আমার বউটা অনেক কিউট। সকাল বেলা যে আমার জন্য এরকম একটা সারপ্রাইজ আছে সেটা ভাবিনি!      ____কি!আপনি কি এভাবেই তাইকে থাকবেন? নাকি উঠেবেন। জলদি উঠে ফ্রেশ হোন।(তাফা) ____তুমি আজকে নিকাব পরোনি যে! ____আপনি তো আমার বর!আপনার সামনে নিকাব পড়তে হবে কেনো?(তাফা) বলে.....একটা হাসি দিয়ে চলে গেলো। এই প্রথম ওর হাসি দেখলাম। আর সেটা আমাকে রীতিমতো পাগল করে দিয়েছে। আর দেরি করলাম না। জলদি বিছানা ছেড়ে ফ্রেশ হতে চললাম। তাফা,,, তাফা! কই তুমি?........ "এইতো কিচেনে,কি হোয়েছে..... তাফা কিচ...