সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

নিষিদ্ধ ভালোবাসা (পর্ব ০৮)

RM

,,,নিদ্ধ
পরীর এমন কথাই ,,,,,,,
আমি একটু মনক্ষুণ্ণ হয়ে পড়ি, কিন্তু আমার মনোভাব ওকে বুঝতে না দিয়ে বলি “ঠিক আছে তাতে অসুবধা কোথায় কয়েক মাস পরে তো তুমি আমার কাছে থাকবে।” পরীর ঠোঁটের কোলে হাসি জেগে ওঠে পুনরায়।
“এই তো আমার সোনা মেয়ে, মাই লাভ্লি অ্যাঞ্জেল।”
ওকে নিজের কাছে টেনে নেই,,,একটু আদর করতে ইচ্ছে করছে,,,
“ছোটমা চলে আসবে।”
“তোমার ছোটমা খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে।”
“মেঘনা বউদি চলে আসবে।”
“মেঘনা মামিও খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে।”
“বাড়ি ভর্তি লোক, অভি। কেউ না কেউ আমাদের ঠিক দেখে ফেলবে। আমাকে ছেড়ে দাও প্লিস।”
ছাড়বোনা,একটু আদর করি না প্লিজ,,,,,
নঃ,ছার ত,,,,,,,,

একটু পরেই মেঘনা বৌদির ডাক পড়ে,,,,
নিজেকে ঠিক করতে করতে আমার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হেসে বলে “দেখলে তো, আমি বলেছিলাম যে মেঘনা বউদি আমাকে খুঁজতে আসবে। ঠিক হয়েছে তোমার।” তারপরে সিঁড়ির দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে বলে “কি হয়েছে? আমি ছাদে।”
মেঘনা মামি ছাদে উঠে এসে আমাদের দু’জনকে একসাথে দেখে জিজ্ঞেস করে “এই অন্ধকারে তোমরা দু’জনে কি করছ?”
পরী হেসে উত্তর দেয় “কিছু না, অনেক দিন পরে দেখা তাই দু’জনে গল্প করছিলাম।” ঠিক সেই মুহূর্তে সিঁড়িতে আর একজনের পায়ের আওয়াজ শুনতে পাই। মেঘনা মামির পেছন পেছন সুব্রতও উঠে এসেছে ছাদে।
সুব্রত আমার দিকে তাকিয়ে বলল “আমি সারা বাড়ি তোমাকে খুঁজে বেড়াচ্ছি আর তুমি এখানে কি করছ?”
মেঘনা মামি পরী কে নিয়ে নিচে নেমে যায় “বদমাশ মেয়ে কোথাকার। মৈথিলীর ঘুম পাচ্ছে, তোকে আজ রাতে মৈথিলীর সাথে শুতে হবে।” আমার দিকে তাকিয়ে চোখ টিপে একটা দুষ্টু মিষ্টি হাসি ছুঁড়ে নিচে নেমে যায়।
সুব্রত আমার দিকে তাকিয়ে বলল “ভায়া, দু’বোতল ওল্ড মঙ্ক যোগাড় করেছি। চল, উঠানের প্যান্ডেলে বসে আড্ডা মারি।”
“আবে, কেউ দেখে ফেললে তো কেলোর কীর্তি হয়ে যাবে।”
“ভায়া, রাত প্রায় বারোটা বাজে, সবাই ঘুমিয়ে কাদা। শালা কে দেখবে আমাদের?”
নিচে উঠানে নেমে বউভাতের জন্য যে মেরাপ লাগানো হয়েছিল, সেখানে গিয়ে এক কোনায় দুজনে বোতল নিয়ে বসে পড়ি। চারদিক নিস্তব্ধ নিঝুম, বাড়ির আলো নিভে গেছে, অধিকাংশ লোকজন শুয়ে পড়েছে।
সুব্রত গ্লাসে রাম ঢেলে চিয়ার্স করে, আমি জিজ্ঞেস করি যে এত রাতে হটাৎ করে আবার গলায় ঢালার কি মতলব জাগল।
গ্লাসে এক চুমুক দিয়ে উত্তর দেয় “আজ খুব ফ্রি মনে হচ্ছে, এই দু’দিনে যা ঝড় গেল বাড়িতে।”
আমি জিজ্ঞেস করলাম যে মৈথিলীর সাথে কোথায় দেখা হয়েছিল। সুব্রত জানাল যে এক পারিবারিক অনুষ্ঠানে দেখা হয়েছিল, দেখা মাত্রই প্রেমে পরে যায় দু’জনে তারপরে দেখা সাক্ষাৎ আর ভালবাসা। এর মাঝে গ্লাসের পর গ্লাস খালি হয়ে চলে। আমি জিজ্ঞেস করি যে কে আগে প্রস্তাব জানিয়ে ছিল? উত্তর দেয় আমকে যে, ঐ আগে প্রস্তাব করে। তারপরে একদিন বড়দা মৈথিলীকে দেখে ভালো লাগে, বড়দা বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে ওদের বাড়িতে জানায়।
আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করি “সুমন্ত মামা জানল কি করে?”
“আমি সব কিছু মেঘনা বউদিকে জানিয়ে ছিলাম। গত বছর দুষ্টুর জন্মদিনে ওদের ডাকা হয়, সেখানে বড়দা মৈথিলীকে দেখে পছন্দ হয়। তারপরে শশাঙ্খদা আর মেঘনা বউদি ওদের বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যায়।”
“বাঃ বেশ ইন্টারেস্টিং তো গল্প।”
রাম খেতে খেতে দু’জনার রক্তে নেশার ঘোর লাগে। আমি জিজ্ঞেস করি “তো কাল রাতে বিড়াল মারছ। হানিমুনে কোথায় যাচ্ছ?”
“হুম কাল রাত… হানিমুনে গোয়া যাচ্ছি।”
আমি বললাম “গোয়া দারুন জায়গা, বেশ এঞ্জয় করবে বউ নিয়ে।” কাঁধ চাপড়ে বলি “মৈথিলী দারুন দেখতে।”
“শুধু দারুন না আর কিছু? বল আমার বউ ড্যাম সেক্সি দেখতে।” সুব্রতর নেশা চড়ে গেছে তুঙ্গে “গুরু এটাতো আমাদের সেকেন্ড হানিমুন। সব কিছু তো অনেক আগে হয়ে গেছে।”😂😂
আমি জিজ্ঞেস করি “মানে?”
“গুরু এর মানে মৈথিলী দারুন মিষ্টি। তুমি তোমার কথা বল, কাউকে আজ পর্যন্ত কিছু করনি। মানে ক্রাস?”
আমার মাথা অল্প অল্প চক্কর খেতে শুরু করেছে, নেশার ঘোরে বলি “আমার প্রথম ক্রাস হল গিয়ে আমার ক্লাস টুয়েলভের ফিসিক্স ম্যাডাম। দারুন সুন্দরী ছিলেন, একটু বেঁটে কিন্তু দারুন ,মেয়ে ছিলেন। আমার ফিসিক্স নিয়ে ভালবাসা ওনার জন্য।”
“তারপরে কি হল?”
“আরে বাবা তারপরে কি হবে? আমার ক্লাস টিচার ছিলেন তিনি।”
“আর বলতে হবে না, আমি সব জানি। কলকাতায় ম্যাডাম আর ছাত্রদের মধ্যে অনেক কিছু হয়।”
“আরে পাগলা, কিছুই হয়নি। তবে হ্যাঁ, আমি ফিসিক্স নিয়ে পড়ার পেছনে ওনার খুব বড় অবদান। ওনাকে ভালবেসে আমি ফিসিক্সকে ভালবাসি তাই গ্রাজুয়েসানে ফিসিক্স নিয়ে পড়ি। তুমি তোমার হানিমুনের কথা বল।”
“আমাদের প্রথম হানিমুন, শান্তিনিকেতন। অনেক মজা করেছি ওখানে আমরা।”
চোখ ঢুলু ঢুলু, ঘুম ঘুম পাচ্ছে আমার। প্রত্যেক ঢোঁকের পরে চোখের পাতা ভারী হয়ে আসে।
আমাকে ঢুলতে দেখে ঝাঁকিয়ে দেয় সুব্রত “ভায়া, ঘুমিয়ে পড়লে নাকি? ঘুমিয় না, আজকে আমার সব থেকে আনন্দের দিন আর তুমি আমার সব থেকে ভালো বন্ধু।”
আমি জানিয়ে দেই যে আমার মাথা ঘুরছে বনবন করে।
ভায়া, হুংকার করে উঠল, আমি এক্ষুনি আমার bow এর কাছে যাব। ওকে দেখতে চাই আমার সামনে,,,,
ভায়, এখন  না।কালকে দেখ,মন ভরে,,,কিন্তু এখন না,,,
“না আমার এখুনি চাই, আমি চললাম আমার চুরনির কাছে।”
“চূর্ণি কে আবার?”
“আমার সুন্দরী বউ, চূর্ণি। আমাকে যেতে দাও।” সুব্রত আবার চেয়ার ছেড়ে উঠে পরে।
আমি আবার ধাক্কা দিয়ে বসিয়ে দেই “না যেতে পার না, বস এখানে। একটা রাত, কন্ট্রোল ইয়ার।”
সুব্রত চেয়ারে বসে গান গাইতে শুরু করে দেয় “মেরি যান মেরি যান মুরগি কে আন্ডে।”
আমি হেসে বললাম “শালা কি যে গাইছ, আমার গান শোন।”
“ও পিয়া ও পিয়ে,,, ব্লা ব্লা ব্লা ব্লা,,,,,
সুব্রত চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলে “বাহ বাঃ দারুন গান, এবারে আমারটা শোনো।”
ব্লা ব্লা ব্লা,,,,
আমরা দু’জনে চেয়ার ছেড়ে উঠে হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ি মাটিতে। আমার চোখের সামনে অন্ধকার, তারপরে আমার আর কিছু মনে নেই।

to be continue...........🧐

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(পর্ব ০৯)

RM ,,পূর্ববর্তী পার্ট গুলি পেতে অমার টাইমলাইন  ভিজিট করুন,, কতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলাম সেটা মনে নেই। চোখ খোলে যখন মাথার পেছনে সজোরে এক থাপ্পর খাই। ঘুম ঘুম চোখে চারদিকে তাকিয়ে দেখি যে কে আমাকে চড়টা মারল। আমি দেখলাম যে আমি উঠানের মাটিতে পড়ে আছি, পায়ের কাছে মাটিতে সুব্রত পড়ে আছে। আমি ওপর দিকে তাকিয়ে দেখতে চেষ্টা করি যে কে আমাকে চড়টা মারল, আমি অবাক হয়ে দেখি যে ইন্দ্রানি মাসি আমাদের দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে। আমার দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে বলে ওঠেন “শুয়োর গুলো এখানে শুয়ে? আর আমারা তোদের দু’জনকে সারা বাড়িতে হন্যে হয়ে খুঁজছি। তোদের কি কোন বোধ বুদ্ধি নেই?” আমি সুব্রতর কাঁধ ঝাঁকিয়ে উঠিয়ে দিলাম, সুব্রত আর আমি দুজনেই উঠে পড়লাম মাটি থেকে। আমি কাতর চোখে ইন্দ্রানি মাসির দিকে চেয়ে বললাম “সরি মাসি। ভুল হয়ে গেছে, কাল রাতে একটু বেশি হয়ে গেছিল।” চেয়ারের ওপরে মদের বোতল আর গ্লাসের দিকে ইন্দ্রানি মাসির চোখ পড়ে যায়, তাড়াতাড়ি করে চেয়ারের ওপরে নিজের শাল ফেলে দিয়ে ঢেকে দেয় গ্লাস আর বোতল। ঠিক সেই সময়ে পেছন থেকে অনেক গুলো পায়ের আওয়াজ পাই। মাসি সবাই কে বলে “এই ছেলে দুটো সারা রাত...

নিষিদ্ধ ভালোবাসা(শেষ পর্ব)

RM কিছুদূর যেতেই  একটি জায়গায় গাড়ি দাঁড় করায় বল্বিন্দার, বলল যে গাড়িতে তেল ভরতে হবে। গাড়ি থামার সঙ্গে সঙ্গে পরীর ঘুম ভেঙে যায়, আমার দিকে তাকিয়ে বলে “কতক্ষণ ঘুমিয়েছি আমি?” আমি বললাম “বেশীক্ষণ ঘুময়নি তুমি” “আমরা থামলাম কেন?” “তেল ভরার জন্য।” “আর কত দেরি পৌঁছতে?” আমি পেট্রল পাম্পের লোকটাকে জিজ্ঞেস করলাম যে জিওরি থেকে চিতকুল কতক্ষণ লাগবে পৌঁছতে। লোকটা আমায় জানাল যে আরও ঘন্টা চারেকের রস্তা বাকি। লোকটা আরও জানাল যে কারছাম ব্রিজের পরে রাস্তা খুব খারাপ। বল্বিন্দার আমাকে বলল যে ও রাস্তা জানে, কোন চিন্তা করতে বারণ করল আমাকে। পরী হিন্দি বিশেষ ভালো করে বোঝেনা তাই আমাকে জিজ্ঞেস করে যে বল্বিন্দার কি বলল। আমি রাস্তার কথাটা চেপে গেলাম, জানালাম যে কোন কিছুর জন্য চিন্তা না করতে। ঘড়ির দিকে তাকালাম, আড়াইটে বাজে তখন, তারমানে চিতকুল পৌঁছতে সন্ধ্যে হয়ে যাবে। একে শীতকাল তায় আবার পাহাড়, এখানে রাত সমতলের চেয়ে একটু তাড়াতাড়ি নামে। জিওরি ছাড়ার কিছু পরেই পরী বলল যে ও আর ঘুমোতে চায় না, বাইরের দৃশ্য দেখবে। আমি বললাম ঠিক আছে। কিছু পরেই সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ে। যখন আ...

"এক অপরিচিতা"(পর্ব: ছয়)

লেখক:আসিফ ইকবাল! "আগের পর্ব গুলো আমার টাইমলাইনে বিদ্যমান" পঞ্চম পর্বের পর থেকে..... ___আরে বাহ, আপনি নিজের বউ কেই চিনতে পারছেন না!       এবার তো বলবেন গতকাল আপনি আমাকে বিয়েই করেন              নি। হম,সেটাও বলে ফেলেন না! দেরি কেনো? ওর এতগুলি কথার পর বুঝতে পারলাম,এটাই আমার অপরিচিতা,কিন্তু ও আজকে নিকাব পড়েনি। হিজাব পড়েছে। তাই চিনতে পারিনি। মুখ দিয়ে কিছু বের হচ্ছেনা। শুধু ওর দিকে তাকিয়ে আছি। আমার বউটা অনেক কিউট। সকাল বেলা যে আমার জন্য এরকম একটা সারপ্রাইজ আছে সেটা ভাবিনি!      ____কি!আপনি কি এভাবেই তাইকে থাকবেন? নাকি উঠেবেন। জলদি উঠে ফ্রেশ হোন।(তাফা) ____তুমি আজকে নিকাব পরোনি যে! ____আপনি তো আমার বর!আপনার সামনে নিকাব পড়তে হবে কেনো?(তাফা) বলে.....একটা হাসি দিয়ে চলে গেলো। এই প্রথম ওর হাসি দেখলাম। আর সেটা আমাকে রীতিমতো পাগল করে দিয়েছে। আর দেরি করলাম না। জলদি বিছানা ছেড়ে ফ্রেশ হতে চললাম। তাফা,,, তাফা! কই তুমি?........ "এইতো কিচেনে,কি হোয়েছে..... তাফা কিচ...