সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

Unknown girl(part_two)

প্রথম পর্বের পর থেকে..........
তিনমাস হয়ে গেছে।মেয়েটির দেখা আর পাইনি অরুনাভো।
কাজের চাপে মেয়েটার কথা মন-মাথা থেকে বেড়িয়েও গেছে।কোয়েনার রোজকার ঝামেলা আর সহ্য করতে পারছেনা অরুনাভো।রোজ রাত্রে ঝগড়া তার মধ্যে ওর বাবা সম্বন্ধ দেখতে শুরু করে দিয়েছে এখন কারণ সে নাকি অরুনাভোকে আর বিশ্বাস করতে পারছেনা।
আগেও তিনি অরুনাভোকে পছন্দ করতেন না .সে নাহয় কোয়েনা অরুনাভো দুজনে এখন জীবনে দাঁড়িয়েছে আর কোয়েনার মায়ের চাপে এ কটা দিন বসেছিলেন তবে মেয়ের বয়স বেড়ে যাচ্ছে আর দেরি করলে কী জানি মেয়েকে একাই ফেলে চলে যেতে হয়।
তাই তিনি মেয়ের বিয়ের জন্য উঠে পরে লেগেছেন।মনে মনে তিনি অবশ্য খুশিও অরুনাভোর উদাসীনতায়।কিন্তু এদিকে বিয়ে নিয়ে একদিকে কোয়েনা চাপ দিচ্ছে আর  অন্যদিকে অরুনাভোর পরিবার।কোয়েনাকে পুত্রবধূ করার জন্য অরুনাভোর মা-বাবার তর সইছেনা।আর পাত্রী ও তার মা রাজি  ব্যাস তার বাবাকে একটু বোঝাতে হবে।কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা অরুনাভোকে নিজে থেকে কোয়েনাকে বলতে হবে আর রাজি হতে হবে।অরুনাভোর মা রোজ রাত্রে খাওয়ার সময় একবার করে বলবেন,
"বাবা বয়স তো বেড়ে চলেছে বুঝতে তো পারছিস।এবার বিয়ে তো করতে হবে বল?।আর পাত্রী খুজঁতে হবে যে এমন তো নয়।কোয়েনার সাথে কতদিনের সম্পর্ক তোর।কোয়েনাকে কতদিন আর অপেক্ষা করাবি?ও কিন্তু একটা মেয়ে বাবা।"অরুনাভ বিরক্ত হয়ে বলে,
"মা,এখন ভালো লাগছে না প্লিজ!বিয়ে হবে ঠিক তুমি এত ভেবোনা"।
কোয়েনাকেই যে সে বিয়ে করবে এটা সে তাদের সম্পর্কের শুরু থেকেই ঠিক করে রেখেছিল।সে তার জীবনের প্রথম প্রেমকে অন্যদের মত হারাতে দেবেনা।কিন্তু সময়ের সাথে সাথে কোয়েনা যে এমন ইম্পসিবেল হয়ে উঠবে সেটা অরুনাভ ভাবতে পারিনি।এই কোয়েনার প্রতি সে আর কিছু ফিল করতে পারেনা বা চাইলেও আর সেই ভালোবাসাটা নেই।সামান্য চোখের আড়াল হওয়াতে যে কোয়েনা তাকে এত অবিশ্বাস করবে তা কি সে জানত? কি কি না শুনিয়েছে কোয়েনা এই দেড় বছরে তাকে।তার সাথে সংসার করতে হবে সারাজীবন ভাবলেই মনটা বিষিয়ে যায়।এরপর কী করব কিছু বুঝতে পারে না অরুনাভ।কোয়েনার সাথে ব্রেক আপ করলেও বড় একটা ঝামেলা করবে ও আর সাথে অরুনাভোর মাও।আর না করলেও সারাজীবন এভাবে চলা দায় হয়ে উঠবে। একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল সে আকাশের দিকে তাকিয়ে।আজ কত তারা উঠেছে আকাশে।বেশ ঠান্ডা হাওয়াও দিচ্ছে।গরমকালে রাতের খাওয়ার পর ছাদে ঘোরা অরুনাভোর খুব ছোট থেকে অভ্যাস।ফোনটা বেজে উঠল।কোয়েনার ফোন।ফোনটা ধরল অরুনাভ কিন্তু কোনো কথা বলল না।ওপার থেকে কোয়েনা শুরু করল,
"অরু,আজ আমাকে ছেলের বাড়ির থেকে দেখতে এসেছিল।আমার বাবা কিন্তু শিগগিরই বিয়ে দিয়ে দেবে আমার মা কিন্ত আর বাবাকে আটকাতে পারবেনা।অরু,পিল্জ কিছু কর আমি তোমার সাথেই থাকতে চাই।"লাস্ট কথাটা বলার সময় কোয়েনা যে প্রায় কেদেঁ ফেলেছে তাতে সন্দেহ নেই।
"তুমি নিজেকে সামলাও কোয়েনা ঠিক আমি কিছু একটা করব" কথাটা উচ্চারণ করাতেই অরুনাভোর অস্বস্তিবোধ হল।
"কী করবেটা কী তুমি?কবে থেকে এক কথা শোনাচ্ছ।আঙ্কেল আন্টি আর তুমি এসে ব্যাস পাকা কথা বলবে .... আমাদের কী অন্যদের মত অবস্থা যে দুই বাড়ি থেকে মানছেনা? আজ ছয় বছর হতে চলল।তুমি চাকরি পেয়েছো যে তিন বছর হয়ে গেছে আর ফিনান্সিয়ালি যথেষ্ট স্টেবল তুমি এখন।তুমি চাইলেই এই কয়দিনের মধ্যে আমাদের বিয়েও হয়ে যেত।তা না..."
"আমাকে একটু সময় দাও।বিয়ে তো সারা জীবনের ব্যাপার তাই না?"
"আর কত সময় চাই? নাকি অন্য কাউকে?...." একটু থামে।" তা না হলে আমাকে এভাবে ঝোলাচ্ছো কেন? বল অরু? কেন?"
"এরকম কিছু নয় কোয়েনা" কোয়েনা এরপর একের পর এক কথা শোনাতেই লাগল।কোয়েনার এই ব্যাপারে রাগ হওয়াটা স্বাভাবিক তবে এত কথা শোনানোর কী হয়েছে?সব মিলিয়ে দম বন্ধ লাগছিল অরুনাভোর।কোয়েনার বকবকের আর মানে বুঝতে পারছিল না।মাথাটা যেন মুহূর্তের মধ্যে হ্যাং হয়ে গেছে।
"কোয়েনা লেটস ব্রেক আপ!"ওপাশ থেকে কোনো উত্তর এলনা।
"কী বললে?"
"লেটস ব্রেক আপ কোয়েনা।আমাদের মধ্যে আর কিচ্ছু নেই এই রোজ রাতের ঝগড়াগুলো ছাড়া।আমি এই ঝগড়াগুলোর সাথে সারাজীবন কাটাতে চাইনা আর আমাদের বিয়ের কথা ভুলে যাও।নতুন করে শুরু কর।"
"কী? কী বলছ তুমি? তার মানে আমি চলে আসাতেই ঠিক অন্য কাউকে জুটিয়ে নিয়েছো তাইতো?"
"কোয়েনা বেস্ট অফ লাক,গুডবাই" বলে ফোনটা কেটে দিল অরুনাভ।ফোনটা রেখে অরুনাভো নিজেই কিছুক্ষণ কিছু বুঝতে পারছিলনা আসলে বিশ্বাস করতে পারছিলন সে যা করল এখন।এরপরের অ্যাকশনটি কি হবে তার চিন্তায় সে সারারাত ঘুমাতে পারলনা।ফোনটে ফ্লাইট মোডে করে শুয়েছিল সে।সকালে উঠৈ দেখল মেসেজ ঢুকল "You have 42misscalls..."।নিজেরই খুব খারাপ লাগল যে কোয়েনার সাথে সে যা করছে ভেবে।তবে সে যে ভুল কিছু করছেনা তাও ঠিক।কারণ সারাজীবন অন্যের খুশির জন্য বেচেঁ লাভ নেই।আর বিয়ের পর কোয়েনার যেই ভালোবাসাটা প্রাপ্য হবে তা যদি অরুনাভ দিতে না পারে?কত খেয়াল আসতে লাগল মাথায় একের পর এক।যেন নিজের সাথে নিজের যুদ্ধ।একদিক বলে চলেছে যে এটা স্বার্থপরের মত কাছ হচ্ছে আরেকদিক বলছে কিছুই ভুল নেই এতে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(পর্ব ০৯)

RM ,,পূর্ববর্তী পার্ট গুলি পেতে অমার টাইমলাইন  ভিজিট করুন,, কতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলাম সেটা মনে নেই। চোখ খোলে যখন মাথার পেছনে সজোরে এক থাপ্পর খাই। ঘুম ঘুম চোখে চারদিকে তাকিয়ে দেখি যে কে আমাকে চড়টা মারল। আমি দেখলাম যে আমি উঠানের মাটিতে পড়ে আছি, পায়ের কাছে মাটিতে সুব্রত পড়ে আছে। আমি ওপর দিকে তাকিয়ে দেখতে চেষ্টা করি যে কে আমাকে চড়টা মারল, আমি অবাক হয়ে দেখি যে ইন্দ্রানি মাসি আমাদের দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে। আমার দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে বলে ওঠেন “শুয়োর গুলো এখানে শুয়ে? আর আমারা তোদের দু’জনকে সারা বাড়িতে হন্যে হয়ে খুঁজছি। তোদের কি কোন বোধ বুদ্ধি নেই?” আমি সুব্রতর কাঁধ ঝাঁকিয়ে উঠিয়ে দিলাম, সুব্রত আর আমি দুজনেই উঠে পড়লাম মাটি থেকে। আমি কাতর চোখে ইন্দ্রানি মাসির দিকে চেয়ে বললাম “সরি মাসি। ভুল হয়ে গেছে, কাল রাতে একটু বেশি হয়ে গেছিল।” চেয়ারের ওপরে মদের বোতল আর গ্লাসের দিকে ইন্দ্রানি মাসির চোখ পড়ে যায়, তাড়াতাড়ি করে চেয়ারের ওপরে নিজের শাল ফেলে দিয়ে ঢেকে দেয় গ্লাস আর বোতল। ঠিক সেই সময়ে পেছন থেকে অনেক গুলো পায়ের আওয়াজ পাই। মাসি সবাই কে বলে “এই ছেলে দুটো সারা রাত...

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(শেষ পর্ব)

RM কিছুদূর যেতেই  একটি জায়গায় গাড়ি দাঁড় করায় বল্বিন্দার, বলল যে গাড়িতে তেল ভরতে হবে। গাড়ি থামার সঙ্গে সঙ্গে পরীর ঘুম ভেঙে যায়, আমার দিকে তাকিয়ে বলে “কতক্ষণ ঘুমিয়েছি আমি?” আমি বললাম “বেশীক্ষণ ঘুময়নি তুমি” “আমরা থামলাম কেন?” “তেল ভরার জন্য।” “আর কত দেরি পৌঁছতে?” আমি পেট্রল পাম্পের লোকটাকে জিজ্ঞেস করলাম যে জিওরি থেকে চিতকুল কতক্ষণ লাগবে পৌঁছতে। লোকটা আমায় জানাল যে আরও ঘন্টা চারেকের রস্তা বাকি। লোকটা আরও জানাল যে কারছাম ব্রিজের পরে রাস্তা খুব খারাপ। বল্বিন্দার আমাকে বলল যে ও রাস্তা জানে, কোন চিন্তা করতে বারণ করল আমাকে। পরী হিন্দি বিশেষ ভালো করে বোঝেনা তাই আমাকে জিজ্ঞেস করে যে বল্বিন্দার কি বলল। আমি রাস্তার কথাটা চেপে গেলাম, জানালাম যে কোন কিছুর জন্য চিন্তা না করতে। ঘড়ির দিকে তাকালাম, আড়াইটে বাজে তখন, তারমানে চিতকুল পৌঁছতে সন্ধ্যে হয়ে যাবে। একে শীতকাল তায় আবার পাহাড়, এখানে রাত সমতলের চেয়ে একটু তাড়াতাড়ি নামে। জিওরি ছাড়ার কিছু পরেই পরী বলল যে ও আর ঘুমোতে চায় না, বাইরের দৃশ্য দেখবে। আমি বললাম ঠিক আছে। কিছু পরেই সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ে। যখন আ...

"এক অপরিচিতা"(পর্ব: ছয়)

লেখক:আসিফ ইকবাল! "আগের পর্ব গুলো আমার টাইমলাইনে বিদ্যমান" পঞ্চম পর্বের পর থেকে..... ___আরে বাহ, আপনি নিজের বউ কেই চিনতে পারছেন না!       এবার তো বলবেন গতকাল আপনি আমাকে বিয়েই করেন              নি। হম,সেটাও বলে ফেলেন না! দেরি কেনো? ওর এতগুলি কথার পর বুঝতে পারলাম,এটাই আমার অপরিচিতা,কিন্তু ও আজকে নিকাব পড়েনি। হিজাব পড়েছে। তাই চিনতে পারিনি। মুখ দিয়ে কিছু বের হচ্ছেনা। শুধু ওর দিকে তাকিয়ে আছি। আমার বউটা অনেক কিউট। সকাল বেলা যে আমার জন্য এরকম একটা সারপ্রাইজ আছে সেটা ভাবিনি!      ____কি!আপনি কি এভাবেই তাইকে থাকবেন? নাকি উঠেবেন। জলদি উঠে ফ্রেশ হোন।(তাফা) ____তুমি আজকে নিকাব পরোনি যে! ____আপনি তো আমার বর!আপনার সামনে নিকাব পড়তে হবে কেনো?(তাফা) বলে.....একটা হাসি দিয়ে চলে গেলো। এই প্রথম ওর হাসি দেখলাম। আর সেটা আমাকে রীতিমতো পাগল করে দিয়েছে। আর দেরি করলাম না। জলদি বিছানা ছেড়ে ফ্রেশ হতে চললাম। তাফা,,, তাফা! কই তুমি?........ "এইতো কিচেনে,কি হোয়েছে..... তাফা কিচ...