বেশ স্পিডেই গাড়ি ছুটিয়ে সিলেট পৌঁছেছে রাহাত। নেভিগেশনে চন্দ্র গ্রাম নামে প্রত্যন্ত এই গ্রামটা খুঁজে পেতে বেশ ভালোই বেগ পেতে হয়েছে রাহাতকে। আর একেবারে আদিম যুগের গ্রাম বলা চলে। একবিংশ শতাব্দীর বাংলাদেশে যেখানে প্রায় সবটাতেই নগরায়নের ছোঁয়া লেগেছে, সেখানে কেমন করে যেন এই ছোট্ট গ্রামটা বাদ পড়ে গেছে। সিলেটের যত ভিতরের দিকে যাচ্ছে ততই নেটওয়ার্ক খারাপ হচ্ছে। তাই সিলেট পর্যন্ত ঠিকঠাকভাবে পৌঁছলেও চন্দ্রগ্রাম খুঁজে বের করতে রাহাতকে বেশ খানিকটা নাকানি চুবানি খেতে হলো। গ্রামের সীমানায় পৌঁছে তো আরো যাচ্ছে তাই অবস্থা। সময়টা সম্ভবত রাত ১০ টার একটু বেশিই হবে৷ কিন্তু গ্রামের কোন ঘর থেকে আলোর ছিটেফোঁটাও দেখতে পাচ্ছে না রাহাত। তার উপরে এতো সরু রাস্তা!! গাড়ি সামনে নিতে প্রায় গাছ গাছালির উপরে তুলে দিচ্ছে টাইপের অনুভূতি হচ্ছে রাহাতের। তবে কেন যেন এই শহর থেকে এতো দূরের প্রত্যন্ত এলাকার অচেনা গ্রামটাতে এসেও রাহাতের বেশ লাগছে। এতো খুশির কারণটা রাহাত নিজেও ধরতে পারছে না।
মাথায় একটন পরিমাণের কনফিউশান নিয়েই সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল রাহাত। বেশ অনেকটা রাস্তা আগেই এক মুদি দোকানির কাছে মায়াদের বাড়ির হালকার উপরে ঝাপসা একটা নকশা পেয়েছিল। সেটা মাথায় রেখেই সামনে এগুচ্ছিল রাহাত। চারদিক শূন্যতায় খা খা করছে অথচ ছোট খাটো দোকানপাট গুলো ঠিকই এতো রাতেও খোলা!! ভাবা যায়!! রাহাত যে ঠিক কতোটা অবাক হয়েছে তা বলার মতো না। তার চাইতেও বেশি অবাক হয়েছিল যখন মায়া আর মিহানের নাম বলতেই দোকানি বলেছিলঃ- "হেডমাস্টার সাহেবের বাইত যাবেন!?" মায়ার বাবা মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত এলাকার এক মাত্র স্কুলটার প্রধান শিক্ষক ছিলেন। এই তথ্যটাও রাহাতের জানা ছিল না। আচ্ছা? মায়ার সম্পর্কেআর কি কি জানা নেই তার?? মায়াদের হোম টাউন সিলেট!! এটা দিহানের পাঠানো এ্যাড্রেসটা দেখার আগে ভুলেও কল্পনা করতে পারে নি রাহাত। নিজের ভালোবাসাতেই এখন খানিকটা সন্দেহ হচ্ছে রাহাতের। আবার এটাও মনে হচ্ছে ওর কাছ থেকে চলে গিয়ে আসলেই হয়তো মায়া ভালোই করেছে।
দীর্ঘশ্বাস ফেলে সামনের দিকে তাকাতেই দোকানির ডিরেকশন দেয়া মসজিদটা দেখতে পেল রাহাত। এটাও এই গ্রামের একমাত্র মসজিদ কিনা কে জানে! তবে মসজিদ পার করে বাম পাশে ঘুরিয়ে কিছুটা যেতেই একটা ছোটখাটো গেইট মতো দেখতে পেল রাহাত। গাড়িটা সেখানে পার্কিং করেই বাড়ির ভিতরে ঢুকে জাস্ট হা হয়ে গেল রাহাত। মোবাইলের ফ্ল্যাশ লাইটের আলোয় বেশ পুরানো একটা টিনের ঘর। কখনো হয়তো যত্ন করেই বানানো হয়েছিল ঘরটা। তবে অনেকদিনের অযত্নে অব্যবহারে টিনে মরিচা পড়েই হয়তো রাতের আঁধারিতে কালচে দেখাচ্ছে বাড়িটাকে। কি কারণে কে জানে রাহাতের গা টা একটু শিউরে উঠলো৷ কোনমতে কাঁপা কাঁপা পায়ে দরজায় গিয়ে কড়া নাড়লো রাহাত। মুদি দোকানি আরো একটা কাজের খবর দিয়েছে রাহাতকে। আর সেটা হলো মায়ারা পুরো পরিবার নতুন বৌ সহ আজ দুপুরেই বাড়ি এসেছে। ভাবতে ভাবতেই খুঁট করে দরজাটা শব্দ করে একটু ফাঁক হলো। দরজাটা খুলে দিতেই রাহাত দেখলো মিহান প্রায় হা করে রাহাতের দিকে তাকিয়ে আছে।
-আরে?? রাহাত ভাই? আপনি?? এতো রাতে?
-আসলেই ভাই দেরি হয়ে গেছে অনেকটাই।
-আসুন আসুন। ভেতরে আসুন।
-জি......
মায়া ছাড়া বাকি সবাই ছোট জায়গাটায় জড়ো হয়েছে। ডাইনিং কাম ড্রইং রুমের মতো করে সাজানো জায়গাটা। সবার সাথে চেয়ারে বসে পড়লো রাহাত।
-রাহাত? বাবা?? তোমার নাকি অফিসে জরুরি কাজ আছে তাই আসো নি??
-না মা। কাজ ছিল। আসলে কাজটা দুপুরের মধ্যে শেষ হবে আমি জানতাম না। আর আমি আসবো মায়া বলে নি আপনাদের??
-কই নাহ। এই মেয়েটা কাজের কথাগুলোই বলে না। বসো বাবা। খেতে দিই। মুখটা কেমন শুকিয়ে গেছে। মিহান রাহাতের সাথে একটু যা বাবা। ছেলেটা একটু ফ্রেশ হয়ে নিক।
হাত মুখ ধুতে গিয়ে আরেকবার অবাক হতে হলো রাহাতকে। বাড়ির ভিতরে ওয়াশরুমের কোন ব্যবস্থা নেই। হাত মুখ ধুতে হলো পুকুরঘাটে গিয়ে। শান বাঁধানো ঘাট যদিও পুকুর পারে। আর বেশ খানিকটা দূরেই একটা টিনের ছাউনি নিয়ে টয়লেট। ফ্রেশ হয়ে এসে এতোক্ষণে রাহাতের খেয়াল হলো সকাল থেকেই সে যে না খেয়ে আছে ব্যাপারটা টেরই পায় নি। রাস্তায় এক কাপ চা খেয়েছে শুধু। টেবিলে ভাত আর মাছ তরকারি দেখে এতোক্ষণে খিদেটা যেন মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। তাড়াতাড়ি খাওয়া শুরু করলো রাহাত।
-বাবা কিছু মনে করো না। তুমি আসবে জানলে ভালো মন্দ কিছু রাঁধতাম।
-আরে নাহ নাহ মা। সমস্যা নেই। আপনার হাতের সব রান্নাই আমার জন্য অনেক স্পেশাল।
-মেয়েটা যদি একবারও বলতো?
-মায়া কোথায় মা??
এতোক্ষণে দিয়া মুখ খুললো। বেশ অনেকক্ষণ ধরেই রাহাতকে দেখে জাস্ট অবাক হয়ে চুপ করে ছিল দিয়া। এতো রাতে উনি আসবেন সেটা দিয়ারও কল্পনার বাইরে ছিল।
-হি হি,ভাইয়া মায়া আপু তো ঘুমিয়ে গেছে সেই কখন। আমি তো আপনি এসেছেন দেখে ডেকে এলাম। আপু টেরও পায় নি।
রাহাত হালকা হেসে খাওয়ায় মন দিল। মনে হলো এই মাত্র যেন ওর বুকের উপর থেকে কেউ এক টন ওজনের একটা পাথর নামিয়ে নিয়েছে। খাওয়া শেষ করে হাত মুখ ধুয়ে মুছে একটু গল্প করলো রাহাত সবার সাথে। এতোটা জার্নি করে এসেছে তাই বেশিক্ষণ বসে থাকলো না। মিহান মায়ার রুমটা দেখিয়ে দিলে সেদিকেই গিয়ে রুমে ঢুকলো রাহাত। কাঠের ডবল পার্টের একটা দরজা আছে৷ সেটা ভালো করে বন্ধ করে মোবাইলের ফ্ল্যাশ লাইট জ্বালিয়ে মায়াকে দেখতে পেল রাহাত। খাটের একপাশেগুটিসুটি মেরে ঘুমাচ্ছে মেয়েটা। গায়ে পাতলা একটা কাঁথা জড়ানো।
গায়ের টিশার্টটা খুলে মায়ার পাশের খালি বালিশটায় শুয়ে পড়লো রাহাত। মোবাইলের ফ্ল্যাশলাইট বন্ধ করে মায়ার দিকে এগিয়ে এসে কাঁথার মধ্যেই ঢুকে বুকে জড়িয়ে নিলো। সারা দিনের এতো থকল পার করে এখন রাহাতের শান্তি লাগছে মায়াকে বুকে জড়িয়ে ধরতে পেরে। অন্ধকার হাতিয়ে মায়ার কপালে আলতো করে একটা চুমো খেয়ে শক্ত করে বুকে চেপে ধরলো মায়াকে। মায়াও ঘুমের ঘোরে রাহাতের বুকের ভিতরে ঢুকে এলো। রাহাত হেসে মায়ার চুলে হাত বুলালো।
" ঘুম ভাঙলে মায়াবতীটার আমাকে দেখে কি রিএ্যাকশন হবে ভিষণ দেখতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু এতো টায়ার্ড লাগছে চোখও খুলে রাখতে পারছি না। উফফ। এই মিষ্টি মায়াপরীটাকে বুকে নিলেই শান্তিতে চোখ জুড়িয়ে আসে কেন এতো? এই মায়াবতী? কাল থেকে একটা নতুন সূচনা করতে চাই তোমাকে নিয়ে। পারমিশন দিবে আমার মায়াবতীটা?"
কথাটা বলে নিজেই হেসে ফেললো রাহাত। পাগলীটা তো ঘুমে কাদা হয়ে গেছে একেবারে। সকালে কি করবে কে জানে? রাহাত আলতো করে মায়ার কপালে আরেকবার ঠোঁট ছুঁইয়ে চোখ বুজলো। আর তার চোখ জুড়ে নেমে এলো রাজ্যের ঘুম।।
ভোরের দিকে মায়ার ঘুম ভাঙলো নাকে চুলের সুড়সুড়ি লাগায়। হাত দিয়ে নাক ঘষে দেয়ার চেষ্টা করায় গরম একটা শরীরে হাত ঠেকলো। মায়া আঁতকে উঠে চোখ মেলে তাকাতেই রাহাতকে দেখে আরেকবার থতমত খেয়ে গেল। রাহাত মায়ার সাথে একই কাঁথা গায়ে পেঁচিয়ে বেঘোরে ঘুমাচ্ছে। তাও আবার খালি গায়ে! এক মূহুর্ত মায়ার মনে হল আসলে ব্যাপারটা সত্যি না। ও নিজেই হ্যালুসিনেশন করছে। যার উপরে রাগ করে এতোদূরে পালিয়ে এলো সেই মানুষটা কি করে এক রাতের মধ্যে ওকে খুঁজে পাবে!! একই শহরে থাকতেও খুঁজে পেতে দশটা দিন সময় লেগেছিল তার। আর ঢাকা থেকে এতো দূরে এই পাড়াগাঁয়ে মাত্র কয়েকটা ঘন্টায় খুঁজে বের করে ফেলবে!! অসম্ভব।
মায়া ধরেই নিয়েছে রাহাত আসে নি। যাকে পাশে বেঘোরে পড়ে পড়ে ঘুমাতে দেখছে সেটা ওর কল্পনা। একটু আলতো করে ছুঁয়ে দিলেই ভ্যানিশ হয়ে যাবে মানুষটা। মায়া রাহাতের দিকে মুখ করে বালিশে মাথা রেখে রাহাতকে দেখছে এক মনে। ওর খুব করে ইচ্ছে করছে একবার মানুষটাকে ছুঁয়ে দিতে। কিন্তু ধরলেই আর মানুষটাকে দেখতে পাবে না ভেবে আর সাহস করে এগুচ্ছে না মায়া।
-কেন এসে এসে জ্বালাচ্ছ? সব কিছু ছেড়ে ছুঁড়ে তো চলে আসতেই চাইছি একেবারে৷ তবু কেন বার বার পথ আটকাচ্ছো? তোমাকে সত্যি আর কারো সাথে নিতে পারবো না আমি। সেদিন যখন বলেছিলে আমার জন্য আগের সব ভুল শোধরাতে চাও--সেদিনও বিশ্বাস করেছিলাম জানো?? কিন্তু তুমি কি করলে? আরেকবার আমার বিশ্বাসটা ভাঙলে। কেন বলো তো? আমি তো ভুলেই গেছিলাম। যে মেয়েটাকে অফিসে পি.এ রাখতে তোমার প্রেসটিজে বাঁধে-যাকে গেঁয়ো দাদিআম্মা মনে হয়- তাকে কেনই বা নিজের জীবনসঙ্গী করে রাখবে??কথাগুলো বলতে বলতে মায়া একটু অন্যমনষ্ক হয়ে পড়েছিলো। হঠাৎ কারো হাতের টানে একেবারে বুকের ভিতরে জাপটে ধরা অনুভব করলো মায়া। আরেকবার অবাক হয়ে মায়া রাহাতের দিকে তাকালো। না তো। মানুষটা তো ঠিকই পাশে আছে৷ ভ্যানিশ হয়ে যায় নি। ব্যাপারটা খেয়াল হতেই মায়ার বুকের ভিতরে ধ্বক করে উঠলো। রাহাত সত্যি সত্যি এসেছে!!? কি করে!! শরীর মোচড়ামুচড়ি করে রাহাতের হাতের বাঁধন থেকে ছোটার বহু চেষ্টা করেও ছুটতে পারছে না মায়া। হাত দুটো যেন ইচ্ছে করে আরো বুকের ভেতরে চেপে ধরছে মায়াকে। মায়া খুব বিরক্ত হয়ে চুপ করে গেল। এই লোকটা এমন কেন? একটু হারিয়ে গিয়েও শান্তি নেই এর জন্য। কোথাও একটু হাওয়া হয়ে যেতে দিবে না নাকি!?
-উহু, দিবো না হাওয়া হতে। এতো অবাক হয়ে তাকিয়ে থেকো না তো। ঘুমুতে দাও। এভাবে আমার দিকে হা করে তাকিয়ে থাকলে ঘুম ঘুম ক্লান্ত শরীর নিয়েও তোমার মাঝে ডুব দিবো কিন্তু।
মায়া তাড়াতাড়ি রাহাতের বুকে মুখ লুকিয়ে নিল। এই লোকের আসলেই বিশ্বাস নেই। আর কখন কি বলে তার হুঁশটুকুও নেই। রাহাত আরো নিবিড় করে মায়াকে বুকে চেপে ধরলো।
-কি আছে কি নেই সেটা সকালে ঘুম ভাঙলে বুঝাবো দাঁড়াও।
মায়া একবার শিউরে উঠে রাহাতের বুকে আরেকটু আড়ষ্ট হয়ে চুপ করে রইলো। রাহাত চোখ বুজেই আলতো করে মায়ার চুলে চুমো খেল। এক সময় দুজনেই গভীর ঘুমে হারিয়ে গেল। ঘুমের ঘোরেও মায়ার বারবার মনে হচ্ছে রাহাত আসলেই আসে নি। স্বপ্নই দেখছে সে। ঘুম ভাঙলেই দেখবে মানুষটা নেই। অথচ তবুও মানুষটার স্পর্শ, উষ্ণ শরীর, নিঃশ্বাস, বুকের ঢিপঢিপ সবই বেশ ভালো করেই অনুভব করতে পারছে।
সকালে মায়ার ঘুম ভাঙলো ঠোঁটে কারো ঠোঁটের স্পর্শে। চমকে আথালিপাথালি সরে যাওয়ার আগেই রাহাত ওকে টেনে বুকে শুইয়ে দিলো।
-আরে আরে?? গুড মর্নিং মায়াবতী? আমি তো?
-তুমি!!? মানে!! তুমি কখন এলে?
-সেই কখন এলাম!! রাতে এলাম। আর তুমি তো কুম্ভকর্ণের মতোঘুমাচ্ছ.....
-কেন এসেছ??
-মিহান ভাইয়া আর দিয়া ভাবি হানিমুনে এখানে এসেছে। তোমার আমার হানিমুনটাও তো বাকি ছিল না? তাই আর কি?? মাকে বলো নি আমি আসবো??
-তুমি!!? অসহ্য লোক একটা!! এক্ষুণি ঢাকা ফিরে যাবা অসভ্য লোক।
-আরে আরে?? আচ্ছা?? তুমি বললেই চলে যাবো নাকি? উহু মোটেও না। তোমার সাথে বহু হিসাব বাকি আমার। সেগুলোর ফয়সালা না করে এক পা ও নড়ছি না আমি।
-কিসের হিসাব শুনি??
-তোমার সব রাগ, অভিমান, অভিযোগ মেনে নিয়েছি আমি৷ কিন্তু তোমার আমার সম্পর্কটা শুধু শরীরের চাহিদা মেটানোর জন্য ছিল এটা কেন বললে?
-বলবো না কেন?? আর এসেছই বা কেন? যাও না তোমার পি.এ র কাছে? আমার কাছে কি?
-আরে?? পি.এ র বিয়েতে তোমাকে সহ দাওয়াত দিয়েছে তো। তোমাকে নিতে এসেছি।
-মানে??
-সেদিন দিহানের সাথে কথা বললে না? ওর আর লিজার বিয়ে।
-তো আমি কি করবো??
-আরে?? কি মুশকিল?? ওরা দুজন না থাকলে তোমাকে খুঁজে পেতাম কিনা কখনো জানিও না। তাই ওদের বিয়েতে তোমাকে নিয়ে যাবো। ওরা আমার পাগলামি দেখে তোমাকে দেখতে চায় জানো??
-বাহ!! ওই মেয়েকে তুমি পার নাইট ৫০০০০ করে টাকা দিচ্ছ আবার বিয়েতে বউ নিয়ে যেতেও চাচ্ছো!! কি ব্যাপার কি বলো তো?
-আরে শোনো না? তোমাকে যে অডিওটা পাঠিয়েছে সেটা আরো আগেই। ওই যে তুমি বাড়ি থেকে চলে এসেছিলে?! সেদিনের... জুলি ইচ্ছে করেই......
-আবার জুলি!!
-না রে বাবা। শোনো না? ওই বদমাইশ মেয়েটা তোমাকে ইচ্ছে করে ভুল বুঝাচ্ছে মায়াবতী। আমি সত্যি.....
-এসব করো নি বলছো? এটা তোমার গলা নয় সেটা বলতে চাইছ তুমি আমাকে!?
-না তো। করেছিলাম তবে এখন সব ছেড়ে দিয়েছি। সরি তো মায়াপরী। ওটা আগে করে ফেলেছিলাম। আমি সত্যি সব শুধরে নিয়েছি বিশ্বাস করো??
-আবার??!
-উ---হ-- তুমি দিহানকেই জিজ্ঞেস করো না হয়?? ও সবটা জানে। সরি তো? এই? মায়াবতী? তাকাও না প্লিজ??
-ছাড়ো, এটা তোমার শহর নয় যে ১০ টা ১১ টা পর্যন্ত বিছানায় পড়ে থাকবে! এখানে একটা ২ বছরের বাচ্চাও ৬ টার সময় উঠে যায় বিছানা থেকে।
-তাই? আমাদের পিচ্চিগুলোকে তাহলে এখানে নিয়ে আসবো কেমন? ওরা ভোর ভোর উঠে সারা উঠানময় খেলা করবে। আর আমি তোমাকে বিছানায় ফেলে তোমার মাঝে ডুব দিবো।।
-অসভ্য লোক একটা!! সরো। আজেবাজে কথা সব সময়।
রাহাতকে ধাক্কা দিয়ে নিজে বিছানা থেকে উঠে গেল মায়া। ব্রাশে পেস্ট লাগিয়ে ব্রাশ করতে করতে বাইরে বেরিয়ে গেল। আর রাহাত ঠোঁটে বাঁকা হাসি ঝুলিয়ে মায়ার কাজ দেখছে। মায়া হাত মুখ ধুয়ে রুমে এসে ব্রাশটা রাখতে যাবে এমন সময় রাহাত মায়ার হাত থেকে ব্রাশটা নিয়ে একটু পেস্ট লাগিয়ে ব্রাশ করতে শুরু করলো।
-এই?? কি করছ কি? এটা আমার ব্রাশ।
-যা তোমার তাই আমার। তাই না মায়াবতী??
কথাটা বলে রাহাত হেলেদুলে ব্রাশ করতে করতে পুকুরের দিকে রওনা দিল। আর পিছনে মায়া হা করে রাহাতকে দেখতে লাগলো। কি হলো তার কিছুই বুঝলো না বেচারি।
চলবে........
#আমার_মায়াবতী

মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন