সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমার মায়াবতী |পর্ব:-তিন|


কতোক্ষণ এভাবে চেয়ারে বসে ছিল রাহাত নিজেও জানে না। নিজের প্রজেক্টের চিন্তার চেয়েও মায়ার কাঁদো কাঁদো মুখটাই ওর চোখের সামনে বেশি ভাসছে। বিশেষ করে মেয়েটার চোখ জোড়া। কি সুন্দর!! কি শান্ত!! অথচ যেন রাজ্যের কৌতূহল খেলা করছে সে চোখে!! সাথে ভীত হরিণীর মতো সেই চাহনি!! একেবারেই যেন রাহাতের চোখে আটকে গেছে সেই দৃষ্টি। বিনা অজুহাতেই মেয়েটাকে বার বার দেখতে ইচ্ছে করছে রাহাতের। কেন এমন হচ্ছে সে জানে না। জানার দরকারও দেখছে না এই মূহুর্তে। কি করে দেখবে সেটাই এখন ভাবছে শুধু রাহাত। কিছু একটা মনে হতেই টেলিফোনে ১ প্রেস করে ফোনটা কানের উপর ধরলো। কয়েকবার রিং হয়ে কলটা কেটে গেল। রাহাত ভ্রু কুঁচকে আবার কল করলো৷ এবারেও ফোনটা রিসিভ হলো না।

মেজাজটাই খারাপ হচ্ছে রাহাতের। মেয়েটা কি রুমে নেই?? কল রিসিভ করে না কেন? আরো দুবার কল করলেও কেউ রিসিভ করলো না। এবার চূড়ান্ত পর্যায়ে রাগ উঠলো রাহাতের। এই মেয়ের কপালে আজকে নিশ্চিত শনি আছে। প্রথমদিনেই এতোটা খামখেয়ালিপনা!! কাজে মন নেই একটুও? রুমে না থেকে কোথায় গেছে!! প্রথম দিনেই সবার সাথে খাতির পাতাতে গেছে নাকি!! সেরকম কিছু হলে কঠিন শাস্তি আছে মিস মায়াবতীর।।

নিজের মনেই রাগে গজগজ করতে করতে নিজের রুমের দরজা ঠেলে বেরিয়েই সামনের রুমটায় ঢুকে গেল রাহাত। মায়াকে রুমের একপাশে গুটিশুটি মেরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলো ওর দিকে পিঠ করে। রাগটা এবারে সপ্তমে উঠলো রাহাতের। রুমে থেকেও ফোন রিসিভ করা হচ্ছে না? দেখাচ্ছি দাঁড়াও।।মায়ার একটা হাত ধরে টেনে এক ঝটকায় দেয়ালের সাথে চেপে ধরলো রাহাত। মায়া একে তো গভীরভাবে কিছু একটা চিন্তা করছিল। তার উপরে রাহাত এসেছে সেটা টেরই পায় নি। এর মধ্যে এমন আক্রমণে একেবারে ভয় পেয়ে গেল। কি করবে ভেবে না পেয়ে রাহাতের মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো। মানুষটা কথায় কথায় এভাবে রেগে গিয়ে শক্ত করে হাত চেপে ধরে কেন মায়া বুঝতেই পারে না। হতেই পারে পি.এ হিসেবে মায়াকে তার একেবারেই পছন্দ হয় নি। তাই বলে এমন করবে??

রাহাত রেগে গিয়েও মায়ার মুখের দিকে তাকিয়ে কিছুই বলতে পারলো না। মেয়েটার চোখে মুখে কিছু একটার ভয় খেলা করছে। মায়ার ছলছল করা চোখ জোড়া যেন রাহাতকে টানছে প্রচন্ডভাবে। এই টান-এই ঘোর লাগা চোখের মায়া এড়ানো রাহাতের পক্ষে কিছুতেই সম্ভব হচ্ছে না।। নিজের অজান্তেই যেন এই মায়াবী চোখের মায়ায় হারিয়ে যাচ্ছে সে। কি আশ্চর্য অথচ কি সুন্দর একটা অনুভূতি কাজ করছে রাহাতের মনে। কই অন্য কারো জন্য তো কখনো এই ফিলটা আসে নি ওর?? তবে আজই বা কেন!! মেয়েটা নিতান্ত সাদামাটা অথচ কি দারুণ মায়া তার সমস্ত সত্তা জুড়ে!! কোন এক রহস্যের মায়ায় জড়িয়ে যাচ্ছে রাহাত!!

-স্যার?? লাগছে আমার।

-হুম??

-ব্যথা লাগছে।

-হুম??

-স্যার??????

-উফ,এতো চিল্লাও কেন?? যত ইচ্ছে চিল্লাও।। লাভ নেই।রুমের একটা শব্দও বাইরে যাবে না।সাউন্ড প্রুফ।এয়ার টাইট রুম প্রত্যেকটা।

-মানে??!!!

-মানে মানে পরে করো। আগে বলো তো?? কই ছিলা তুমি এতোক্ষণ?? ফোনে কল করেছি কতোবার?? রিসিভ করা যায় না??

-আমি তো ভাবলাম। অন্য কেউ কল করেছে। আমি কি করেজানবো!!?

-যেই কল করুক এতোবার কল করলে তো ভদ্রতার খাতিরেও কলটা রিসিভ করতে হয়। এতোটুকু কমনসেন্স নেই তোমার??

মায়া ঢোক গিললো। এই রে!! প্রথম দিনেই বড়সড় একটা ঝামেলা পাকিয়ে ফেলেছে। এদিকে ভয়ে প্রাণ যাওয়ার অবস্থা হয়েছিল ওর। পাড়ার ওই বদ ছেলেগুলো কোনভাবে নাম্বার জেনে কল করছে কিনা এই ভয়েই কল রিসিভ করে নি। সেটা এই খারুস লোকটাকে কি করো বলবে!! তার উপরে হাতেও লাগছে কত!! ছাড়ে না কেন!! অসভ্য লোক একটা!!

মায়া নিজের মনে কথাগুলো ভাবতে ভাবতেই রাহাত ওর হাতটা ছেড়ে দিল। মায়া যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো। হাতটায় ব্যথা হয়ে গেছে। এক হাত দিয়ে অন্য হাতটা ডলতে শুরু করেছে দেখে রাহাত একটু এগিয়ে এলেই আঁতকে উঠে মায়া এক পা পিছিয়ে গেল। মায়ার এভাবে আঁতকে ওঠা দেখা রাহাত ভ্রু কুঁচকে মায়ার দিকে তাকালো।

-কি সমস্যা মিস মায়াবাতী??

-স্যার,আমার নাম মায়া।আর কোন সমস্যা নেই।

-তো সমস্যা না থাকলে এভাবে লাফাও কেন?? আজব!!! বাই দা ওয়ে।আজকের মতো কাজ শেষ। চলো শপিংয়ে যাব।

-শপিংয়ে পি.এর কাজ কি??

-শপিংটা আপনার জন্য মিস মায়াবতী। চৌধুরী গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রির সাথে কেউ ডিল করতে এলে তোমার ড্রেসআপ দেখেই তো ক্যানসেল করে চলে যাবে।

-মানুষ আপনার প্রোডাক্টের ইফিসেন্সি-কোয়ালিটি এসব দেখবে? নাকি আপনার পি.এ কি পড়েছে সেটা??

-যখন যা দেখতে হয় আর কি। অন্য কোন কোম্পানির পি.এ যদি এই ড্রেসআপে আমার সামনে আসে আমি নিজেই তো ডিল করবো না।

রাগে মায়া একটা কথাও বলতে পারলো না। অসভ্য লোক একটা!! মনে মনে ইচ্ছে মতো গালি দিল রাহাতকে। রাহাত মায়ার মুখের দিকে তাকিয়েমুখ টিপে হেসে ফেললো। তারপর রুমের দরজার দিকে এগিয়ে গেল।

-মিস মায়াবতী? যত ইচ্ছে গালি দিন-তবে সেটা শপিংমলে যাওয়ার সময় রাস্তায় দিবেন। আর হ্যাঁ আমাকে অসভ্য বলুন, খারুস বলুন, অভদ্র যা ইচ্ছে বলুন। আমি কিন্তু কাউকে কখনো জোর করি না। সবাই নিজে থেকেই আমার কাছে ধরা দেয়। আর একটা কথা। এর পর কখনো কল করে না পেলে সোজা আমার চোখের সামনে রুমে নিয়ে বসিয়ে রাখবো সারাদিন। যত ইচ্ছে কাজ করতে পারবে- তবে সেটা আমার চোখের সামনে বসে। কেউ কখনো বিরক্ত করলে সেটাও আমাকে অবশ্যই জানাবে। কে তোমাকে বিরক্ত করবে? তার ঘাড়ে কয়টা মাথা আছে আমিও একটু দেখতে চাই। আর একটা কথা। অফিস থেকে ফ্ল্যাট দেয়া হবে। কালই উঠবা ফ্ল্যাটে। বোঝা গেল??

-জি???

-পাঁচ মিনিট সময় দিলাম। আমি নিচে গাড়িতে ওয়েট করছি। দেরি হলে সত্যি সত্যিই কপালে আজকে দুঃখ আছে আপনার মিস মায়াবতী।।

কথাটা বলেই রাহাত বেরিয়ে গেছে। মায়া থ মেরে দাঁড়িয়ে ভাবছে এটা কি হলো!! মনের কথাও কি জানতে পেরে যায় নাকি এই খারুস লোকটা! এতো এতো যে বকা দিয়েছে তার জন্য কি শাস্তি দেয় কে জানে!! পাঁচ মিনিটের কথা খেয়াল হতেই ব্যাগ নিয়ে ছুটলো মায়া। দেরি করলে কি হবে জানে না মায়া। তবে সেটা নিয়ে গবেষণা করারও বিন্দুমাত্র শখ নেই ওর এই মূহুর্তে।। এক ছুটে সিঁড়ি বেয়ে নিচে এসে দেখলো রাহাত একটা গাড়ির সামনে দাঁড়ানো। মায়া সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই হাতের ঘড়ির দিকে তাকালো রাহাত। তারপর মায়ার দিকে এগিয়ে আসছে ধীর পায়ে। মায়া ভয়ে চোখ মুখ খিঁচেই দাঁড়িয়ে আছে শক্ত হয়ে৷ কি আছে কপালে কে জানে!!

মায়া চোখ বুজে দাঁড়িয়ে আছে দেখে রাহাত ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটিয়ে ওর দিকে এগিয়ে এলো ধীর পায়ে। মুচকি হেসে মায়ার দিকের গাড়িরদরজাটা খুলে দিল। তারপর ঘুরে এসে নিজেই ড্রাইভিং সিটে বসে আলতো করে হর্ন বাজালো। হর্নের শব্দে মায়া কেঁপে উঠে চোখ খুলতেই দেখলো গাড়ির সামনের সিটে বসার দরজাটা খোলা। আর ড্রাইভারের সিটে বসে রাহাত হাসছে মিটিমিটি। মায়াকে অবাক চোখে তাকাতে দেখে চোখের ইশারা করে নিজেই হেসে ফেললো। মায়া ভিষণ লজ্জা পেল। লোকটা এগিয়ে আসায় ভয় পেয়ে গিয়েছিল। ভেবেছিল দেরি করায় আবার হাতটা চেপে ধরবে শক্ত করে। রাহাত আবার হর্ন বাজালো।

-মিস মায়াবতী?? আপনার দেরি হয় নি। অবশ্য যেভাবে দাঁড়িয়েছিলেন মূর্তি হয়ে,দেরি হলেও আমার কিছু বলার সাহসও হয়তো হতো না ব্যথা দেয়ার।।

-জি??

-গাড়িতে উঠে এসো??

-জি স্যার।।

-কি হলো?? উঠছো না কেন??

-আপ--আপনার পাশে বসবো??

-তো কি পিছনে বসবে?? আমাকে কি তোমার ড্রাইভার মনে হচ্ছে??

-না না। স্যার। আসলে-- হল কি।।

-তুমি কি উঠবে?? নাকি আমি নেমে গিয়ে তোমাকে তুলে আনতে হবে?? সেরকম কিছু চাচ্ছো??

মায়া গাল ফুলিয়ে রাহাতের পাশে এসে বসলো গাড়িতে। দরজা টেনে বন্ধ করে মুখ ভার করে বসে রইলো। কয়েক মিনিট কাটার পর খেয়াল হলো গাড়ি স্টার্ট হচ্ছে না।। মায়া ভ্রু কুঁচকে রাহাতের দিকে তাকাতে দেখলো রাহাতের ঠোঁটের কোণে বাঁকা হাসি ফুটে আছে। লোকটার সমস্যা কি মায়া বুঝে না। সারাদিন গা জ্বালানো একটা হাসি ঠোঁটের কোণে লেগেই থাকে। আর হাসি না থাকলে রাগে চোখ লাল টকটকে করে রাখে‌‌!! আজব লোক একটা!! গা পিত্তি জ্বলে যায় হাসি দেখলে। অসহ্য!!

-এতো ভেবে ভেবে কোনদিন না জানি পাগল হয়ে যাও??কি??

-কি কি??

-আমার হাসি দেখে গা জ্বলে কেন তোমার?? ভালোবেসে ফেলেছো নাকি??

মায়া ঝট করে মুখ ঘুরিয়ে রাস্তার দিকে তাকালো। লোকটা এমন কেন!! এভাবে বলার কি আছে? আরেকটু হলেই তো দমটা বন্ধ হয়ে যাচ্ছিলো মায়ার। ভাবতে ভাবতেই কারো হাতের আলতো স্পর্শে চমকে তাকাতেই দেখলো রাহাত একদম কাছে চলে এসেছে। মায়া ভয়ের চোটে কিছু বলতেই পারলো না। চোখ বুজে ফেললো ঝট করে। কিছু একটার বাঁধন অনুভব করতেই চোখ খুলে তাকালো। রাহাত সরে বসেছে দেখে নিজের দিকে তাকিয়ে দেখলো সিটবেল্ট বাধা৷ রাহাতকে কিছু বলতে গিয়েও পারলো না। লোকটার ঠোঁটের কোণে এখনো সেই আত্মা কাঁপানো বাঁকা হাসি। এই লোকটার মাথায় সারাক্ষণ কি এতো চলে?? এতো কেন হাসতে হয় পাগলের মতো সারাদিন??

শপিং সেন্টারের সামনে গাড়িটা পার্ক করে বেরিয়ে রাহাত মায়ার বের হওয়ার জন্য দরজাটা খুলে দিল। মায়া বের হচ্ছে না দেখে মুখ নিচু করে ভিতরে উঁকি দিল।।

-কি সমস্যা মায়াবতী??

-এটা খু-খুলতে পারছি না।

-হা হা হা, গায়ে একটু শক্তিও নেই। তোমাকে নিয়ে যে কি হবে!!?

-সেটা আপনার না ভাবলেও চলবে। আমি নিজেই খুলবো। সরুন।।

মায়া রাহাতের হাত থেকে সিটবেল্টটা টানছে। কিছুতেই খুলতে পারছে না। রাহাত একমনে ওর বিরক্তি ফুটে ওঠা মুখটা দেখছে। বেশি বিরক্ত হলেও মনে হয় মেয়েটার চোখে পানি চলে আসে। ছলছল করে উঠছে বারবার চোখ দুটো। রাহাত মায়ার হাত থেকে আলতো করে বেল্টটা টেনে নিয়ে হালকা করে প্রেস করতেই খুলে গেল।। মায়া যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো। মুখ তুলতেই দেখলো রাহাত ওর দিকে এখনো ঝুঁকে আছে। চোখে ঘোর লাগা দৃষ্টি। ঘোরের সাথে অন্য কিছু একটাও আছে। সেটায় হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করছে মায়ার। কথাটা মাথায় আসতেই নিজের সমস্ত শক্তি দিয়েই সেই ব্যাপারটা মন থেকে মুছে ফেললো। এভাবে আবেগ প্রশ্রয় দিয়ে লাভ নেই।

-স্যার??

-----------------------

-স্যার!!!!

-হুম??

-আমরা শপিংমলের সামনে এসে গেছি। নামতে হবে।

-ওপস, সরি,এসো??

রাহাত সরে দাঁড়াতেই মায়া গাড়ি ছেড়ে বের হলো। মুখ তুলে মানুষটার মুখের দিকে তাকালো একবার মায়া। নেভি ব্লু কালারের ফরমাল প্যান্ট, সাদা শার্টের হাতা কনুই পর্যন্ত গুটানো। নেভি ব্লু রঙা কোটটা গাড়িতে রাখা। মুখের হালকা খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি, আর পিছনের দিকে ব্রাশ করা চুল। সব মিলিয়ে তামিল মুভির হিরো একদম।। দেখলে বোঝাই যায় না লোকটা কতটা________

গাড়ি লক করে শপিংমলের ভিতরে এসেছে রাহাত। মায়া পাশে পাশে হাঁটছে। মায়াকে ড্রেস চুজ করতে বলে নিজেও ঘুরে ঘুরে দেখছে রাহাত। যেটা পছন্দ হচ্ছে নিচ্ছে। এর মধ্যেই মায়া রাহাতের সামনে এসে দাঁড়ালো। হাতে দুটো থ্রিপিস জামা। রাহাত চোখ লাল করে তাকালো মায়ার দিকে। মায়া ভয়ে ঢোক গিললো। এই লোকটার আবার কি হলো??

মায়ার হাত ধরে টেনে একপাশে নিয়ে আসলো রাহাত।

-মিস মায়াবতী?? আপনার কি মাথা টাথা খারাপ হয়ে গেছে? আপনি এই ড্রেস পড়ে আমার ক্লাইন্টদের সামনে যাবেন?

-আজব!! তো কি পড়বো?? আপনার পি.এর মতো শর্ট পড়ে যেতে হবে? কি ভাবেন কি হ্যাঁ?? পি.এ হিসেবে রাখবেন না বলে দিন। মিটে গেল। এতো কাহিনী করার কি আছে?!

-জাস্ট শাটআপ।

-আমি আপনার ওই মিস জুলির মতো ওসব পড়তে পারবো না।

-কেউ বলেছে তোমাকে এসব পড়তে??

-তাহলে??

-ধরো। এগুলো ট্রাই করে এসো।

রাহাত মায়ার দিকে কয়েকটা কোট, সুট এগিয়ে দিলো। মায়ার রাগে মাথা খারাপ হয়ে যাওয়ার দশা। হাত বাড়িয়ে দিতেও মায়া ড্রেসগুলো নিচ্ছে না দেখে সামনে তাকালো রাহাত। মায়া ওর দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে দেখে রাহাত নিজেই ঢোক গিললো এবার। মেয়েটা হঠাৎ করে এভাবে তাকিয়ে আছে কেন? মনে হচ্ছে কাঁচা খেয়ে ফেলবে!

চলবে............

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(পর্ব ০৯)

RM ,,পূর্ববর্তী পার্ট গুলি পেতে অমার টাইমলাইন  ভিজিট করুন,, কতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলাম সেটা মনে নেই। চোখ খোলে যখন মাথার পেছনে সজোরে এক থাপ্পর খাই। ঘুম ঘুম চোখে চারদিকে তাকিয়ে দেখি যে কে আমাকে চড়টা মারল। আমি দেখলাম যে আমি উঠানের মাটিতে পড়ে আছি, পায়ের কাছে মাটিতে সুব্রত পড়ে আছে। আমি ওপর দিকে তাকিয়ে দেখতে চেষ্টা করি যে কে আমাকে চড়টা মারল, আমি অবাক হয়ে দেখি যে ইন্দ্রানি মাসি আমাদের দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে। আমার দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে বলে ওঠেন “শুয়োর গুলো এখানে শুয়ে? আর আমারা তোদের দু’জনকে সারা বাড়িতে হন্যে হয়ে খুঁজছি। তোদের কি কোন বোধ বুদ্ধি নেই?” আমি সুব্রতর কাঁধ ঝাঁকিয়ে উঠিয়ে দিলাম, সুব্রত আর আমি দুজনেই উঠে পড়লাম মাটি থেকে। আমি কাতর চোখে ইন্দ্রানি মাসির দিকে চেয়ে বললাম “সরি মাসি। ভুল হয়ে গেছে, কাল রাতে একটু বেশি হয়ে গেছিল।” চেয়ারের ওপরে মদের বোতল আর গ্লাসের দিকে ইন্দ্রানি মাসির চোখ পড়ে যায়, তাড়াতাড়ি করে চেয়ারের ওপরে নিজের শাল ফেলে দিয়ে ঢেকে দেয় গ্লাস আর বোতল। ঠিক সেই সময়ে পেছন থেকে অনেক গুলো পায়ের আওয়াজ পাই। মাসি সবাই কে বলে “এই ছেলে দুটো সারা রাত...

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(শেষ পর্ব)

RM কিছুদূর যেতেই  একটি জায়গায় গাড়ি দাঁড় করায় বল্বিন্দার, বলল যে গাড়িতে তেল ভরতে হবে। গাড়ি থামার সঙ্গে সঙ্গে পরীর ঘুম ভেঙে যায়, আমার দিকে তাকিয়ে বলে “কতক্ষণ ঘুমিয়েছি আমি?” আমি বললাম “বেশীক্ষণ ঘুময়নি তুমি” “আমরা থামলাম কেন?” “তেল ভরার জন্য।” “আর কত দেরি পৌঁছতে?” আমি পেট্রল পাম্পের লোকটাকে জিজ্ঞেস করলাম যে জিওরি থেকে চিতকুল কতক্ষণ লাগবে পৌঁছতে। লোকটা আমায় জানাল যে আরও ঘন্টা চারেকের রস্তা বাকি। লোকটা আরও জানাল যে কারছাম ব্রিজের পরে রাস্তা খুব খারাপ। বল্বিন্দার আমাকে বলল যে ও রাস্তা জানে, কোন চিন্তা করতে বারণ করল আমাকে। পরী হিন্দি বিশেষ ভালো করে বোঝেনা তাই আমাকে জিজ্ঞেস করে যে বল্বিন্দার কি বলল। আমি রাস্তার কথাটা চেপে গেলাম, জানালাম যে কোন কিছুর জন্য চিন্তা না করতে। ঘড়ির দিকে তাকালাম, আড়াইটে বাজে তখন, তারমানে চিতকুল পৌঁছতে সন্ধ্যে হয়ে যাবে। একে শীতকাল তায় আবার পাহাড়, এখানে রাত সমতলের চেয়ে একটু তাড়াতাড়ি নামে। জিওরি ছাড়ার কিছু পরেই পরী বলল যে ও আর ঘুমোতে চায় না, বাইরের দৃশ্য দেখবে। আমি বললাম ঠিক আছে। কিছু পরেই সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ে। যখন আ...

"এক অপরিচিতা"(পর্ব: ছয়)

লেখক:আসিফ ইকবাল! "আগের পর্ব গুলো আমার টাইমলাইনে বিদ্যমান" পঞ্চম পর্বের পর থেকে..... ___আরে বাহ, আপনি নিজের বউ কেই চিনতে পারছেন না!       এবার তো বলবেন গতকাল আপনি আমাকে বিয়েই করেন              নি। হম,সেটাও বলে ফেলেন না! দেরি কেনো? ওর এতগুলি কথার পর বুঝতে পারলাম,এটাই আমার অপরিচিতা,কিন্তু ও আজকে নিকাব পড়েনি। হিজাব পড়েছে। তাই চিনতে পারিনি। মুখ দিয়ে কিছু বের হচ্ছেনা। শুধু ওর দিকে তাকিয়ে আছি। আমার বউটা অনেক কিউট। সকাল বেলা যে আমার জন্য এরকম একটা সারপ্রাইজ আছে সেটা ভাবিনি!      ____কি!আপনি কি এভাবেই তাইকে থাকবেন? নাকি উঠেবেন। জলদি উঠে ফ্রেশ হোন।(তাফা) ____তুমি আজকে নিকাব পরোনি যে! ____আপনি তো আমার বর!আপনার সামনে নিকাব পড়তে হবে কেনো?(তাফা) বলে.....একটা হাসি দিয়ে চলে গেলো। এই প্রথম ওর হাসি দেখলাম। আর সেটা আমাকে রীতিমতো পাগল করে দিয়েছে। আর দেরি করলাম না। জলদি বিছানা ছেড়ে ফ্রেশ হতে চললাম। তাফা,,, তাফা! কই তুমি?........ "এইতো কিচেনে,কি হোয়েছে..... তাফা কিচ...