সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

"এক অপরিচিতা"(পর্ব:তিন)

লেখক:আসিফ ইকবাল।
সব ঠিকঠাকই চলছে।  সারাদিন অফিসে থাকি।
রাত্রে এসে খাওয়ার পর শুয়ে পড়ি।। ওর সাথে তেমন কথা হয় না। আর ও আমার সামনে তেমন আসেনা। আমি বলেছিল যে, না আসতে আমার সামনে। তাই হইত। এখন আর বাহিরে খেতে হইনা। অপরিচিতা রান্না করে। ওহ বেশ ভালো রান্না করতে পারে,,,,,
বিকেলে,অফিসে ছিলাম। আজ কাজের চাপ টা একটি বেশী। মাথাটা কেমন জানি কাজ করছে না।
আমি যেনো চাঁদে পৌঁছে গেছি যখন মা ফোন করে জানাল তারা আজকে শহরে আসছে। কিছু বলার আগেই .....
"পৌঁছে কথা হবে" বলে কেটে দিল।
আমি কি করবো বুঝতে পারছিনা। বস কে ছুটির জন্য বললাম। কিন্তু তিনি না করে দিলেন।
বাসায় যেতে পারছিনা। ওর কাছে ফোন ও নেই যে ফোন করে বলবো ব্যাপার টা। এখন কি করি....
মা বাবা যদি অপরিচিতা কে দেখে,কিনা কি ভেবে বসবেন আল্লাহ জানে। যা হবার হবে,,,,,,,আমি বাবাকে সত্যিটা বলে দিবো।
সারাটা বিকেল, অনেক অসস্তিতে কেটেছে। এখন আমি আমার বাড়ির দরজার সামনে। আজ নিজের বাড়ির কলিং বেল চাপতেই কেনো জানি ভয় করছে।
অনেক্ষন ধরে থাকার পর বেলটা চেপেই দিলাম। মা দরজা খুললেন। তাতে কেমন জানি দেখাচ্ছে,অন্য সময় হলে জড়িয়ে ধরতেন, আজ কেনো ধরলেন না। সেটা বোঝাই যাচ্ছে...
বাবা ড্রয়িং রুমে বসে আছে....
___বাবা কেমন আছো?(আমি, একটু ভয়ে কথাটা বললাম।)
___হম, ফ্রেশ হয়ে নে তার পর কথা বলি(বাবা)
মা পাশে দাড়িয়ে আছে, কিছু বলছে না। বুঝতে পারলাম, অনেকদিন পর আজকে কিছুর জন্য জবাবদিহি করতে হবে।
চটজলদি বাবার সামনে উপস্থিত হলাম। ভেবে পাচ্ছিনা শেষ পর্যন্ত এই অপরিচিতার জন্য আমার সাথে কি হতে যাচ্ছে।
মা,বাবার পিছনে দাড়িয়ে আছে । অপরিচিতা কে কোথাও দেখছিনা।
___তুই বিয়ে করছিস আমাদের জানাস নি কেনো?(রাগান্বিত ভাবে কথাটা বললেন)
___কিহ্, আমি কবে বিয়ে করলাম। আর বিয়ে করলে তোমাদের জনবোনা এটা কিভাবে হতে পারে(আমি)
___তাহলে তাফা কে শুনি!
___ তাফা! আমি চিনিনা, তাফা কে!
(আমি বুঝতে পারছি মা মুখে হাত দিয়ে একটু হাসছেন,কিন্তু কেনো সেটা টা বুঝিনা।)
___দেখো, রহিমা! দেখো!  তোমার ছেলে নিজের বউকে চিনতে পারছে না।(বাবা)
বাবা মা উভয়েই হাসলেন। আমি চুপ চাপ আছি।কিন্তু আমার আর ভোয় করছে না। আর তাফা নামের কাওকে তো আমি চিনিনা তাহলে বাবা বলছেন কেনো!
___কিন্তু বাবা সত্যিই আমি তাফা নামের কাওকে চিনিনা। বিশ্বাস করো।(আমি)
___ওহ,তাই! (বাবা  তাফা বলে ডাকলেন)
জি, আসছি........
বলে অপরিচিতা বেরিয়ে আসলো। তার মানে ওর নাম তাফা!
বাবা মা আসতেই নাম বলে ফেলেছে। আর যে এতদিন থাকতে দিল খেতে দিল। সে জানে না....
__ওকে চেনো?(বাবা)
__ হম,কিন্তু ওকে আমি বিয়ে করিনি । ও শুধু আমার কাছে আশ্রয় চেয়েছে তাই এখানে কিছুদিনের জন্য থাকতে দিয়েছি।ওর থেকেই শুনে নাও।(আমি)
__অনেক মিথ্যে হয়েছে, আমি সব শুনেছি।এবার খেতে যা।
     শরীর টা ভালোলাগছে না। কালকে কথা হবে।
তারপর বাবা চলে গেলেন।
আমি এত করে বললাম যে আমি বিয়ে করিনি,কিন্তু বিশ্বাস করছেন না,আর অপরিচিতা কিছু বলছে না। মনে হই ঠিকই ওকে আমি বিয়ে করেছি।
"বৌমা সাগর কে খেতে দাও"বলে মাও চলে গেলেন। অন্য সময় হলে কতকিছু বলতেন,আর আজ!
তাফা আর আমি! 
প্রতিদিনের মতোই আমার জন্য খাবার বেড়ে চলে গেলো। কিছু বলেও না,এ কেমন মেয়েরে বাবা,আল্লাহ জানে।
ওর উপর খুব রাগ উঠছে। বাবা মাকে উল্টা শিধা বুঝিয়েছে। আর কথা বলার সুযোগ না দিয়েই চলে গেলো।
"দুই তিন লোকমা মুখে দিয়ে আর খেতে পারলাম না। মনটা ভালো নেই। এই অপরিচিতা আশ্রই দেওয়াই ঠিক হইনি।
আমার,নিজের রুমে প্রবেশ,অতঃপর........
তাফা আমার রুমে। কি যেনো বই পড়ছে!
___তুমি এখানে কেনো? আর সবসমই নিনজা দের মত থাকো গরম লাগে না।
___হম,লাগে তো।
___তাহলে ওসব খুলে ফেলো। আর আমার রুম থেকে চলে যাও।
___কীহ! তার মানে আপনি আমাকে দেখতে চান!
___huh,,(আমি)
___তাহলে আমায় বিয়ে করবেন করবেন করবেন করবেন?বলেন বলেন?(কেমন জানি চোখ পাকাচ্ছে)
___দুর,, এখান থেকে যাও,
___নাহ, আমার রুমে আপনার বাবা মা আছেন। তাই আমি আপনার রুমে। আর আপনি ড্রোইং রুমের সোফাতে শুতে যাচ্ছেন....বুঝলেন? এখন যান।
___দুরর,,,বাবা মা চলে গেলে আমি যেনো তোমাকে এখানে না দেখি। তোমাকে কিছুদিনের জন্য থাকতে বলেছি, থেকেছ। এখন যেতে পারো।
___আচ্ছা,সেটা কালকে দেখা যাবে।।(অপরিচিতা)
অতঃপর আমি নিজের রুম থেকে বহিষ্কৃত হলাম। এবং ড্রয়িং রুমে অশ্রই নিলাম।
________________
ভোরবেলা তাফার ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো।
___আপনি রুমে আসেন। বাবা মা আপনাকে এখানে দেখলে কি ভাববে!!
___হম,যাচ্ছি....
ওর চোখ দুটোর দিকে তাকালেই কেমন জানি আমি হারিয়ে যাই। আর ও খুব সুন্দর ভাবে কথা বলে.... যেটা আমার অনেক ভালো লাগে...
আজকে অফিস ছুটি নিয়েছি। অনেকদিন পর মা বাবা আসছে।
তাদেরকে একটু সময় দিতে হবে।
দিনটা বেশ কাটছে,কিন্তু আজ তাফা আমার সামনে বেশি আসছে না। সবসময় মার সাথে থাকে।
সন্ধ্যে হতে চলেছে। বাবা মা আজকেই যাবেন।
আর আমিও জোর করলাম না। যতো তাড়াতাড়ি যায় ,আমার জন্য ভালো। 
___বৌমার খেয়াল রাখিস,(বাবা)
___হম,
___আর কিছুদিন পর গ্রামে আয়। বৌমাকে নিয়ে আসবি। (বাবা)
___হম,বাবা।
___আমার বৌমাটা অনেক মিষ্টি ওকে দেখে রাখবি। নইলে তোর কপালে দুঃখ আছে,(মা)
__আচ্ছা আচ্ছা আর বলতে হবেনা। চলো তোমাদের এগিয়ে দিয়ে আসি।(আমি)
মা,যাবার সময় তাফার কপালে একটা চুমু দিলেন।  এটাও আমার ছিলো যেটা ওর হয়েগেছে। আমারই কপাল!!
আমার এসব একদম সহ্য হচ্ছিলো না। আদিক্ষেটা।
___হম,এবার চলো,,,,,৯ টাই ট্রেইন।(আমি)
তারপর আমি মা বাবাকে নি স্টেশনে চলে গেলাম। টিকিট আগেই কেটে রাখছি। তাই তেমন ঝামেলা হইনি।
মা বাবাকে ট্রেনে উঠিয়ে দিয়ে রওনা দিলাম......
বাসায় এসে দেখি ,দরজা তে একটা চিরকুট ঝুলছে........
"আমি চলে গেলাম, জানিনা কোথাও যাবো। আল্লাহ অবশ্যই  আমার জন্য কিছু একটা করবেন। আপনি ভালো থাকবেন। আর এতদিন আপনাকে কষ্ট দেবার জন্য পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিবেন। বিদায়"
to be continued...........

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(পর্ব ০৯)

RM ,,পূর্ববর্তী পার্ট গুলি পেতে অমার টাইমলাইন  ভিজিট করুন,, কতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলাম সেটা মনে নেই। চোখ খোলে যখন মাথার পেছনে সজোরে এক থাপ্পর খাই। ঘুম ঘুম চোখে চারদিকে তাকিয়ে দেখি যে কে আমাকে চড়টা মারল। আমি দেখলাম যে আমি উঠানের মাটিতে পড়ে আছি, পায়ের কাছে মাটিতে সুব্রত পড়ে আছে। আমি ওপর দিকে তাকিয়ে দেখতে চেষ্টা করি যে কে আমাকে চড়টা মারল, আমি অবাক হয়ে দেখি যে ইন্দ্রানি মাসি আমাদের দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে। আমার দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে বলে ওঠেন “শুয়োর গুলো এখানে শুয়ে? আর আমারা তোদের দু’জনকে সারা বাড়িতে হন্যে হয়ে খুঁজছি। তোদের কি কোন বোধ বুদ্ধি নেই?” আমি সুব্রতর কাঁধ ঝাঁকিয়ে উঠিয়ে দিলাম, সুব্রত আর আমি দুজনেই উঠে পড়লাম মাটি থেকে। আমি কাতর চোখে ইন্দ্রানি মাসির দিকে চেয়ে বললাম “সরি মাসি। ভুল হয়ে গেছে, কাল রাতে একটু বেশি হয়ে গেছিল।” চেয়ারের ওপরে মদের বোতল আর গ্লাসের দিকে ইন্দ্রানি মাসির চোখ পড়ে যায়, তাড়াতাড়ি করে চেয়ারের ওপরে নিজের শাল ফেলে দিয়ে ঢেকে দেয় গ্লাস আর বোতল। ঠিক সেই সময়ে পেছন থেকে অনেক গুলো পায়ের আওয়াজ পাই। মাসি সবাই কে বলে “এই ছেলে দুটো সারা রাত...

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(শেষ পর্ব)

RM কিছুদূর যেতেই  একটি জায়গায় গাড়ি দাঁড় করায় বল্বিন্দার, বলল যে গাড়িতে তেল ভরতে হবে। গাড়ি থামার সঙ্গে সঙ্গে পরীর ঘুম ভেঙে যায়, আমার দিকে তাকিয়ে বলে “কতক্ষণ ঘুমিয়েছি আমি?” আমি বললাম “বেশীক্ষণ ঘুময়নি তুমি” “আমরা থামলাম কেন?” “তেল ভরার জন্য।” “আর কত দেরি পৌঁছতে?” আমি পেট্রল পাম্পের লোকটাকে জিজ্ঞেস করলাম যে জিওরি থেকে চিতকুল কতক্ষণ লাগবে পৌঁছতে। লোকটা আমায় জানাল যে আরও ঘন্টা চারেকের রস্তা বাকি। লোকটা আরও জানাল যে কারছাম ব্রিজের পরে রাস্তা খুব খারাপ। বল্বিন্দার আমাকে বলল যে ও রাস্তা জানে, কোন চিন্তা করতে বারণ করল আমাকে। পরী হিন্দি বিশেষ ভালো করে বোঝেনা তাই আমাকে জিজ্ঞেস করে যে বল্বিন্দার কি বলল। আমি রাস্তার কথাটা চেপে গেলাম, জানালাম যে কোন কিছুর জন্য চিন্তা না করতে। ঘড়ির দিকে তাকালাম, আড়াইটে বাজে তখন, তারমানে চিতকুল পৌঁছতে সন্ধ্যে হয়ে যাবে। একে শীতকাল তায় আবার পাহাড়, এখানে রাত সমতলের চেয়ে একটু তাড়াতাড়ি নামে। জিওরি ছাড়ার কিছু পরেই পরী বলল যে ও আর ঘুমোতে চায় না, বাইরের দৃশ্য দেখবে। আমি বললাম ঠিক আছে। কিছু পরেই সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ে। যখন আ...

"এক অপরিচিতা"(পর্ব: ছয়)

লেখক:আসিফ ইকবাল! "আগের পর্ব গুলো আমার টাইমলাইনে বিদ্যমান" পঞ্চম পর্বের পর থেকে..... ___আরে বাহ, আপনি নিজের বউ কেই চিনতে পারছেন না!       এবার তো বলবেন গতকাল আপনি আমাকে বিয়েই করেন              নি। হম,সেটাও বলে ফেলেন না! দেরি কেনো? ওর এতগুলি কথার পর বুঝতে পারলাম,এটাই আমার অপরিচিতা,কিন্তু ও আজকে নিকাব পড়েনি। হিজাব পড়েছে। তাই চিনতে পারিনি। মুখ দিয়ে কিছু বের হচ্ছেনা। শুধু ওর দিকে তাকিয়ে আছি। আমার বউটা অনেক কিউট। সকাল বেলা যে আমার জন্য এরকম একটা সারপ্রাইজ আছে সেটা ভাবিনি!      ____কি!আপনি কি এভাবেই তাইকে থাকবেন? নাকি উঠেবেন। জলদি উঠে ফ্রেশ হোন।(তাফা) ____তুমি আজকে নিকাব পরোনি যে! ____আপনি তো আমার বর!আপনার সামনে নিকাব পড়তে হবে কেনো?(তাফা) বলে.....একটা হাসি দিয়ে চলে গেলো। এই প্রথম ওর হাসি দেখলাম। আর সেটা আমাকে রীতিমতো পাগল করে দিয়েছে। আর দেরি করলাম না। জলদি বিছানা ছেড়ে ফ্রেশ হতে চললাম। তাফা,,, তাফা! কই তুমি?........ "এইতো কিচেনে,কি হোয়েছে..... তাফা কিচ...