সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

Devil_Husband(part_20)

Written by Fatema
.
.
.
আমি আগে যেই রুমে থাকতাম সেই রুমেই চলে গেলাম।
যা রাগ হচ্ছিল। এটা কেমন ব্যাবহার। নিজের বাবা মার হাতেই যেখানে ভুলেও চর থাপ্পড় খাইনি আর সেখানে কিনা দুদিন পরিচয় এর ডেভিল আমাকে গালে থাপ্পড় বসিয়ে দিলো। নিজেকে কি ভাবে হ্যা,প্রেসিডেন্ট 
থাকবো না আমি এখানে।
একটু সুযোগ পাই বের হয়ে যাবো এই বাসা থেকে হুহহহ।
একটু পরে রিমি আপু আরো কয়েকজন মেয়ে রুমে ঢুকলো।
হাতে অনেক কিছু।
-- কি ব্যাপার তোমরা সবাই এখানে কেনো।
-- আরে টুকটুকি (আদর করে টুকটুকি ডাকে) বউভাত আজকে, সাজতে হবে না নাকি। 
-- আমি এমনিতেই ঠিক আছি
-- তা বললে তো আর শুনছিনা।
চলো উঠো শাড়ি পড়াবে।
-- ভালো লাগছে না আপু। প্লিজ আমায় ছেড়ে দাও। তুমিওই সাজো। 
-- এমন করে না টুকটুকি।
Come baby......
-- 
-- আমার কথা কি শুনবে না।
ওকে ফাইন আমি চলে যাচ্ছি।
-- আরে কই যাও
-- কই আর যাবো, চলে যাবো।
-- আরে বসো তো। বেশি বেশি বুঝো শুধু।
আচ্ছা ঠিক আছে সাজবো। আগে তুমি সাজো পরে আমি সাজবো।
-- তা হচ্ছে না ডেভিল কুইন 
সাজলে দুইজন এক সাথেই সাজবো হুম।
-- আচ্ছা ঠিক আছে বড় কর্তৃ যো হুকুম। 
পার্লার এর মেয়েরা সাজানো শুরু করলো আমাদের দুইজন কে।
আমায় একটা লাল বেনারসি আর রিমি আপুর ও।
বেশ সময় নিয়েই সাজাচ্ছে ।
উফফফ বাবা নাকের নথ টা না সেইই বিরক্তিকর।
কেমন শুধু সুড়সুড়ি লাগে। 
সাজানো শেষ হলে আমাদের দুজন কে নিচে নিয়ে গেলো।
সিরি দিয়ে নামার সময় সামনের দিকে দেখছিলাম দুই ভাই ও একসাথে দাঁড়িয়ে, শেরওয়ানী পড়া। সত্যিওই অনেক সুন্দর লাগছে।
এমন ছেলেদের উপরওই তো মেয়েরা ক্লাস খায় থুক্কু ক্রাশ খায়।
বাট ক্রাশ টা খায় কিভাবে।
পেট ভরে নাকি।
ধুরর আমি কেনো এসব ভাবছি। 
রেহান ভাইয়া এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে।
পাশ থেকে দেখি আরিয়ান কে কুনুই দিয়ে গুঁতো দিচ্ছে।
আরিয়ান ফিরে তাকাতেই আমাদের দিকে দেখতে ইঙ্গিত দিলো।
হাসবো না কাঁদবো বুঝছি না এমন হা করে তাকিয়ে থাকার কি হলো যতসব আজাইরা কাহিনী।
আমাদের নিয়ে দুইটা আসনে বসায়।
রাজ সিংহাসন যাকে বলে।
বড় লোক দের বড় বড় ব্যাপার।
চারদিকের ক্যামেরার ফ্লাশ , লাইটিং, মাথা ধরে গেছে আমার।
আমাদের পাশে দুই ভাইকেও বসানো হয়েছে।
কত এঙ্গেল থেকে পিক তুলেছে।
আজকে পিক তুলতে তুলতে শহিদ হয়ে যাবো মনে হচ্ছে।
এবার আমাদের আলাদা টেনে দাড় করালো।
কুহু (কোহিনুর) টেনে অনেক খানি সামনে নিয়ে আসলো। 
-- কি হচ্ছে কি কুহু।
-- উফফ থামো তো। যেভাবে দাড় করাবো সেভাবেই দাঁড়াবে।
-- কুহু এটা কিন্তু একদম ভালো হচ্ছে না (দাতে দাত চেপে)
আরিয়ান বলে উঠলো,
দেখো কোহিনুর যা বলছে মেনে নাও।
অযথা কেনো কথা বাড়াচ্ছো।
এমন ফোটো সেশন তো আর রোজ রোজ হবে না তাইনা।
বেশি কথা বাড়িওনা তাহলে কপালে খারাপ ছাড়া ভালো হবে না (আস্তে আস্তে)
-- আপনি আমাকে ভয় দেখাচ্ছেন।
-- মনে করো তাই
-- কিন্তু আমি ভয় পাচ্ছি না
-- ওমা তাই তাহলে তোওওও.........
কথা শেষ করার আগেই আমার কোমর ধরে কাছে টেনে নিলো।
অবাক না হয়ে পারছি না।
ছিঃ লজ্জা শরম বলতে কিছুই নেই নাকি এর, সবার সামনেই এভাবে এমন করে কেও।
তার বাম হাত আমার কোমর এ। খুব আলতো করেই টাচ করেছে।
আমার বাম হাত তার ডান হাতে আবদ্ধ আর আমার ডান হাত তার ডান বাহুর উপর।
তাকিয়ে আছি দুজন দুজনের দিকে।
পাশ থেকে কুহুর হাসির শব্দে ধ্যান ভাঙে।
এক ধাক্কায় সরিয়ে দিই। 
সরে যেতে নিলে এক হাতে ধরে ফেলে।
-- হচ্ছে টা কি এত লোকের সামনে এভাবে টানাটানি করছেন কেনো।
লজ্জা বলতে কিছুই নেই নাকি।
-- কেন আমার আবার কিসের লজ্জা।
দেনমোহর দিয়ে বিয়ে করা বউ।
কালেমা পড়ে কবুল বলে বিয়ে করেছি।
আমার বউয়ের হাত আমি ধরেছি তাতে কার বাপের কি।
তোমার কি প্রব্লেম হ্যা আমার বউয়ের হাত আমি ধরেছি।
-- উফফফ কত কাহিনী।
সব মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে।
(আড়চোখ এ আশেপাশে র সব দিকে খেয়াল করছিলা।
কতগুলো চোখ আমাদের উপর দৃষ্টি ফেলছে।
ইচ্ছা হচ্ছে মাটি ফাঁকা হয়ে যাক আমি মাটির নিচে লুকিয়ে যাই।
এই লোকটার তো মোটেও লজ্জা নেই তাতে কি আমার তো আছে।)
প্লিজ হাত টা ছাড়ুন আমি বসবো।
-- আরে আগে বলবে তো
কথা শেষ করতে না করতেই কোলে তুলে নিলো।
কোলে নিতেই চারদিক থেকে সবাই হৈহৈ করে উঠলো।
কেও হাত তালি আর কেওবা শিশ দিচ্ছে।
আমি বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি একে কি বললে বুঝবে যে এমন পাগলামো করা মোটেই আমার ভালো লাগছে না।
নিজের যা ইচ্ছা তা ই করে বেড়াবে নাকি। 
কোনো কথাই বললাম না।
জানি শুনবে না। বরং আমি এখন কিছু বললে আরো দশ কথা শুনিয়ে দেবে।
গিয়ে আমায় বসিয়ে দিলো।
কত কাহিনী করে অনুষ্ঠান শেষ হলো।
.
.
রাত হয়ে গেছে। সারাদিন হালকা খাবার খাওয়া হয়েছে।
যেমন খুদা লেগেছে তেমন ঘুম ও পেয়েছে।
আর এই শাড়ির ভাড়েই তো আমি আরো কাহিল।
আরিয়ান এর রুমেই আমাকে রেখে যায় বারবার।
এটাই নাকি এখন আমার স্থায়ি ঠিকানা।
হুহহ খেয়ে দেয়ে আর কাজ নেই।
এটা ঠিক যে আমার ওই রুমের থেকে আরিয়ান এর রুম টা অনেক সুন্দর।
তাতে আমার কি হুহ। আমিতো সুযোগ পেলেই ফুড়ুৎ।
বিছানাতেই নর্মাল থ্রি পিস রাখা ছিল।
নর্মাল বলতে কাপড় টা অনেম সফট।
পড়লে আমার অনেক কমফোর্টেবল লাগবে।
গা থেকে সব গয়নাগাটি খুলছি এক এক করে।
এত ভাড়ি ভাড়ি গয়না যে অসহ্য হয়ে গেছি।
বিশেষ করে নথ টা।
নাকে কেমন সুড়সুড়ি লাগে।
অবশ্যই পাশে বসে থাকা অবস্থায় আরিয়ান আস্তে করে বলেছিল।
নাকের নথে কিন্তু তোমাকে বেশ মানিয়েছে।
নথ টা খোলার সময় অবশ্য ড্রেসিংটেবিল এর আয়নায় কিছুক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম।
সত্যিই কি আমাকে ভালো মানিয়েছিল।
ধুর এসব ভেবে কাজ নেই।
উফফ এখন পড়লাম আরেক জ্বালায়।
চুলে যে স্টাইল করেছিল এখন তো ক্লিপ আর চুলের জট খুলতে খুলতেই আমার হাল খারাপ হয়ে যাবে।
নিজে নিজে বকবক করছিলাম এমন সময় আরিয়ান দেখি ফোনে কথা বলতে বলতে রুমে ঢুকেছে।
আমি একবার তাকিয়ে আবার আমার কাজে লেগে পড়লাম।
নাহ বারবার ফেইল হচ্ছি।
আরিয়ান দেখি বাথরুম এ ঢুকে গেছে।
এত মেজাজ খারাপ হচ্ছে না, ওই পার্লারের মেয়েগুলোকে পেলে ওদের চুল ই ছেঁটে দিতাম হয়তো 
মিনিট খানেক হাল ছেড়েই বসে রইলাম।
বাথরুম এর দরজা খোলার শব্দ পেয়ে তাড়াহুড়ো করে আবার চুলে হাত রাখলাম।
আয়নাতে দেখি আরিয়ান আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে হাত থেকে টাওয়াল টা বিছানায় ছুড়ে ফেলে আমার পিছনে এসে দাঁড়াল।
-- কিগো সোনা পাখি হেল্প লাগবে নাকি বলো।
-- লাগবে না আমার টা আমি একাই করতে পারবো।
-- তা তো দেখতেই পাচ্ছি কেমন নিজেরটা নিজে সামলাচ্ছ।
এই বলে ড্রেসিংটেবিল এর উপর থেকে হেয়ার ওয়েল টা নিয়ে আমার চুলে দিতে নিচ্ছিল।
-- আরে আরে কি করছেন।
-- উফফ থামো তো।
একটু চুপ করে বসো আমি সব ঠিক করে দিচ্ছি। কোনো ব্যাথা পাবে না।
-- লাগবে না
-- তুমি কি চুপ করবে 
-- আচ্ছা
(বুঝিনা আল্লায় কি জুটাইলো আমার কপালে একটুতেই শুধু রেগে যায় )
অনেক কথা বলছে। আমাকে কেমন লাগলো, কে কি বলেছে হেনতেন।
আমি নিরব শ্রোতা হয়ে শুনেই যাচ্ছি।
-- হুম নাও কাজ শেষ
কথা শুনতে শুনতে কখন চুলের জট খুলে ক্লিপ খুলে দিয়েছে টের ই পেলাম না।
আস্তে করে উঠে বাথরুম এ কাপড় নিয়ে ঢুকে গেলাম।
ফ্রেস হয়ে বের হয়ে দেখি টি টেবিলের উপর খাবার রেখে সে সোফায় হেলান দিয়ে বসে আছে।
চুল মুছতে মুছতে বের হলাম।
হঠাৎ ই............
To be continue.........

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(পর্ব ০৯)

RM ,,পূর্ববর্তী পার্ট গুলি পেতে অমার টাইমলাইন  ভিজিট করুন,, কতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলাম সেটা মনে নেই। চোখ খোলে যখন মাথার পেছনে সজোরে এক থাপ্পর খাই। ঘুম ঘুম চোখে চারদিকে তাকিয়ে দেখি যে কে আমাকে চড়টা মারল। আমি দেখলাম যে আমি উঠানের মাটিতে পড়ে আছি, পায়ের কাছে মাটিতে সুব্রত পড়ে আছে। আমি ওপর দিকে তাকিয়ে দেখতে চেষ্টা করি যে কে আমাকে চড়টা মারল, আমি অবাক হয়ে দেখি যে ইন্দ্রানি মাসি আমাদের দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে। আমার দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে বলে ওঠেন “শুয়োর গুলো এখানে শুয়ে? আর আমারা তোদের দু’জনকে সারা বাড়িতে হন্যে হয়ে খুঁজছি। তোদের কি কোন বোধ বুদ্ধি নেই?” আমি সুব্রতর কাঁধ ঝাঁকিয়ে উঠিয়ে দিলাম, সুব্রত আর আমি দুজনেই উঠে পড়লাম মাটি থেকে। আমি কাতর চোখে ইন্দ্রানি মাসির দিকে চেয়ে বললাম “সরি মাসি। ভুল হয়ে গেছে, কাল রাতে একটু বেশি হয়ে গেছিল।” চেয়ারের ওপরে মদের বোতল আর গ্লাসের দিকে ইন্দ্রানি মাসির চোখ পড়ে যায়, তাড়াতাড়ি করে চেয়ারের ওপরে নিজের শাল ফেলে দিয়ে ঢেকে দেয় গ্লাস আর বোতল। ঠিক সেই সময়ে পেছন থেকে অনেক গুলো পায়ের আওয়াজ পাই। মাসি সবাই কে বলে “এই ছেলে দুটো সারা রাত...

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(শেষ পর্ব)

RM কিছুদূর যেতেই  একটি জায়গায় গাড়ি দাঁড় করায় বল্বিন্দার, বলল যে গাড়িতে তেল ভরতে হবে। গাড়ি থামার সঙ্গে সঙ্গে পরীর ঘুম ভেঙে যায়, আমার দিকে তাকিয়ে বলে “কতক্ষণ ঘুমিয়েছি আমি?” আমি বললাম “বেশীক্ষণ ঘুময়নি তুমি” “আমরা থামলাম কেন?” “তেল ভরার জন্য।” “আর কত দেরি পৌঁছতে?” আমি পেট্রল পাম্পের লোকটাকে জিজ্ঞেস করলাম যে জিওরি থেকে চিতকুল কতক্ষণ লাগবে পৌঁছতে। লোকটা আমায় জানাল যে আরও ঘন্টা চারেকের রস্তা বাকি। লোকটা আরও জানাল যে কারছাম ব্রিজের পরে রাস্তা খুব খারাপ। বল্বিন্দার আমাকে বলল যে ও রাস্তা জানে, কোন চিন্তা করতে বারণ করল আমাকে। পরী হিন্দি বিশেষ ভালো করে বোঝেনা তাই আমাকে জিজ্ঞেস করে যে বল্বিন্দার কি বলল। আমি রাস্তার কথাটা চেপে গেলাম, জানালাম যে কোন কিছুর জন্য চিন্তা না করতে। ঘড়ির দিকে তাকালাম, আড়াইটে বাজে তখন, তারমানে চিতকুল পৌঁছতে সন্ধ্যে হয়ে যাবে। একে শীতকাল তায় আবার পাহাড়, এখানে রাত সমতলের চেয়ে একটু তাড়াতাড়ি নামে। জিওরি ছাড়ার কিছু পরেই পরী বলল যে ও আর ঘুমোতে চায় না, বাইরের দৃশ্য দেখবে। আমি বললাম ঠিক আছে। কিছু পরেই সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ে। যখন আ...

"এক অপরিচিতা"(পর্ব: ছয়)

লেখক:আসিফ ইকবাল! "আগের পর্ব গুলো আমার টাইমলাইনে বিদ্যমান" পঞ্চম পর্বের পর থেকে..... ___আরে বাহ, আপনি নিজের বউ কেই চিনতে পারছেন না!       এবার তো বলবেন গতকাল আপনি আমাকে বিয়েই করেন              নি। হম,সেটাও বলে ফেলেন না! দেরি কেনো? ওর এতগুলি কথার পর বুঝতে পারলাম,এটাই আমার অপরিচিতা,কিন্তু ও আজকে নিকাব পড়েনি। হিজাব পড়েছে। তাই চিনতে পারিনি। মুখ দিয়ে কিছু বের হচ্ছেনা। শুধু ওর দিকে তাকিয়ে আছি। আমার বউটা অনেক কিউট। সকাল বেলা যে আমার জন্য এরকম একটা সারপ্রাইজ আছে সেটা ভাবিনি!      ____কি!আপনি কি এভাবেই তাইকে থাকবেন? নাকি উঠেবেন। জলদি উঠে ফ্রেশ হোন।(তাফা) ____তুমি আজকে নিকাব পরোনি যে! ____আপনি তো আমার বর!আপনার সামনে নিকাব পড়তে হবে কেনো?(তাফা) বলে.....একটা হাসি দিয়ে চলে গেলো। এই প্রথম ওর হাসি দেখলাম। আর সেটা আমাকে রীতিমতো পাগল করে দিয়েছে। আর দেরি করলাম না। জলদি বিছানা ছেড়ে ফ্রেশ হতে চললাম। তাফা,,, তাফা! কই তুমি?........ "এইতো কিচেনে,কি হোয়েছে..... তাফা কিচ...