সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

"এক অপরিচিতা"( পর্ব: নয়)



লেখক:আসিফ ইকবাল!


অষ্টম পর্বের পর থেকে.........

কিছুক্ষন পর  মুহি আমার দিকে এগিয়ে আসলো।
 দেখলাম, তাফা অন্য দিকে মুখ ঘুরলো।
 বেপারটা খুব বুঝতে পারছি.........

-----তুমি এখানে কেন?(মুহি)
-----কেন আমি আসতে পারিনা?
-----নাহ, পারোনা।(মুহি)
-----ow,আসলে আমি তাফাকে নিতে আসলাম।মা ওকে ডাকছে।(একটু মিথ্যে)
আর কিছু বললাম না। তাফার হাত ধরে টেনে আমার রুমে নিয়ে আসলাম। তার পর রুমের দরজা বন্ধ করে দিলাম।
___এটা কি করছেন আপনি?(তাফা)
___দেখতেই তো পাচ্ছো...
___দরজা খুলুন বলছি, আমাকে যেতে দিন। অনেক রাত হয়েছে।(তাফা)
___হম,অবশ্যই যাবে তুমি....

তারপর ওকে ঘাটে বসিয়ে দিয়ে ওর সামনে বসলাম।
বউটা আমার মনে হয় খুব রেগে আছে। বার বার আমার দিক থেকে মুখ সরিয়ে নিচ্ছে। আমি ওর সামনে বসে আছি,কিন্তু ও অন্য দিকে মুখ ঘুরে আছে....
 ওর হাত দুটো আমার হাতের মধ্যে নিয়ে একটা চুমু দিলাম।
 হাহা, বেশ ছোটো ছোটো হাত দুটো। ও কিছু বলছে না। অন্য দিকে মুখ ঘুরে আছে।

___তাফা, তোমার হাত গুলো এত ছোট কেনো?😀
___আপনিই তো বলেন আমি picci,তাই হইতো।(তাফা)
___হম, তুমি আমার picci বউ;
___নাহ!
___কি না?
___কিছুনা.......
___তাফা, তুমি কি কোনো কারণে আমার উপর রেগে আছো?
___ রাগ কেনো করবো! আমি রেগে নেই,
___তাহলে আমার দিকে তাকাও দেখি।
___
___আমাকে যেতে দিন প্লিজ। মা হইতো খুঝছে....
___হম,

ও দ্রুত ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো। মনে হয় পিছনে কুকুর তারা করছে। আর যাবার আগে বলে গেলো,"ভালো থাকবেন"!
ওকে আর আটকালাম না। অনেক রাত hoyeche ।
হম,এটা ঠিক যে ও একটুও রেগে নেই।

রাতে তেমন ঘুম হলো না।
আয়নায় দেখি চোখের নিচে কালি জমে গেছে। আসার দিনও ঠিক ভাবে ঘুম হইনি।

আজকে রাফার বিয়ে। সকাল থেকেই বেশ তোড়জোড় চলছে।
কেমন জানি অদ্ভুত লাগছে। এতদিন পর বাড়িতে আসছি। অথচ 
আমার দিকে কারোর খেয়ালি নেই।  তাফা এসে নাস্তা দিয়ে গেলো। এর একটা পাঞ্জাবি। এটা আমাকে পড়তে হবে।
আমার পাঞ্জাবি পড়ার অভ্যেস নেই। কিন্তু বউ যখন দিয়ে গেছে পড়তেই হবে । সব দিকে স্বজন দের আনাগোনা। এত হইচই একদম ভালো লাগেনা।

রাফা বউ সেজে বসে আছে। আর ওর পাশে আরও কিছু নন্দিনী। আসলে আজ ওদের মধ্যে কার বিয়ে হচ্ছে যে কেউ ই এটা নিয়ে বিভ্রান্ত হতে পারে।  ওরা নানান বিষয়ে হাসাহাসি করছে। আর আমি দূর থেকে তাকিয়ে আছি।

"সাগর,আমাকে কেমন লাগছে?"

মূহির আওয়াজ পেয়ে পিছনে ঘুরলাম। meyeta আজ নিল সারি পড়ছে। আর হালকা মেকআপ! বেশ লাগছে ।

"কি হলো, বলছনা যে কেমন লাগছে?"

"হম,তোমায় অনেক সুন্দর লাগছে,যে কারোর পা পিছলে যাবে.....। শেষ পর্যন্ত তোমার জন্য না আমার বোনটার বিয়ে ভেঙ্গে যায়।"😁

"থাক আর বলতে হবে না,আমি কারোর বিয়ে ভাঙতে চাইনা।"
নিথিণ এসে বলে গেলো বাবা আমায় ডাকছে। তাই সে যাত্রায় মূহির থেকে ছাড়া পেলাম।

বাবা বললেন,"তাফা, এবাড়িতে নতুন। ওকে সবসময় সাথে নিয়ে থাকতে" আমিও বাধ্য ছেলের মত জওয়াব দিলাম,"হুম"।
কিন্তু ও তো আমার সামনেই আসে না। সবসময় মা,র সাথে....

বাড়িতে অনেক লোকজন। বাবা,চাচা,ফুফা সবাই মেহমানদের নিয়ে ব্যস্ত। মার তো কাজের অভাব নেই।  এসব কেমন জানি অদ্ভুত লাগছে।
কিছুক্ষণ পেন্ডেলের সামনে দাড়িয়ে থেকে আমার রুমে চলে আসলাম। বিয়ে বাড়ি! অনেক কাজ! এটাও ঠিক। কিন্তু আমার কোনো কাজ নেই। আমার রুমে গিয়ে দেখি তাফা! ও এখানেও বউ নিয়ে আসছে। এই মেয়েটার বই পড়ার অভ্যাস টা যে বদঅভ্যাস নাকি ভালো অভ্যাস বুঝতে পারছিনা। আমাকে দেখে চলে যেতে চাইলো।কিন্তু যেতে দিলাম না।
আমি পাশে  শুয়ে আছি। আর ও টেবিলে বসে বই পড়ছে।
কেনো জানি অনেক ক্লান্ত লাগছে,তাই চোখ বন্ধ করে আসছে...
 কিছুক্ষণ তাফা উঠে গিয়ে ঘরের দরজাটা লাগিয়ে দিয়ে আসলো। আবার পড়ায় মন দিল। ও নিকাব খুলে ফেলেছে।

"তাফা! তোমার গাল দুটো লাল দেখাচ্ছে কেনো?"

আমার কথা শুনে ও আমার দিকে মুখ ঘোরালো।আর বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে।

"আপনি না ঘুমিয়েছে!"

"কই!!আমি তো শুধু চোখ বন্ধ করে ছিলাম।"

"হম,এখন ঘুমিয়ে পড়েন। দেখে মনে হচ্ছে রাত্রে চুরি করতে গেছিলেন। আমি যাচ্ছি"

"আরে বলো না?"

কিছু বললো না!শুধু একটা হাসি দিল তার পর বইটা হাতে নিয়ে চলে গেলো। যাই হোক ওর হাসিটা তো দেখতে পেলাম।
জানি,আমার আর ঘুম আসবে না।
 সো,মোবাইলটা হাতে নিয়ে ফেসবুকিং করছিলাম।
কিন্তু সেটাও আর বেশিক্ষণ করতে পরলাম না।
 মুহি ! আমার রুমে আসছে.....

"তখন কাকু ডাকায় চলে গেলে! তোমাকে তখন থেকে খুঁজে চলেছি।আর তুমি এখানে বসে ফোন চাপছ।"

বলে,আমাকে টেনে বাহিরে নিয়ে আসলো। বাহিরে টা ঠিক আগের মতোই আছে। আমার এত লোকজন একদম ভালোলাগে না।  আর মুহি সবসময় আমার সাথে লেপ্টে আছে। যেখানেই যাচ্ছি মুহি ঠিক আছেই আমার সাথে। আমার বেশ অসস্তি লাগছে। হইতো বিবাহিত বলে এমন লাগছে।

কিছুক্ষনের মধ্যে বর আসলো। 
তারপর বর কনের কবুল বলার মাধ্যমে কাজী বিয়ের কাজ সম্পূর্ণ করলেন। সম্পূর্ণ আয়োজনের এ অংশটুকুই বিয়ে। সামান্য বিশ থেকে ত্রিশ মিনিটের একটা অনুষ্ঠান মাত্র।
রাফাকে দেখে অনেক হাসিখুশি মনে হচ্ছে। শুনেছি বিয়ের দিন মেয়েরা কাদে। তাফাও তার উল্টো টা আমাকে দেখায় নি। কিন্তু এখানে তো তেমন কিছু দেখতে পাচ্ছি না।


রাফা যাবার সময় চাচা_চাচী,মা অনেক কাদছে।আমি দূর থেকে সব টা দেখছি। আমারও বেশ খারাপ লাগছে।সেই picci টা, যে কিছুদিন আগেই ভাইয়া ভাইয়া বলে আমার পিছু নিত।আজ কিনা তার বিয়ে hoye গেছে।আর সে এখন অন্য কারোর বাড়ি যাচ্ছে ।

"আপনি কাদছেন না কেনো?"(তাফা)

(আমার পাশেই তাফা দাড়িয়ে ছিল,সেটা এইমাত্র টের পেলাম)

"কেনো! কাদবো কেনো?"

"সবাই তো কদছে। মা,চাচা,ফুপি........🙄"

(ইসস, আমি একটা picci রে বিয়ে করছি। নইলে কেউ এমন প্রশ্ন করে!)

"ওহ,তাহলে তুমি আমার বদলে একটু কেদে দাও😀"

"🙄......"

"ওইয়ে আমাদের বিয়ে দিন যেভাবে কাদলে,একটু কাদো না! কাদলে তোমায় খুব ভালো লাগে😂😂"

"আপনি আমায় কাদাতে চান?!😞"

"হম,একটু! বেশিনা। এবার কদো?😊"


আর কিছু বলল না! চলে গেলো।
 ওর চোখ দুটো আমাকে  স্পষ্ট  জানিয়ে দিল, যে আমার বউ রাগ করছে,আর সাথে কিছু অভিমান!

to be continue..............

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(পর্ব ০৯)

RM ,,পূর্ববর্তী পার্ট গুলি পেতে অমার টাইমলাইন  ভিজিট করুন,, কতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলাম সেটা মনে নেই। চোখ খোলে যখন মাথার পেছনে সজোরে এক থাপ্পর খাই। ঘুম ঘুম চোখে চারদিকে তাকিয়ে দেখি যে কে আমাকে চড়টা মারল। আমি দেখলাম যে আমি উঠানের মাটিতে পড়ে আছি, পায়ের কাছে মাটিতে সুব্রত পড়ে আছে। আমি ওপর দিকে তাকিয়ে দেখতে চেষ্টা করি যে কে আমাকে চড়টা মারল, আমি অবাক হয়ে দেখি যে ইন্দ্রানি মাসি আমাদের দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে। আমার দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে বলে ওঠেন “শুয়োর গুলো এখানে শুয়ে? আর আমারা তোদের দু’জনকে সারা বাড়িতে হন্যে হয়ে খুঁজছি। তোদের কি কোন বোধ বুদ্ধি নেই?” আমি সুব্রতর কাঁধ ঝাঁকিয়ে উঠিয়ে দিলাম, সুব্রত আর আমি দুজনেই উঠে পড়লাম মাটি থেকে। আমি কাতর চোখে ইন্দ্রানি মাসির দিকে চেয়ে বললাম “সরি মাসি। ভুল হয়ে গেছে, কাল রাতে একটু বেশি হয়ে গেছিল।” চেয়ারের ওপরে মদের বোতল আর গ্লাসের দিকে ইন্দ্রানি মাসির চোখ পড়ে যায়, তাড়াতাড়ি করে চেয়ারের ওপরে নিজের শাল ফেলে দিয়ে ঢেকে দেয় গ্লাস আর বোতল। ঠিক সেই সময়ে পেছন থেকে অনেক গুলো পায়ের আওয়াজ পাই। মাসি সবাই কে বলে “এই ছেলে দুটো সারা রাত...

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(শেষ পর্ব)

RM কিছুদূর যেতেই  একটি জায়গায় গাড়ি দাঁড় করায় বল্বিন্দার, বলল যে গাড়িতে তেল ভরতে হবে। গাড়ি থামার সঙ্গে সঙ্গে পরীর ঘুম ভেঙে যায়, আমার দিকে তাকিয়ে বলে “কতক্ষণ ঘুমিয়েছি আমি?” আমি বললাম “বেশীক্ষণ ঘুময়নি তুমি” “আমরা থামলাম কেন?” “তেল ভরার জন্য।” “আর কত দেরি পৌঁছতে?” আমি পেট্রল পাম্পের লোকটাকে জিজ্ঞেস করলাম যে জিওরি থেকে চিতকুল কতক্ষণ লাগবে পৌঁছতে। লোকটা আমায় জানাল যে আরও ঘন্টা চারেকের রস্তা বাকি। লোকটা আরও জানাল যে কারছাম ব্রিজের পরে রাস্তা খুব খারাপ। বল্বিন্দার আমাকে বলল যে ও রাস্তা জানে, কোন চিন্তা করতে বারণ করল আমাকে। পরী হিন্দি বিশেষ ভালো করে বোঝেনা তাই আমাকে জিজ্ঞেস করে যে বল্বিন্দার কি বলল। আমি রাস্তার কথাটা চেপে গেলাম, জানালাম যে কোন কিছুর জন্য চিন্তা না করতে। ঘড়ির দিকে তাকালাম, আড়াইটে বাজে তখন, তারমানে চিতকুল পৌঁছতে সন্ধ্যে হয়ে যাবে। একে শীতকাল তায় আবার পাহাড়, এখানে রাত সমতলের চেয়ে একটু তাড়াতাড়ি নামে। জিওরি ছাড়ার কিছু পরেই পরী বলল যে ও আর ঘুমোতে চায় না, বাইরের দৃশ্য দেখবে। আমি বললাম ঠিক আছে। কিছু পরেই সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ে। যখন আ...

"এক অপরিচিতা"(পর্ব: ছয়)

লেখক:আসিফ ইকবাল! "আগের পর্ব গুলো আমার টাইমলাইনে বিদ্যমান" পঞ্চম পর্বের পর থেকে..... ___আরে বাহ, আপনি নিজের বউ কেই চিনতে পারছেন না!       এবার তো বলবেন গতকাল আপনি আমাকে বিয়েই করেন              নি। হম,সেটাও বলে ফেলেন না! দেরি কেনো? ওর এতগুলি কথার পর বুঝতে পারলাম,এটাই আমার অপরিচিতা,কিন্তু ও আজকে নিকাব পড়েনি। হিজাব পড়েছে। তাই চিনতে পারিনি। মুখ দিয়ে কিছু বের হচ্ছেনা। শুধু ওর দিকে তাকিয়ে আছি। আমার বউটা অনেক কিউট। সকাল বেলা যে আমার জন্য এরকম একটা সারপ্রাইজ আছে সেটা ভাবিনি!      ____কি!আপনি কি এভাবেই তাইকে থাকবেন? নাকি উঠেবেন। জলদি উঠে ফ্রেশ হোন।(তাফা) ____তুমি আজকে নিকাব পরোনি যে! ____আপনি তো আমার বর!আপনার সামনে নিকাব পড়তে হবে কেনো?(তাফা) বলে.....একটা হাসি দিয়ে চলে গেলো। এই প্রথম ওর হাসি দেখলাম। আর সেটা আমাকে রীতিমতো পাগল করে দিয়েছে। আর দেরি করলাম না। জলদি বিছানা ছেড়ে ফ্রেশ হতে চললাম। তাফা,,, তাফা! কই তুমি?........ "এইতো কিচেনে,কি হোয়েছে..... তাফা কিচ...