সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

Unknown girl(part_five)


উশমিল: দেখা করতে পারবে এখন একটু?খুব দরকার,পিল্জ!
টেক্সকটি দেখে অরুনাভো ভাবে কী কারণে দেখা করতে বলছে সে?

উশমিল এখন তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হয়ে উঠেছে। যদিও উশমিল অরুনাভকে বন্ধুর জায়গায়ই দিয়ে রেখেছে।প্রায়দিনই সে আর উশমিল দেখা করে।আর উশমিল নিজের ব্যাপারে আর তার জীবন,পরিবার ,তার প্রেমিক নিলাশের কথা বলে।
উশমিল অরুনাভোকে খুব কাছের বন্ধু করে ফেলেছে এটা কিন্তু উশমিল না স্বীকার করলেও অরুনাভো খুব ভালো বুঝতে পারে।এক প্রকার অধিকার ফলায় উশমিল অরুনাভোর উপর যেটা অরুনাভোর বেশ লাগে।তবে একটা জায়গায় গিয়েই অরুনাভো মুখ দুবড়ে পরে যে উশমিল নিলাশের সাথে সম্পর্কে আবদ্ধ।যেদিন উশমিল এটা অরুনাভোকে জানাই সেই মুহূর্তে মনে হয়েছিল কেউ যেন তার বুকে একটা মস্ত বড় পাথর রেখে দিল।নিলাশের আগেও তার এক প্রেমিক ছিল সে তাকে ছেঁড়ে চলে যায়।উশমিলকেও যে কেউ ছেঁড়ে যেতে পারে তা অরুনাভোর ধারণার বাইরে ছিল।আর শ্রীজিৎ তার খুবই কাছের বন্ধু একসাথে বড় হয়েছে তারা।
একসাথে স্কুল,কলেজ করেছে।এখন শ্রীজিৎ কলকাতার বাইরে আছে পড়াশুনার সূত্রে।তার কাছের মানুষ বলতে এখন অরুনাভো আর নিলাশ।অরুনাভো নিলাশকে পুরো বিশ্বাস করতে পারেনা উশমিলের প্রেমিক হিসাবে তার কারণ সে যে নিজে উশমিলের জীবনে সেই জায়গাটা চায় তাই নয়।কারণ সেই জায়গাটার দাবিদার হওয়ার আগেই উশমিল নিলাশের কথা বলে দিয়েছিল।
উদাসীন ছেলেটা খানিক।গান গায় সে।প্রচুর নেশা করে।সম্পর্কটা তৈরি করার প্রস্তাব উশমিলই দিয়েছিল নিলাশের গানে মুগ্ধ হয়ে।তখন সবে সবে উশমিলকে প্রথম ডাম্প করেছিল আর অন্যদিকে মা বাবার ডিভোর্সের ঝামেলা।একেবারে ভেঙে পরেছিল উশমিল তখন।
প্রমথ যে তাকে এভাবে ডিচড করে আমেরিকা চলে যাবে ভাবতে পারেনি সে।বাড়ির ঝামেলা,অনাদর,অযত্ন সে প্রথমের কাছেই ভুলে থাকত।চার বছরের পুরোনো ছিল সম্পর্ক তাদের।উশমিলের জীবনের প্রথম প্রেম হল প্রথম,তাকে উশমিল চোখে হারাতো।সে যা বলত তাই করত।প্রথমের সাথেই হওয়া তার এই সম্পর্কটা উশমিলের ভগবানের উপহার মনে হত।
সেই প্রমথ বিনা কারণে কেন তাকে ছেড়ে এত দূরে চলে গেল ভেবে সে যখন পাগলের মত হচ্ছিল তখন যার গানের অন্তরাই উশমিলের  মনের অবস্থা ব্যাক্ত করে সে হল নিলাশ উশমিলদের কলেজের  বি.কম  ডিপার্টমেন্টের রোগা লম্বা ছেলে।প্রথম প্রথম সে নিলাশের সাথে অনেক সময় কাটাতো তারপর একদিন ময়দানের মাঠে যখন দুছনে বসেছিল আর নিলাশ মাঝে মাঝে গিটার বাজিয়ে গান গাইছিল উশমিল তাকে প্রপোজ করে বসে।আর তারপর শুরু হয় তার জীবনে নিলাশ পর্ব। উশমিল মেয়েটা ভিতর ভিতর দুঃখী তার মা বাবার কারণে।ছোট থেকে মা বাবাকে ঝগড়া করতে দেখেছে।দুজনের কর্মব্যস্ততার জন্য সে খানিকটা বন্ঞিত থেকেছে মা বাবার আদর-যত্ন থেকে।তাই এরকম হয়ে গেছে হয়তো সে।
কিছুটা ভেবে অরুনাভো উত্তর দেয়,,,,,,,,,,,
অরুনাভো: নিশ্চয়ই।বলো কোথায়?
উশমিল: ঢাকুরিয়া লেকে।
অরুনাভো: আচ্ছা তাহলে দেখা হচ্ছে।
"ভাই তুই কি পাগল হয়ে গেলি? মেয়েটা তোকে ফ্রেন্ডজোন করে তোর ফায়দা নিচ্ছে ব্যাস"(নিলেশ)
"চুপ কর নিলেশ!মেয়েটা ওমন নয়রে আর আমিও ওর সম্পর্কের ব্যাপারে জানার পর থেকে ওকে বন্ধু হিসাবেই দেখছি।"
"মাথাটা গেছে তোর।এই বন্ধুত্ব অনেক ভারি পরবে তোর উপর। আজকালকার মেয়েরা এমনই হয়।ফ্রেন্ডজোন করে সবাইকে নাচিয়ে যায়।"(নিলেশ)
"উফঃ,আমি আসছি বাই"
ঢাকুরিয়া লেকে ঢুকতেই পড়ন্ত রোদের সোনালি আলোতে চোখে পড়ল উশমিল একটা বেঞ্চে বসে আছে চুপচাপ।খানিকটা এগিয়ে যেতেই অরুনাভো বুঝল যে ও আজ খুবই বিষণ্ণ।কাছে গিয়ে অরুনাভো বলল,"কি ব্যাপার? এভাবে মুখ ভার করে বসে যে?"
"নিলাশ অ্যান্ড আই ব্রোক আপ "
উশমিলের গলাটা ভাঙা মনে হল।তার মানে কি কাঁদছিল ও?নিলাশের সাথে সম্পর্কটা ভেঙে গেছে শুনে অরুনাভো মনে মনে বিশ্বজয় করার মত খুশি হল।কিন্তু বাইরে প্রকাশ পেলে এই খুশিটা কেলেঙ্কারি হয়ে যেতে পারে।আর তাছাড়াও নিলাশ যে উশমিলকে ভালোবাসত না একদম তার আচরণেই বোঝা যেত।এটা হওয়ার ছিল যে তা অরুনাভো জানতই।সে উশমিলকে ব্যাস দেখানোর জন্য রেখেছিল। আরুনাভো উশমিলের পাশে বসে জিজ্ঞেস করল,
"কী হয়েছে উশমিল???" উশমিলের চোখটা ছলছল করে উঠল।
"আই কট হিম উইথ দিয়া।"
বলতেই কেঁদে ওঠে উশমিল আর অরুনাভোর কাধেঁ মাথা রেখে বাহুটা চেপে ধরে।অরুনাভোর সারা দেহে যেন ভূমিকম্প শুরু হয়।সে স্ট্যাচুর মত বসে থাকে আর উশমিলকে কাঁদতে দেয় কিছুক্ষণ।কি বলবে বুঝতে পারছিলনা অরুনাভো।
সে তো খুব সাধারঢ ছেলে।কলেজে পরতে একটা মেয়ের সাথেই প্রেম হয় তার সাথেই এত বছর কাটিয়েছে।ঘন ঘন সঙ্গী বদলানো,মদ নেশা,পারিবারিক ঝামেলা এইসব কিছুই তার জীবনের অঙ্গ ছিলনা।ছিল তো ব্যাস একটাই চিন্তা জীবনে নিজের পায়ে দাঁড়ানো তা তো সে আজ দাঁড়িয়ে গেছে।তা বলে অরুনাভোদের পরিবার নিম্মবিত্ত ছিল তা নয়,যথেষ্ট সচ্ছল ছিল পয়সার অভাব ছিলনা আজও নেই।তবে উশমিলদের পরিবারেরও মতন আর্থিক অবস্থা ছিলনা।উশমিল আর তার জগৎটা কত আলাদা মনে হয় মাঝে মাঝে অরুনাভোর।সবকিছু থেকেও যেন কত কিছু নেই উশমিলের জগৎ-এ।উশমিলের দুটো গাল বেয়ে জলের ধারা বয়েই চলেছে।সেই ধারা কি অরুনাভো পারবে বন্ধ করতে?মনটা খারাপ হয়ে গেল উশমিলকে এভাবে দেখেই।কিভাবে সে তার হাসিখুশি উশমিলকে ফেরাবে।অরুনাভো উশমিলের হাতটা চেপে ধরল,
To be continued........

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(পর্ব ০৯)

RM ,,পূর্ববর্তী পার্ট গুলি পেতে অমার টাইমলাইন  ভিজিট করুন,, কতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলাম সেটা মনে নেই। চোখ খোলে যখন মাথার পেছনে সজোরে এক থাপ্পর খাই। ঘুম ঘুম চোখে চারদিকে তাকিয়ে দেখি যে কে আমাকে চড়টা মারল। আমি দেখলাম যে আমি উঠানের মাটিতে পড়ে আছি, পায়ের কাছে মাটিতে সুব্রত পড়ে আছে। আমি ওপর দিকে তাকিয়ে দেখতে চেষ্টা করি যে কে আমাকে চড়টা মারল, আমি অবাক হয়ে দেখি যে ইন্দ্রানি মাসি আমাদের দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে। আমার দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে বলে ওঠেন “শুয়োর গুলো এখানে শুয়ে? আর আমারা তোদের দু’জনকে সারা বাড়িতে হন্যে হয়ে খুঁজছি। তোদের কি কোন বোধ বুদ্ধি নেই?” আমি সুব্রতর কাঁধ ঝাঁকিয়ে উঠিয়ে দিলাম, সুব্রত আর আমি দুজনেই উঠে পড়লাম মাটি থেকে। আমি কাতর চোখে ইন্দ্রানি মাসির দিকে চেয়ে বললাম “সরি মাসি। ভুল হয়ে গেছে, কাল রাতে একটু বেশি হয়ে গেছিল।” চেয়ারের ওপরে মদের বোতল আর গ্লাসের দিকে ইন্দ্রানি মাসির চোখ পড়ে যায়, তাড়াতাড়ি করে চেয়ারের ওপরে নিজের শাল ফেলে দিয়ে ঢেকে দেয় গ্লাস আর বোতল। ঠিক সেই সময়ে পেছন থেকে অনেক গুলো পায়ের আওয়াজ পাই। মাসি সবাই কে বলে “এই ছেলে দুটো সারা রাত...

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(শেষ পর্ব)

RM কিছুদূর যেতেই  একটি জায়গায় গাড়ি দাঁড় করায় বল্বিন্দার, বলল যে গাড়িতে তেল ভরতে হবে। গাড়ি থামার সঙ্গে সঙ্গে পরীর ঘুম ভেঙে যায়, আমার দিকে তাকিয়ে বলে “কতক্ষণ ঘুমিয়েছি আমি?” আমি বললাম “বেশীক্ষণ ঘুময়নি তুমি” “আমরা থামলাম কেন?” “তেল ভরার জন্য।” “আর কত দেরি পৌঁছতে?” আমি পেট্রল পাম্পের লোকটাকে জিজ্ঞেস করলাম যে জিওরি থেকে চিতকুল কতক্ষণ লাগবে পৌঁছতে। লোকটা আমায় জানাল যে আরও ঘন্টা চারেকের রস্তা বাকি। লোকটা আরও জানাল যে কারছাম ব্রিজের পরে রাস্তা খুব খারাপ। বল্বিন্দার আমাকে বলল যে ও রাস্তা জানে, কোন চিন্তা করতে বারণ করল আমাকে। পরী হিন্দি বিশেষ ভালো করে বোঝেনা তাই আমাকে জিজ্ঞেস করে যে বল্বিন্দার কি বলল। আমি রাস্তার কথাটা চেপে গেলাম, জানালাম যে কোন কিছুর জন্য চিন্তা না করতে। ঘড়ির দিকে তাকালাম, আড়াইটে বাজে তখন, তারমানে চিতকুল পৌঁছতে সন্ধ্যে হয়ে যাবে। একে শীতকাল তায় আবার পাহাড়, এখানে রাত সমতলের চেয়ে একটু তাড়াতাড়ি নামে। জিওরি ছাড়ার কিছু পরেই পরী বলল যে ও আর ঘুমোতে চায় না, বাইরের দৃশ্য দেখবে। আমি বললাম ঠিক আছে। কিছু পরেই সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ে। যখন আ...

"এক অপরিচিতা"(পর্ব: ছয়)

লেখক:আসিফ ইকবাল! "আগের পর্ব গুলো আমার টাইমলাইনে বিদ্যমান" পঞ্চম পর্বের পর থেকে..... ___আরে বাহ, আপনি নিজের বউ কেই চিনতে পারছেন না!       এবার তো বলবেন গতকাল আপনি আমাকে বিয়েই করেন              নি। হম,সেটাও বলে ফেলেন না! দেরি কেনো? ওর এতগুলি কথার পর বুঝতে পারলাম,এটাই আমার অপরিচিতা,কিন্তু ও আজকে নিকাব পড়েনি। হিজাব পড়েছে। তাই চিনতে পারিনি। মুখ দিয়ে কিছু বের হচ্ছেনা। শুধু ওর দিকে তাকিয়ে আছি। আমার বউটা অনেক কিউট। সকাল বেলা যে আমার জন্য এরকম একটা সারপ্রাইজ আছে সেটা ভাবিনি!      ____কি!আপনি কি এভাবেই তাইকে থাকবেন? নাকি উঠেবেন। জলদি উঠে ফ্রেশ হোন।(তাফা) ____তুমি আজকে নিকাব পরোনি যে! ____আপনি তো আমার বর!আপনার সামনে নিকাব পড়তে হবে কেনো?(তাফা) বলে.....একটা হাসি দিয়ে চলে গেলো। এই প্রথম ওর হাসি দেখলাম। আর সেটা আমাকে রীতিমতো পাগল করে দিয়েছে। আর দেরি করলাম না। জলদি বিছানা ছেড়ে ফ্রেশ হতে চললাম। তাফা,,, তাফা! কই তুমি?........ "এইতো কিচেনে,কি হোয়েছে..... তাফা কিচ...