সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমার মায়াবতী |পর্ব:-ত্রয়োদশ|


বয়স্ক মহিলাটাকে দরজায় দেখে রাহাত দ্রুত ভাবার চেষ্টা করছে। কোথায় দেখেছে সে এই মহিলাকে!! কিছুতেই মনে পড়ছে না। স্মৃতিরা কোনভাবেই হেল্প করছে না রাহাতের।

-জে?? সাহেব?? কারে খুঁজেন??

-আম?? এটা মায়াদের বাসা না??

-মায়া!! কোন মায়া!!! এই নামে এই বাসায় কেউ নাই। আপনে ভুল বাসাত আইসেন সাহেব।

কথাটা শেষ করেই দরজাটা ধুম করে বন্ধ করে দিল মহিলা। রাহাতও হতাশ হয়ে গাড়িতে ফিরে এলো। মায়াদের বাসা এটা না?? তবে গেল কোথায় মায়া!! আর কোথায় খুঁজবে সে তার মায়াকে!! আরেকবার গাড়িটা পুরো গলিটায় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে মায়াকে খোঁজার চেষ্টা করলো রাহাত। ফলস্বরূপ আরেকটা বিফল দিন কাটলো ওর। মায়াকে খুঁজে তো পেলই না। যে ছোট্ট একটা আশা ছিল সেটাও হারিয়ে গেল।

রাতে রাহাত শুয়ে শুয়ে মায়ার সাথে কাটানো প্রত্যেকটা ঘটনা ভাবছে। তার মন বলছে মায়াটা তার আশেপাশে কোথাও আছে। হয়তো ওই মাঝবয়সী মহিলা মিথ্যে বলেছে ওকে। যদিও মহিলাটার ওকে মিথ্যে বলার কোন কারণ রাহাতের মাথায় আসছে না। তবুও মন বলছে ওই মহিলা মিথ্যে বলছে। আসলে ওটাই মায়াদের বাসা। ভাবতে ভাবতেই রাহাতের চোখ ক্লান্তিতে বুজে এলো। সারাদিনের এতো দৌঁড় ঝাপের পর শরীরে আর এক বিন্দুও শক্তি অবশিষ্ট নেই। এভাবে না খেয়ে কয়দিনই বা আর কার শক্তিতে কুলোয়!!

-মায়া???

-(নিশব্দ)

-মায়ায়য়য়য়য়াআআআআআআ??

-আরে?? কি মুশকিল?? এভাবে চেঁচাচ্ছেন কেন জনাব??

-কাছে এসো?? বলছি।

-জি না। মা রহিমা খালাকে দিয়ে খাবার রান্না করে পাঠিয়েছে আজকে আপনার জন্য। আমার ওদিকে মেলা কাজ পড়ে আছে।

-আরে!! এটা কিন্তু ঠিক না মায়াবতী।। সকাল সকাল এভাবে কথা শুনবে না?? আমি মানব না এসব। এসো বলছি??

-কি??

মায়া বিরক্ত হয়ে খাটের কাছে আসতেই রাহাত মায়াকে টেনে বিছানার শুইয়ে দিয়ে হাত দুটো চেপে ধরলো।। রাহাত চোখ মেলে মায়াকে অনেকক্ষণ দেখলো। তারপর মায়ার ঘাড়ে মুখ গুঁজলো। মুখ ডুবিয়ে মায়ার ঘ্রাণ নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো।

-সরো?? কি করছো??

-বাহ!!! এখন সরব কেন?? ঘুম ছুটতে আজকে তোমাকে পেলাম না কেন?? এখন শাস্তি ভোগ কর। সারাদিন আমি এভাবে তোমার বুকে ডুব দিয়ে থাকবো। কোথাও যাবো না। হুহ.....

-আরে?? কি করছ?? পাগল হলে?

-হুম হুম। পাগল ই হয়েছি। না জাগিয়ে দিয়ে চলে গেলে কেন? জানো না ঘুম ভাঙতেই তোমাকে বুকে চাই আমার। চোখ খুলে প্রথম আমার মায়াবতীর মুখটা দেখতে চাই।

-হুহ, মায়াবতীর মুখ দেখতে চাই না?? আজ আমি মরে গেলে কালই বিয়ে করে নতুন বউ আনতে ছুটবে। জানি জানি।

-কি বললা তুমি??

-ঠিকই তো। বউ মরলে স্বামীর কি যায় আসে বলো! না মরে ধরো কোমায় চলে গেলেও আরেকটা সুন্দরী বউ নিয়ে চলে আসবে। ছেলেদের কিছু থাক না থাক- বউ থাকা চাই ই চাই। ঘর খালি রাখা চলবে না।

-মায়া??

-কি মায়া!!! আমি এখন ধুম করে মরে গেলে তুমিও আমাকে কবরে পাঠানোর আগে নতুন বউ ঘরে আনার ব্যবস্থা করবে- জানি না ভেবেছ?? সবাই একই তোমরা।

মায়া আর কিছু বলার আগেই রাহাতের ঠোঁট দুটো মায়ার নিচের ঠোঁটটা আঁকড়ে ধরলো কামড়ে। মায়া রাহাতের এমন আচমকা স্পর্শে কেঁপে উঠে চোখ বুজে নিল। রাহাতও গভীরভাবে মায়ার ঠোঁট আঁকড়ে ভালোবাসার পরশ বুলিয়ে দিতে লাগলো। বেশ অনেকক্ষণ পর রাহাত মায়াকে থেকে সরে এসে বিছানায় গা এলিয়ে দিলো। মায়া লাজুক হেসে চোখ খুলতেই রাহাতের সাথে চোখাচোখি হলো। বিছানা থেকে উঠে পালানোর আগেই রাহাত আবার মায়াকে টেনে বুকে জাপটে ধরলো।

-কি করছো??

-উল্টাপাল্টা কথা বলে কেন আমাকে ঘাবড়ে দাও বলো তো মায়াবতী?? তোমার কিছু হলে আমি নেচে নেচে বিয়ে করতে যাবো -এটা সত্যিই তোমার মনে হয়??

-সবাই তো করে।

-হু-----সবাই করে বলে তোমার বরটাকেও করতে হবে?? আমার তো তুমি আছো।সারাজীবন আছো। তোমারও কিছু হচ্ছে না- আর আমিও বিয়ে-টিয়ে করছি না, বোঝা গেল???

-তবুও, কখনো মরে টরে গেলে।

-আবার শুরু করলে?? ধ্যাত,

-আরে??

রাহাত আর কিছু না বলে রাগ করে উঠে ওয়াশরুমে ঢুকে গেল। ফ্রেশ হয়ে ডাইনিং রুমে এসে দেখলো একজন মধ্যবয়স্ক মহিলা ঘোমটা মাথায় জবুথবু হয়ে মায়ার পাশে বসা। কে কি জানতে না চেয়ে রাহাত গাল ফুলিয়ে খাওয়ায় মন দিল। দেশি অনেক পদের রান্না রাহাতের প্লেটে। সব কিছুই চেটেপুটে খেল রাহাত। খাওয়ার মাঝে একটাও কথা বললো না। মায়াও রাহাতের দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হেসে প্লেটে এটা ওটা উঠিয়ে দিচ্ছে। খাবার শেষ হতে হাত ধুয়ে বয়স্ক মহিলার দিকে তাকালো রাহাত।

-খালা! মা কে বলবেন উনার হাতের রান্না অসম্ভব ভালো খেতে। নয়তো এখানে তো তিত করলা গিলছি প্রতি সেকেন্ডে।

-কি যে কন সাহেব।

রাহাতের কথায় রহিমার খালা খিল খিল করে হেসে ফেললেন। এর মধ্যে একবার মহিলার মুখটা দেখেছে রাহাত। পরিচিত মুখটা। আর তার হাসির সাথে মায়াও হাসিতে যোগ দিয়েছে। সেই সাথে গলা ছেড়ে হাসছে রাহাতের বাবাও। সবার হাসি দেখে রাহাত নিজেও হেসে ফেললো।

হাসতে হাসতেই ঘুমটা ছুটে গেল রাহাতের। হাসির কারণটা ২ সেকেন্ডের মধ্যে ভুলে গেলেও একটা চেহারা চোখের সামনে এখনো স্পষ্ট হয়ে ফুটে আছে রাহাতের। আর সেটা হলো রহিমা খালার। খাট থেকে প্রায় লাফ দিয়ে উঠে বসেছে রাহাত। এই মহিলাই দরজা খুলেছে। ইচ্ছে করেই মিথ্যে বলেছেন উনি। আসলে ওটাই ওর মায়াবতীর বাসা। রাহাত কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। মায়াবতীটাকে খুঁজে পেয়েছে সে। অনেক বাধা পেরিয়ে সে তার মায়াবতীকে পেয়েছে। আর কিছুক্ষণের অপেক্ষা মাত্র। কথাটা ভাবতে ভাবতেই ঘড়ির দিকে চোখ গেল রাহাতের। ঘড়িতে দুটো বাজে।

রাত দুটো। বেশ গভীর রাত। সকালে মায়াবতীটাকে দেখতে হলে আরো চার-পাঁচ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হবে৷ ভাবতেই গলা শুকিয়ে এলো রাহাতের। আরো পাঁচ ঘন্টা!!! অসম্ভব। ছুটে গিয়ে আলমারি থেকে একটা টি শার্ট নিয়ে সেটা পড়তে পড়তে রুম থেকে বেরিয়ে এলো রাহাত। আর একটা সেকেন্ডও অপেক্ষা করা তার পক্ষে অসম্ভব।। মায়াবতীকে যে তার এখনই চাই।।

পর্দাটা বাতাসে কেঁপে উঠে এক চিলতে ভোরের আলো চোখে এসে পড়ায় ঘুমটা ছুটে গেল মায়ার। পাশ ফিরতে গিয়ে এক তিলও নড়তে পারলো না বেচারি। পিছন থেকে ওর কোমড় পেঁচিয়ে একেবারে বুকের সাথে মায়ার পিঠ ঠেকিয়ে জড়িয়ে রেখেছে দুটো হাত। হাত দুটোয় আলতো করে স্পর্শ করে মায়া একবার কেঁপে উঠলো। হাত দুটো ওর পরিচিত, তার স্পর্শটাও পরিচিত, আর এই শরীরের উষ্ণতাটাও ভিষণ ভিষণ পরিচিত। মায়ার নড়াচড়ায় হাতের বাঁধনটা একটু আলগা হতেই মানুষটার মুখের দিকে তাকালো মায়া। ভারি পর্দা ঢাকা রুমের মৃদু আলোতে মানুষটার মুখটা ভালো করে দেখতে পাচ্ছিল না মায়া। বাতাসের চোটে একটু কেঁপে কেঁপে পর্দাটা সরে যেতেই রাহাতের চেহারাটা পুরোপুরি দেখতে পেল মায়া।। এ কয়েকদিন রাহাতকে দূর থেকেই দেখেছে মায়া। ওই যে বাসার গলিটার সামনে দিয়ে গাড়ি নিয়ে সারা গলিটা চক্কর দিচ্ছে তখন। মায়ার রুমের বারান্দা থেকে বেশ দেখা যায় গলির মোড়টা। এই কয়টা দিন রাহাতের এমন ছন্নছাড়া পাগলামিগুলোর সবটাই দেখেছে ও। আজ এতো দিন পর এতো কাছ থেকে মানুষটাকে দেখতে পেয়ে ভিষণ ভালো লাগছে মেয়েটার।

আলতো করে রাহাতের ঘুমন্ত মুখে হাত রেখে মানুষটাকে দেখায় ব্যস্ত মায়া। মানুষটা ঠিক মতো যে খাওয়া দাওয়া করছে না সেটা তার চোখে মুখের ক্লান্তি দেখেই টের পাচ্ছে ও। গালের খোঁচা খোঁচা দাঁড়িগুলো বেশ অনেকটাই বড় হয়েছে। মায়া সরে যেতেই রাহাতের ভ্রু জোড়া কুঁচকে গেছে দেখে মায়া হেসে ফেললো। এগিয়ে গিয়ে রাহাতের বুকে নাক মুখ ডুবিয়ে জড়িয়ে ধরলো। আর প্রায় সাথে সাথেই টের পেল রাহাতের হাত জোড়া শক্ত করে মায়াকে বুকে জড়িয়ে নিয়েছে। মায়াও রাহাতের বুকে নাক ঘষে চোখ বুঝলো। মানুষটাকে এখন আর জাগাতে ইচ্ছে করছে না। বেশ রাতেই মায়াদের বাসার সামনে ঘুরে তারপর বাসায় গেছে রাহাত।এখন এতো ভোরে কি করে এলো সেটা মায়া জানে না। তবে ভালো লাগছে এভাবে মানুষটার বুকে মুখ লুকাতে পেরে।

বহুদিন পর বেশ লম্বা একটা ঘুম হল মায়ার। ঘুমটা যেন কাটতেই চাইছে না চোখ থেকে। এই আধো ঘুমেও মায়া রাহাতের স্পর্শে কেঁপে কেঁপে উঠছে বারবার। রাহাত এক হাতে মায়ার কোমড় পেঁচিয়ে ধরে অন্য হাতে মায়ার মুখটা তুলে ধরে সারা মুখ পাগলের মতো চুমোয় ভরিয়ে দিয়ে শক্ত করে বুকে চেপে ধরলো। মায়া কোনমতে চোখ খুলতেই দেখল রাহাত অপলকে ওকেই দেখছে। মায়া রাহাতের ঘোর লাগা চাহনিটা দেখে একটু কেঁপে উঠে রাহাতের বুকে ধাক্কা দিয়ে সরানোর চেষ্টা করলো।

-কি করছেন টা কি!! সরুন......

-কিছু করছি না গো। আমার বউটাকে দেখছি। কত দিন মায়াবতীটাকে এভাবে বুকে জড়িয়ে ধরি নি।

-কে বউ? কিসের মায়াবতী?? এখানে কেন এসেছেন? আপনাকে তো মুক্ত করে দিয়েই এসেছি সব বন্ধন থেকে। তবু কেন এসেছেন? মরে গেছি কিনা দেখতে!?

-মায়া?? সরি তো বউটা। কথা ছিল ভুল করলে শাসন করে শুধরে দিবে। এভাবে ফেলে চলে যাওয়ার কিন্তু কথা ছিল না!

-ভুল?? আপনার মনে হয় কাজগুলো ভুল ছিল??

-সরি?? ভুল না পরী। অন্যায় করে ফেলেছি। মাফ করে দাও প্লিজ?? আর কখনো এমন করবো না তো। পাক্কা।

-(চুপ)

-ও মায়াবতী?? সরি তো??

-আপনার সরি আমাকে আমার সেই মানুষটাকে ফিরিয়ে দিতে পারবে যাকে আমি পাগলের মতো বিশ্বাস করেছি?? যাকে একদিন আমি পাগলের মতো ভালোবেসেছিলাম !??

-বাহ!! এখন আর ভালোবাসো না??

-না,বাসি না বাসি না বাসি না।

-বুকে মুখ লুকিয়ে ভালোবাসি না বলছো??

-সরুন?ছাড়ুন আমাকে??

-আমার বুকে যখন মাথা রেখেছিলে তখন আমি কিছু বলেছি?? তো এখন কেন আমি জড়িয়ে ধরেছি বলে এমন করছ??

-ছাড়ুন।

-উহু, কথা ছিল তুমি রাগ করলে আমার উষ্ণ স্পর্শে তোমার রাগ ভাঙাবো। অভিমান করলে তোমার নিচের ঠোঁটটা কামড়ে ধরে.......

-ছাড়ুন!

-বাহ!! ছাড়ব কেন!! রাগ আর অভিমান দুটোই হয়েছে আমার মায়াবতীর। সেটা আগে ভাঙাই...

-সরুন, এন্ড ডোন্ট টাচ মি। অধিকার ফলাতে আসবেন না একদম। সমস্ত অধিকার ডিভোর্স লেটারটার সাথে শেষ হয়ে গেছে।

-তাই??

রাহাত মায়ার কোমড় পেঁচিয়ে আরো নিবিড় করে বুকে টেনে নিয়ে ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে রাখলো। মায়া সরে আসার চেষ্টা করতেই মায়ার ঠোঁটটা আলতো করে কামড়ে ধরে রইলো। বেশ অনেকক্ষণ ছোটার জন্য ছটফট করে শেষে মায়াও রাহাতের মাঝে হারিয়ে গেল। রাহাত হেসে মায়ার মুখটা দুহাতে তুলে ধরে কপালে, চোখে, মুখে আলতো আলতো ঠোঁট ছুঁইয়ে দিলো।

-মায়াবতী?? জানি রাগটা সহজে নামবে না। কিন্তু বিশ্বাস করো তোমাকে ছাড়া সত্যিই মরে যাব। অন্যায়টা কখনো শুধরে নিতে পারব কিনা জানি না। তবে বিশ্বাস করো,তোমার জন্য এবার সত্যি নিজেকে বদলাতে চাই আমি।

-আপনি আমার রুমে এলেন কি করে!!

-আমার পরীটা তো আমাকে আগেই বলেছিল-তার রুমের লাগোয়া বারান্দাটা দিয়ে চাইলেই টুপ করে পরীর রুমে উঠে আসা যায়। তোমার না ইচ্ছে ছিল তুমি বরের সাথে রাগ করে বাপের বাড়ি চলে এলে তোমার বরটা চুরি করে সবাইকে ফাঁকি দিয়ে বারান্দা টপকে তোমার কাছে আসবে---?

-তুমি!!! বারান্দা টপকে এসেছ!! পড়ে গেলে কি হত!! আর কেউ চোর ভেবে.........

-কি আর হতো!! বউয়ের মান ভাঙাতে এসে ধোলাই খেয়ে ভূত হতাম। কার কি এসে যেত।

-ভালোই হত।

-হুম। সেটাই। মায়াবতী?? ও মায়াবতী?? ফিরে চলো না প্লিজ?

-কোথায় ফিরব?

-আমার মায়াবতীর স্বপ্নের রাজ্যে।

-সব কিছু থেকে তোমাকে মুক্ত করে দিয়ে নিজেও মুক্ত হয়ে এসেছি।

-মায়া??

রাহাত মায়াকে বুকে জাপটে ধরে একেবারে বুকের ভিতরে জড়িয়ে নিলো।

-মায়াবতী। রাগ করে থাকো- যতদিন ইচ্ছে রাগ করে ফিরো না। সবটা মাথা পেতে মেনে নিব। কিন্তু এই কথাগুলো বলো না প্লিজ। মরে যাব আমি।

-ছাড়ো....

-পরীটার রাগ ভাঙিয়ে বাড়ি ফিরব। সমস্যা নেই। কিন্তু আর একটা সেকেন্ডও আমার মায়াবতীর থেকে দূরে থাকতে পারব না আমি।

-এভাবে বারান্দা টপকে রাত বিরেতে লোকে আপনাকে আসতে দেখলে আমার নামেই বাজে কথা বলবে। আপনার তাতে হয়তো কিছু এসে যাবে না।

-আচ্ছা বাবা, বারান্দা টপকানো বাদ। এবার থেকে সবার সামনে নিয়ে মাথা উঁচু করে বউয়ের কাছে আসবো। ওকে মায়াবতী??

-(চুপ)

-এই?? তুমি রহিমা খালাকে মিথ্যে বলতে শিখিয়ে দিয়েছিলে কেন!! আমি তোমাকে না পেয়ে পাগল হয়ে যাচ্ছিলাম।আর তুমি এসব কলকাঠি নাড়ছো না??

-বেশ করেছি।

-বেশ করেছ না?? আমিও বেশ একটা কাজ করি তাহলে!

-একদম না বলছি.....

মায়া আর কিছু বলার আগেই রাহাত মায়াকে টেনে নিজের উপরে নিয়ে ভালোবাসায় মেতে উঠলো। অনেক যুদ্ধের পর সে তার মায়াবতীটাকে পেয়েছে। এবারে আর কোন ভুল না করে আগলে রাখবে। একেবারে বুকের মাঝে লুকিয়ে আগলে রাখবে সে তার মায়াবতীটাকে।

চলবে...........

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(পর্ব ০৯)

RM ,,পূর্ববর্তী পার্ট গুলি পেতে অমার টাইমলাইন  ভিজিট করুন,, কতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলাম সেটা মনে নেই। চোখ খোলে যখন মাথার পেছনে সজোরে এক থাপ্পর খাই। ঘুম ঘুম চোখে চারদিকে তাকিয়ে দেখি যে কে আমাকে চড়টা মারল। আমি দেখলাম যে আমি উঠানের মাটিতে পড়ে আছি, পায়ের কাছে মাটিতে সুব্রত পড়ে আছে। আমি ওপর দিকে তাকিয়ে দেখতে চেষ্টা করি যে কে আমাকে চড়টা মারল, আমি অবাক হয়ে দেখি যে ইন্দ্রানি মাসি আমাদের দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে। আমার দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে বলে ওঠেন “শুয়োর গুলো এখানে শুয়ে? আর আমারা তোদের দু’জনকে সারা বাড়িতে হন্যে হয়ে খুঁজছি। তোদের কি কোন বোধ বুদ্ধি নেই?” আমি সুব্রতর কাঁধ ঝাঁকিয়ে উঠিয়ে দিলাম, সুব্রত আর আমি দুজনেই উঠে পড়লাম মাটি থেকে। আমি কাতর চোখে ইন্দ্রানি মাসির দিকে চেয়ে বললাম “সরি মাসি। ভুল হয়ে গেছে, কাল রাতে একটু বেশি হয়ে গেছিল।” চেয়ারের ওপরে মদের বোতল আর গ্লাসের দিকে ইন্দ্রানি মাসির চোখ পড়ে যায়, তাড়াতাড়ি করে চেয়ারের ওপরে নিজের শাল ফেলে দিয়ে ঢেকে দেয় গ্লাস আর বোতল। ঠিক সেই সময়ে পেছন থেকে অনেক গুলো পায়ের আওয়াজ পাই। মাসি সবাই কে বলে “এই ছেলে দুটো সারা রাত...

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(শেষ পর্ব)

RM কিছুদূর যেতেই  একটি জায়গায় গাড়ি দাঁড় করায় বল্বিন্দার, বলল যে গাড়িতে তেল ভরতে হবে। গাড়ি থামার সঙ্গে সঙ্গে পরীর ঘুম ভেঙে যায়, আমার দিকে তাকিয়ে বলে “কতক্ষণ ঘুমিয়েছি আমি?” আমি বললাম “বেশীক্ষণ ঘুময়নি তুমি” “আমরা থামলাম কেন?” “তেল ভরার জন্য।” “আর কত দেরি পৌঁছতে?” আমি পেট্রল পাম্পের লোকটাকে জিজ্ঞেস করলাম যে জিওরি থেকে চিতকুল কতক্ষণ লাগবে পৌঁছতে। লোকটা আমায় জানাল যে আরও ঘন্টা চারেকের রস্তা বাকি। লোকটা আরও জানাল যে কারছাম ব্রিজের পরে রাস্তা খুব খারাপ। বল্বিন্দার আমাকে বলল যে ও রাস্তা জানে, কোন চিন্তা করতে বারণ করল আমাকে। পরী হিন্দি বিশেষ ভালো করে বোঝেনা তাই আমাকে জিজ্ঞেস করে যে বল্বিন্দার কি বলল। আমি রাস্তার কথাটা চেপে গেলাম, জানালাম যে কোন কিছুর জন্য চিন্তা না করতে। ঘড়ির দিকে তাকালাম, আড়াইটে বাজে তখন, তারমানে চিতকুল পৌঁছতে সন্ধ্যে হয়ে যাবে। একে শীতকাল তায় আবার পাহাড়, এখানে রাত সমতলের চেয়ে একটু তাড়াতাড়ি নামে। জিওরি ছাড়ার কিছু পরেই পরী বলল যে ও আর ঘুমোতে চায় না, বাইরের দৃশ্য দেখবে। আমি বললাম ঠিক আছে। কিছু পরেই সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ে। যখন আ...

"এক অপরিচিতা"(পর্ব: ছয়)

লেখক:আসিফ ইকবাল! "আগের পর্ব গুলো আমার টাইমলাইনে বিদ্যমান" পঞ্চম পর্বের পর থেকে..... ___আরে বাহ, আপনি নিজের বউ কেই চিনতে পারছেন না!       এবার তো বলবেন গতকাল আপনি আমাকে বিয়েই করেন              নি। হম,সেটাও বলে ফেলেন না! দেরি কেনো? ওর এতগুলি কথার পর বুঝতে পারলাম,এটাই আমার অপরিচিতা,কিন্তু ও আজকে নিকাব পড়েনি। হিজাব পড়েছে। তাই চিনতে পারিনি। মুখ দিয়ে কিছু বের হচ্ছেনা। শুধু ওর দিকে তাকিয়ে আছি। আমার বউটা অনেক কিউট। সকাল বেলা যে আমার জন্য এরকম একটা সারপ্রাইজ আছে সেটা ভাবিনি!      ____কি!আপনি কি এভাবেই তাইকে থাকবেন? নাকি উঠেবেন। জলদি উঠে ফ্রেশ হোন।(তাফা) ____তুমি আজকে নিকাব পরোনি যে! ____আপনি তো আমার বর!আপনার সামনে নিকাব পড়তে হবে কেনো?(তাফা) বলে.....একটা হাসি দিয়ে চলে গেলো। এই প্রথম ওর হাসি দেখলাম। আর সেটা আমাকে রীতিমতো পাগল করে দিয়েছে। আর দেরি করলাম না। জলদি বিছানা ছেড়ে ফ্রেশ হতে চললাম। তাফা,,, তাফা! কই তুমি?........ "এইতো কিচেনে,কি হোয়েছে..... তাফা কিচ...