প্রধান চরিত্র গুলো:
●অরুণাভ;(আমাদের গল্পের নায়ক)
●কয়েনা;(অরুনভের প্রেমিকা)
●নিলেশ;(অরুনাভের বন্ধু)
●উশমিল;(আমাদের গল্পের নায়িকা)
●নীলাশ(উশমিলের প্রেমিক)
●অরুণাভ;(আমাদের গল্পের নায়ক)
●কয়েনা;(অরুনভের প্রেমিকা)
●নিলেশ;(অরুনাভের বন্ধু)
●উশমিল;(আমাদের গল্পের নায়িকা)
●নীলাশ(উশমিলের প্রেমিক)
নাম গুলু একটু বিচিত্র হলেও করার কিছু নেই।পড়তে থাকুন ,আশা করি গল্পটা ভালো লাগবে আপনাদের।
আজকে গুমোট গরম একদম।দর দর করে ঘাম হচ্ছে শুধু,পারা যাচ্ছেনা একেবারে।আকাশ মেঘে ঢাকা,হাওয়ার কোনো পাত্তা নেই,বৃষ্টির কোনো আশা নেই,মেঘগুলো মিছিমিছি স্বপ্ন দেখাচ্ছে।একে এইরকম অস্বস্তিকর আবহাওয়া,তার ওপর কাল রাত্রের কয়েনার সাথে ঝগড়া জন্য ভীষণ বিরিক্তকর মেজাজ নিয়ে অফিসে রওনা দিয়েছে অরুনাভ।মেট্রোর স্মার্ট কার্ডটা মেশিনে টাচ্ করানোর আগে কপাল থেকে পড়ন্ত ঘাম মোছার জন্য রুমাল বেড় করছিল অরুনাভ।সাধারণত নিজের মনের বিরক্তি আর অন্যমনস্কতার জন্য তার পিছনের যাত্রীদের লম্বা লাইনটা লক্ষ্য করেনি সে।
"কী করছেনটা কি আপনি?তাড়াতাড়ি করবেন তো,দেখতে পারছেন না আপনার পিছনে এত লম্বা লাইন..." অধৈর্য ভরা একটা নারী কন্ঠ বলে উঠল অরুনাভোর পিছন থেকে।তার কথাগুলো বিরক্তি ভরা হলেও অরুনাভো কেমন আকর্ষিত হল গলার আওয়াজটার প্রতি।পিছনে ফিরল সে মেয়েটিকে দেখার জন্য আর সময়টা যেন থেমে গেল সেই মুহূর্তে।সামনে যে দাঁড়িয়ে আছে তার বয়স বড়জোড় বাইশ কী তেইশ। উজ্জ্বল গায়ের রং।পটলচেরা
চোখ,সুগঠিত নাক,ঠোঁট দুটোয় কোনো রং লাগানো নেই তবুও লালচে।
চোখ,সুগঠিত নাক,ঠোঁট দুটোয় কোনো রং লাগানো নেই তবুও লালচে।
নাকের মাথায় আর গাল দুটোর লালচে আভা যেন অরুনাভকে মাতাল করে দিচ্ছে।
"হ্যালো? কি দেখছেন? পাবলিকের মাড় খাবেন নাকি?" অরুনাভোর সম্বিত ফিরল।জলদি জলদি সে স্টেশনের দিকে হাঁটা দিল।সারাটা পথ ধরে সে মেয়েটিকে লক্ষ্য করল আড়চোখে ।যতই দেখছিল অরুনাভ তাকে,ততই যেন মুগ্ধ হচ্ছিল।বয়সে বছর চারেক ছোট মেয়েটি তার থেকে।অরুনাভ সাধারণত সমবয়সি মেয়েদের দিকেই তাকায়না তো বয়সে ছোটদের দিকে তাকানো দূরের কথা।তবে কেন আজ সে এইভাবে নিয়ন্ত্রন হারাচ্ছে।কিছুতে মেয়েটির উপর থেকে নজর সরাতেই পারছেনা।মেয়েটি সেন্ট্রালে নেমে গেল, অরুনাভোর বুকে চিন চিন ব্যাথা জাগিয়ে।সারাটা দিন কেমন ঘোরে কাটল অরুনাভোর।কেবল মেয়েটার গলার আওয়াজ,সেই চলার ধরণ,হাত দিয়ে চুল ঠিক করা সব থেকে থেকে ভেসে উঠতে লাগল চোখের সামনে।এর মধ্যে সে কয়েনার কথা ভুলেই গেছিল।বাড়ির গেটের সামনে এসে দেখল কোয়েনা মোট দশবার কল করেছে।একেই কাল এত বড় ঝগড়া হয়েছে তার ওপর আজ একবার ওকে কল করা হয়নি আজ আরো একচোট ঝগড়া হবে যে, সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।
আজকাল আমার আর কোনো মূল্য নেই তোমার জীবনে,বেশ বুঝতে পারছি আমি ..তা অফিসে বুঝি নতুন কাউকে জুটিয়েছো?"(কয়েনা)
"উফ!! আমার আর ভালো লাগছেনা কোয়েনা!তুমি আমার অফিসের প্রতিটা বন্ধুকে চেনো,তুমি ভালো করেই জানো আমার জীবনে তুমি ছাড়া কেউ নেই.."
"থাক্ অরু!সব বুঝি আমি।আজ তো একবারও ফোন করলেনা আমায়,তার মানে কোনো দায়িত্ব নেই তোমার এই সম্পর্কটার প্রতি..."(কয়েনা)
"কোয়েনা আমি আর পারছিনা!একটু বিশ্বাস করো আমায়।অবুঝের মত কথাগুলো বলোনা..
"অনেক হয়েছে অরু,তুমি আমাকে টেকেন ফর গ্রানটেড করে রেখেছো..কী ভেবেছোটা কী? আমি দূরে থাকি বলে আমার চোখে ধূলো দিয়ে যা খুশি তাই করে বেড়াবে??"(কয়েনা)
"কোয়েনা আমি ফোন রাখছি।আমার আর সত্যি ভালো লাগছেনা।তোমাকে বোঝাতে বোঝাতে ফেড আপ জাস্ট!এবার যেদিন আমায় বিশ্বাস করতে পারবে সেদিনই কথা বলো।" বলেই ফোনটা কেটে দিল অরুনাভ।অরুনাভ সত্যিই হাপিঁয়ে উঠেছে এই সম্পর্কটা নিয়ে।কয়েনার সন্দেহ,অবিশ্বাস দিনকে দিন অসহ্য হয়ে উঠেছে।কয়েনার সাথে সম্পর্কটা প্রায় ছয় বছরের।কোয়েনারা অরুনাভোর পাড়ায় ভাড়া থাকত তখন।একই কলেজে কোয়েনা আর অরুনাভ পড়ত।সেইখান থেকেই প্রেমের শুরু।কোয়েনাই প্রথম নিজের মনের কথাটা জানায়।কোয়েনা আর অরুনাভোর প্রেমের ব্যাপারে সারা পাড়া জানত।মায়ের কাছে অরুনাভ এই নিয়ে কম বকা খাইনি ওইদিকে কোয়েনার বাবা অরুনাভোকে পছন্দ করতেন না।তবু তারা তাদের প্রেম এতদূর নিয়ে আসতে সফল হয়েছে।এখন দুই পক্ষই বেশ মেনেও নিয়েছে তাদের।তবে সমস্যা শুরু হয় দুবছর আগে যখন কোয়েনারা নিজেদের বাড়ি করে কলকাতা ছেড়ে ইছাপুর চলে গেল।যাকে সারাটা সময় চোখের সামনে পেত সে হয়ে গেল চোখের আড়ালে।হঠাত এই দূরত্বটাই ওদের সম্পর্কটাকে শেষ করে দিল প্রায়।বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়নি এত বছর প্রেম থাকা সত্তেও।
কারণ অরুনাভ,তার আর কোয়েনার জন্য নিজস্ব ফ্ল্যাট কিনে সেখানে নিয়ে গিয়ে প্রপোজ করবে ভেবেছিল।কিন্তু তখন অরুনাভোর ভালো বেতন পেতনা।যে তাদের স্বপ্নের বাড়ি কিনবে তখন।এখন তার সেই ক্ষমতা আছে ফ্ল্যট দেখছেও তবে এখন আর কোয়েনার প্রতি ভালোবাসাটা দিনকে দিন ফ্যাকাসে হয়ে যাচ্ছে।সে গলায় বিধেঁ থাকা কাটাঁর মত হয়ে যাচ্ছে।অথচ এই মেয়াটা তার জন্য কি কি না করেছে? কত সময় তারা একসাথে কাটিয়েছে,এই পুরো কলকাতা তাদের প্রেমের সাক্ষী।আহত,বিধ্বস্ত মন নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ল অরুনাভ।
পরেরদিন সকালে বাড়ি থেকে বেড়োনোর কিছুক্ষণ পরেই মনে পড়ল সেই মেয়েটার কথা।মেট্রো সেট্শনের কাছে আসাতেই সারা শরীরে উত্তেজনা বয়ে গেল।তারঁ চোখ কেবল সেই পরিচিত উজ্জল লালচে মুখ আর সেই মনকাড়া চোখটাকে খুজঁতে লাগল।
অফিস পৌছেঁ সে ভীষণ নিরাশ হয়ে পড়ল।সারাটাদিন যেন বাজে কাটল তার।শুধু সেই মেয়েটির গলার স্বর আর সেই সুন্দর গোল মুখশ্রী ভাসতে লাগল।মেয়েটাকে না দেখতে পেয়ে তার এত কেন খারাপ লাগছে?একটা দিনের একটু দেখায় কি করলটা কি সে এমন যে তাকে ছাড়া দিশেহারা লাগছে?এরকম তো কখনও হয়নি তার।এক সপ্তাহ কেটে গেল মেয়েটার কোনো দেখা নেই।ভালো লাগছেনা একদম অরুনাভোর।এ কী আচ্ছা মুশকিলে পড়া গেলতো।কোথাকার একটা বাচ্চা মেয়ে,সে তাকে এত জ্বালাতন করছে?উফ্ ।ব্যাপারটা গরমকালের লু বাতাসের মত ভিতর ভিতর ঝলসাতে লাগল অরুনাভকে।না পেরে সে তার বন্ধু নীলেশকে বলল।
"ভাই তুই প্রেমে পড়েছিস।এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।তবে শেষে একটা হাটুঁর বয়সি মেয়ের প্রেমে?" বলে নীলেশ হেসে উঠল।
"প্রেমটেম জানিনা কিন্তু ওই মেয়েটার প্রথম ঝলকেই যে আমি ফ্যাল্ট হয়ে গেছি.... কী বলব!"
"দেখ কোয়েনার সাথে এখন তোর সম্পর্কটা শেষ হয়ে যাইনি অরু। আর মেয়েটাকে তুই চিনিসনা জানিসনা।
দেখ কী বলতো?এরকম অনেক সময়েই হয় যে ট্রেনে-বাসে সুন্দর কাউকে দেখে আমরা মুহূর্তের জন্য ইনফ্যাচুয়েট হয়ে যাই।সেই ব্যাপারটা নিয়ে নিজেকে এত ভাবাসনা।আর কোয়েনার যা হাল এবার তুই
ওকে বিয়ের কথা বলে ফেল। নয়তো বেচারি সন্দেহ করতে করতে বুড়ি হয়ে যাবে।"
নীলেশের কথা ঠিক পছন্দ হলনা।আর কোয়েনার প্রতি সে এত বিরক্ত যার কথা ভাবতেও চায়না।তার চেয়ে অনেক ভালো ওই অজানা মেয়েটার ব্যাপারে ভাবা।
ওকে বিয়ের কথা বলে ফেল। নয়তো বেচারি সন্দেহ করতে করতে বুড়ি হয়ে যাবে।"
নীলেশের কথা ঠিক পছন্দ হলনা।আর কোয়েনার প্রতি সে এত বিরক্ত যার কথা ভাবতেও চায়না।তার চেয়ে অনেক ভালো ওই অজানা মেয়েটার ব্যাপারে ভাবা।
to be continued........

মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন