প্রথম পর্বের পর থেকে..........
তিনমাস হয়ে গেছে।মেয়েটির দেখা আর পাইনি অরুনাভো।
কাজের চাপে মেয়েটার কথা মন-মাথা থেকে বেড়িয়েও গেছে।কোয়েনার রোজকার ঝামেলা আর সহ্য করতে পারছেনা অরুনাভো।রোজ রাত্রে ঝগড়া তার মধ্যে ওর বাবা সম্বন্ধ দেখতে শুরু করে দিয়েছে এখন কারণ সে নাকি অরুনাভোকে আর বিশ্বাস করতে পারছেনা।
আগেও তিনি অরুনাভোকে পছন্দ করতেন না .সে নাহয় কোয়েনা অরুনাভো দুজনে এখন জীবনে দাঁড়িয়েছে আর কোয়েনার মায়ের চাপে এ কটা দিন বসেছিলেন তবে মেয়ের বয়স বেড়ে যাচ্ছে আর দেরি করলে কী জানি মেয়েকে একাই ফেলে চলে যেতে হয়।
কাজের চাপে মেয়েটার কথা মন-মাথা থেকে বেড়িয়েও গেছে।কোয়েনার রোজকার ঝামেলা আর সহ্য করতে পারছেনা অরুনাভো।রোজ রাত্রে ঝগড়া তার মধ্যে ওর বাবা সম্বন্ধ দেখতে শুরু করে দিয়েছে এখন কারণ সে নাকি অরুনাভোকে আর বিশ্বাস করতে পারছেনা।
আগেও তিনি অরুনাভোকে পছন্দ করতেন না .সে নাহয় কোয়েনা অরুনাভো দুজনে এখন জীবনে দাঁড়িয়েছে আর কোয়েনার মায়ের চাপে এ কটা দিন বসেছিলেন তবে মেয়ের বয়স বেড়ে যাচ্ছে আর দেরি করলে কী জানি মেয়েকে একাই ফেলে চলে যেতে হয়।
তাই তিনি মেয়ের বিয়ের জন্য উঠে পরে লেগেছেন।মনে মনে তিনি অবশ্য খুশিও অরুনাভোর উদাসীনতায়।কিন্তু এদিকে বিয়ে নিয়ে একদিকে কোয়েনা চাপ দিচ্ছে আর অন্যদিকে অরুনাভোর পরিবার।কোয়েনাকে পুত্রবধূ করার জন্য অরুনাভোর মা-বাবার তর সইছেনা।আর পাত্রী ও তার মা রাজি ব্যাস তার বাবাকে একটু বোঝাতে হবে।কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা অরুনাভোকে নিজে থেকে কোয়েনাকে বলতে হবে আর রাজি হতে হবে।অরুনাভোর মা রোজ রাত্রে খাওয়ার সময় একবার করে বলবেন,
"বাবা বয়স তো বেড়ে চলেছে বুঝতে তো পারছিস।এবার বিয়ে তো করতে হবে বল?।আর পাত্রী খুজঁতে হবে যে এমন তো নয়।কোয়েনার সাথে কতদিনের সম্পর্ক তোর।কোয়েনাকে কতদিন আর অপেক্ষা করাবি?ও কিন্তু একটা মেয়ে বাবা।"অরুনাভ বিরক্ত হয়ে বলে,
"মা,এখন ভালো লাগছে না প্লিজ!বিয়ে হবে ঠিক তুমি এত ভেবোনা"।
কোয়েনাকেই যে সে বিয়ে করবে এটা সে তাদের সম্পর্কের শুরু থেকেই ঠিক করে রেখেছিল।সে তার জীবনের প্রথম প্রেমকে অন্যদের মত হারাতে দেবেনা।কিন্তু সময়ের সাথে সাথে কোয়েনা যে এমন ইম্পসিবেল হয়ে উঠবে সেটা অরুনাভ ভাবতে পারিনি।এই কোয়েনার প্রতি সে আর কিছু ফিল করতে পারেনা বা চাইলেও আর সেই ভালোবাসাটা নেই।সামান্য চোখের আড়াল হওয়াতে যে কোয়েনা তাকে এত অবিশ্বাস করবে তা কি সে জানত? কি কি না শুনিয়েছে কোয়েনা এই দেড় বছরে তাকে।তার সাথে সংসার করতে হবে সারাজীবন ভাবলেই মনটা বিষিয়ে যায়।এরপর কী করব কিছু বুঝতে পারে না অরুনাভ।কোয়েনার সাথে ব্রেক আপ করলেও বড় একটা ঝামেলা করবে ও আর সাথে অরুনাভোর মাও।আর না করলেও সারাজীবন এভাবে চলা দায় হয়ে উঠবে। একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল সে আকাশের দিকে তাকিয়ে।আজ কত তারা উঠেছে আকাশে।বেশ ঠান্ডা হাওয়াও দিচ্ছে।গরমকালে রাতের খাওয়ার পর ছাদে ঘোরা অরুনাভোর খুব ছোট থেকে অভ্যাস।ফোনটা বেজে উঠল।কোয়েনার ফোন।ফোনটা ধরল অরুনাভ কিন্তু কোনো কথা বলল না।ওপার থেকে কোয়েনা শুরু করল,
"অরু,আজ আমাকে ছেলের বাড়ির থেকে দেখতে এসেছিল।আমার বাবা কিন্তু শিগগিরই বিয়ে দিয়ে দেবে আমার মা কিন্ত আর বাবাকে আটকাতে পারবেনা।অরু,পিল্জ কিছু কর আমি তোমার সাথেই থাকতে চাই।"লাস্ট কথাটা বলার সময় কোয়েনা যে প্রায় কেদেঁ ফেলেছে তাতে সন্দেহ নেই।
"তুমি নিজেকে সামলাও কোয়েনা ঠিক আমি কিছু একটা করব" কথাটা উচ্চারণ করাতেই অরুনাভোর অস্বস্তিবোধ হল।
"কী করবেটা কী তুমি?কবে থেকে এক কথা শোনাচ্ছ।আঙ্কেল আন্টি আর তুমি এসে ব্যাস পাকা কথা বলবে .... আমাদের কী অন্যদের মত অবস্থা যে দুই বাড়ি থেকে মানছেনা? আজ ছয় বছর হতে চলল।তুমি চাকরি পেয়েছো যে তিন বছর হয়ে গেছে আর ফিনান্সিয়ালি যথেষ্ট স্টেবল তুমি এখন।তুমি চাইলেই এই কয়দিনের মধ্যে আমাদের বিয়েও হয়ে যেত।তা না..."
"আমাকে একটু সময় দাও।বিয়ে তো সারা জীবনের ব্যাপার তাই না?"
"আর কত সময় চাই? নাকি অন্য কাউকে?...." একটু থামে।" তা না হলে আমাকে এভাবে ঝোলাচ্ছো কেন? বল অরু? কেন?"
"এরকম কিছু নয় কোয়েনা" কোয়েনা এরপর একের পর এক কথা শোনাতেই লাগল।কোয়েনার এই ব্যাপারে রাগ হওয়াটা স্বাভাবিক তবে এত কথা শোনানোর কী হয়েছে?সব মিলিয়ে দম বন্ধ লাগছিল অরুনাভোর।কোয়েনার বকবকের আর মানে বুঝতে পারছিল না।মাথাটা যেন মুহূর্তের মধ্যে হ্যাং হয়ে গেছে।
"কোয়েনা লেটস ব্রেক আপ!"ওপাশ থেকে কোনো উত্তর এলনা।
"কী বললে?"
"লেটস ব্রেক আপ কোয়েনা।আমাদের মধ্যে আর কিচ্ছু নেই এই রোজ রাতের ঝগড়াগুলো ছাড়া।আমি এই ঝগড়াগুলোর সাথে সারাজীবন কাটাতে চাইনা আর আমাদের বিয়ের কথা ভুলে যাও।নতুন করে শুরু কর।"
"কী? কী বলছ তুমি? তার মানে আমি চলে আসাতেই ঠিক অন্য কাউকে জুটিয়ে নিয়েছো তাইতো?"
"কোয়েনা বেস্ট অফ লাক,গুডবাই" বলে ফোনটা কেটে দিল অরুনাভ।ফোনটা রেখে অরুনাভো নিজেই কিছুক্ষণ কিছু বুঝতে পারছিলনা আসলে বিশ্বাস করতে পারছিলন সে যা করল এখন।এরপরের অ্যাকশনটি কি হবে তার চিন্তায় সে সারারাত ঘুমাতে পারলনা।ফোনটে ফ্লাইট মোডে করে শুয়েছিল সে।সকালে উঠৈ দেখল মেসেজ ঢুকল "You have 42misscalls..."।নিজেরই খুব খারাপ লাগল যে কোয়েনার সাথে সে যা করছে ভেবে।তবে সে যে ভুল কিছু করছেনা তাও ঠিক।কারণ সারাজীবন অন্যের খুশির জন্য বেচেঁ লাভ নেই।আর বিয়ের পর কোয়েনার যেই ভালোবাসাটা প্রাপ্য হবে তা যদি অরুনাভ দিতে না পারে?কত খেয়াল আসতে লাগল মাথায় একের পর এক।যেন নিজের সাথে নিজের যুদ্ধ।একদিক বলে চলেছে যে এটা স্বার্থপরের মত কাছ হচ্ছে আরেকদিক বলছে কিছুই ভুল নেই এতে।

মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন