সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

Devil_Husband(part_19)

Written by Fatema
.
.
.
আজকে বউ ভাতের অনুষ্ঠান। কি থেকে কি হয়ে গেলো সব মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে । 
ইচ্ছা করছে কতগুলো ঘুমের বড়ি খেয়ে ঘুমিয়ে থাকি।
হালকা খাবার খেয়ে এগিয়ে গেলাম আব্বু - আম্মুর রুমের দিকে।
দেখি তারা বসে কি জানি কথা বলছে।
-- আব্বু আসবো
-- আরে প্রিন্সেস আসো না, এটা আবার জিজ্ঞেস করতে হয় নাকি।
সোজা গিয়ে আব্বু - আম্মুর মাঝে বসে পড়লাম।
-- প্রিন্সেসের কি মন খারাপ ?
-- 
-- কি হলো বলো নারে আম্মু
-- এটা কেনো করলে আব্বু
-- কি হয়েছে আমার প্রাণ ভোমরার ?
-- আরিয়ান এর সাথে আমার বিয়েটা দিয়েই দিলে।
আগে থেকেই জানতে তাই না যে আরিয়ান এমন করবে। 
-- দেখ মা ওতো খারাপ ছেলে না।
সব জানি ওর সম্পর্কে। খুব ভালো ছেলে ও।
জানতাম আগে থেকেই শুধু সিওর হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু আমরা কেও ই চাই নি যে এভাবে বিয়ে টা হয়ে যাক। তোমার অনার্সের ফাইনাল এক্সাম শেষ হলে পরে বিয়ের ব্যাপার টা এগোতে চাইছিলাম।
দেখ মা আমরা চাইনা কখনওই তোর খারাপ হোক।
-- ডেভিল টা তো আমার লাইফটাকে প্যারাময় করে দিলো (আস্তে করে)
-- শোন আম্মু,
তোমার রেহানা আন্টির সাথে তোমার আগে কথা হয় নি কিন্তু সে তোমাকে অনেক দেখেছে।
তার কোনো মেয়ে ছিল না তাই তোমাকে অনেক চাইতো। কিন্তু তুমিও তো আমাদের এক মাত্র মেয়ে তোমাকে কিভাবে দিই।
অনেক কথা হয়েছে আমাদের মাঝে।
আমরা এইটা চাইছিলাম যে, আমরা জোড় করে তোমাদের বিয়ে না দিই।
তোমাদের মধ্যে আগে আন্ডারস্ট্যান্ডিং ভালো হোক তারপর সব ভাববো।
আমি তোমাকে গ্যারান্টি দিয়ে বলছি আম্মু আরিয়ান অনেক ভালো আর তোমাকে ভালোও বাসে।
তাই আশা করি তার সাথে তুমি খারাপ ব্যবহার করবে না।
তোমার জানানোর উচিৎ ছিল যতটুকু ততটুকুই জেনে রাখো। (আম্মু)
এই বলে আম্মু বের হয়ে গেলো।
আমি শুধু মাথা নিচু করে শুনেই গেলাম।
জানি কথা বললে আম্মুর ভাঙা রেডিও শুরু হয়ে যাবে।
আম্মু বের হয়ে গেলে আব্বুর দিকে অসহায়ের মতো তাকালাম।
দৃষ্টি এটাই বলে, এটা কেনো করলে আব্বু।
একবার ও কি জানানোর দরকার মনে করো নি।
আব্বু মাথায় হাত রেখে "প্রিন্সেস, তুমি আমাকে বিশ্বাস করো তো" বললো।
উত্তরে শুধু মাথা উপর নিচ করে ঝাঁকালাম।
"তাহলে বিশ্বাস রাখো আরিয়ান অনেক ভালো ছেলে। আর যতটুকু জানি, নিজের চোখে যতখানি দেখেছি সে অনেক ভালবাসে তোমাকে "
এই কথা বলে আব্বু ও উঠে চলে গেলো। 
মাথা টা যেন ছিড়ে যাচ্ছে।
কতগুলো জ্ঞান দিয়ে চলে গেলো।
কিসব বললো এগুলো এরা জানতো সব।
সব প্ল্যানিং ছিল।
কিন্তু আমি তো মানবো না।
ঠিকই পালাবো।
রাগে গজগজ করতে করতে আমি যে রুমে থাকতাম সেই রুমে চলে গেলাম।
গিয়েই শুয়ে পড়েছি। উফফফ এত ঘুম পাচ্ছে আর এদিকে প্রায় সবাই উঠে গেছে। একটু পর বলবে চলো পার্লারে বউ ভাতের অনুষ্ঠান হবে তো।
বিছানা আমায় কাছে ডাকলো আমিও গেলাম।
গা এলিয়ে দিতেই চোখের পাতায় ঘুম এসে জোড়ো হলো।
হৈচৈ শুনে ঘুম ভেঙে গেলো।
কি ব্যাপার কি হলো।
রুমে থেকে বের হয়ে হাই তুলতে তুলতে সিরি দিয়ে নামছিলাম আর কানে এলো "সাবিয়া কে কোথাও খুজে পাচ্ছি না। মেয়েটা না বলে কোথায় গেলো। "
হেনতেন হাবিযাবি বলছেই।
সবাই ড্রইংরুম এ একই আলাপ করছে।
আরিয়ান দেখছি ফোন নিয়ে কাকে বারবার কল করছে আর পায়চারী করছে। মাঝে মাঝে কপালের হালকা ঘাম হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে মুছে নিচ্ছে।
আমি হা হয়ে সব দেখছি।
এরা বলছে কি আমিতো বাসাতেই তাহলে খুজলো কোথায় আর আমি গেলাম কোথায়।
একটা পিচ্চি বলে উঠলো ওইতো ছোট বউ।
কতগুলো চোখ দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো আমার দিকে।
পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্য এর মতো লাগছে নিজেকে এভাবে তাকিয়ে দেখার জন্য।
কেও কিছু বলার আগেই আরিয়ান ছুটে এসে হাত ধরে টেনে রুমে নিয়ে যায়।
হাত ছুড়ে মারার মতো সামনের দিকে ফেলে দিয়ে দরজা লক করে দিয়ে আবার টেনে তুলে কষিয়ে এক থাপ্পড় দিয়ে বসলো।
আমি অবাক না হয়ে পারছিনা।
কি করলাম আর কেনই না থাপ্পড় দিলো।
গালে হাত দিয়ে শুধু তার দিকে তাকিয়ে ছিলাম।
চোখ দিয়ে আপনা আপনি টলমটল করে পানি পড়ছে।
আর আরিয়ান চেঁচিয়েই যাচ্ছে।
"এতটা irresponsible হতে পারো তুমি। যেখানেই যাও বলে যেতে পারো না। জানো কতটা চিন্তায় ছিলাম। চিন্তায় মাথা ছিড়ে যাচ্ছিল আমার।
(দু কাধ ঝাঁকিয়ে)
এমন করার আগে তোমার কি ভাবা উচিৎ ছিল না যে সবাই চিন্তায় থাকবে। সবার কথা বাদ আমি চিন্তায় থাকবো এটা কি তোমার মনে হলো না।তুমি বুঝো না কেনো আমাকে। এমন কেনো করো। হবেই না কেনো আমাকে তো তুমি সহ্যই করতে পারো না "
এই বলে কাধ ছেড়ে দিকো ধাক্কা সমেত।
বের হয়ে গেলো রুম থেকে। 
হচ্ছে টা কি আমার সাথে সকাল থেকে।
এই এত আদর আর এখনি থাপ্পড়।
কত রুপ দেখাবে মাইরি।
আজকের দিন টা যাক। আমাকেও আর খুজে পাবে না।
আমাকে থাপ্পড় মারা তাইনা।
স্বপ্নে দেখেছিলাম একদিন এমন একটা #Devil_Husband জুটবে আমার কপালে ঠিক সেটাই হলো 
পরে বুঝবে মি. আরিয়ান 
এখন আমি কিছুই বলবো না।
রাগের চোটে কান্নাই থেমে গেলো। 
To be continue..........

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(পর্ব ০৯)

RM ,,পূর্ববর্তী পার্ট গুলি পেতে অমার টাইমলাইন  ভিজিট করুন,, কতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলাম সেটা মনে নেই। চোখ খোলে যখন মাথার পেছনে সজোরে এক থাপ্পর খাই। ঘুম ঘুম চোখে চারদিকে তাকিয়ে দেখি যে কে আমাকে চড়টা মারল। আমি দেখলাম যে আমি উঠানের মাটিতে পড়ে আছি, পায়ের কাছে মাটিতে সুব্রত পড়ে আছে। আমি ওপর দিকে তাকিয়ে দেখতে চেষ্টা করি যে কে আমাকে চড়টা মারল, আমি অবাক হয়ে দেখি যে ইন্দ্রানি মাসি আমাদের দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে। আমার দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে বলে ওঠেন “শুয়োর গুলো এখানে শুয়ে? আর আমারা তোদের দু’জনকে সারা বাড়িতে হন্যে হয়ে খুঁজছি। তোদের কি কোন বোধ বুদ্ধি নেই?” আমি সুব্রতর কাঁধ ঝাঁকিয়ে উঠিয়ে দিলাম, সুব্রত আর আমি দুজনেই উঠে পড়লাম মাটি থেকে। আমি কাতর চোখে ইন্দ্রানি মাসির দিকে চেয়ে বললাম “সরি মাসি। ভুল হয়ে গেছে, কাল রাতে একটু বেশি হয়ে গেছিল।” চেয়ারের ওপরে মদের বোতল আর গ্লাসের দিকে ইন্দ্রানি মাসির চোখ পড়ে যায়, তাড়াতাড়ি করে চেয়ারের ওপরে নিজের শাল ফেলে দিয়ে ঢেকে দেয় গ্লাস আর বোতল। ঠিক সেই সময়ে পেছন থেকে অনেক গুলো পায়ের আওয়াজ পাই। মাসি সবাই কে বলে “এই ছেলে দুটো সারা রাত...

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(শেষ পর্ব)

RM কিছুদূর যেতেই  একটি জায়গায় গাড়ি দাঁড় করায় বল্বিন্দার, বলল যে গাড়িতে তেল ভরতে হবে। গাড়ি থামার সঙ্গে সঙ্গে পরীর ঘুম ভেঙে যায়, আমার দিকে তাকিয়ে বলে “কতক্ষণ ঘুমিয়েছি আমি?” আমি বললাম “বেশীক্ষণ ঘুময়নি তুমি” “আমরা থামলাম কেন?” “তেল ভরার জন্য।” “আর কত দেরি পৌঁছতে?” আমি পেট্রল পাম্পের লোকটাকে জিজ্ঞেস করলাম যে জিওরি থেকে চিতকুল কতক্ষণ লাগবে পৌঁছতে। লোকটা আমায় জানাল যে আরও ঘন্টা চারেকের রস্তা বাকি। লোকটা আরও জানাল যে কারছাম ব্রিজের পরে রাস্তা খুব খারাপ। বল্বিন্দার আমাকে বলল যে ও রাস্তা জানে, কোন চিন্তা করতে বারণ করল আমাকে। পরী হিন্দি বিশেষ ভালো করে বোঝেনা তাই আমাকে জিজ্ঞেস করে যে বল্বিন্দার কি বলল। আমি রাস্তার কথাটা চেপে গেলাম, জানালাম যে কোন কিছুর জন্য চিন্তা না করতে। ঘড়ির দিকে তাকালাম, আড়াইটে বাজে তখন, তারমানে চিতকুল পৌঁছতে সন্ধ্যে হয়ে যাবে। একে শীতকাল তায় আবার পাহাড়, এখানে রাত সমতলের চেয়ে একটু তাড়াতাড়ি নামে। জিওরি ছাড়ার কিছু পরেই পরী বলল যে ও আর ঘুমোতে চায় না, বাইরের দৃশ্য দেখবে। আমি বললাম ঠিক আছে। কিছু পরেই সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ে। যখন আ...

"এক অপরিচিতা"(পর্ব: ছয়)

লেখক:আসিফ ইকবাল! "আগের পর্ব গুলো আমার টাইমলাইনে বিদ্যমান" পঞ্চম পর্বের পর থেকে..... ___আরে বাহ, আপনি নিজের বউ কেই চিনতে পারছেন না!       এবার তো বলবেন গতকাল আপনি আমাকে বিয়েই করেন              নি। হম,সেটাও বলে ফেলেন না! দেরি কেনো? ওর এতগুলি কথার পর বুঝতে পারলাম,এটাই আমার অপরিচিতা,কিন্তু ও আজকে নিকাব পড়েনি। হিজাব পড়েছে। তাই চিনতে পারিনি। মুখ দিয়ে কিছু বের হচ্ছেনা। শুধু ওর দিকে তাকিয়ে আছি। আমার বউটা অনেক কিউট। সকাল বেলা যে আমার জন্য এরকম একটা সারপ্রাইজ আছে সেটা ভাবিনি!      ____কি!আপনি কি এভাবেই তাইকে থাকবেন? নাকি উঠেবেন। জলদি উঠে ফ্রেশ হোন।(তাফা) ____তুমি আজকে নিকাব পরোনি যে! ____আপনি তো আমার বর!আপনার সামনে নিকাব পড়তে হবে কেনো?(তাফা) বলে.....একটা হাসি দিয়ে চলে গেলো। এই প্রথম ওর হাসি দেখলাম। আর সেটা আমাকে রীতিমতো পাগল করে দিয়েছে। আর দেরি করলাম না। জলদি বিছানা ছেড়ে ফ্রেশ হতে চললাম। তাফা,,, তাফা! কই তুমি?........ "এইতো কিচেনে,কি হোয়েছে..... তাফা কিচ...