সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

Unknown girl(part _eight_and_end)

সপ্তম পর্বের পর থেকে.....
অবশেষে সেই সন্ধ্যে এসে উপস্থিত।অফিস থেকে ফেরার পথে অরুনাভো উশমিলকে নিয়ে বাড়ি ঢুকবে।আজ একটু আগেই সে অফিস থেকে বেরেয়িছে।বিকেল চারটে নাগাদ কারণ উশমিলকে ফিরতেও তো হবে তাড়াতাড়ি।সেই ভেবেই অরুনাভো টাইমটা এগিয়েছে।উশমিলের ইউনিভার্সিটির সামনে যেতেই দেখল উশমিল বেশ আজ সেজেগুজেই এসেছে।সারাটা রাস্তা অরুনাভো ভীষণ ভয় হতে লাখল বিনা কারণে।আর উশমিল নিজের সারাদিনের কথা বলতে থাকল।বাড়ির গেট খুলে উশমিলকে নিয়ে ভীতরে ঢুকতেই উশমিল বলল,
"বাহ্!বেশ সুন্দর তোমাদের বাড়ি।বেশ একটা আলাদা ব্যাপার আছে।"
উশমিলকে খুবই খুশি দেখাচ্ছিল।উশমিল জলদি জলদি উঠোন পেরিয়ে দরজার সামনে গিয়ে কলিংবেল টিপল। কিছুক্ষণের মধ্যেই অনুরাভোর মা দরজা খুললেন আর অরুনাভো আর চিন্তিত হয়ে পড়ল।উশমিলকে দেখে তার মা মুগ্ধ হলেন।এতদিন তার আদরের ছেলেকে এইভাবে ঘোরানোর জন্য তিনি উশমিলের মুখশ্রী বিশ্রী কিংবা খুবই চালাক একজনের মুখশ্রী কল্পনা করে  এসেছিলেন।কিন্তু উশমিলের সুন্দর,লাবণ্যপূর্ণ রূপ দেখে তার মনে জমানো উশমিলের প্রতি ভুল ধারণাগুলো এক মুহূর্তে উধাও হয়ে যায়।
"এসো ভিতরে এসো।আমরা তোমাদেরই অপেক্ষা করছিলাম।যা ওকে বসার ঘরে নিয়ে গিয়ে বসা"
উশমিল ঢুকেই অনুরভের মাকে আগে সালাম করলেন।অরুনাভো যেন আজ প্রতি মুহূর্তেই নতুন কিছু দেখছিল।সে ভাবছিল মনে মনে এই মেয়েটার আর কি কি বৈশিষ্ট্য  আছে যা তার জানা নেই?বসার ঘরে অরুনাভোর বাবা বসেছিলেন ওনাকেও উশমিল সালাম দিল।নিখিলবাবু উশমিলের আচরণে খুব খুশি হন।এরপর অরুনাভোর মা এক প্রকার জোর করে অরুনাভোকে স্নান করতে পাঠিয়ে দেয়।অরুনাভো কোনোরকমে তার স্নান সারে।
তাড়াতাড়ি করে বসার ঘরে কাছে আসতেই শুনতে পায় তিনজনের হাসির কলরব।তার মা বাবা উশমিলকে কতকিছু বলছে।ওদের তিনজনকে একসাথে দেখে অরুনাভো খুব খুশি হয়।এরপর চারজনে মিলে বেশ ভালো সময় কাটায় আর উশমিলের মধ্যে আজ একটা আলাদা রকম আনন্দ লক্ষ্য করছিল অরুনাভো যা সে কোনোদিনো ভাবেনি সম্ভব হবে।খাওয়া দাওয়ার পর্ব শেষ হলে মা উশমিলকে তার ঘরে নিয়ে যায়।দুজনে মিলে অনেকক্ষণ গল্প করেন।অরুনাভোর অবশ্য চিন্তা হচ্ছিল মা কী বলে বসবে শেষে।অবশেষে ঘড়ির কাঁটা পণে আটটা ছুঁতেই অরুনাভো মায়ের ঘরে গিয়ে বলে
,"পণে আটটা বাজে এবারতো বাড়ি ফিরতে হবে তোমায়"
অরুনাভোর কথাটা বলেই মনে হয় যেন যে সে তাদের ব্যক্তিগত কোনো মুহূর্তে ব্যাঘাত ঘটিয়েছে।উশমিল বলে,
ও হ্যাঁ,তবে তোমার রুমটা না দেখে যাবোনা"
"হ্যাঁ বাবা,যা ওকে দেখিয়ে দে"।মা আর উশমিলের এতমিল হবে তা অরুনাভো ভাবতেই পারেনি।তবে অরুনাভোর খুব কৌতুহল জাগে যে এত কী কথা বলল উশমিল আর মা।উশমিলকে সে তার নিজের ঘরে নিয়ে গেল।আজ সকালে মাকে সে বলে গেছিল তার ঘরটা গুছিয়ে রাখতে নয়তো যা করে রাখে অরুনাভো।উশমিল ঘরে ঢুকে এইদিক ওদিকে তাকিয়ে বলতে থাকে,
"তোমার মা-বাবার মধ্যে কত ভালোবাসা আছে এখনও।
ইউ আর আ লাকি কিড অরু"অরুনাভো ।
একটু চমকে ওঠে 'অরু' ডাকটা শুনে।কোয়েনার পর অন্য কোনো মেয়ে অমন দরদ দিয়ে তাকে 'অরু' ডাকল।উশমিল খাটের উপর বসে পরল যেন তারই খাট।
"কী হল?"
"কিছুনা।হ্যাঁ ঠিক বলেছো এত বছরের দাম্পত্য। তবে দুজনের মধ্যে ভালোবাসা আমি কমতে দেখিনি"
"খুব ভালো লেগেছে আমার আঙ্কেল আন্টিকে। আর তারা তোমায় ভীষণ ভালোবাসে।ওখানে কী দাঁড়িয়ে আছো? এখানে এসে বসো"অরুনাভো বাধ্য ছেলের মত উশমিলের পাশে গিয়ে বসল।"আরেকটু কাছে এসো"।অরুনাভো গেল।উশমিল এবার সামনের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগল।
"একটা কথা বলার আছে।বলি?" অরুনাভো মাথা নাড়ল।অরুনাভো এতটা একান্তে উশমিলকে কখনও পায়নি তাও এত কাছে।এর আগেও সে উশমিলের এত কাছে বসেছে তবে আজ আলাদাই একটা অনুভূতি হচ্ছে তার।
"আমি পার্কে অমন যারতার সাথে কথা বলিনা।ইনফ্যাক্ট ওরকম যারতার পাশে গিয়ে বসিওনা।আর আমার ওইবাবে পাতানো চেনাজানা বন্ধুও নেই।সেদিন কী মনে হয়েছিল তোমায় দেখে কে জানে?হয়তো তোমার সাথে কথা বলার তীব্র ইচ্ছা আমায় টেনে নিয়ে গেছিল ওভাবে।" উশমিল অরুনাভোর দিকে ফিরল।অরুনাভো মাথা নিচু করে শুনছিল সব।
"আমার দিকে তাকাও"অরুনাভো তাকালো।তাকানো মাত্রই উশমিলের মুখটা নিজের মুখের খুব  কাছে অনুভব করল।দুজনেরই গরম নিশ্বাস পরস্পরের সাথে মিশে একাকার হয়ে যাচ্ছিল।অরুনাভো একটা শিহরণ অনুভব করতে লাগল তার শরীরে।
"আন্টি বলছিল তুমি কিছুতেই বিয়ে করতে রাজি হচ্ছোনা? কারণটা কী"
উশমিলের প্রশ্ন শুনে অরুনাভো এক মুহূর্তে শিহরণ বিরক্তিতে পাল্টে গেল।মুখ ঘুরিয়ে নিল সে।
"আর কটা দিন যাক না সময় আছে এখনও... এমনতো নয়....
"উশমিল অরুনাভোকে কথা না শেষ করতে দিয়েই দুই হাত দিয়ে অরুনাভোর মুখটা নিজের দিকে ফেরালো।অরুনাভো চমকে গেল।
"আমাকে যে এতটা ভালোবাসো তুমি বলতে কী হয়েছে? আমি কী  খেয়ে ফেলবো তোমায়?সব বলেছে আন্টি আমায় এইভাবে নিজের হবু শ্বাশুড়ি মায়ের থেকে জানতে হবে কথাটা ভাবতে পারিনি!
আই অ্যাম সো ডিসাপয়েন্টেড " বলে উশমিল অভিমানি মুখ করে মুখ ঘুরিয়ে নেয় উশমিল।অরুনাভো ঠিক বিশ্বাস করতে পারেনা যে সে ঠিক শুনেছে কীনা?ও তো এটা স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি।মুহূর্তে তার চারপাশটা বদলে গেল।উশমিল এক সেকেন্ডে তার জীবনটা খুশিতে ভরিয়ে দিল।
অরুনাভো অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে,"তার মানে তুমি আমায়??"
উশভিল মুখ ভেঙিয়ে বলে,"হ্যাঁ বোকারাম এক..."উশমিল শেষ করার আগেই অরুনাভো তাকে কাছে টেনে উষ্ণতায় ভরিয়ে দিলো।উশমিল খানিকটা চমকে গেলেও অবশেষে শান্ত হয়ে আরো চেপে জড়িয়ে ধরে অরুনাভোকে।
আর দুজন এভাবে দেখে আমার খুব হিংসে হচ্ছিলো। কারণ ইতিমধ্যে আমি নিজেই উশমিলের প্রেমে পরে গেছি।
                                         -------◆●◆-------

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(পর্ব ০৯)

RM ,,পূর্ববর্তী পার্ট গুলি পেতে অমার টাইমলাইন  ভিজিট করুন,, কতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলাম সেটা মনে নেই। চোখ খোলে যখন মাথার পেছনে সজোরে এক থাপ্পর খাই। ঘুম ঘুম চোখে চারদিকে তাকিয়ে দেখি যে কে আমাকে চড়টা মারল। আমি দেখলাম যে আমি উঠানের মাটিতে পড়ে আছি, পায়ের কাছে মাটিতে সুব্রত পড়ে আছে। আমি ওপর দিকে তাকিয়ে দেখতে চেষ্টা করি যে কে আমাকে চড়টা মারল, আমি অবাক হয়ে দেখি যে ইন্দ্রানি মাসি আমাদের দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে। আমার দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে বলে ওঠেন “শুয়োর গুলো এখানে শুয়ে? আর আমারা তোদের দু’জনকে সারা বাড়িতে হন্যে হয়ে খুঁজছি। তোদের কি কোন বোধ বুদ্ধি নেই?” আমি সুব্রতর কাঁধ ঝাঁকিয়ে উঠিয়ে দিলাম, সুব্রত আর আমি দুজনেই উঠে পড়লাম মাটি থেকে। আমি কাতর চোখে ইন্দ্রানি মাসির দিকে চেয়ে বললাম “সরি মাসি। ভুল হয়ে গেছে, কাল রাতে একটু বেশি হয়ে গেছিল।” চেয়ারের ওপরে মদের বোতল আর গ্লাসের দিকে ইন্দ্রানি মাসির চোখ পড়ে যায়, তাড়াতাড়ি করে চেয়ারের ওপরে নিজের শাল ফেলে দিয়ে ঢেকে দেয় গ্লাস আর বোতল। ঠিক সেই সময়ে পেছন থেকে অনেক গুলো পায়ের আওয়াজ পাই। মাসি সবাই কে বলে “এই ছেলে দুটো সারা রাত...

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(শেষ পর্ব)

RM কিছুদূর যেতেই  একটি জায়গায় গাড়ি দাঁড় করায় বল্বিন্দার, বলল যে গাড়িতে তেল ভরতে হবে। গাড়ি থামার সঙ্গে সঙ্গে পরীর ঘুম ভেঙে যায়, আমার দিকে তাকিয়ে বলে “কতক্ষণ ঘুমিয়েছি আমি?” আমি বললাম “বেশীক্ষণ ঘুময়নি তুমি” “আমরা থামলাম কেন?” “তেল ভরার জন্য।” “আর কত দেরি পৌঁছতে?” আমি পেট্রল পাম্পের লোকটাকে জিজ্ঞেস করলাম যে জিওরি থেকে চিতকুল কতক্ষণ লাগবে পৌঁছতে। লোকটা আমায় জানাল যে আরও ঘন্টা চারেকের রস্তা বাকি। লোকটা আরও জানাল যে কারছাম ব্রিজের পরে রাস্তা খুব খারাপ। বল্বিন্দার আমাকে বলল যে ও রাস্তা জানে, কোন চিন্তা করতে বারণ করল আমাকে। পরী হিন্দি বিশেষ ভালো করে বোঝেনা তাই আমাকে জিজ্ঞেস করে যে বল্বিন্দার কি বলল। আমি রাস্তার কথাটা চেপে গেলাম, জানালাম যে কোন কিছুর জন্য চিন্তা না করতে। ঘড়ির দিকে তাকালাম, আড়াইটে বাজে তখন, তারমানে চিতকুল পৌঁছতে সন্ধ্যে হয়ে যাবে। একে শীতকাল তায় আবার পাহাড়, এখানে রাত সমতলের চেয়ে একটু তাড়াতাড়ি নামে। জিওরি ছাড়ার কিছু পরেই পরী বলল যে ও আর ঘুমোতে চায় না, বাইরের দৃশ্য দেখবে। আমি বললাম ঠিক আছে। কিছু পরেই সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ে। যখন আ...

"এক অপরিচিতা"(পর্ব: ছয়)

লেখক:আসিফ ইকবাল! "আগের পর্ব গুলো আমার টাইমলাইনে বিদ্যমান" পঞ্চম পর্বের পর থেকে..... ___আরে বাহ, আপনি নিজের বউ কেই চিনতে পারছেন না!       এবার তো বলবেন গতকাল আপনি আমাকে বিয়েই করেন              নি। হম,সেটাও বলে ফেলেন না! দেরি কেনো? ওর এতগুলি কথার পর বুঝতে পারলাম,এটাই আমার অপরিচিতা,কিন্তু ও আজকে নিকাব পড়েনি। হিজাব পড়েছে। তাই চিনতে পারিনি। মুখ দিয়ে কিছু বের হচ্ছেনা। শুধু ওর দিকে তাকিয়ে আছি। আমার বউটা অনেক কিউট। সকাল বেলা যে আমার জন্য এরকম একটা সারপ্রাইজ আছে সেটা ভাবিনি!      ____কি!আপনি কি এভাবেই তাইকে থাকবেন? নাকি উঠেবেন। জলদি উঠে ফ্রেশ হোন।(তাফা) ____তুমি আজকে নিকাব পরোনি যে! ____আপনি তো আমার বর!আপনার সামনে নিকাব পড়তে হবে কেনো?(তাফা) বলে.....একটা হাসি দিয়ে চলে গেলো। এই প্রথম ওর হাসি দেখলাম। আর সেটা আমাকে রীতিমতো পাগল করে দিয়েছে। আর দেরি করলাম না। জলদি বিছানা ছেড়ে ফ্রেশ হতে চললাম। তাফা,,, তাফা! কই তুমি?........ "এইতো কিচেনে,কি হোয়েছে..... তাফা কিচ...