সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

নিষিদ্ধ ভালোবাসা (পর্ব১০)

RM


জেকে খুব একা একা লাগছিল, পরী কাছে নেই। এমন সময়ে দুষ্টু এসে জানাল যে সুব্রতর ঘরে আমার ডাক পড়েছে। সুব্রতর ঘরে ঢুকে দেখলাম এক নতুন কোন মেয়ে মৈথিলীর পাশে বসে। সুব্রত পরিচয় করিয়ে দিল মেয়েটার সাথে, মেয়েটা সুব্রতর শালি, মৈথিলীর খুড়তুতো বোন, অরুণিমা। অরুনিমা কলকাতায় থাকে, বিএ ফার্স্ট ইয়ার পড়ছে, দক্ষিণ কলকাতার কোন কলেজে। আমি মনে মনে হেসে উঠি, সুব্রতর প্রচেষ্টা দেখে, আমার সাথে অরুনিমার সাক্ষাৎ করানোর ঢঙ্গ দেখে মনে হল যে ও চায় আমি আর অরুনিমা… । অরুনিমার দিকে তাকিয়ে দেখলাম, উনিশ বছর বয়স হবে হয়তো মেয়েটার। সবে যেন গোলাপের কুঁড়ি, বেশ সুন্দর করে প্রস্ফুটিত হবার অপেক্ষায়। আমার দিকে তাকিয়ে সৌজন্য সুলভ হাসে হাসে। আমি সুব্রতর কাঁধে হাত রেখে বললাম “ভায়া আমার শরীরটা ঠিক ভালো লাগছেনা, আমি এখন আসছি।”
আমি মৈথিলীর দিকে তাকিয়ে মাথা নিচু করি, আমাকে মাথা নিচু করতে দেখে ঘাবড়ে যায় মৈথিলী, জিজ্ঞেস করে কি করছি। আমি বলি “চূর্ণি, তোমাকে সত্যি সুন্দর দেখতে। তোমার সাথে আগে মিট করতে হত।”
লজ্জায় লাল হয়ে যায় মৈথিলী, আমার মুখে চূর্ণি নাম শুনে সুব্রতর দিকে কটমট করে তাকিয়ে থাকে। ওকে ঐ নামে সুব্রত ছাড়া আর কেউ ডাকে না। আমি সুব্রতর কাঁধে হাত রেখে আসস্থ করে বলি যে আমি মজা করছিলাম।
আমি ঘর থেকে বেড়িয়ে, নিচে নেমে এক কাপ কফি নিয়ে ছাদে উঠে যাই। ছাদে কেউ নেই, আমি এক কোনায় দাঁড়িয়ে থাকি, সূর্য মধ্য গগনে জ্বলজ্বল করছে। শীত কালিন রুদ্দুর বেশ মনোরম লাগছে। চোখ বন্ধ করে দুহাত মাথার ওপরে তুলে একটু আড়ামোড়া ভাঙ্গি।
কফির কাপে চুমুক দিয়ে ভাবি পরীর কথা। কোথায় যাবে আমাদের সম্পর্কটা, কি হবে ভবিষ্যতে? সত্যি বলতে আমাদের মাঝে কোন রক্তের সম্পর্ক নেই, মায়ের অনেক দুর সম্পর্কের বোন, পরী। সেটাই কি একমাত্র কারন হয়ে দাঁড়াবে আমাদের ভালবাসার মাঝে? কেন আমরা একে অপরকে ভালবাসতে পারিনা? যদি পারি তো বিয়ে কেন হতে পারেনা? শুধু কি এই জন্য যে ও আমার চেয়ে দু’বছরের বড় বলে? আমি নিজেকে বুঝিয়ে উঠতে পারিনা যে কেন আমাদের প্রেম নিষিদ্ধ। ও একটা মেয়ে আমি একটা ছেলে, আমরা দু’জনে রক্তে মাংসে গড়া মানুষ, আমাদের বুকের মাঝে একটা হৃৎপিণ্ড ধুকপুক করে চলেছে। না ভালবাসা কখন নিষিদ্ধ হতে পারেনা। হয়তো এই সমাজ মেনে নেবে না ঠিক মতন, হয়তো দিদা বা আমার মা আমাদের ভালবাসা মেনে নেবেন না। কিন্তু প্রেম কি বলে কয়ে আসে? বিদ্যুতের ঝটকার মতন আসে, কে কার সাথে কোন সময়ে প্রেমে পরবে কি করে জানা যাবে, কেউ তো আর পাঁজি দেখে প্রেম করেনা। প্রেম তখন হয় যখন কেউ ব্যাস্ততার মধ্যেও তার মনের মানুষের কথা ভাবে, খালি সময়ে তো অনেকে অনেক কিছু ভাবে। নাড়ি বন্ধ হয় যখন মনের মানুষ কাছে থাকেনা। কারুর মিষ্টি ডাকে আমি সম্বিৎ ফিরে পাই “হাই, তোমাকে সবাই খুঁজছে নিচে। খেতে ডাকছে তোমাকে।”
আমি ঘাড় ঘুড়িয়ে দেখি অরুনিমা আমার পেছনে দাঁড়িয়ে।
আমি হেসে জিজ্ঞেস করলাম “আরে খাবার কথা তো আমি একদম ভুলে গেছিলাম। তো তোমাকে কে ডাকতে পাঠিয়েছে, তোমার জামাই বাবু না দিদি?”
উত্তর দিলো “দিদি তোমাকে ডাকতে পাঠিয়েছে খেতে যাবার জন্য।” নিচে নামার সময় আমাকে জিজ্ঞেস করল “তুমি কলকাতায় থাকো?”
“হ্যাঁ, আমি উত্তর কলকাতায় থাকি আর তুমি মনে হয় দক্ষিণ কোলকাতা?”
“হ্যাঁ, ঢাকুরিয়া।”(এটা কি সত্যি দক্ষিণ কলকাতাই?🧐 হম,,দক্ষিণে না হলেও বানাই দিসি)
আমি চেয়ে দেখলাম ওর দিকে, মেয়েটার সাজার শৈলী বেশ সুন্দর। লাল রঙের সাড়ী পরেছে, ব্গায়ের রঙ হালকা ফর্সা, পাতলা গড়ন। বেশ লাগছিল।
আমাকে জিজ্ঞেস করল “তুমি ফাইনাল ইয়ারে?”
“হ্যাঁ”
“তারপর?”
“তারপর কি?”
“তারপর মানে, কলেজের পড়ে কি করবে? হাইয়ার স্টাডিস না জব।”
আমি মনে মনে ভাবি আমাকে নিয়ে এত প্রশ্ন কেন মেয়েটার। আমি উত্তর দিলাম “আমাকে চাকরি পেতে হবে। আমি একটা প্রাইভেট অরগানাইজেসানে কম্পিউটার কোর্স করছি।”
আমি ওকে ওর ভবিষ্যতের কথা জিজ্ঞেস করাতে উত্তর দিল যে ও চাকরি বাকরি করতে চায় না, ও জীবন খুব সাধারন ভাবে কাটাতে চায়। কলেজের পরে বিয়ে, ঘর সংসার। আমি মাথা নারি “হুম”। আমার পরীর একদম উল্টো। নিচে কওয়ার জায়গায় দেখলাম যে শুধু দুটো জায়গা খালি, অগত্যা ওর পাশেই খেতে বসতে হল।
আমাদের উল্টো দিকে সুব্রত আর মৈথিলী খেতে বসেছিল। খাবার সময়ে দেখলাম যে মৈথিলী সুব্রতর কানে কানে কিছু একটা বলল, সেই শুনে দু’জনে আমার দিকে তাকিয়ে হেসে ওঠে। আমি নিশ্চিত যে মৈথিলী চাইছে আমার আর অরুনিমা মধ্যে কিছু একটা হোক। আমি ভেবে মনে মনে হেসে ফেলি, কত বোকামো করছ। খাবার সময়ে আমি চুপচাপ ছিলাম, বিশেষ কথা বলতে ভালো লাগছিল না আমার।
আমি এত চুপ দেখে সুব্রত আমাকে খাবার ওপরে একদিকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞেস করল যে কি হয়েছে। আমি আমার মনের অবস্থা লুকিয়ে বললাম যে দিদা আমাকে ছোটবেলার কথা শুনাল, সেই আমের গাছ দেখাল, এই সব দেখে আমার মন কেমন একটা হয়ে গেছিল তাই আমি চুপ করে ছিলাম।
সুব্রত আমাকে বলল “আরে সব ঠিক হয়ে যাবে। তুমি এক কাজ কর, অরুনিমাকে নিয়ে বাগান দেখিয়ে নিয়ে এসো, ভালো লাগবে।” কানে কানে বলল “অরুনিমা একদম তোমার জন্য ফিট, সুন্দরী, স্মার্ট।”😂😂
আমি বাঁকা হাসি হেসে বলি “আরে না না, আমি ঠিক আছি। তুমি এরকম কেন করছ?”
“হুম, এত সুন্দরী মেয়ে, আমার কোন বন্ধু হলে তো হুমড়ি খেয়ে পরত আর তুমি কিনা এড়িয়ে যাচ্ছ। আমি নিজে থেকে আমার শালিকে তোমার কাছে পাঠাচ্ছি আর তুমি কিনা মানা করছ। তুমি ছাদে যাও, আমি একটু পরে পাঠিয়ে দেব।”
😋😋😋,,,,,,,,🧐
আমি ছাদে উঠে, সবুজ মাঠের পারে দিগন্তের দিয়ে চেয়ে রই। সূর্য পশ্চিমাকাশে ঢলতে শুরু করেছে। একটি সুন্দর দিনের অবসান। পরী এখন এলোনা, বুকের মাঝে ছিঁড়ে নেওয়ার এক ব্যাথা কঁকিয়ে ওঠে। এই তিন দিন, হাসি কান্নায় ভরা, কত মধুময় সময়ে একসাথে থাকা। আমি শুধু চেয়েছিলাম আর কিছু সময় ওর সাথে কাটানোর, সেটা আর ভাগ্যে জুটলো না। কিছুক্ষণ পরে বাড়ির সবাই সাজগোজে ব্যাস্ত হয়ে পরবে, বউভাতের জন্য মুখর হয়ে উঠবে বাড়ি। একে একে আত্মীয় সজ্জনের আনাগোনা শুরু হয়ে যাবে, চারদিক লোকে লোকারণ্য। আমি হয়তো আর ওর সাথে কিছু সময় একলা কাটাতে পারবোনা। সেটা ভেবেই মনের ভেতরটা নিঙরে কেঁদে ওঠে। এর মধ্যে কোন এক সময়ে, গভীর রাতে আমরা চলে যাবো। আমি ছাদের রেলিঙের ওপরে মাথা নিচু করে বসে পড়ি, নিজের ওপরে কুব রাগ হয়, কেন যে আমি সেই সময়ে স্নান করতে গেলাম। কেন আমি রাতে মদ খেতে গেলাম। আমি মাথা নিচু করে নিজের কপালে করাঘাত করি। দু’চোখের কোল বেয়ে জল বয়ে যায়। আমার হৃদয়টা যেন কাঁচ ভাঙ্গার মতন ঝনঝন করে সহস্র টুকরো হয়ে যায়।
আমার মনে হল কেউ যেন অনেক দুর হতে আমার নাম ধরে ডাকছে। মায়ের গলা শুনে সম্বিৎ ফিরে পাই, পেছনে তাকানর আগে চোখের জল মুছে নেই আমি। পেছনে তাকিয়ে দেখি মা ডাকছেন আমাকে, মায়ের পেছনে পরী। আমার বেদনা ভরা চেহারা দিকে তাকিয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন যে কি হয়েছে আমার। আমার অভিব্যাক্তি হীন চাহনি দেখে পরী সব বুঝে যায়। বুঝে যায় আমি কি ঝঞ্ঝার মধ্যে ছিলাম এই কয়েক ঘণ্টা। চোখে জল চলে আসে ওর, ঠোঁট কামড়ে নিজেকে সামলে নেই পরী।
মা পৌঁছান মাত্র বাড়ির সবাই জিজ্ঞেস করছিল যে আমার কি হয়েছে, আমি নিরুত্তর। পরী আমার পাশে এসে মাকে বলে যে ও আমাকে নিয়ে নিচে যাবে।
আমি মাকে জিজ্ঞেস করি “আমাকে কেন শপিং করতে নিয়ে গেলেনা”। প্রশ্ন শুনে বুঝতে পারল, যে প্রশ্নটা ঠিক মাকে করা হয়নি করা হয়েছে ওকে।
মা বললেন “পরীর জন্য নতুন ড্রেস কেনার ছিল তাই শপিংএ গেছিলাম আমরা, তুই তো কখন শপিংএ যেতে ভালবাসিস না তাই তোকে ডাকিনি। ও তোর জন্য কিছু একটা কিনেছে, তোর ড্রেসের সাথে মানাবে। কি পরবি আজ রাতে? ধুতি না সুট?”
পরী আমার কানে কানে বলে যে ও আমার জন্য একটা টাই কিনেছে, তাই আমি যেন সুট পরি। আমি মাকে বললাম যে আমি সুট পড়ব। মা আমাদের ছেড়ে নিচে নেমে যায়।
মা নিচে নেমে যেতেই, পরী আমার মুখখানি দুহাতে নিয়ে বলে “আমি জানি তোমার মনের অবস্থা। আমি সরি।” মাথা টেনে নিচে নামিয়ে কপালে একটা চুমু খেয়ে বলে “পাগল ছেলে একেবার, এখন বড় হয়নি। বড় হও, তুমি ভেঙ্গে পড়লে আমি কোথায় যাবো একবার ভেবে দেখছ?” আমার হাত ধরে নিচে টানতে টানতে বলে “এখন সেই বাচ্চা ছেলেটাই আছো। চল চোখ মোছ আর ড্রেস করে নাও তাড়াতাড়ি। তার পরে একটা বিশাল সারপ্রাইস দেবো তোমাকে।” আমি ওর দেওয়া রুমাল বের করে মুখ মুছে ওকে জিজ্ঞেস করি যে সারপ্রাইসটা কি। ও হেসে বলে যে, যদি বলে দেই তাহলে কি আর সারপ্রাইস থাকবে।
নিচে নেমে দেখলাম যে বাড়িতে বেশ সাজসাজ রব। আমাকে ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে পরি বলল তাড়াতাড়ি ড্রেস পরে নিতে। বিছানায় দেখলাম আমার ধূসর রঙের সুট পাট পাট করে রাখা। আর তার ওপরে এক নীল রঙের স্ট্রাইপ করা টাই রাখা। টাই দেখে আমার খুব পছন্দ হল, পরী জিজ্ঞেস করল যে টাই আমার পছন্দ কিনা। আমআর মনে হল পরীকে ওখানে জড়িয়ে ধরি, কিন্তু সেটা আর হলনা, মা চলে এলেন। পরীকে বললেন যে মৈথিলীর রুমে যেতে, ওকে সাজাতে বিউটিসিয়ান এসেছে। আমার দিকে চোরা চাহনিতে দেখে যেন বলল “নিচে আমার জন্য অপেক্ষা করো।” বলেই দৌড়ে চলে গেল।
আমি সুট পরে নিচে নেমে গেলাম, সুব্রত আমাকে দেখে বলল “বস আজকেও আমাকে মাত করে দিয়েছ।” সুব্রত আজকে একটা কালো পাঞ্জাবী পরেছে তার ওপরে সোনালী সুতোর ভারী কাজ করা। দারুন দেখাচ্ছে সুব্রতকে, আজ ওর বউভাত।
আমি ওর পিঠ চাপড়ে বললাম “তো, আজকে তোমার বেড়াল মারা দিন আর তারপরে হানিমুনে গোয়া। আমি সত্যি থাঙ্ক ফুল যে আমাকে তোমরা তোমার বিয়েতে ডেকেছ।”
আমার মুখের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে সুব্রত বলল “না, আমি ধন্য হয়ে গেছি তোমরা এসেছ বলে।”
“আর যাই হোক, এই তিন দিনে আমি অনেক কিছু পেয়েছি। হারিয়ে যাওয়া ছেলেবেলা, আমার পোঁতা আমের গাছ, পুকুর পারে মাছ ধরা আর সেই মাছ গুলো আবার পুকুরে ছেড়ে দেওয়া।”
হেসে বলে সুব্রত “হটাৎ করে কবি হয়ে গেলে কি করে। টেকনিক্যাল সায়েন্সের ছেলে।”
ঠিক সেই সময়ে অরুনিমা আমার কাছে এসে হেসে বলে “হাই, ড্যাসিং ম্যান। আজকে তো অনেক মেয়ের মাথা ঘুরে যাবে বলে মনে হচ্ছে।”
আমি ওর দিকে তাকিয়ে দেখলাম, একটা হাল্কা নীল,( blue 😍)
রঙের়ী পড়েছে। মাথা চুলে সুন্দর একটি খোঁপা বাঁধা। কাজল টানা চোখ, বেশ সুন্দরী লাগছে মেয়ে টাকে। সুব্রত আমার দিকে চোখ টিপে ইশারা করে অখান থেকে চলে যায়।
জিজ্ঞেস করে অরুনিমা “খাবার পরে কোথায় ছিলে তুমি? আমি সারা বাড়ি খুঁজছিলাম তোমাকে।”
যা বাবা, এ মেয়েটা দেখছি হাত ধুয়ে আমার পেছনে পরে আছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম “কেন খুঁজছিলে আমাকে?”
“এমনি, একা একা ভালো লাগছিল না বলে।”
“হাঁটবে আমার সাথে।”
মাথা নাড়িয়ে বলল “হ্যাঁ”
“মাঝে মাঝে ভিড় অনেক বোরিং মনে হয় তাই না।” উঠোনের ওপর দিয়ে হাঁটতে থাকি দু’জনে। কিছু লোক আমাদের দিকে তাকিয়ে দেখে। ইন্দ্রানি মাসি আমার দিকে তাকিয়ে হেসে ফেলে।
“তুমি বড় চুপচাপ। তুমি কি বরাবরি এইরকম?” অরুনিমা আমাকে জিজ্ঞেস করে।
“হ্যাঁ। আমি কম কথা বলতে ভালবাসি। কথা শুধু তাদের সাথে বলি যাদের সাথে মনের মিল হয়।”
“আমার মতন তাহলে। আমার কারুর সাথে বেশি কথা বলতে ভালো লাগেনা, কিছু লোক ছাড়া।”
আমি হেসে বললাম “যাক বাঁচালে, সেই কিছু লোকের মধ্যে আমি আছি তাহলে।”
কথায় কথায় জানতে পারলাম যে অরুনিমা এক ভাই এক বোন। ও বড়, ভাই ক্লাস এইটে পড়ে। বাবা সরকারি চাকুরিরত, রাইটার্স বিল্ডিঙ্গে চাকরি করেন। কথা বলতে বলতে আমরা অনেক দুর এগিয়ে গেছিলাম।
আমি ওকে বললাম যে এবারে আমাদে ফেরা উচিৎ। আমাকে বলল “আর একটু হাঁটবে, এমনি এমনি।”
দু’কদম আরও এগিয়ে রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে পড়ে অরুনিমা। আমার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে “একটা প্রশ্ন করতে পারি কি? খুবই পারসোনাল।”
আমি বললাম “ওকে জিজ্ঞেস করো।”
“তোমার কোন গার্ল ফ্রেন্ড নেই তাই না। না মানে এমনি জিজ্ঞেস করলাম।” এই প্রশ্ন টার সম্মুখীন হতে হবে সেটা আমি আগে থেকে আঁচ করেছিলাম।
আমি হেসে ফেলি, সত্যি কথা বলা যাবে না “কেন মনে হল তোমার?”
“তুমি যা কম কথা বল, তাই আমার মনে হল।”
“না, আমার সময় নেই ফুল টাইম গার্লফ্রেন্ড জোটানোর।” আমি হেসে উত্তর দেই।
ঠোঁটে দুষ্টুমির হাসি মাখিয়ে বলে “হুম, মানে স্মল টাইম এফেয়ার।”
“আরে না না, সে রকম কিছু নয়, অনেক বন্ধু আছে, তার মধ্যে মেয়ে বন্ধুও অনেক আছে।”
আমি আঁচ করলাম যে আমার কথা শুনে অরুনিমা স্বস্তির এক দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে। ভেতরে ভেতরে তো আমি হেসে লুটোপুটি খাচ্ছি। আমি ওকে বললাম যে বাড়ি থেকে আমরা অনেক দুরে চলে এসেছি এনারে আমাদের ফেরা উচিৎ। আমার কথা শুনে সায় দিল অরুনিমা। আমার মনে ভেতরে একটা ভয় ছিল যে পরী যদি আমাদের দেখতে পায় তাহলে কি ভেবে বসবে। ফেরার পথে দু’জনেই চুপচাপ হেঁটে চলি।
বাড়ির কাছাকাছি এসে আমাকে বলে “আমরা দু’জনেই কোলকাতা থাকি। একদিন আমাদের বাড়ি আসবে?”
আমি মাথা নাড়িয়ে জানিয়ে দেই যে যেতে পারি তোমাদের বাড়ি। আমার হাতের মধ্যে একটা কাগজের টুকরো ধরিয়ে দিয়ে চলে যায়, অরুনিমা। যাওয়ার আগে ইশারা করে বলে যায় যে কাগজে ওর বাড়ির ফোন নাম্বার লেখা, আমি যেন ফোন করি। ও চলে যাবার পরে, কাগজের টুকরোর দিকে তাকিয়ে হেসে ফেলি আমি। চুলে আঙ্গুল নিয়ে বুলিয়ে নেই।
পেছন থেকে কেউ আমার কাঁধে টোকা দেয়, ঘাড় ঘুড়িয়ে দেখি আমার প্রানপ্রিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি করে হাসছে। ঠোঁটে দুষ্টুমির হাসি “কি চলছে… হ্যাঁ। কিছুর যেন গন্ধ পাচ্ছি মনে হল আমার।”
to be continue...............🧐

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(পর্ব ০৯)

RM ,,পূর্ববর্তী পার্ট গুলি পেতে অমার টাইমলাইন  ভিজিট করুন,, কতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলাম সেটা মনে নেই। চোখ খোলে যখন মাথার পেছনে সজোরে এক থাপ্পর খাই। ঘুম ঘুম চোখে চারদিকে তাকিয়ে দেখি যে কে আমাকে চড়টা মারল। আমি দেখলাম যে আমি উঠানের মাটিতে পড়ে আছি, পায়ের কাছে মাটিতে সুব্রত পড়ে আছে। আমি ওপর দিকে তাকিয়ে দেখতে চেষ্টা করি যে কে আমাকে চড়টা মারল, আমি অবাক হয়ে দেখি যে ইন্দ্রানি মাসি আমাদের দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে। আমার দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে বলে ওঠেন “শুয়োর গুলো এখানে শুয়ে? আর আমারা তোদের দু’জনকে সারা বাড়িতে হন্যে হয়ে খুঁজছি। তোদের কি কোন বোধ বুদ্ধি নেই?” আমি সুব্রতর কাঁধ ঝাঁকিয়ে উঠিয়ে দিলাম, সুব্রত আর আমি দুজনেই উঠে পড়লাম মাটি থেকে। আমি কাতর চোখে ইন্দ্রানি মাসির দিকে চেয়ে বললাম “সরি মাসি। ভুল হয়ে গেছে, কাল রাতে একটু বেশি হয়ে গেছিল।” চেয়ারের ওপরে মদের বোতল আর গ্লাসের দিকে ইন্দ্রানি মাসির চোখ পড়ে যায়, তাড়াতাড়ি করে চেয়ারের ওপরে নিজের শাল ফেলে দিয়ে ঢেকে দেয় গ্লাস আর বোতল। ঠিক সেই সময়ে পেছন থেকে অনেক গুলো পায়ের আওয়াজ পাই। মাসি সবাই কে বলে “এই ছেলে দুটো সারা রাত...

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(শেষ পর্ব)

RM কিছুদূর যেতেই  একটি জায়গায় গাড়ি দাঁড় করায় বল্বিন্দার, বলল যে গাড়িতে তেল ভরতে হবে। গাড়ি থামার সঙ্গে সঙ্গে পরীর ঘুম ভেঙে যায়, আমার দিকে তাকিয়ে বলে “কতক্ষণ ঘুমিয়েছি আমি?” আমি বললাম “বেশীক্ষণ ঘুময়নি তুমি” “আমরা থামলাম কেন?” “তেল ভরার জন্য।” “আর কত দেরি পৌঁছতে?” আমি পেট্রল পাম্পের লোকটাকে জিজ্ঞেস করলাম যে জিওরি থেকে চিতকুল কতক্ষণ লাগবে পৌঁছতে। লোকটা আমায় জানাল যে আরও ঘন্টা চারেকের রস্তা বাকি। লোকটা আরও জানাল যে কারছাম ব্রিজের পরে রাস্তা খুব খারাপ। বল্বিন্দার আমাকে বলল যে ও রাস্তা জানে, কোন চিন্তা করতে বারণ করল আমাকে। পরী হিন্দি বিশেষ ভালো করে বোঝেনা তাই আমাকে জিজ্ঞেস করে যে বল্বিন্দার কি বলল। আমি রাস্তার কথাটা চেপে গেলাম, জানালাম যে কোন কিছুর জন্য চিন্তা না করতে। ঘড়ির দিকে তাকালাম, আড়াইটে বাজে তখন, তারমানে চিতকুল পৌঁছতে সন্ধ্যে হয়ে যাবে। একে শীতকাল তায় আবার পাহাড়, এখানে রাত সমতলের চেয়ে একটু তাড়াতাড়ি নামে। জিওরি ছাড়ার কিছু পরেই পরী বলল যে ও আর ঘুমোতে চায় না, বাইরের দৃশ্য দেখবে। আমি বললাম ঠিক আছে। কিছু পরেই সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ে। যখন আ...

"এক অপরিচিতা"(পর্ব: ছয়)

লেখক:আসিফ ইকবাল! "আগের পর্ব গুলো আমার টাইমলাইনে বিদ্যমান" পঞ্চম পর্বের পর থেকে..... ___আরে বাহ, আপনি নিজের বউ কেই চিনতে পারছেন না!       এবার তো বলবেন গতকাল আপনি আমাকে বিয়েই করেন              নি। হম,সেটাও বলে ফেলেন না! দেরি কেনো? ওর এতগুলি কথার পর বুঝতে পারলাম,এটাই আমার অপরিচিতা,কিন্তু ও আজকে নিকাব পড়েনি। হিজাব পড়েছে। তাই চিনতে পারিনি। মুখ দিয়ে কিছু বের হচ্ছেনা। শুধু ওর দিকে তাকিয়ে আছি। আমার বউটা অনেক কিউট। সকাল বেলা যে আমার জন্য এরকম একটা সারপ্রাইজ আছে সেটা ভাবিনি!      ____কি!আপনি কি এভাবেই তাইকে থাকবেন? নাকি উঠেবেন। জলদি উঠে ফ্রেশ হোন।(তাফা) ____তুমি আজকে নিকাব পরোনি যে! ____আপনি তো আমার বর!আপনার সামনে নিকাব পড়তে হবে কেনো?(তাফা) বলে.....একটা হাসি দিয়ে চলে গেলো। এই প্রথম ওর হাসি দেখলাম। আর সেটা আমাকে রীতিমতো পাগল করে দিয়েছে। আর দেরি করলাম না। জলদি বিছানা ছেড়ে ফ্রেশ হতে চললাম। তাফা,,, তাফা! কই তুমি?........ "এইতো কিচেনে,কি হোয়েছে..... তাফা কিচ...