সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমার মায়াবতী |পর্ব:-পনেরো|


সকালে মোবাইলটা সশব্দে বেজে উঠে রাহাতের ঘুমটা ভেঙে দিল। তড়িঘড়ি করে মোবাইলটা সাইলেন্ট করে মায়ার দিকে তাকালো রাহাত। মেয়েটা গুটিসুটি মেরে একেবারে রাহাতের বুকের ভিতরে সেঁধিয়ে ঘুমাচ্ছে। রাহাত হেসে মায়ার কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিলো। অনেক রাত পর্যন্ত জেগেছিল ওরা। বারান্দায় দাঁড়িয়ে বাইরের নিশুতি রাতের নিস্তব্ধতার সাথে একে অপরকে অনুভব করেছে নিরবে। শেষ রাতের দিকে রাহাত যখন মায়াকে পাঁজাকোলা করে তুলে এনে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে বুকে টেনে নিয়েছে তখনও একদম চুপ ছিল মায়া। মায়ার এই নিরবতা বড্ড বেশি জ্বালাচ্ছে রাহাতকে। মেয়েটা আবার কি প্ল্যানিং করছে কে জানে!! এবার আর মায়াবতীটাকে কিছুতেই হারাতে দিবে না রাহাত। প্রয়োজনে সব ছেড়ে ছুঁড়ে মায়ার সামনেই বসে থাকবে সারাক্ষণ। ভাবতেই হাসি পেল রাহাতের।

এসব ভাবছে এর মধ্যে রাহাত খেয়াল করলো আবার কল আসছে। দিহান এতোবার কেন কল করছে বুঝতে পারছে না রাহাত। মায়াকে আস্তে করে বালিশে শুইয়ে দিয়ে বারান্দায় এসে দাঁড়ালো রাহাত। কলটা রিসিভ করে কানে লাগালো মোবাইল।

-হ্যাঁ দিহান?? বলো??

-স্যার?? আপনি কোথায় এখন??

-শ্বশুরবাড়িতে.....

-ম্যামের রাগ কমেছে স্যার??

-কমে নি। তবে আমি চেষ্টা করছি।

-স্যার। একটা কথা ছিল।

-হুম। বলো??

-স্যার। আজকে সন্ধ্যা ছয়টায় এন. আর. পি. ইন্ডাস্ট্রির সাথে আপনার প্রজেক্টটা নিয়ে একটা মিটিং ছিল।

-হোয়াট!!!! আজকে!!!

-জি স্যার। এ্যাকচুয়েলি উনারা কনফার্মেশনের জন্য মেইল করেছিল। আমি সেটা দেখে লিজাকে জিজ্ঞেস করায় ও বললো......

-শিট শিট শিট!!!

-জি!! কি হয়েছে স্যার?? এনি প্রবলেম??

-মিটিংটা অনেক আর্জেন্ট ছিল। মাসখানেক আগেই ডেট ফিক্স করা হয়েছিল। শিট..........

-স্যার,মিটিংয়ে এখনো অনেক দেরি। সবে ১০ টা বাজে।

-কোম্পানিটা এখানে ঢাকায় না দিহান। চট্টগ্রামে।

-স্যার। ফ্ল্যাইটে চলে যাবেন। ৪০-৫০ মিনিট লাগবে হয়তো বড় জোর। আমি টিকিট ম্যানেজ করছি-। ম্যামকে নিয়ে ঘুরেও আসলেন,মিটিংও সেরে ফেললেন।

-পসিবল না রে ভাই। আগামীকাল মায়ার ভাইয়ের গায়ে হলুদ। পরশু বিয়ে। আহ... শিট!

-স্যার?? রিল্যাক্স। প্লিজ?

-আম। বাদ দাও দিহান। মিটিংটা ক্যানসেল করে দাও।

-বাট স্যার?? ওটা নাকি আপনার ড্রিম প্রজেক্ট ছিল।

-ছিল রে ভাই। প্রজেক্টটা অন্য কেউ হেন্ডেল করলে হয়তো এতো ভাবতে হতো না। গেলে আমাকেই যেতে হবে। আর এই মূহুর্তে আমি কিছুতেই যেতে পারব না। অসম্ভব।

-স্যার?? বড় স্যার সামাল দিতে পারবেন না ব্যাপারটা?? বা লিজা? বা অন্য কেউ।

-না দিহান । প্রজেক্টটা আমি প্রায় একাই করেছি। অন্য কেউ উনাদের ক্লিয়ার করে প্রেজেন্ট করতেই পারবে না। বাদ দাও।

-স্যার??

-বাদ দাও। মন খারাপ করো না দিহান। অন্য কোন কোম্পানিতে ট্রাই করব পরে।

রাহাত এতোটা অন্যমনস্ক হয়ে কথা বলছিল বলে যে পিছনে আরেকজনের উপস্থিতি টেরই পায় নি। তাই পেছন থেকে মোবাইলটা কেউ টেনে নিতেই রাহাত চমকে উঠে পিছনে তাকালো। মায়াকে দেখে অবাক হয়ে গেল। মায়া মোবাইলটা কানে লাগালো।

-মায়া???

-হ্যালো?? আসসালামু আলাইকুম। দিহান সাহেব আপনি টিকেট বুক করুন। উনি যাবেন।

-আসসালামু আলাইকুম ম্যাম।

-ওয়ালাইকুম আসসালাম।।

মায়া কল কেটে মোবাইলটা রাহাতের হাতে ধরিয়ে দিয়ে রুমে চলে গেল। রাহাতও মায়ার পিছন পিছন রুমে এসে মায়াকে টেনে ধরে খাটে বসিয়ে দিয়ে নিজে মায়ার সামনে ফ্লোরে বসে হাত ধরলো মায়ার।

-পাগল হলে?? আমার যাওয়া পসিবল না আজকে।

-কেন?? এটা তো তোমার ড্রিম প্রজেক্ট। এতোগুলো দিন তুমি এই প্রজেক্টে কাজ করার জন্য ওয়েট করেছ রাহাত। সব ছেড়ে ছুঁড়ে দিয়ে।

-মায়া?? কেন বুঝতে পারছ না??

-কি সমস্যা বলো আমাকে!! বুঝাও শুনি....

-মায়া। মিনিমাম তিনদিনের কাজ ওখানে, এখন কিছুতেই......

-রাহাত?? ভাইয়ার বিয়েতে তুমি না থাকলে হয়তো মনটা খারাপ হবে একটু। কিন্তু তুমি তোমার ড্রিম প্রজেক্টটা নিয়ে কাজ করতে পারলে সবচেয়ে বেশি খুশি হব আমি.....

-মায়া???

-প্লিজ?? না করো না....

-(চুপ)

-তুমি না ফিরা পর্যন্ত সত্যি কোথাও যাব না। প্রমিস....

-মানে!! ফিরলে কোথায় যাবে??

-উফফফফ। বললাম তো ভয় নেই। কাজটা কমপ্লিট করে এসে আমাকে দেখতে পাবে। চিন্তা করো না।।

-ভয় করছে মায়া। তোমার থেকে এক সেকেন্ডের জন্যও দূর হতে মন টানছে না। মনে হচ্ছে আবার যদি তোমাকে হারিয়ে ফেলি!!

-এতো ভেব না প্লিজ?? আমি আছি তো! তুমি কাজ সেরে জলদি চলে এসো।

-হুম।।

-এখন যাও। প্যাকিং করা লাগবে না?? বাড়ি যাও।

-আরে ধুর... এতো প্যাকিং করা লাগে?? চট্টগ্রামে বহু শপিং মল আছে। ওখান থেকে কিনে নেয়া যাবে!

-তোমার ফাইল-প্রেজেন্টেশন। এগুলো নিশ্চয়ই কিনতে পাওয়া যাবেনা। বাসায় যেতেই হবে। তাই না??

-তুমি তো যাবে না। আমি গিয়ে কি করবো বলো???

-(চুপ)

-তোমার এই চুপটি করে থাকা বড্ড বেশি জ্বালাচ্ছে আমাকে মায়াবতী। যত ইচ্ছে বকো। ঝগড়া করো। তবুও প্লিজ কথা বলো??

-ফিরে এসো তাড়াতাড়ি। আমি অপেক্ষা করব তোমার ফিরার।

রাহাত, দিহান আর লিজা তিনজনের একটা টিম করে চট্টগ্রামে গেল। মিটিং প্রেজেন্টেশনের কাজ শেষ করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফিরে এলো রাহাত। এতো তাড়াহুড়ো করেও রাহাতের কাজ শেষ হতে হতে আর ফিরতে ফিরতে বিয়ের দিন সন্ধ্যা হয়ে গেল। বিয়ের মহলে এসেই থমকে দাঁড়িয়ে গেল রাহাত।

মিহানের বিয়েটা মায়াদের এলাকারই একটা কমিউনিটি সেন্টারে হচ্ছে। রাহাত সেখানে এসেই জাস্ট হা হয়ে গেল। স্টেজে মায়াকে দেখা যাচ্ছে। মিহানের শালিকা সম্বন্ধীয় কয়েকটা মেয়ে অনেক আবদার করে মায়াকে স্টেজে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। ফরমায়েশ হয়েছে একটা গান শোনাতে হবে। মায়া লাজুক হেসে মানা করলেও কেউ সেটাকে খুব একটা পাত্তা দিচ্ছে না। বারবার সবাই মিলে মায়াকে রিকুয়েষ্ট করছে একটা গান শোনানোর৷ সবার এতো চাপাচাপিতে মায়া হালকা গলায় গান ধরলো।।
|
Tu Hi Re, Tu Hi Re Tere Bina Main Kaise Jiyu
Aajaa Re, Aajaa Re, Yu He Tadpa Na Tu Mujhko,
Jaan Re, Jaan Re, In Saanso Mein Bas Jaa Tu
Chaand Re, Chaand Re, Aajaa Dil Ki Zameen Pe Tu...............

গান শেষে,সবার হাততালির শব্দে রাহাতের হুঁশ ফিরলো। মায়াবতীটা এতো সুন্দর গান করতে পারে রাহাতের জানা ছিল না। মেয়েটাকে কাজের ফাঁকে ফাঁকে গুনগুন করতে শুনেছে প্রায়ই। তবে ওর গানের গলাটা যে এতো মিষ্টি সেটা রাহাতের ভাবনারও অতীত ছিল। কিন্তু সেটার চেয়েও রাহাতবেশি অবাক হয়েছে মায়াকে দেখে। মিহানের বিয়ে বলে আজ বেশ সুন্দর করে সেজেছে মায়া। একটা ভারি শাড়ি পড়নে। গাঢ় খয়েরী রঙের শাড়িটায় সোনালী ফুলের কাজ করা। শাড়ির সাথে ম্যাচিং করে দু হাত ভর্তি করে সোনালী রঙা চুড়ি। কানে গলায় মায়ার মায়ের স্বর্ণের গয়না। রাহাতের মনে হচ্ছে মাথায় একটা কনে ওড়না পড়লে মায়াকে একেবারে নতুন বউ লাগতো। ব্যাপারটা মনে হতেই হেসে ফেললো রাহাত৷ কাউকে একটা কল করে কিছু একটা বলে আবার মায়ার দিকে তাকালো রাহাত।

মায়ার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে হঠাৎ রাহাতের খেয়াল হলো মায়াবতীটাকে একটা সারপ্রাইজ দেওয়া যায় এখন। তার মায়াবতীটা জানে না সে কাজ শেষ করে আজই ফিরেছে। মায়ার দিকে ধীরে ধীরে পা বাড়াচ্ছে রাহাত। কাছাকাছি আসতেই খেয়াল করলো মায়ার মুখটা হঠাৎ রঙ বদলেছে। এদিক ওদিক তাকিয়ে চোখ নিচু করে চোখের পানি আটকানোর চেষ্টা করছে। কি হলো ব্যাপারটা রাহাতের মাথায় ঢুকলো না। মায়া ওকে তখনো দেখতে পায় নি। অন্য দিকে তাকিয়ে চোখের পানি আটকাতে ব্যস্ত মেয়েটা। মায়ার চোখে পানি দেখেই রাহাতের বুকের ভিতরে ধ্বক করে উঠলো৷ মায়ার আরো কাছাকাছি যেতেই কারো গলার স্বর শুনে একটু থমকে গেল রাহাত।

-ছেলের বোনের নাকি বিয়ে থা হয়েছে?? এতো সাজগোজ!! তা জামাই কই? তার সাথে তো জামাইকে দেখলাম না?

-দেখো গা ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। শুনলাম তো ইয়া বড় ঘরের ছেলে পটিয়ে বিয়ে করেছিল। তাদের আফিসে চাকরি করতো। সেখানেই থেকেই। ওই টিপটাপ আর কি। বুঝো না?? নইলে এতো বড় ঘরের ছেলে?? ধরে রাখতে পারলি না হতভাগী???

-তা আর বলো কেন!!? মেয়ে তো গত ১০-১৫ দিন বাপের বাড়িতে পড়ে আছে। কই জামাই তো একবারও এলো নি?? তার উপরে আজকে মেয়ের একটা মাত্র ভাইর বিয়ে। জল চল থাকলে সে আসতো নি কও দেখি??আরে তাইড়ে দিসে দেখো গা......

-তাড়াবে নে?? যে নাকি চরিত্রির মেয়ে!! মা গো মা!!দেখতিসো না সবার সাথে কেমন ঢলাঢলি করে গান টান করতেসে। একেবারে স্টেজে উইট্ঠে?? তা বাপু করবি কর একটু রেখে ঢেকে কর না!! সবার সামনে কেন পরিবারের মুখে চুন কালি মাখবি!!

-কেন গো ভাবি!! কি করসে??

-আরে। সেদিন, সপ্তাহ খানেক আগে আমার ছেলে তিয়াশ তো দেখলো। একটা লোক নাকি মাঝরাত্তিরে মায়ার ঘরের বারান্দা দিয়ে মায়ার ঘরে গেল। তারপরেই দরজা লাগিয়ে দিল। এই বউ কি আর সোয়ামী নেয় বলো!!

-হুম। নতুন বউটার কপালই খারাপ বুঝলে?? এমন ননদ নিয়ে ঘর করতি হবে-যার চরিত্রিরই ঠিক নেই।

-ঠিকই বলসো গো। প্রথমে টাকার লোভে বড় ঘরের ছেলেকে ফাঁসাও। আর পরে টাকার ঝামেলা চুকে গেলে আলাদা হয়ে যাও। আর এসব করেই তো আজে বাজে রাস্তায় চলে যায় মেয়েগুলো। এসব করে করে পাড়ার ছেলে ছোকরাগুলোকেও খারাপ করবে এরা।

-বিয়েটা মিটে গেলেই এই কুচরিত্রা মেয়েকে ওর শ্বশুরবাড়িতে তাড়াতে হবে। নইলে এলাকার বউ মেয়েদের কি যে হবে!!??

-এই মেয়েকে কি আর নিবে তারা!!? জামাইটা তো ছেড়ে দিলোই বলে দেখো গা। আর কতো জায়গায় মুখ কালো করেছে কে জানে!!?

কথাগুলো শুনতে শুনতে একপা একপা করেই রাহাত পিছিয়ে গেল। কথাগুলো মায়াকে শোনাচ্ছে এলাকার বউ ঝিয়েরা। তার মায়াকে!! রাগ হলেও নিজেকে সামলে নিল রাহাত। মায়া ঠিকই বলেছিল- লোকে মন্দ বললে মায়াকেই বলবে। কিন্তু সেটা রাহাত কিছুতেই মানতে পারবে না। স্টেজের কাছাকাছি এসে একজনকে কিছু টাকা ধরিয়ে দিয়ে মাইক হাতে স্টেজে উঠলো রাহাত।

-হ্যালো?? মিহান ভাইয়া আর নতুন ভাবিকে নতুন জীবনের জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা। আমাকে আপনারা প্রায় কেউই হয়তো চিনেন না। আমি মায়ার হাসবেন্ড। খুব ইচ্ছে ছিল মিহান ভাইয়ার হলুদে-বিয়েতে সবাই মিলে অনেক মজা করবো কিন্তু ব্যবসার কাজে আমাকে বাইরে যেতে হয়েছে৷ তাই আর হয়ে উঠে নি। আমার না আসা নিয়ে নিয়ে মায়াকে হয়তো অনেক অপ্রস্তুত হতে হয়েছে-তার জন্য সরি মায়াবতী। এর জন্য রাগ করে যদি ঘরে ঢুকতে না দাও। তাহলে সেদিনের মতো আবার একবার বারান্দা টপকে রুমে আসবো। কোন চিন্তা নেই। অনেক কথা হলো। এখন আমি আমার মায়াবতীর জন্য একটা স্পেশাল গান করবো।। আশা করি মায়াবতীর রাগটা পড়ে যাবে।কথাগুলো শুনে সবাই হা করে একবার রাহাতকে আর একবার মায়াকে দেখছে। মায়াও স্টেজের উপরে রাহাতকে দেখে ভ্যাঁবাচ্যাঁকা খেয়ে তাকিয়ে রইলো। রাহাত হঠাৎ কোথা থেকে এলো। আর এসবই বা বলছে কেন কিছুই বুঝতে না পেরে অবাক চোখে রাহাতের দিকে তাকিয়ে রইলো।।

চলবে.............

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(পর্ব ০৯)

RM ,,পূর্ববর্তী পার্ট গুলি পেতে অমার টাইমলাইন  ভিজিট করুন,, কতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলাম সেটা মনে নেই। চোখ খোলে যখন মাথার পেছনে সজোরে এক থাপ্পর খাই। ঘুম ঘুম চোখে চারদিকে তাকিয়ে দেখি যে কে আমাকে চড়টা মারল। আমি দেখলাম যে আমি উঠানের মাটিতে পড়ে আছি, পায়ের কাছে মাটিতে সুব্রত পড়ে আছে। আমি ওপর দিকে তাকিয়ে দেখতে চেষ্টা করি যে কে আমাকে চড়টা মারল, আমি অবাক হয়ে দেখি যে ইন্দ্রানি মাসি আমাদের দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে। আমার দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে বলে ওঠেন “শুয়োর গুলো এখানে শুয়ে? আর আমারা তোদের দু’জনকে সারা বাড়িতে হন্যে হয়ে খুঁজছি। তোদের কি কোন বোধ বুদ্ধি নেই?” আমি সুব্রতর কাঁধ ঝাঁকিয়ে উঠিয়ে দিলাম, সুব্রত আর আমি দুজনেই উঠে পড়লাম মাটি থেকে। আমি কাতর চোখে ইন্দ্রানি মাসির দিকে চেয়ে বললাম “সরি মাসি। ভুল হয়ে গেছে, কাল রাতে একটু বেশি হয়ে গেছিল।” চেয়ারের ওপরে মদের বোতল আর গ্লাসের দিকে ইন্দ্রানি মাসির চোখ পড়ে যায়, তাড়াতাড়ি করে চেয়ারের ওপরে নিজের শাল ফেলে দিয়ে ঢেকে দেয় গ্লাস আর বোতল। ঠিক সেই সময়ে পেছন থেকে অনেক গুলো পায়ের আওয়াজ পাই। মাসি সবাই কে বলে “এই ছেলে দুটো সারা রাত...

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(শেষ পর্ব)

RM কিছুদূর যেতেই  একটি জায়গায় গাড়ি দাঁড় করায় বল্বিন্দার, বলল যে গাড়িতে তেল ভরতে হবে। গাড়ি থামার সঙ্গে সঙ্গে পরীর ঘুম ভেঙে যায়, আমার দিকে তাকিয়ে বলে “কতক্ষণ ঘুমিয়েছি আমি?” আমি বললাম “বেশীক্ষণ ঘুময়নি তুমি” “আমরা থামলাম কেন?” “তেল ভরার জন্য।” “আর কত দেরি পৌঁছতে?” আমি পেট্রল পাম্পের লোকটাকে জিজ্ঞেস করলাম যে জিওরি থেকে চিতকুল কতক্ষণ লাগবে পৌঁছতে। লোকটা আমায় জানাল যে আরও ঘন্টা চারেকের রস্তা বাকি। লোকটা আরও জানাল যে কারছাম ব্রিজের পরে রাস্তা খুব খারাপ। বল্বিন্দার আমাকে বলল যে ও রাস্তা জানে, কোন চিন্তা করতে বারণ করল আমাকে। পরী হিন্দি বিশেষ ভালো করে বোঝেনা তাই আমাকে জিজ্ঞেস করে যে বল্বিন্দার কি বলল। আমি রাস্তার কথাটা চেপে গেলাম, জানালাম যে কোন কিছুর জন্য চিন্তা না করতে। ঘড়ির দিকে তাকালাম, আড়াইটে বাজে তখন, তারমানে চিতকুল পৌঁছতে সন্ধ্যে হয়ে যাবে। একে শীতকাল তায় আবার পাহাড়, এখানে রাত সমতলের চেয়ে একটু তাড়াতাড়ি নামে। জিওরি ছাড়ার কিছু পরেই পরী বলল যে ও আর ঘুমোতে চায় না, বাইরের দৃশ্য দেখবে। আমি বললাম ঠিক আছে। কিছু পরেই সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ে। যখন আ...

"এক অপরিচিতা"(পর্ব: ছয়)

লেখক:আসিফ ইকবাল! "আগের পর্ব গুলো আমার টাইমলাইনে বিদ্যমান" পঞ্চম পর্বের পর থেকে..... ___আরে বাহ, আপনি নিজের বউ কেই চিনতে পারছেন না!       এবার তো বলবেন গতকাল আপনি আমাকে বিয়েই করেন              নি। হম,সেটাও বলে ফেলেন না! দেরি কেনো? ওর এতগুলি কথার পর বুঝতে পারলাম,এটাই আমার অপরিচিতা,কিন্তু ও আজকে নিকাব পড়েনি। হিজাব পড়েছে। তাই চিনতে পারিনি। মুখ দিয়ে কিছু বের হচ্ছেনা। শুধু ওর দিকে তাকিয়ে আছি। আমার বউটা অনেক কিউট। সকাল বেলা যে আমার জন্য এরকম একটা সারপ্রাইজ আছে সেটা ভাবিনি!      ____কি!আপনি কি এভাবেই তাইকে থাকবেন? নাকি উঠেবেন। জলদি উঠে ফ্রেশ হোন।(তাফা) ____তুমি আজকে নিকাব পরোনি যে! ____আপনি তো আমার বর!আপনার সামনে নিকাব পড়তে হবে কেনো?(তাফা) বলে.....একটা হাসি দিয়ে চলে গেলো। এই প্রথম ওর হাসি দেখলাম। আর সেটা আমাকে রীতিমতো পাগল করে দিয়েছে। আর দেরি করলাম না। জলদি বিছানা ছেড়ে ফ্রেশ হতে চললাম। তাফা,,, তাফা! কই তুমি?........ "এইতো কিচেনে,কি হোয়েছে..... তাফা কিচ...