সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

"এক অপরিচিতা"(পর্ব:এগারো)

লেখক:আসিফ ইকবাল!
দশম পর্বের পর থেকে.........
তাফা সারা রাস্তা বেশ ভালই জ্বালিয়েছে। এত বরণ করছি তবুও সারাক্ষণ  জানালা দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে ছিল। কখনো আবার জানালা দিয়ে হাত বের করে দিচ্ছে।  ওর মগজ টা একেবারে খাম খেয়ালী বুদ্ধিতে ভরপুর। রাত প্রায় ৭ টাই বাসায় এসে পৌঁছলাম। সারাদিনের লম্বা ভ্রমণে দুজনেই বেশ ক্লান্ত। তাই বাহিরে থেকে রাতের খাবার অর্ডার করলাম।
তাফা  সব কিছু গোছাতে বেশ ব্যস্ত। মেয়েতাকে একটুও বুঝিনা। জানিনা ওর বাসা কই। ওর বাবা কে মা কে? যখনই  জিজ্ঞেস করেছি বলে," আমার কেউ নেই। আপনি আর এসব জানতে চাইবেন না প্লিজ" আমিও জোর করিনি। কারণ ওসব নিয়ে আমার কাজ নেই।
ওকে খুব ভালোবাসি।  আর এখন থেকে আমিই ওর পরিবার।
সোফায় বসে টিভি দেখছিলাম আর এসব ভাবছি।একটু পর tafa এসে বললো.....
"আপনি এখানে কেনো! যান ফ্রেশ হয়ে নিন।"
"হুম যাচ্ছি,আর শোনো রাত্রে আমি বাহিরে থেকে খাবার অর্ডার করছি।তোমাকে কিছু করতে হবে না!"
"হুম"
তার পর ফ্রেশ হতে চলে গেলাম।
কিছুক্ষনের মধ্যে খাবার এসে পড়েছে। যদিও ক্ষুধা নেই। তবুও সামান্য খেলাম। তাফা একবার কিছু বলতে চাইল কিন্তু বললো না। তার পর ওকে বলে শুতে চলে গেলাম। শরীরটা বেশ ক্লান্ত।
শুয়ে পরতেই ঘুমিয়ে গেছি।
নিত্যদিনের মত tafar ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো।
বিষয়টা আমার খুব ভালো লাগে। প্রতিদিন সকাল বেলা আমার বউটার হাসি মুখটা দেখতে পাই! তখন আর একটুও ঘুম পায় না।
"যান, ফ্রেশ hoye নামাজ পড়তে যান। এত ঘুম কেনো আপনার হুহ?"
তাফাকে টেনে নিয়ে ওর কোমর জড়িয়ে ধরলাম। ও ছড়ানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু পারছে না। ও আমার অনেক টা কাছে। 
আমার বউটাকে হালকা একটা কিস করলাম! আটলাস্ট বললাম...
"তুমি পাশে থাকনা,তাই হইতো এতো ঘুম.......
আমার কথা শেষ হতে না হতেই আমাকে ধক্কা মেরে ফেলে দিল।
জানতাম না পিচ্চিটার এত জোর! আমি  পিছনের দেওয়ালা দ্বিতীয় বার ধাক্কা খেয়ে পড়ে গেলাম।
ওর দিকে চেয়ে আছি। ভাবছিলাম আমাকে উঠতে হেল্প করবে। কিন্তু তা, না করে বেশ কড়া গলায় বললো.......
"আপনি অনেক নির্লজ্জ!"
বলে রুম থেকে চলে গেলো।
হুম আমি অনেক নির্লজ্জ। স্কুল,কলেজ,ভার্সিটি লাইফ শেষে এখন চাকুরীজীবী। কখনো কোনো মেয়ের সাথে জরাই নি। ভেবেছিলাম, আমার জিবনে শুধু একজন মেয়েই আসবে। যাকে আমি বিয়ে করবো,আর খুব ভালোবাসবো। কিন্তু আজকে?
আজকে আমি কিনা নির্লজ্জ। হইতো বা এমনটাই। ও বার বার নিষেধ করেছে। কিন্তু সেটা প্রতিবারই আমার পরোয়ার বাহিরে ছিল। আজ অনেক টা খারাপ লাগছে।
ইতিমধ্যেই আযান দিয়ে দিয়েছে। তাই উজু করে মসজিদের দিকে রওনা দিলাম।
সেদিনের ঘটনার পর tafar সাথে তেমন কথা বলি না। শুধু কিছু দরকারি কথা ছাড়া। ও নিজের মতো চলুক না! তাতে কি;
আমি আমার মত থাকি।
ছুটি আরও কিছুদিন ছিল। কিন্তু বস কে বলে ক্যানসেল করেছি। বাসায় বসে থেকে কি করবো। কিই বা করার আছে।
যতক্ষণ বাসায় থাকি তাফার সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করে। কাজের মধ্যে থাকলে হইতো ওর কথা বেশি মনে পরবেনা।
তাই এই সিদ্ধান্ত।
তাফা আগের মতোই রোজ সকালে আমাকে নামাজের জন্য উঠিয়ে দেই।  আমার সব দিকে খেয়াল রাখে। রোজ সকালে অফিস যাবার সময় আগের মতোই  আমার টাইটা বেঁধে দেয়। আমি অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে থাকি। এখন এসব কেনো জানি অসহ্য লাগে। ওকে ছুতে পারবোনা। তাই বাধাও দিতে পারিনা।
এমন ভাবেই কিছু মাস চলে গেলো। আমি আমার মত। আর ও ওর মতো। এই কয়েক্ মাসে আমার অভ্যেস গুলু অনেক টা বদলে গেছে।  এখন আর রোজ সকালে তাফা র ডাকে ঘুম থেকে উঠতে হয় না। তার আগেই জেগে যাই। এখন রাত্রে প্রায় বাহিরেই খাই।  আগের সেই একা লাইফ  অনেক মিস করছি।
কিছু দিন আগেই নিলা শহরে এসেছে । আমরা ভার্সিটি লাইফ এ অনেক ভালো বন্ধু ছিলাম। এখন ওর ফ্ল্যাট থেকেই আসছি। অনেক দিন পর দেখা hoye বেশ ভালো লাগছে।
কিছু মাস আগে  ওর হাজব্যান্ড একটা দুর্ঘটনায় মারা যান। তারপর থেকে একা। ৭ বছরের একটা ছেলেও আছে।  এখানে একটা ব্যাংকের এমডি হিসেবে জয়েন করেছে।
ওর বিয়ে তে যেতে পারিনি নি। কিন্তু তার পরের সাক্ষাতে যে এরকম কিছু শোনবো ভাবিনি।
ভেবেছি তাফা কে নীলার  কাছে পাঠিয়ে দিব। ওহ সারাদিন একা  থাকে। আমি সারাদিন অফিসে কাটাই। ওখানে থাকলে কিছুটা কোম্পানি পাবে।
আজ ফিরতে একটু লেট হয়েছে।
কয়েকবার কলিং বেল চেপেও কোনো সাড়া শব্দ পেলাম না। ও হইতো ঘুমিয়ে পড়েছে। তাই নিজের কাছে থাকা চাবি দিয়ে দরজা খুলে ভিতরে ঢুকলাম।  ভিতরে ঢুকে দেখি ডাইনিং এ মাথা গুজে শুয়ে আছে। আমার জন্য অপেক্ষা করতে করতে হইতো ঘুমিয়ে পরছে। দেখে কি নিষ্পাপ মনে হচ্ছে।
ফ্রেশ হয়ে ওকে ডাক দিলাম। একটু ডাকতেই উঠে পরলো।
বললো,"দাড়ান আমি চোখে পানি দিয়ে আসছি। আপনি বসুন"
আমি শুধুই ওর দিকে ceye আছি। ওকে দেখে মনে হচ্ছে অনেক বড় কোনো ভুল করে ফেলেছে......
কিছুক্ষণ পর এসে খাবার বেড়ে দিল....
ও বললো ও খেয়ে নিয়েছে। আমি আর কিছু বললাম না।
আমি খাচ্ছি আর ও আমার সামনে টেবিলে দুই হাত দুই গালে ঠেস দিয়ে বসে আছে।
"তাফা আমার কিছু কথা ছিল;"
"হুম,বলেন। কি বলবেন?"
"জানি,তোমার হইতো আমি ছাড়া এ পৃথিবীতে আর কেউ নেই।
তোমার সাড়া জীবনের ভরণপোষণের সব দায়িত্ব আমার। আমি চাই না তুমি কখনো কষ্ট পাও।  আমি সারাদিন অফিসে থাকি,তুমি একা একা সময় কাটাও।
কিছুদিন হলো আমার বন্ধু নিলা  এখানে এসেছে। ও একা থাকে। আমি চাই তুই ওর সাথে ওর ফ্ল্যাটে থাকো। এতে তোমারও একাকিত্ব দূর হবে। আর নিলারো ভালো লাগবে!"
"আপনি কি তাই চান?"
"হুম,এমনটাই"!
"আপনার কি হবে? কে আপনাকে রান্না করে দিবে?"
(বুঝতে পারছি, হইতো একটু মন খারাপ করেছে। কিন্তু আমি যে আর পারছিনা। ও আমার চোখের সামনে থাকলে, আমার কষ্ট, না পাওয়ার ব্যাথা যে কখনো কমবে না। তাই ওকে দূরে পাঠিয়ে দিচ্ছি)
"আমাকে নিয়ে ভাবতে হবে না।আগে যেমন ছিলাম। আবার হইতো তেমন ভাবে চলবো।"
"হুম।"
"তাফা, আমি হইতো তোমাকে বুঝে ওঠার আগেই। একটা ভুল করে ফেলেছি।  আর আমি সেটা শোধরাতে চাই। তোমার আমার বিয়ে টা শুধুই কিছু কাগজের মধ্যে সীমাবদ্ধ।  আমি চাইনা কাগজের লিখা গুলি আরো বেশি শুখিয়ে যাক। আমি কি বলতে চাচ্ছি বুঝতে পারছো?"
"হুম,বুঝেছি। আমি এতটাই বোকা না।"
"হুম!"
"আপনি কি  আবার বিয়ে করবেন?
"হাহাহা, দেখছনা আমার চুল পেকে গেছে।  কে আমায় বিয়ে করবে। আর কখনোই আমার দ্বিতীয় বিয়ের আশা ছিল না।
আমার খাওয়া হলে গেছে, আমি রুমে যাচ্ছি। আর তুমিও গিয়ে শুয়ে পর। শুভরাত্রি।"
তার পর ও ওর রুমে চলে গেল আমিও ঘুমোতে গেলাম।
ভেবেছিলাম,ও হইতো এটা হতে দিবে না। কিন্তু ওর মৌনতা আমাকে বুঝিয়ে দিচ্ছে যে, তাফাও চায় আমাদের বিচ্ছেদ।
হুম,তাই হইতো ভালো হবে।  ওকে ভালবাসি আর সবসময় বেশে যাবো। কখনো কষ্ট পেতে দেবনা পাগলিটাকে।
পরদিন নীলার সাথে কথা বলে সব ঠিক করে ফেললাম। ওকে বলেছি তাফা আমার কাজিন। আরও অনেক কিছু বলে বুঝিয়েছি।  ওকে অনেক টা খুশিই মনে হচ্ছে। 
সন্ধ্যার দিকে তাফাকে রেখে আসলাম। ও কিছু বলছে না।
ওকে দেখে নিলাও কেনো জানি একটু হাসলো। ওর পিচ্চিটা ইতিমধ্যেই তাফা কে অন্টি ডাকা শুরু করে দিয়েছে।
তাফা কেউ বেশ সাচ্ছন্দ মনে হচ্ছিল।
কিন্তু আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। আগের মত ওকে আর দেখতে পাবনা।এটা ভাবতেই আমি শেষ হয়ে যাচ্ছি। গত কালকের পর থেকে সব মনে হলো খুব তাড়াতাড়ি hoye গেলো।
রাতে শুয়ে তাফার কথায় ভাবছি।  খুব কাঁদতে ইচ্ছে করছে।
আমি বুঝিয়ে পারিনা তাফা আমাকে কেন ভালোবাসেনা। এমনটা হবার তো কোনো কারণ নেই।তাহলে কেন!
বার বার ওর হাসিটা চোখের সামনে ভেসে উঠছে।
ভাবতেই কান্না পাচ্ছে যে তাফা এখানে নেই। আমার কথা কি ওর একটুও মনে পড়ছে না! 
এখন কি করবো বুঝতে পারছিনা। কখনও ওর ওপর খুব রাগ হচ্ছে। আবার একটু পরই কেদে দিচ্ছি।
কতক্ষন ঘুমনোর চেষ্টা করছি। কিন্তু ঘুম আসছে না। ভোরের দিকে মনে হয় একটু ঘুমিয়েছি........
দরজার বেলের শব্দে জেগে উঠলাম। আজকে অনেক দেরি করে ফেলেছি। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি প্রায় ১০টা মত বেজে গেছে। তাড়াহুড়া করে উঠতেই মনে পড়লো আজ ফ্রাইডে!
অফিস নেই। আবার নিজেকে বিছানায় ঢলে দিলাম। কিন্তু বাহিরে দরজার কলিং বেল টা বেজেই চলেছে। আর থামার নামই নিচ্ছে না। খুব রাগ উঠেছে দরজার বাহিরে দাড়িয়ে থাকা লোকটির উপর।
কোনোভাবে উঠে গিয়ে দরজা টা খুলে দিলাম। ঘুম এখনো চোখ বন্ধ hoye আসছে। সামনে তাকিয়ে দেখি নিলা!
"তুই এত সকালে আমার দরজার সামনে কি করছিস!"
"শয়তান, বউ কে বলিস কাজিন। লজ্জা করে না তোর? "
(তাফা নীলার পিছনে অন্য দিকে চেয়ে চুপ করে দাড়িয়ে আছে। )
"আরে,তুই বুঝতে পারছিস না।"
"বুঝতে হবে না। তাফা আমাকে সব বলেছে! এখন তোর বউ কে তুই রাখ"
বলে..... চলে গেল। ওকে আটকাতে চাইলাম। কিন্তু এতটা ঘুম্বপাচ্ছে। সব কিছু যেনো মাথার উপর দিয়ে চলে যাচ্ছে।
আমি তাফা কে ঢুকার জন্য হাতের ইশারা করে আমার রুমের দিকে যাচ্ছি।কেনো জানি আমার অজান্তেই ঠোঁট দুটো একটু হাসির ভাব করলো।
কিছুক্ষণ পর একটা উষ্ণ আলিঙ্গন লাভ করলাম। তাফা পিছন থেকে আমাকে জড়িয়ে ধরেছে। আমার ঘুম যেনো মুহূর্তেই কেটে গেলো। দ্রুত ওকে ছাড়িয়ে নিলাম।
"আরে,কি করছো? আমাকে ছোঁবে না"
"একশ বার ছোঁব,আপনি আপনার বর! "
বলে আবারও জড়িয়ে ধরলো। ও কাদছে। চোখের পানিতে নিচের নিকাবের পাতলা আস্তরণ টা একেবারে ভিজিয়ে ফেলেছে।
"আপনি আমাকে কেনো ওখানে রেখে আসলেন! আমি আপনাকে ছাড়া থাকতে পারবো না। সারারাত ঘুমোতে পারিনি। আর আপনি তো বেশ এখনো ঘুমাচ্ছেন।"
"হুম আমার বেশ ঘুম পাচ্ছে। "
"আপনি খারাপ, আপনি সার্থপর,আপনি সব। আমি আপনাকে খুব ভালোবাসি। আপনাকে ছাড়া থাকতে পারবনা। বলেন আপনি কেনো আমাকে রেখে আসলেন। আমার খুব কষ্ট হচ্ছিল।"
"হুম,এখন আমাকে ছেড়ে দাও।"
এতক্ষন আমার বুকে মাথা গুজে ছিল। এখন মাথা তুলে আমার দিকে বর বর চোখ করে তাকিয়ে আছে।
"বলেন,আপনি কেনো আমাকে রেখে আসছেন!"
"জানিনা"
"আপনি কি ভেবেছেন আর একটা বিয়ে করবেন! তাই আমাকে রেখে আসছেন?"
(এবার ওর কথায় না হেসে পারলাম না।)
"এই মেয়ে, আমি আমার বউকে খুব ভালোবাসি। তাকে ছাড়া আর কাউকে কল্পনাও করতে পারিনা। আর তুমি কিসব উল্টা পাল্টা বলছো।"
"হুঁ"
"আমার দিকে অমন তাকিয়ে থাকার  কি আছে?"
"আমি আপনাকে খুব ভালোবাসি।"
"এতদিন কাকে ভালোবাসতে"
"আপনাকেই,আপনাকেই,আপনাকেই.......
তাফা আর কেদো না। আমি আর কখনও তোমাকে কোথাও যেতে দিচ্ছি না। তোমায় অনেক ভালবাসি।
অতঃপর ওর কপালে একটা চুমু দিলাম।
"এটা করতে কে বলেছে আপনাকে?"(ভেবেছিলাম, আর হইতো কখনো এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে না!  সবই কপাল)
"আমি তোমার বর! সো, অনুমতি লাগে না,"
আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে.....
"হুম আপনিই আমার বর। যদিও আগে একটু কম মানতাম কিন্তু এখন সেটা না।"
"ইসস,এই কথাটা শুনতে আমাকে কত্ত প্ল্যান করতে হলো!
আর একবার বলো না,বলো না!"
"তার মানে...সব!"
"হুম গো আমার পিচ্ছি বউ,"
"আপনার কথা শোনার পর,আমি আর আপনাকে আমার বর মানিনা। ভাগেন! একদম আমার কাছে আসবেন না,"(একটু রেগে বললো)
অতঃপর বউটা আমার রাগ করে চলে গেলো,আর আমি ওর পিছনে…..............
এরপর হইতো নতুন কোনো গল্পের শুরু হতে চলেছে...........!
the end.

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(পর্ব ০৯)

RM ,,পূর্ববর্তী পার্ট গুলি পেতে অমার টাইমলাইন  ভিজিট করুন,, কতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলাম সেটা মনে নেই। চোখ খোলে যখন মাথার পেছনে সজোরে এক থাপ্পর খাই। ঘুম ঘুম চোখে চারদিকে তাকিয়ে দেখি যে কে আমাকে চড়টা মারল। আমি দেখলাম যে আমি উঠানের মাটিতে পড়ে আছি, পায়ের কাছে মাটিতে সুব্রত পড়ে আছে। আমি ওপর দিকে তাকিয়ে দেখতে চেষ্টা করি যে কে আমাকে চড়টা মারল, আমি অবাক হয়ে দেখি যে ইন্দ্রানি মাসি আমাদের দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে। আমার দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে বলে ওঠেন “শুয়োর গুলো এখানে শুয়ে? আর আমারা তোদের দু’জনকে সারা বাড়িতে হন্যে হয়ে খুঁজছি। তোদের কি কোন বোধ বুদ্ধি নেই?” আমি সুব্রতর কাঁধ ঝাঁকিয়ে উঠিয়ে দিলাম, সুব্রত আর আমি দুজনেই উঠে পড়লাম মাটি থেকে। আমি কাতর চোখে ইন্দ্রানি মাসির দিকে চেয়ে বললাম “সরি মাসি। ভুল হয়ে গেছে, কাল রাতে একটু বেশি হয়ে গেছিল।” চেয়ারের ওপরে মদের বোতল আর গ্লাসের দিকে ইন্দ্রানি মাসির চোখ পড়ে যায়, তাড়াতাড়ি করে চেয়ারের ওপরে নিজের শাল ফেলে দিয়ে ঢেকে দেয় গ্লাস আর বোতল। ঠিক সেই সময়ে পেছন থেকে অনেক গুলো পায়ের আওয়াজ পাই। মাসি সবাই কে বলে “এই ছেলে দুটো সারা রাত...

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(শেষ পর্ব)

RM কিছুদূর যেতেই  একটি জায়গায় গাড়ি দাঁড় করায় বল্বিন্দার, বলল যে গাড়িতে তেল ভরতে হবে। গাড়ি থামার সঙ্গে সঙ্গে পরীর ঘুম ভেঙে যায়, আমার দিকে তাকিয়ে বলে “কতক্ষণ ঘুমিয়েছি আমি?” আমি বললাম “বেশীক্ষণ ঘুময়নি তুমি” “আমরা থামলাম কেন?” “তেল ভরার জন্য।” “আর কত দেরি পৌঁছতে?” আমি পেট্রল পাম্পের লোকটাকে জিজ্ঞেস করলাম যে জিওরি থেকে চিতকুল কতক্ষণ লাগবে পৌঁছতে। লোকটা আমায় জানাল যে আরও ঘন্টা চারেকের রস্তা বাকি। লোকটা আরও জানাল যে কারছাম ব্রিজের পরে রাস্তা খুব খারাপ। বল্বিন্দার আমাকে বলল যে ও রাস্তা জানে, কোন চিন্তা করতে বারণ করল আমাকে। পরী হিন্দি বিশেষ ভালো করে বোঝেনা তাই আমাকে জিজ্ঞেস করে যে বল্বিন্দার কি বলল। আমি রাস্তার কথাটা চেপে গেলাম, জানালাম যে কোন কিছুর জন্য চিন্তা না করতে। ঘড়ির দিকে তাকালাম, আড়াইটে বাজে তখন, তারমানে চিতকুল পৌঁছতে সন্ধ্যে হয়ে যাবে। একে শীতকাল তায় আবার পাহাড়, এখানে রাত সমতলের চেয়ে একটু তাড়াতাড়ি নামে। জিওরি ছাড়ার কিছু পরেই পরী বলল যে ও আর ঘুমোতে চায় না, বাইরের দৃশ্য দেখবে। আমি বললাম ঠিক আছে। কিছু পরেই সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ে। যখন আ...

"এক অপরিচিতা"(পর্ব: ছয়)

লেখক:আসিফ ইকবাল! "আগের পর্ব গুলো আমার টাইমলাইনে বিদ্যমান" পঞ্চম পর্বের পর থেকে..... ___আরে বাহ, আপনি নিজের বউ কেই চিনতে পারছেন না!       এবার তো বলবেন গতকাল আপনি আমাকে বিয়েই করেন              নি। হম,সেটাও বলে ফেলেন না! দেরি কেনো? ওর এতগুলি কথার পর বুঝতে পারলাম,এটাই আমার অপরিচিতা,কিন্তু ও আজকে নিকাব পড়েনি। হিজাব পড়েছে। তাই চিনতে পারিনি। মুখ দিয়ে কিছু বের হচ্ছেনা। শুধু ওর দিকে তাকিয়ে আছি। আমার বউটা অনেক কিউট। সকাল বেলা যে আমার জন্য এরকম একটা সারপ্রাইজ আছে সেটা ভাবিনি!      ____কি!আপনি কি এভাবেই তাইকে থাকবেন? নাকি উঠেবেন। জলদি উঠে ফ্রেশ হোন।(তাফা) ____তুমি আজকে নিকাব পরোনি যে! ____আপনি তো আমার বর!আপনার সামনে নিকাব পড়তে হবে কেনো?(তাফা) বলে.....একটা হাসি দিয়ে চলে গেলো। এই প্রথম ওর হাসি দেখলাম। আর সেটা আমাকে রীতিমতো পাগল করে দিয়েছে। আর দেরি করলাম না। জলদি বিছানা ছেড়ে ফ্রেশ হতে চললাম। তাফা,,, তাফা! কই তুমি?........ "এইতো কিচেনে,কি হোয়েছে..... তাফা কিচ...