সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

"হঠাৎ প্রেম"(পর্ব_দুই)

Written by Asif.
প্রথম পর্বের পরে......
কিছুক্ষণ পর মিনহাজ আসলো। দুজন একই ফ্ল্যাটেই থাকি।
আমরা খুব ভালো বন্ধু সেই স্কুল লাইফ থেকে এখন পর্যন্তও।
ওকে একটু বিষন্ন দেখে জিজ্ঞাসা করলাম....
"কিরে, তোর আবার কি হয়েছে। মুখটা বাংলার পাঁচ এর মত করে আসলি যে।"
"আমার টা ছাড়, ভাবলাম তুই কয়েকদিন থাকবো গ্রামে। তো এত জলদি কেনো!"
"বলতে পারিস খুশির ঠেলাই, আমার অবর্তমানে কি  নিধির সাথে কিছু হয়েছে?"
"কি হবে?"
"ইয়ে মানে, ঝগরা টগরা......."
"নাহ,আর নিধী কিডা? আমি ওরে চিনিনা।আমি ঘুমাবো,তুই ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নে।"
বলে চলে গেলো, বুঝলাম নিধির সাথে নিশ্চয় কিছু হয়েছে। নিধি ওর গার্লফ্রেন্ড। আর আমার পাগলী টাইপ একটা বন্ধুবি।
ভাবলাম আজকে মিনহাজ যখন আমার জন্য একটা ফোন কল করতে পারছে,আমি তো অবশ্যই পারি....
সো,নিধি কে কল লাগালাম ....
দ্বিতীয় বারের বার কল টা রিসিভ হলো..
"আসসালামু ওয়ালাকুম,"
"ওসব সালাম টালাম দূরে রাখ, আর শোন আমি তোকে কল করতেই যাচ্ছিলাম।"(নিধি)
"তো করলিনা কেনো! ওকে আমি ফোন রাখছি তুই ব্যাক কর,এমনিতেই ফোন বলেন্স নেই।"
বলে ফোন টা কেটে দিলাম। জানি ব্যাক করবে...
আর তাই হলো...
"হুম বল"(আমি)
"কই তুই!"
"ঢাকায় এখন, একটু আগেই আসলাম!"
"হুম, ঠিক আছে। আর শোন আমাকে আর তুই তোকরি বলে ডাকবিনাl আজ থেকে আমি তোর গার্লফ্রেন্ড,আমি তোকে ভালবাসি। আর শোন তোর সাথে থাকে কি কেনো নাম,
হুম,ওই মিনহাজ কে বলবি ও যেনো আমার সামনে না আসে। এখন ঘুমো, সকালে এগারোটায় আমার সাথে দেখা করবি টিএসসি তে।"(নিধি)
"কেউ এভাবে প্রপোজ করে নাকি! ভালোভাবে বললেই তো পারতি!"
"আমি এভাবেই বলি। আর হুম, তর ওই মিনহাজ কেউ আনবি।"
বলে ফোনটা কেটে দিলো। ও পুরায় রেগে আছে। ভেবেছিলাম মিংহাজকে কিছু হেল্প করতে পারব কিন্তু আমি নিজেই ফেঁসে গেলাম। নাজানি এই দুইটার মধ্যে এই একদিনেই কি হলো।
মিনহাজনকে টেক্সট করলাম,
"বেশি ভাবিশ না,জলদি ঘুমিয়ে পড়। সকালে আমার সাথে এক জায়গায় যেতে হবে।"
তার পর ঘুমিয়ে পরলাম। বেশ ক্লান্ত আজকে। লং জার্নি, তাও আবার বাসে! এটা আমার একদম পছন্দ না ।
সকালে দুজন ভার্সিটির দিকে হাঁটছি।  এখান থেকে বেশি দূরে নয়।  মিনহাজ অবস্থা বেশ বুঝতে পারছি। মনে হয় না রাতে ঘুমিয়েছে।
টিএসসি তে পৌঁছুতেই নিধি কে দেখতে পেলাম। আমাকে দেখে কাছে আসলো। মিনহাজ অন্য দিকে মুখ গুর আছে। ওদের দুইজন কে দেখে বেশ হাসি পাচ্ছে। মনে হয় কেউ কাউকে চেনে না।
"হুম,কি বলবি বল"(আমি)
"তোমার সাথে ঐটা কে!"(নিধি))
নিজেই সাথে আনতে বললো এখন আবার ভনিতা করছে,কি আজব। আমিও সেরকম উত্তর দিলাম।
"একটা মেয়ে,যে সবসময় মিনহাজ নামের একটা ছেলের দেয়া      হেয়ারক্লিপ মাথায় দেয়। আর এখনো দিয়ে আছে ,যদিও সেটা দেখতে ভালো না। তার বয়ফ্রেন্ড।"(আমি)
"তুই এখন আমাকে প্রপোজ করবি!"
"আমার মাথা গেছে নাকি,যে তোকে প্রপোজ করতে যাবো।"
"যা বলছি তাই করতে হবে,নইলে তোকে.....
(আমার দিকে তেড়ে আসছে......)
"আরে দ্বারা দ্বারা..... (একবার ওর দিকে তাকাচ্ছি আরেকবার মিনহাজের দিকে। ও উল্টো দিকে মুখ ঘুরে আছে.....)
তার পর ভাবলাম, করেই ফেলি। পরে ওদের রাগ কমলে ব্যাপারটা মিটিয়ে ফেলবো,আর নিধী সাংঘাতিক রাগী। রেগে গিয়ে আবার কিনা কি করে বসে। শেষে আবার মান ইজ্জতের বারোটা বাজবে।
সো,আর কিছু না ভেবে হাঁটু গেরে পকেটে থাকা কলম টা নিধির দিকে বাড়িয়ে দিলাম।
"নিধি, এই একটা সুন্দর পাঁচ টাকার কলমের বিনিময়ে কি তোমার ঐ সিরাফাটা মনটা আমাকে দিবে?! যেটা আগে মিনহাজ ছিল।"
"হুম, দিব মিস্টার।"(নিধি)
অতঃপর কিছুক্ষনের মধ্যেই একটা শব্দ হলো। কাউকে চড় মারার হবে হইতো। আরও কিছুক্ষণ পর বুঝতে পারলাম সেটা আমার গালেই পড়েছে।
সামনে তাকিয়ে দেখি সেই মেয়েটা! যাকে বাস স্ট্যান্ড এ দেখেছি,আর বাড়িতেও।
"(গালে হাত দিয়ে)এটা কি হলো! আপনি আমাকে মারলেন কেনো?"
"আমার ইচ্ছে করেছে তাই!"
"মনে,আপনার কি মাথায় প্রবলেম আছে নাকি!"(আমি)
"আমার মাথায় নেই,কিন্তু আপনার চোখে অবশ্যই আছে,
আর কখনো যেনো আপনাকে কোন মেয়ের সাথে না দেখি।
নইলে চোখ তুলে নেবো!"
তারপর নিধির দিকে চোখ রাঙিয়ে চলে গেলো।এই মেয়ের মাথাই অবশ্যই প্রবলেম আছে। আর হাতে শক্তিও বেশ।
ঘটনা সামলে নিয়ে সামনে দেখি মিনহাজ আর নিধি আমার দিকে চোখ বড় বড় করে  তাকিয়ে আছে।
"এটা কি ছিল?"(দুজনে একসাথে)
"ওই মেয়ে কে আমি চিনি না, ওর নাম পর্যন্ত জানিনা। আর এটাও জানিনা যে ও এখানে কি করছে!"
"তলে তলে এতো কিছু আর আমরা জানিনা!"(মিনহাজ)
"আরে তোরা যা ভাবছিস সেটা না।"
"তাহলে কি!?"(নিধি)
" এই দ্বারা দ্বারা, তোরা না কেউ কাউকে চিনিস না। এখন যে আবার এক শুরে কথা বলছিশ।"
"চিন্তামনা,কিন্তু কিছুক্ষণ আগে পরিচিত হয়েছি। এখন আমাদের সবটা বল?"
"বললাম তো আমি ওকে চিনি না!
"ওকে চিনাই দিচ্ছি, ও হলো নাহিদা। আমার ডিপার্টমেন্ট এই পড়ে। এখন বাকিটা বল।"
"দূর, বলছিনা আমি জানিনা কিছু।
বলেই দৌড় লাগালাম। মিনহার পিছু নিচ্ছিল কিন্তু নিধি আটকে দিল।  জোর বাচা বেচে গেছি।  জানিনা বাসায় এসে আবার মিনহাজ কি শুরু করে।  চিনি না জানিনা একটা মেয়ে এসে আমাকে চর দিল। ওরা প্রতিবাদ করবে কিসের কি,উল্টো আমাকে কয়েদি বানিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে।
দুইটা আবার মিলেছে। আর আমি ফেঁসে গেলাম।
সোজা বাসায় চলে আসলাম। আজকে আর বেরুবো না।
ওরা হইতো কোনো পার্কে বসে বাদাম চিবুচ্ছে। তাতে আমার কি! আমি তো এখনো সিংগেল।
কিন্তু মেয়েটার নামটা অনেক সুন্দর...."নাহিদা, নাহিদ্যা"। মাথায় রীতিমতো ঘুরপাক খাচ্ছে।
to be continued............

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(পর্ব ০৯)

RM ,,পূর্ববর্তী পার্ট গুলি পেতে অমার টাইমলাইন  ভিজিট করুন,, কতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলাম সেটা মনে নেই। চোখ খোলে যখন মাথার পেছনে সজোরে এক থাপ্পর খাই। ঘুম ঘুম চোখে চারদিকে তাকিয়ে দেখি যে কে আমাকে চড়টা মারল। আমি দেখলাম যে আমি উঠানের মাটিতে পড়ে আছি, পায়ের কাছে মাটিতে সুব্রত পড়ে আছে। আমি ওপর দিকে তাকিয়ে দেখতে চেষ্টা করি যে কে আমাকে চড়টা মারল, আমি অবাক হয়ে দেখি যে ইন্দ্রানি মাসি আমাদের দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে। আমার দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে বলে ওঠেন “শুয়োর গুলো এখানে শুয়ে? আর আমারা তোদের দু’জনকে সারা বাড়িতে হন্যে হয়ে খুঁজছি। তোদের কি কোন বোধ বুদ্ধি নেই?” আমি সুব্রতর কাঁধ ঝাঁকিয়ে উঠিয়ে দিলাম, সুব্রত আর আমি দুজনেই উঠে পড়লাম মাটি থেকে। আমি কাতর চোখে ইন্দ্রানি মাসির দিকে চেয়ে বললাম “সরি মাসি। ভুল হয়ে গেছে, কাল রাতে একটু বেশি হয়ে গেছিল।” চেয়ারের ওপরে মদের বোতল আর গ্লাসের দিকে ইন্দ্রানি মাসির চোখ পড়ে যায়, তাড়াতাড়ি করে চেয়ারের ওপরে নিজের শাল ফেলে দিয়ে ঢেকে দেয় গ্লাস আর বোতল। ঠিক সেই সময়ে পেছন থেকে অনেক গুলো পায়ের আওয়াজ পাই। মাসি সবাই কে বলে “এই ছেলে দুটো সারা রাত...

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(শেষ পর্ব)

RM কিছুদূর যেতেই  একটি জায়গায় গাড়ি দাঁড় করায় বল্বিন্দার, বলল যে গাড়িতে তেল ভরতে হবে। গাড়ি থামার সঙ্গে সঙ্গে পরীর ঘুম ভেঙে যায়, আমার দিকে তাকিয়ে বলে “কতক্ষণ ঘুমিয়েছি আমি?” আমি বললাম “বেশীক্ষণ ঘুময়নি তুমি” “আমরা থামলাম কেন?” “তেল ভরার জন্য।” “আর কত দেরি পৌঁছতে?” আমি পেট্রল পাম্পের লোকটাকে জিজ্ঞেস করলাম যে জিওরি থেকে চিতকুল কতক্ষণ লাগবে পৌঁছতে। লোকটা আমায় জানাল যে আরও ঘন্টা চারেকের রস্তা বাকি। লোকটা আরও জানাল যে কারছাম ব্রিজের পরে রাস্তা খুব খারাপ। বল্বিন্দার আমাকে বলল যে ও রাস্তা জানে, কোন চিন্তা করতে বারণ করল আমাকে। পরী হিন্দি বিশেষ ভালো করে বোঝেনা তাই আমাকে জিজ্ঞেস করে যে বল্বিন্দার কি বলল। আমি রাস্তার কথাটা চেপে গেলাম, জানালাম যে কোন কিছুর জন্য চিন্তা না করতে। ঘড়ির দিকে তাকালাম, আড়াইটে বাজে তখন, তারমানে চিতকুল পৌঁছতে সন্ধ্যে হয়ে যাবে। একে শীতকাল তায় আবার পাহাড়, এখানে রাত সমতলের চেয়ে একটু তাড়াতাড়ি নামে। জিওরি ছাড়ার কিছু পরেই পরী বলল যে ও আর ঘুমোতে চায় না, বাইরের দৃশ্য দেখবে। আমি বললাম ঠিক আছে। কিছু পরেই সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ে। যখন আ...

"এক অপরিচিতা"(পর্ব: ছয়)

লেখক:আসিফ ইকবাল! "আগের পর্ব গুলো আমার টাইমলাইনে বিদ্যমান" পঞ্চম পর্বের পর থেকে..... ___আরে বাহ, আপনি নিজের বউ কেই চিনতে পারছেন না!       এবার তো বলবেন গতকাল আপনি আমাকে বিয়েই করেন              নি। হম,সেটাও বলে ফেলেন না! দেরি কেনো? ওর এতগুলি কথার পর বুঝতে পারলাম,এটাই আমার অপরিচিতা,কিন্তু ও আজকে নিকাব পড়েনি। হিজাব পড়েছে। তাই চিনতে পারিনি। মুখ দিয়ে কিছু বের হচ্ছেনা। শুধু ওর দিকে তাকিয়ে আছি। আমার বউটা অনেক কিউট। সকাল বেলা যে আমার জন্য এরকম একটা সারপ্রাইজ আছে সেটা ভাবিনি!      ____কি!আপনি কি এভাবেই তাইকে থাকবেন? নাকি উঠেবেন। জলদি উঠে ফ্রেশ হোন।(তাফা) ____তুমি আজকে নিকাব পরোনি যে! ____আপনি তো আমার বর!আপনার সামনে নিকাব পড়তে হবে কেনো?(তাফা) বলে.....একটা হাসি দিয়ে চলে গেলো। এই প্রথম ওর হাসি দেখলাম। আর সেটা আমাকে রীতিমতো পাগল করে দিয়েছে। আর দেরি করলাম না। জলদি বিছানা ছেড়ে ফ্রেশ হতে চললাম। তাফা,,, তাফা! কই তুমি?........ "এইতো কিচেনে,কি হোয়েছে..... তাফা কিচ...